somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিছু পুরুষেরা কেন এমন হয়?

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ৮:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একজন বিকৃত-কাম মানুষের গল্প ও একটা প্রশ্ন?
~একটা চাক্ষুষ বিষয়ের বর্ণনা করছি। যেহেতু সে আমার অতি পরিচিত কেউ একজন তাই নামটা গোপন রাখছি!
আমাদের বেশ বড়সড় এক আড্ডা গ্রুপের সেও একজন সদস্য।এক সময় বেশ ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল সেকারণেই স্বভাবত প্রগাঢ় ঘনিষ্ঠতা ছিল। কলেজ জীবনে দিনরাত একসাথে আড্ডা দিয়েছি।
বেশ গাট্টাগুট্টা স্বাস্থ্য গোঁয়ার আর ভীষণ কৃপণ টাইপের ছেলে। তার কৃপণতা নিয়ে উপহাস ঠাট্টা মশকরা সবই ছিল নিয়মিত। আড্ডার একটা অন্যতম গল্পের বিষয় ছিল নিপু’র কৃপণতা আর মানুষকে ঠগিয়ে তার জিতে আসার বীরত্ব নিয়ে!
এসব নিয়ে যে যতই মজা করুক বা কটূক্তি করুক সে ছিল ভাবলেশহীন! দিন দিন আরও বেশি সে কঞ্জুস হয়ে উঠছিল।
শরীরে শক্তি ছিল তার সাংঘাতিক! সবাই যখন বুট পড়ে ফুটবল মাঠে নামত সে খেলত খালি পায়ে। পায়ে তার এত জোড় ছিল যে বুট পরেও তার সামনে যেতে অন্যেরা ভয়ে কাঁপত!
কোনদিন সিগারেট গাঁজা মদ সে স্পর্শ করেনি। গাঁজা মদ-তো দুরের কথা;বহু চেষ্টা করে তাকে এক 'বুন্দ' বিয়ার পান করানো যায়নি।
***
মেয়েদের দিকে তার চাহনি খারাপ হলেও প্রেম-ট্রেমের ব্যাপারে খানিকটা উদাসীন ছিল। বিয়ের আগে সে প্রেম করেছে কিনা তা আমার জানা নেই। পড়ালেখার পাশাপাশি অল্প বয়সেই সে ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায় আহামরি কিছু না হলেও করছিল ভালই।
একবার তার একটা গল্প আমাদের খানিকটা নিষ্প্রভ হয়ে যাওয়া আড্ডাটাকে বেশ একটা ঝাঁকুনি দিল।
তখন সে ম্যাট্রিক পরীক্ষার্থী! গ্রামের স্কুলে পড়ে- বাড়িতেই একঘরে রাত জেগে পড়াশুনা করে। তার আপন মামা সদ্য বিয়ে করেছে। তরুণী মামীর দিকে আড়চোখে দেখে, তার শরীরের খাঁজে ভাঁজে চোখ ঘুরে বেড়ায়।
সন্ধ্যের খানিক বাদেই মামা বাজার থেকে ফিরে খাওয়া দাওয়া সেরে মামীকে নিয়ে দরজায় খিল দেয়। রাত একটু গভীর হলেই শুরু হয় তাদের উন্মাতাল যৌন শীৎকার! সেটা এক পর্যায়ে যেন খুন খারাবির অবস্থায় চলে যায় – মামীর চরম গোঙ্গানি আর ভয়ানক চিৎকারে সারা বাড়ি কেঁপে ওঠে!
সেই বয়সে সব কিছুর আগ্রহ থাকে তুঙ্গে। স্বভাবতই সদ্য বিবাহিত দম্পতি দরজা আটকে ঘরের মধ্যে কি লীলায় মত্ত হয় সেটা জানার চরম কৌতূহল ছিল তার!
এমন ভয়ঙ্কর চিৎকার আর গোঙানির পরেও কেউ না উঠে আসায় সে বড় তাজ্জব হল!
সকালে মামীর দিকে তাকিয়েই সে চমকে ওঠে- একদম সহজ স্বাভাবিক! যেন কোন কিছুই হয়নি তার- এর মানে রাতে কি সে ভুল শুনেছে?
পরদিন রাতে যেন সেই শব্দটা আরও বেড়ে গেল- আগের রাতের থেকেও বীভৎস অবস্থা! একসময় তার মনে হল মামা মনে হয় সত্যি মামীকে আজ মেরে ফেলছে! হাতের বই ছুড়ে ফেলে দৌড়ে গেল মামার ঘরের দিকে। তারপর দরজায় দড়াম দড়াম করে লাথি আর অশ্রাব্য গালি শুরু করল মামার উদ্দেশ্যে। গোঙ্গানি আর চিৎকার থেমে গেল- খানিক বাদে মামা দরজা খুলে খিক করে হেসে বলল, কিরে ভয় পাইছিস? সে মামার কাঁধের উপর দিয়ে আধো অন্ধকার ঘরের মধ্যে তাকিয়ে দেখে মামী দ্রুত হাতে তার আলুথালু বসন সামলাতে ব্যস্ত!
গল্প শেষে মামার উদ্দেশ্যে একটা খিস্তি ঝাড়ল; শালা পারভার্ট!
***
ঘটনা ২। একদিন আড্ডায় ধর্ষণ নিয়ে কথা হচ্ছে- সবাইকে থামিয়ে সে তার এক চাক্ষুষ গল্প করল। এলাকার এক সুন্দরী মেয়েকে তুলে নিয়ে তিন চারজন ছেলে মিলে কিভাবে ধর্ষণ করে ছিল তার রাখ-ঢাক বর্ণনা। রাখ ঢাক এ জন্যই যে আড্ডার কয়েক জনের এসব জঘন্য কর্মকাণ্ডের সরস বর্ণনা শোনার ব্যাপারে তুমুল আপত্তি ছিল! সে ও না কি বাধ্য হয়ে তাদের সাথে ছিল- তবে কিরা কসম কেটে বলল, সে সাথে ছিল শুধু-কিছু নাকি করেনি।
