এইভাবে যাবে দিনের পর দিন
বৎসরের পর বৎসর।
তারপর একদিন হয়ত জানা যাবে
বা হয়ত জানা যাবে না,
যে তোমার সঙ্গে আমার
অথবা আমার সঙ্গে তোমার
আর দেখা হবে না।*
( সুদীর্ঘ ১৬ বছরের কাহিনী এই দুই খানা মাত্র পর্বে বাঁধার চেষ্টা করা হয়েছে!!)
~দীর্ঘ তিন বছর এলিনার খবর আর তেমন করে পাইনি। আমি আমার ব্যবসা নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত! পরিবার থেকে বিয়ে-থার চাপ দিচ্ছে, খুব বেশী ব্যস্ততার ভান করে এড়িয়ে যাচ্ছি। ববির সাথে কথা হয় কালে ভদ্রে। কথা হলে ওর মেয়েকেই নিয়ে আলাপ হয় বেশী। এলিনার খবরাখবর জিজ্ঞেস করলে একবার বলেছিল, মস্কোর বাসা ভাড়া দিয়ে সে ওর মায়ের কাছে ওডেসায় চলে গেছে। সেখানেই নাকি এক কিন্ডারগার্ডেনে পড়াচ্ছে। ব্যাস এইটুকুই। ওর সাথে দেখা হয় না বহুদিন!
মাঝে মাঝে নিজেকে অপরাধী মনে হয়। আসলেই কি? অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে মানুষ নিজেকে হালকা করে। সৌম্যও এর ব্যতিক্রম নয়। ওদের বিয়ে-তো না ও হতে পারত। এভাবে-তো ববির সাথে কত-শত রুশীয় মেয়ে মিশেছে। তাদের প্রেমেও হাবুডুবু খেয়েছে বেশ। তবে গাঁটছড়া বাধেঁনিতো অন্য কারো সাথে। এমনটা-তো এলিনার ব্যাপারেও হতে পারত। আর ববি যে চরিত্রবান নয় সেটা এলিনার আগে থেকেই জানার কথা। ও একটু বেশী বেশী রিয়্যাক্ট করে ফেলেছে।
নিজের মনেই সান্ত্বনা নেয় সে। ভাবি আমি যদি বিয়ে করতাম তবে কি এমন হোত? হয়তো এমন নয় মোটেও অন্যরকম কিছু। তবে রেমেনা’র কথা মনে পড়লেই বুকের মধ্যে খামচে ধরে। ও তো আমার মেয়েও হতে পারত।
ববি’র মা আর বোন ওর মেয়েকে চরম মমতায় মানুষ করছে। ববি বছরের প্রায় পুরোটা সময় মস্কোতেই থাকে। কালে ভদ্রে আসে দেশে। মূলত মেয়ের টানেই আসে। মেয়ে ওকে ভাল করে চিনে না। কাছে আসতে দ্বিধা হয় লজ্জা পায়- শত আহ্বানেও দূরে দূরে থাকে। মেয়ের জন্য খরচের কমতি নেই- যা লাগে তার থেকে অনেক বেশী খরচ করে সে। বাইরে থেকে ফেরার সময় সুটকেস ভর্তি দামী দামী খেলনা পোশাক আর চকলেট থাকে।
পর পর দু’বার জন্মদিনে সে আসতে পারেনি। রেমেনা এবার স্কুলে ভর্তি হয়েছে। সে নাকি গড় গড় করে বাংলায় কথা বলে। মায়ের কথা, রুশ ভাষা আর আগের স্মৃতি সব সে ভুলে গেছে। চেহারার আদল ছাড়া বোঝার উপায় নেই সে বাঙ্গালী নয়।
ববি ওর মা বোন ভাইদের পীড়াপীড়িতে এবার জন্মদিনে আসতে বাধ্য হোল। বাসার ছাদে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আর বন্ধু পরিজনদের দাওয়াত দিয়েছে।
সীতাকুণ্ড থেকে সৌম্যের আসতে একটু দেরি হয়ে গেল! গেস্ট অনেকেই চলে গেছে ততোক্ষণে। কেক একটা কাটা হয়েছে। আরেকটা রাখা হয়েছে ওর অপেক্ষায়।
ওদের বাসার সবাই সৌম্যকে ভালভাবে চেনে ও বিশেষ সুবোধ ভদ্র ছেলে হিসেবেই জানে। সে ছাদে যেতেই আয়োজনে নতুন জোয়ার আসল। এর ওর সালাম আর কুশল বিনিময় করতেই বেশ খানিকটা সময় কেটে গেল। কথা বলার ফাঁকে ফাঁকে ওর চোখ খুঁজে বেড়াচ্ছিল রেমেনা’কে। অবশেষে চারিদিকে উজ্জ্বল আলোকচ্ছটা ছড়িয়ে দারুণ ধবধবে সাদা জরি আর ফুলেল কাজ করা ফ্রক পরে পরির সাজে সে আসল।
কি আশ্চর্য! আমার মনে হচ্ছিল আমি যেন এলিনার ডুপ্লিকেট দেখছি। একেবারে ছাঁচে ফেলে করা গড়ন রঙ আর চেহারা!!
