somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সেলিনা জাহান প্রিয়া
আমি সেলিনা জাহান প্রিয়া , জন্ম পুরান ঢাকা, নাজিরা বাজার , নানা বাড়িতে ।বাবার বাড়ি মুন্সী গঞ্জ , বড় হয়েছি ঢাকা ।স্বামীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ ।ভাল লাগে ঘুরে বেড়াতে , কবিতা , গল্প , উপন্যাস পড়তে অজানাকে জানতে । ধর্ম বিশ্বাস করি কিন্তু ধর্ম অন্ধ না ।

টাকার পেছনে সম্পর্ক: সমাজের ভুল এবং সঠিক সমাধান

০৫ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :






আজকের সমাজে সম্পর্কের মাপকাঠি যেন শুধুই টাকার পরিমাণে নির্ধারিত হচ্ছে। আমরা প্রেম, ভালবাসা, শ্রদ্ধা, এবং বিশ্বাসকে পেছনে ফেলে দিচ্ছি, আর সামনের সারিতে বসাচ্ছি অর্থ ও সম্পদকে। এই প্রবণতা কেবল নারীদের ক্ষেত্রেই নয়, পুরুষদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সম্পর্কের এই টাকার মাপকাঠি আমাদের জীবনে কি ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং কিভাবে আমরা এই ভুল থেকে বেরিয়ে আসতে পারি তা নিয়েই আলোচনা করব।

নারীর দৃষ্টিকোণ থেকে
নারীরা এখন অধিকাংশ সময় তাদের স্বামী নির্বাচনে টাকার গুরুত্বকে প্রাধান্য দিচ্ছে। তারা চান স্বামী যেন বড় চাকরি করে, ভালো ব্যবসায়ী হয়, বাড়ি-গাড়ি সব কিছু থাকে। কিন্তু তারা ভুলে যান, আসলে তারা স্বামীকে বিয়ে করছেন না, বরং তার সম্পদকে বিয়ে করছেন। যখন সম্পর্কের ভিত্তি অর্থের উপর দাঁড়ায়, তখন ভালবাসা ও শ্রদ্ধার জায়গা অনেকটা কমে যায়।

টাকা দেখে বিয়ে করলে অনেক সময় দেখা যায়, সম্পর্কের মধ্যে অসন্তোষ এবং অশান্তি চলে আসে। স্বামী যদি বাইরে গিয়ে পরকীয়া করে বা বাড়িতে এসে নির্যাতন করে, তখনও অনেক নারী টাকার লোভে সেই সম্পর্ক ধরে রাখেন। এতে তাদের জীবনে শান্তি আসে না, বরং কষ্ট বাড়ে।

পুরুষের দৃষ্টিকোণ থেকে
পুরুষের ক্ষেত্রেও একই প্রবণতা দেখা যায়। তারা চায় যে মেয়েটি বিয়ে করবেন তার পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হবে। মেয়ের বাবার ঢাকায় সাড়ে ৩ তলা বাড়ি আছে, নিউ মার্কেটে দোকান আছে, এমন পরিবারে বিয়ে করতে চায়। যৌতুক হিসেবে ২০ লাখ টাকা পাবে, এটাই তাদের মূল লক্ষ্য। কিন্তু এভাবে বিয়ে করলে সেই সম্পর্কের মধ্যে ভালবাসা, শ্রদ্ধা এবং বোঝাপড়া কেমন হবে তা তারা ভুলে যান।

টাকার জন্য বিয়ে করলে পরবর্তীতে সেই সম্পর্কের মধ্যে সমস্যা দেখা দেয়। তখন আমরা সেই সম্পর্ককে দোষারোপ করি, কিন্তু আসল সমস্যা হয় আমাদের ভুল সিদ্ধান্ত।

টাকার পেছনে সম্পর্কের সমস্যা
টাকা এবং সম্পদ আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু যখন সম্পর্কের ভিত্তি কেবল টাকার উপর নির্ভর করে, তখন সেই সম্পর্কের মধ্যে শান্তি, সুখ এবং ভালবাসা থাকে না। এই টাকার মাপকাঠি আমাদের জীবনের প্রকৃত সুখ ও শান্তি থেকে দূরে সরিয়ে নেয়।

টাকার পেছনে সম্পর্ক স্থাপনের কারণে সম্পর্কের মধ্যে অবিশ্বাস, অসন্তোষ এবং ঝগড়া বেড়ে যায়। আমাদের সমাজে সম্পর্কের এই টাকার মাপকাঠি কেবলমাত্র আমাদের নিজেদেরকেই ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