তবে ঘটনাটা বলে সে কিঞ্চিৎ ভুল করল, বলা বাহুল্য যে – তার কথা কেউ বিশ্বাস করেনি। সেদিন থেকে মার্কিং এ রাখল- এবং তার অনুপস্থিতিতে তাকেও সবাই 'পারভার্ট' নামে ডাকা শুরু করল।
সেই বয়সে রাতে কারো বাসা খালি থাকলে হুলস্থূল শুরু হয়ে যায়! সব নিষিদ্ধ জিনিসগুলো একসাথে মন ছুতে চায়- সারাদিন ধরে গোপনে চলে যোগার যন্ত! পানীয়টা যোগাড় করা বেশ শক্ত, বহু রেফারেন্স আর হাত ঘুরে সেটা আসে।
ভাগে ভাগে বন্ধুরা পা টিপে টিপে সে বাসায় ঢোকা-ভিতরে ঢুকেই আঃ শান্তি! কারো প্যান্টের পেছনে বোতল লুকানো- লাইটের আলোতে লেবেল দেখে একেক জনের একেক মন্তব্য আর যে এনেছে সে বলে তার এটা যোগাড় করার রুদ্ধশ্বাস গল্প! কারো কোমরে তাস গোঁজা আর কারো বা নীল ছবির ক্যাসেট। একেক জনের আগ্রহ একেকটায়, একদল বসে তাসের আড্ডায়, ব্রিজ বা খুচরো পয়সায় তিন কার্ড, আর এক গ্রুপ দেখে মজা পায়। কেউ নীল ছবিতে বিভোর থাকে ,কেউ পানীয় আর সিগারেটেই তুষ্ট! তবে যারা এ তিন দোষে দুষ্ট নয় নীল ছবিতে তাদের আগ্রহটাই বেশি ছিল।
নিপু তেমনই একজন। সারা রাত বসে বসে সে একনাগাড়ে ছবি দেখে যেত – মাঝে মধ্যে বিড় বিড় করে যেন কি বলত? কখনো জোড়ে চিৎকার করে উঠত, 'গো গো ফাক ফাক' এর মত অশ্লীল শব্দের তুবড়ি ছুটিয়ে। আমরা হাসতাম, মজা পেতাম- সেই নিয়ে হত দীর্ঘ সরস আলোচনা!
যথা সময়ে সে বিয়ে করল। হুট করে বিয়ে ঠিক হওয়ায় অল্প কিছু বন্ধু সেখানে উপস্থিত ছিল। বিয়ে বলতে -ঘরোয়া ভাবে আকদ! আকদ শেষে ছল চাতুরী করে পাত্রী উঠিয়ে নিয়ে আসা। এত অল্প পয়সায় ঝামেলা-বিহীন বিয়ে করতে পেরে নিপু চরম উল্লসিত! মেয়ের পরিবার বেশ ধার্মিক- পর্দার আড়াল থেকে মা, বোনেরা আমাদের সামনে আসতেই চায়নি।
প্রথম সন্তান জন্মের দুই তিন বছরের মাথায় কোন এক শুক্রবারে জুমার নামাজের সময়ে সেই মেয়ে আত্মহত্যা করে। কেন কি জন্য কেউ জানে না! তবে পুলিশ এসে লাশ নামিয়েই নাকি সারা শরীর হাতড়ে 'টু ফিঙ্গার টেস্ট' করে বলেছে গলায় ফাঁস নেবার খানিক আগেই সহবাস হয়েছে।
মেয়ের পরিবার অতিশয় সজ্জন! তারা মেয়ের লাশ আর কাঁটা-ছেড়ায় যায়নি। ঘরের মাঝেই যে পদ্ধতিতে টেস্ট হয়েছে –তাতেই তাদের পিলে চমকে গেছে! মৃত কন্যা ফের ধর্ষিত হোক চায়নি তারা। পুলিশকে টাকা পয়সা দিয়ে ম্যানেজ করে স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করেছিল।
তবে নিপুকে আগাগোড়া চেনে তেমন দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা আমার বন্ধুদের নিশ্চিত বিশ্বাস ছিল পারভার্টের বিকৃত যৌন অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সে আত্মহত্যা করেছে!
***
রপর থেকে নিপুর সাথে দেখা সাক্ষাৎ কম হত- ইচ্ছে করেই খানিকটা এড়িয়ে চলতাম তাকে। তবে খবরাখবর রাখতাম। বছর-খানেক বাদে শুনলাম ফের বিয়ে করেছে সে।
সেই রমণীর আগে নাকি বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের বছর দুয়েক বাদে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে।
ধারনা করি যেহেতু আগে বিয়ে হয়েছিল- দু’বছর সংসার ও করেছে সেহেতু শারীরিক অভিজ্ঞতার ঘাটতি নেই তার। নিপুর সেই বউ এর সাথে আমাদের কারো দেখা হয়নি কখনো!
সে নারীও একদিন আত্মহত্যা করল। তেমনি এক জুমার দিন ফ্যানে ঝুলে! আমরা সবাই ভয়াবহ ধাক্কা খেলাম! সে কিভাবে বা কি উপায়ে ম্যানেজ করল আমাদের জানা নেই তবে এবারও মেয়ের পরিবার লাশ ময়না তদন্ত না করেই কবর দিল। আশ্চর্যভাবে কোন মামলাও করলেন না।
কিন্তু এবার আমাদের বন্ধুরা ক্ষেপে গেল! দু’চারজন প্রবাসী বন্ধু চাকরি আর পিএইচ ডি ছেড়ে দিয়ে তক্ষুনি যেন চলে আসে দেশে ওর বিরুদ্ধে আইনী লড়াই করবে বলে।
কিন্তু যাদের কন্যা তারা যদি সহযোগিতা না করে তবে এ নিয়ে দৌড় ঝাঁপ বৃথা!
***
আসল ঘটনা কি ঘটেছিল সে রহস্য কোনদিন উদঘাটিত হবে না তবে আমার প্রশ্ন অন্য খানে, এটা কি 'বিকৃত কাম মানসিকতা' না- কি জেনেটিক নাকি উভকামী, সমকামী কিংবা বিষমকামীদের মত প্রকৃতিগত?