ববি মেয়ের হাত ধরে আমার সামনে এনে বলল, এই যে তোমার সৌম্য চাচা!
যেন কত দিনের চেনা সে আমার। নরম তুলতুলে কচি হাত দিয়ে আমার আঙ্গুল ছুঁয়ে বলল, তুমি সোম্ম চাচা?
হ্যাঁ মা আমি উবু হয়ে তাকে কোলে তুলে নিতে নিতে বললাম। আমি তোমার সোম্ম চাচা। তোমার নামটা বলতো।
সে আমার দিকে তাকিয়ে খানিকটা লজ্জা পেয়ে ফিক করে হেসে বলল, -লেমেনা।‘ কি যে মিঠে করে বলল নামখানা তার। আমি আলতো করে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরলাম।
সে বাসার প্রতিটা লোক তাকে এত বেশী কেয়ার করে ভালবাসে যা দেখে আমি আবেগে আপ্লুত হলাম। মনে হোল ওর মায়ের কাছেও এমন আদর পেত না। যদিও আমি বিলক্ষণ জানি- মায়ের কোন বিকল্প হয় না! তবুও নিজের অনুতাপের জ্বালা উপশমের জন্য এমন ঔষধ কার্যকরী।
আমরা বড্ড-বেশি অকারণে উৎসুক জাতি। দু-চারজন একটি একা আমাকে বাগে পেয়েই ফিস ফিস জিজ্ঞেস করল, ওর মায়ের খবর?
আমি কিছুই জানিনা বলে ঠোট বাঁকালাম!~ পর্ব ৮ শেষ
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
৯ম পর্ব
এর পর থেকেই রেমেনার সাথে মাঝে মধ্যেই সাক্ষাত হয়। ববি না থাকলেও ঢাকা আসলে ওর জন্য এটা ওটা নিয়ে আসি দেখা করার লোভে। আমার পারিবারিক অনুষ্ঠান বা ওদের কোন আয়োজনে নিয়মিত দেখা সাক্ষাৎ হয়। আমি ধীরে ধীরে ওর বেড়ে ওঠা দেখি।
এর মাঝে আমি বিয়ে করে ফেললাম বা করতে বাধ্য হলাম বলা যায়। বিয়ে হোল মায়ের পছন্দেই। তার অনুরোধ বারংবার আমি আর ঠেলতে পারছিলাম না।
ববি আসল আমার বিয়েতে-রেমেনার বয়স তখন আট। দারুণ নাচল সে আমার গায়ে হলুদের পার্টিতে। ওর মিষ্টি সৌন্দর্য সবাইকে টানে। সবখানেই সে সবার মধ্যমণি।
আমার বিয়ের ক’দিন বাদেই ববির বোনের বিয়ে হয়ে গেল! মেয়েটা নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ল। বয়স্ক মা একা আর তাকে সামলাতে পারে না। এছাড়া কিন্ডারগার্ডেনে অনেক পড়া- কারো একজনের গাইডেন্স জরুরি।
পরিবার থেকে চাপ আসল ববির বিয়ে করার জন্য। ববির ভাবখানা এমন যে, শুধু মেয়ের জন্যই বিয়ে করতে সে রাজী হচ্ছে। না হলে দেবদাস হয়েই এক জীবন কাটিয়ে দিত। তবে এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই যে, মেয়েকে সে ভীষণ ভালবাসে।