সম্পর্কের সঠিক মাপকাঠি
টাকা ছাড়া জীবন চলেনা, এটা সত্য। কিন্তু সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে টাকাকে প্রধান মাপকাঠি না বানিয়ে, আমরা মানুষটাকে দেখতে পারি। কাকে আমরা বিয়ে করতে যাচ্ছি, তার চরিত্র, মানসিকতা, ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধাবোধ কেমন, সেগুলো দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।

একজন মানুষকে বিয়ে করা উচিত যে আমাদেরকে ভালবাসবে, আমাদের খুশি করার চেষ্টা করবে, আমাদেরকে সম্মান করবে। টাকা আসবে এবং যাবে, কিন্তু প্রকৃত ভালবাসা এবং শ্রদ্ধা সম্পর্ককে মজবুত এবং স্থায়ী করে তোলে।

সম্পর্কের মধ্যে ছোট ছোট খুশির মুহূর্ত
সম্পর্কের মধ্যে ছোট ছোট খুশির মুহূর্ত খুঁজে নেওয়া উচিত। প্রতি রাতে নয়, অন্তত সাপ্তাহে ২-৩ বার বাড়ি এসে এক গুচ্ছ ফুল বা ছোট জুয়েলারি দিয়ে যে আপনাকে সারপ্রাইজ দিবে, তাকে বিয়ে করুন। যে আপনাকে ভালোবাসার কথা বলবে, আপনার খুশির জন্য সবকিছু করবে, তাকে বিয়ে করুন।

আমাদের সমাজে সম্পর্কের মধ্যে এই ছোট ছোট খুশির মুহূর্তগুলোই প্রকৃত শান্তি এবং সুখ নিয়ে আসবে।

উপসংহার
টাকার যুগে আমরা নিজেদের ভুলে যাচ্ছি, আর সেই ভুলের মাশুল দিতে দিতে আমরা শান্তি হারাচ্ছি। আমাদের সম্পর্কের ভিত্তি হওয়া উচিত ভালবাসা, শ্রদ্ধা এবং বোঝাপড়া। টাকা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু টাকার পেছনে সম্পর্ক গড়ে তোলা ঠিক নয়।

সম্পর্কের ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের উচিত মানুষটাকে গুরুত্ব দেয়া, তার চরিত্র এবং মানসিকতা দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া। এইভাবে আমরা প্রকৃত সুখ এবং শান্তি খুঁজে পাব। সমাজের ভুল ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে, সঠিক সম্পর্ক গড়তে হবে, যেখানে ভালবাসা এবং শ্রদ্ধা থাকবে, আর সেই সম্পর্কই আমাদের জীবনে প্রকৃত সুখ এবং শান্তি এনে দেবে।






সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১০:৫১
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:১৯

'পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......
[/সব

আমার এক মামা ততকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জব করতেন হোটেলের শুরু থেকেই। সেই মামা মাঝেমধ্যে আমাদের জন্য হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে মুখরোচক কেক, পেস্ট্রি ছাড়াও বিভিন্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তার চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না, তবুও

লিখেছেন খাঁজা বাবা, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৩২



শেখ হাসিনার নাকি বায়ক্তিগত চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না। শেখ মুজিবের বেয়ে নাকি দুর্নীতি করতে পারে না। সে এবং তার পরিবার যে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করতে পারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে সামু কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬

ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত ৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দলের পতন ঘটানো হয়। এটা আমাদের একটা জাতীয় গৌরবের দিন। এটা নিয়ে কারও সন্দেও থাকলে মন্তব্যে লিখতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জ্বীনভুতে বিশ্বাসী বাংগালী ও ঢাকায় ৫০ হাজার ভারতীয় একাউন্টটেন্ট

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৩




ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর ব্লগে লিখেছিলেন যে, উনার ভগ্নিপতিকে জ্বীনেরা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো; ২ সপ্তাহ পরে ভগ্নিপতিকে দিয়ে গিয়েছে; এই লোক, সামুর কাছে আমার বিরুদ্ধে ও অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেছুর নিজস্ব একটি জ্বীন ছিলো!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:২৪



আমাদের গ্রামের খুবই সুশ্রী ১টি কিশোরী মেয়েকে জংগলের মাঝে একা পেয়ে, প্রতিবেশী একটা ছেলে জড়ায়ে ধরেছিলো; মেয়েটি ঘটনাকে সঠিকভাবে সামলায়ে, নিজের মাঝে রেখে দিয়েছিলো, এটি সেই কাহিনী।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×