যখন এটা নিয়ে আপনি ভাবছেন তখন এমন একটা তথ্য হাজির করব যেটা আপনাকে সবচেয়ে বড় ধাক্কা দিবে;
তার নিজের মা ও সৎ মা দু’জনেই আত্মহত্যা করেছিল!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:০০
৫৮টি মন্তব্য ৩৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২১

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

ট্রাম্প হচ্ছে একজন আপাদমস্তক বিজনেসম্যান। কমলা হ্যা্রিস যেহেতু ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত তাই ইন্ডিয়ান ভোটার টানার জন্য সে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে জাস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

চট্রগ্রামে যৌথবাহিনীর ওপর ইসকনের এসিড হামলা সাত পুলিশ আহত।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৪৩

এসিড নিক্ষেপে আহত পুলিশ সদস্য



চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর ইসকন সমর্থকদের হামলা ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানব সভ্যতা চিরতরে ধ্বংস হবে কি করে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৬



সে এক বড় অদ্ভুত বিষয়।
চিন্তা করে দেখুন এত দিনের চেনা পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। বিশাল বিশাল ইমারত ভেঙ্গে যাবে, গুড়িয়ে যাবে। মানুষ গুহা থেকে বেরিয়ে আজকের আধুনিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসকন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭


INTERNATIONAL SOCIETY FOR KRISHNA CONSCIOUSNESS যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ISKCON এর বাংলা অর্থ হল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ। যে সংঘের ঘোষিত উদ্দেশ্য হল মানুষকে কৃষ্ণভাবনাময় করে তোলার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রকৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পকে নিয়ে ব্লগারদের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



**** এডমিন টিমের ব্লগারেরা আমাকে বরাবরের মতোই টার্গেট করে চলেছে, এভাবেই সামু চলবে। ****

ট্রাম্পের বিজয়ে ইউরোপের লোকজন আমেরিকানদের চেয়ে অনেক অনেক বেশী শংকিত; ট্রাম্প কিভাবে আচরণ করবে ইউরোপিয়ানরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×