কনে ঠিক হোল নারায়ণগঞ্জে! সম্ভবত একবার তার বিয়ে হয়েছিল। কানাঘুষা শুনলেও সবাই ব্যাপারটা একদম চেপে গিয়েছিল। এবার বিয়ে হোল খুব সাদামাটা ভাবে। আড়ম্বর বা আয়োজন নেই কোন।
রেমেনা এতদিন ববির বোনকেই মা বলে ডাকত। তার জীবনে তৃতীয় মা আসল এবার। দুজনকে দুজনার আপন করে নিতে একটু সমস্যা হোল বৈ কি! বিয়ের পরে অবশ্য ববি কিছুদিন তার বৌকে মস্কো ঘুড়িয়ে এনে ঠাট বাট দেখিয়ে আনল। তবে বউকে আধুনিকা করতে গিয়ে সে উল্টো ফাঁদে আটকে গেল! এ-তো রুশ রমণী নয়। দু’দিনেই সে বুঝে গেল ওখানকার হাল হকিকত। নিজের মনে দুঃখ কষ্ট বয়ে বেড়ানোর মানুষ সে নয়- চোখের জলে নাকের জল এক করে বাড়ি ঘর মাথায় তুলল।
যেমন ওল কচু তেমনি বাঘা তেঁতুল! এবার জমল খাপে খাপ! বউ নাকি তার টেলিফোনেও মদের ঘ্রাণ পায়- সব পার্টিতে উপস্থিত থাকে সে। কোন মেয়েকে তার ধারে কাছে ঘেষতে দেয় না। সবখানে গিয়ে সবার ব্যাঙ্গ তামাশা উপেক্ষা করে স্বামীর হাত ধরে বসে থাকে। বন্ধু আমার ব্যাপক চাপে পড়ল। পারলে টেলিফোনে ভেউ ভেউ করে কাঁদে!
এর মাঝেই ওর বউ হোল অন্তঃসত্ত্বা। লে ঠ্যালা! যদিও সে সুযোগ বুঝে পরিবারের সাহচর্য ও পরিচর্যার কথা বলে তাকে দেশে পাঠিয়ে একটু বে-এক্তেতার হতে চেয়েছিল-সেখানেও গরম ভাতে জল!
ওর বউ তাকে ছাড়া কোনমতেই দেশে আসবে না! শেষমেশ তাকে এনে ছাড়ল।
রেমেনা’র নতুন মায়ের সাথে এবার বেশ খাতির হোল। দু’জনের বেশ হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক জমে উঠল। ববি অবশ্য এতে দারুণ উৎফুল্ল।
যথা সময়ে কন্যা সন্তানের জন্ম হল এবার। রেমেনা তখন কিশোরী। মায়ের অবর্তমানে সে আর তার দাদী মিলে ছোট বোনকে সামলায়। অপটু হাতে সে তার ন্যাপি পাল্টে দেয় দুধ গরম করে খাইয়ে দেয়, বমি করলে পরম যত্নে মুছে দেয়। ববির বোনের বিয়ে হয়েছে আশে পাশেই। সুযোগ পেলেই সে রেমেনা’র টানে ছুটে আসে। রেমেনার দ্বিতীয় মায়ের সাথে একান্তে গুজুর গুজুর ফুসুর ফুসুর চলে গভীর রাত অব্দি। এমনিতে অবশ্য সে দাদীর কাছে ঘুমায় কিন্তু ফুপি আসলে কারোর আর পাত্তা নেই।
