একটা মাইকের সাউন্ড মেশিন, মাইক্রোফোন, আইপিএস, দেয়াল ঘড়ি, কয়েকটা ফ্যান, দান বাক্স - দেশের বেশিরভাগ মসজিদের এই হচ্ছে মোটামুটি সম্বল । সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে সংখ্যাগুরু দাবি করা মুসলমানের মসজিদের এই জিনিসগুলাও নিরাপদ না । দেশে মোটামুটি শতভাগ মসজিদের মূল অংশ আপনি নামাজের টাইম ছাড়া খোলা পাবেন না । বেশিরভাগ মসজিদের বারান্দাও অনেক সময় বন্ধ থাকে । এমন ও হয়েছে বারান্দার দরজাও বন্ধ থাকায় অজু করতে পারিনি দেরীতে নামাজ পড়তে যাবার কারনে ।
মসজিদ কেন বন্ধ থাকবে ! এই জিনিস টা আমার খুব গায়ে লাগত । আমি অনেক জায়গায় জিজ্ঞেস ও করেছি । উত্তর ছিল এই রকম- জিনিস পত্র চুরি হয়ে যায়, বিশেষ করে মাইকের মেশিনারি, দান বাক্সের টাকা । আরেকটি কারন ছিল অনেক লোক মসজিদে ঘুমায় ! এই ব্যাপারটা আমার কাছে গ্রহনযোগ্য মনে হয়নি, মসজিদে ঘুমালে তোমার সমস্যা কি ! তবে বেশিরভাগ মুয়াজ্জিনের ভাষ্যমতে নিরাপত্তাই প্রধান কারন এই নামাজ শেষে মূল অংশ তালাবদ্ধ করে রাখার, আর রাতে পুরো মসজিদ ই ।
প্রতিটা মসজিদেই মোটামুটি মুয়াজ্জিন কিংবা ইমামের কামড়া ও থাকে মসজিদ লাগোয়া, ফলে নিরাপত্তার একটা প্রাথমিক দায়িত্বও তাদের উপর বর্তায় । আর হাল জমানায় শহরের বেশির ভাগ মসজিদে মোটামুটি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়ে গেছে অলরেডি ।
স্বাভাবিক ভাবেই আমরা ভাবতে পারি মসজিদে কেন এত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থার দরকার হবে !!!
বাস্তবতা হচ্ছে, এটা লাগবেই এই জমানায় , আর কোন উপায় নেই । ধর্ম কে ব্যবহার করে অধর্ম করার লোকের সংখ্যাও ক্রমাগত বেড়ে চলেছে , কাজেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই ।
দূর্গাপূজার সময় কাছে আসতে থাকায় এখন মন্দিরে মূর্তি ভাংগার নিউজ প্রায়ই দেখা যায় । আমার আইডিয়া নেই সারা বছর মন্দিরগুলাতে নিরাপত্তার কি ব্যবস্থা থাকে । যেহেতু আমাদের প্রশাসন যন্ত্র এর যথাযথ নিরাপত্তা দিতে পারছেনা , আমার মনে হয় মূর্তি ভাংগার সুযোগ যাতে কেউ না পায় , মন্দির কমিটি গুলোর সেই ব্যবস্থা আরো আগে থেকেই নেয়া দরকার ছিল ।
নিরাপত্তা হুমকি যেহেতু আছে, কাজেই মিনিমাম পাহাড়ার ব্যবস্থা না রাখাটা খুবই দৃষ্টিকটু । ভাল মানের সিসি ক্যামেরাও এখন মোটামুটি স্বল্প খরচেই লাগানো যায় । পূজার সময় এগিয়ে আসছে, এখনি এই ব্যবস্থাগুলো নেয়া দরকার । আমার মসজিদে কেউ হামলা করলে আমাদের যেমন তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় মনের মাঝে, মন্দির এ আঘাত করলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ও তার চেয়ে কোন অংশে কম হবার কোন কারন নেই । আপনারা দয়া করে বেসিক নিরাপত্তা টুকু নিশ্চিত করুন ।
দেশের বেশিরভাগ মানুষই ধর্ম কেন্দ্রীক কোন ধরনের ঝামেলা পছন্দ না করলেও, ধর্ম ইস্যুতে মানুষকে উসকে দেয়া সবচেয়ে সোজা । এই অধর্মের কাজ করার জন্য ও নানা রকম ততপরতা চলছে চারদিকে ।
নিরাপত্তার প্রাথমিক দায়িত্বটুকু যার যার প্রয়োজনে নিজেকেই নিতে হবে । প্রথমিক আক্রমন ঠেকানোর ব্যবস্থা থাকলে , হামলাকারীদের সাহস ও কমে যাবে এই কাজ করতে আসতে ।