দারুণ সুখেই দিন কেটে যাচ্ছিল ওদের। এলিনা যেন এ পরিবারে ব্রাত্য। কেউ আর ওর কথা জিজ্ঞেস করে না। রেমেনা’ও জানতে চায়নি কোনদিন ওর আসল মা কে ছিল? সযত্নে সবাই মিলে এলিনার সব স্মৃতিগুলো মুছে ফেলেছে। এ নামে কোন মানবীর সাথে কোনদিন এদের সম্পর্ক ছিল বলে মনে হয় না।
ও লেভেল পাশ করতেই রেমেনা গায়ে গতরে তর তর করে বেড়ে উঠল। প্রথম দেখায় ওকে ষোড়শী কিশোরী বলে মনে হয় না। লম্বা দীঘল কালো চুল, টানা টানা গাঢ় ভ্রু, লম্বা চোখের পাপড়িতে দারুণ আকর্ষনীয়া সে- অনেক যুবকের আরাধ্য হয়ে উঠল তখন।
ববি স্থায়ীভাবে থিতু হবার চেষ্টা করছে দেশে এসে। এদেশে ব্যবসা করাতো এত সহজ নয়। তাই সে এখনো ভাব বুঝছে। কোন ব্যবসায় এখনো টাকা খাটায়-নি। মস্কোতে তার স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে বেশ থোক টাকা নিয়ে এসেছে, সাথে সেই ব্যবসায় নগদ লগ্নি-তো ছিলই। মস্কোতে বছর পাঁচেক আগে কেনা ২০ হাজার ডলারের ফ্লাট এখন দেড় লাখে বিকোয়। দুই রুমের ফ্লাট ভাড়া নাকি হাজার থেকে পনের'শ ডলার!! বলে কি! ওই আক্রার বাজারে সেখানে বসবাস করা ভীষণ দুরূহ হয়ে উঠেছে।
মেয়েকে নাকি সে প্রচুর সময় দেয় এখন। নিজেই গাড়িতে করে স্কুলে নিয়ে যায় নিয়ে আসে। মেয়ের নাকি এর মধ্যেই কয়েকখানা বিয়ের প্রপোজাল এসেছে। এতটুকুন মেয়ের ঘন ঘন বিয়ে আসায়- বাপ হিসেবে সে বেশ বিব্রত!
আমার সাথেও রেমেনার দেখা হোল প্রায় বছর দুয়েক বাদে। প্রথম দেখায় ওকে আমি চিনিতেই পারিনি। লম্বায় সে আমার মাথা ছাড়িয়ে গেছে। গোলগাল মিষ্টি মুখটা খানিকটা লম্বাকৃতি হয়ে গেছে! ওর বাবা অনুযোগ করল মেয়ের ডায়েট নিয়ে। ‘এই বয়সে আমরা লোহা লক্কড় খেয়ে ফেলছি আর ওরা যতটুকু গেলে তার থেকে ঠোট মুছে বেশী’।
এখনো সে তার সেই সারল্যে ভরা হাসি দিয়ে চাচা বলে ডাকে আমায়। আমার বড় মেয়ের বয়স সদ্য ‘তিন’। ওকে আনিনি বলে তার সে কি অভিমান। কথা দিলাম ফেরবার নিয়ে আসব।
সেই ফের বার আসতে আসতে দু’বছর হুশ করে চলে গেল। মস্কোর এক বড় ভায়ের আশীর্বাদে ববির ব্যবসা জমে উঠেছে ততদিনে। ধানমন্ডিতে একজোড়া ফ্লাট কিনে সেখানেই সপরিবারে উঠে গেছে। মোহাম্মদপুরের বাসা ডেভেলপারের দিয়েছে- সুউচ্চ ভবন হবে সেখানে। ঠাঁট বাট পোষাকে বোঝা যায় এখন সে বেশ ধনবান। বি এম ডাব্লিউ চালায়!
আমাকে বেশ করে দাওয়াত দিল তার মেয়ের ১৮তম জন্মদিনে! অবশ্যই যেন বউ বাচ্চা নিয়ে আসি আমি।
২০১৬ সাল আজ রেমেনার সেই আরাধ্য আঠার তম জন্ম বার্ষিকী। আমি একটু আগে ভাগেই বউ বাচ্চা নিয়ে হাজির হলাম।আমার মেয়েকে দেখে রেমেনা চরম আবেগে আপ্লুত। মেয়েটা কত্ত বড় হয়ে গেছে। এই বয়সের আশেপাশেই ওর মায়ের সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয়েছিল। ওকে দেখে এক ঝটকায় আমি দুই যুগ আগে চলে গেলাম!
যদিও আমি বিরলকেশী নই তবুও মাথা জুড়ে পাকা চুলের ছড়াছড়ি। অবশেষে উন্মত্ত যৌবনকাল অতিক্রম করে পৌঢ়ত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। রেমেনাকে দেখে মনে হয় আমাদের বয়স বেড়ে গেছে অনেকখানি।
গাজীপুরের এক প্রাইভেট রিসোর্ট কাম উদ্যানে বিশাল আয়োজন। কিডস জোন থেকে শুরু করে সুইমিংপুলে দাপাদাপি করার ও সুযোগ আছে! অফুরন্ত বাহারি খাবার আর চারদিকে বয় বেয়ারার ছড়াছড়ি। কোথাও গ্রিল বা কাবাব হচ্ছে, কোথাও-বা চটপটি, এককোণে দেখি ভাঁড়ের দুধ চা ও আছে। মেইন কোর্স-তো আছেই। ওর মেয়ের জন্য এতবড় আয়োজন দেখে আমার গর্ব হচ্ছে।
সন্ধ্যের আলো আধারিতে গজলের আয়োজন ছিল! এই প্রথম ওকে একাকী বাগে পেলাম।
-এলিনা ফোন করেছিল?
-হ্যাঁ কয়েকবার
-কি বলেছিস? ওর সাথে কি রেমেনা কথা বলেছে?
- নাঃ গতরাতে আমি রেমেনার সাথে কথা বলেছিলাম। ওকে বললাম তুমি মা এখন প্রাপ্ত বয়স্ক। তোমার অতীত নিয়ে অল্প বিস্তর তুমি জানো। তবুও তুমি তোমার অতীত নিয়ে, তোমার মা'কে নিয়ে কিছু জানতে চাও-আমি বলতে পারি।
সে আমার হাত ধরে বলল, না বাবা আমি কিছু আর জানতে চাই না। এটাই আমার সত্যিকারের সংসার। এখন যিনি আছেন তিনিই আমার আসল মা। আমি আমার অতীত নিয়ে কিস্যু জানতে চাই না।
বিশ্বাস কর সৌম্য ওর এ কথা শুনে ষোল বছর আমার বুকের মধ্যে চেপে বসা একটা পাথর নেমে গেল যেন।
আমি তখন বলেছিলাম- ওকি ওর মায়ের সাথে কথা বলতে চায়। সে চাইলে তার ছবিও দেখতে পারে।
মেয়ে খানিক্ষন চুপ করে থেকে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে বলেছে -না সে কিছুই চায় না।
- তা এলিনাকে কি বললি?
- ও একবার ওর সাথে কথা বলতে চেয়েছিল। আমি বললাম, মেয়ে-তো কথা বলতে চায় না। সে বিশ্বাস করেনা। সে আমারে কোনদিন বিশ্বাস করে নাই- শেষের কথাগুলো সগতোক্তির মত করে নিচুস্বরে বলল। গলা খাঁকড়ি দিয়ে বলল, শেষমেশ ওর একখানা ছবি দেখতে চেয়েছিল। তাও দেই নাই। এমনিতেই নাকি অসুস্থ! শুধু শুধু কষ্ট বাড়ানোর দরকার কি।
আমি ববি’র কথা শূনে নির্বাক হয়ে গেলাম! কিছু বলার বা জানার আগ্রহ রইল-না আর আমার।
* কবিতাঃ তারাপদ রায়
আগের পর্বের জন্যঃ Click This Link
পরের পর্বের জন্যঃ
প্রথম খন্ড প্রথম পর্বের জন্যঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:৫১