somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র" আসল উদ্দেশ্য কি ?

১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জব্বার চাচা গ্রামের সহজ সরল একজন সাধারন মানুষ। দরিদ্রতা যেমন জব্বার চাচার জীবন সঙ্গী ছিল তেমনি একজন পুজিবাদী বিত্তবান ছিল তার প্রতিবেশী। তবে জব্বার চাচার প্রতিবেশী বিপদে আপদে জব্বার চাচাকে বেশ সহযোগীতা করতো। অনেক সময় জব্বার চাচার ঘরে যখন খাবার থাকতো না তখন তার প্রতিবেশীর ভাতের মার কিংবা খাবারের উচ্ছিষ্ট খেয়ে তার ছেলে সন্তানদের জীবন বাঁচতো। আবার কখনও বা জব্বার চাচার প্রতিবেশী পঁচা গম বার্লি ডাষ্টবিনে ফেলে দেওয়ার পরিবর্তে জব্বার চাচার পরিবার কে দিয়ে বিরাট উপকার করতো। এরকম বিভিন্ন ভাবে জব্বার চারার পরিবার তার প্রতিবেশী পরিবারের কাছ থেকে সহযোগীতে পেয়ে আসছিল। একদিন রাতের বেলা জব্বার চাচা কাজ শেষে বাড়িতে এসে দেখলো তার ছেলেমেয়ে সবাই শীতে ঠক ঠক করে কাঁপছে। ঘরে কোন আলো নেই। পাঠকাঠির ভাংগা দেওয়াল আর মাঝে মাঝে খসে পড়া পঁচা গোলপাতার ছাওনির ফাঁকা দিয়ে হু হু করে শীতল বাতাস ঢুকছে। জব্বার চাচা আর সহ্য করতে পারছেন না, হঠাৎ তিনি চিন্তা করলেন উঠোনে একটু আগুন জালিয়ে তাপ নিয়ে শীত নিবারন করবেন। কিন্তু আগুন জালাতে তো দিয়াশলাইয় লাগবে, আরো লাগবে খড় কুঁটো। খড় কূঁটোর তার অভাব নেই তার কেবল দিয়াশলাইয়ের জন্য প্রতিবেশীর সাহায্য চায়। জব্বার চাচা প্রতিবেশীর দুয়ারে ছুটে গেলেন আর তার দরদি প্রতিবেশীও সগৌরবে এগিয়ে এলেন সাহায্য করতে এবং জালিয়ে দিলেন জব্বার চাচার ঘর দোর, বাঁশের বেড়া, মাঁচা বসতবাড়ী। জব্বার চাচা আর তার সন্তানেরা উঠনে শুয়ে বসে আগুনের তাপে দারুন আরামে রাত কাটালেন আর প্রতিবেশীর মঙ্গল কামনা করলেন। জব্বার চাচার প্রতিবেশীও আগুনের তাপে দারুন আরামে রাত কাটালো । কিন্তু সকাল বেলা যখন সূর্য উঠে শীতকে বিদায় দিলো তখন জব্বার চাচার বসতভীটায় কেবল ছায় আর ছায় ছাড়া আর কিছুই থাকল না। কাঁদতে কাঁদতে জব্বার চাচা প্রতিবেশীকে জিজ্ঞেস করলো আপনি নিজের ঘর থাকতে কেনো আমার ঘরে আগুন দিলেন ? প্রতিবেশী উত্তর দিলান আমার ঘর তো ইটের দালান সেখানে আগুন দেওয়া যায় না ।
এই গল্পটার মতো আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের অনেক সাহায্য সহোযগীতা করে থাকেন যা প্রসংসনীয় । কিন্তু সুন্দরবনের পাশে বাগেরহাটের রামপালে বহু বিতর্কিত কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে স্থাপন অনেক টা আমার এই গল্পের সাথে মিলে যায়।
ভারতীয় আইন অনুসারে সেদেশে সুন্দরবনের ২৪ কিলোমিটারের মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করার সুযোগ নেই, কারন তারা নিজের দেশ ও দেশের সম্পদ ও সম্পত্তিতে বেশ সতর্ক ও সার্থপর জাতি। কেবল আমরা বাংলাদেশীরা যে ডালে বসে আছি সেই ডালই কাটছি কিন্তু যতক্ষন না মাটিতে ছিটকে পড়ছি ততক্ষন পর্যন্ত বুঝতে পারিনা আসলে কি করছি। ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে আর বাকিটা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিস্তৃত। এই হিসেব অনুযায়ী মোট সুন্দরবনের বেশীর ভাগ অংশের মালিক আমরা বাংলাদেশীরা। কিছুদিন আগে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় বাংলাদেশ সফরে এসে বলেছিলেন ভারত-বাংলাদেশকে যৌথভাবে সুন্দরবন রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে। আজ তার ই ধারাবাহিকতায় নিজের দেশে আইন করে সুন্দরবন রক্ষা করছেন আর আমাদের দেশের সুন্দরবনের বিরাট অংশকে নিজেদের স্বার্থে ধংস করে বাংলাদেশ সরকারের সাথে আতাত করে সুন্দরবনের পাশে বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের স্থাপন করতে যাচ্ছেন। আর আমরা এখন ও চুপ করে আছি এবং ততক্ষন চুপুকরে থাকবো যতক্ষন না সুন্দরবনের সবটুকুন ছায় হয়ে যায়।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আব তেরা ক্যায়া হোগা কালিয়া!

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৩ শে মে, ২০২৫ সকাল ১০:৪১

আব তেরা ক্যায়া হোগা কালিয়া!"


অনেকেই আপত্তি জানাচ্ছেন, কেন সেনাপ্রধান নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুললেন? কিন্তু বিষয়টা একটু ভেবে দেখা দরকার, তিনি কি কোনো টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বা জনসমক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন? না।
তিনি শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ডায়েরী- ১৫৫

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৩ শে মে, ২০২৫ দুপুর ১২:০০



১। একজন নামকরা ডাক্তার আছেন।
তার সিরিয়াল পেতে দুই-তিন মাস সময় লাগে। এই ডাক্তার আমার মাকে দেখানো হবে। কিন্তু সিরিয়াল পাচ্ছিলাম না। শেষে একজন বললেন, যে ব্যাক্তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওরা সাতজন - বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে প্রধান অন্তরায় !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে মে, ২০২৫ দুপুর ১:২৬


সংকট ঘনীভূত; ড. ইউনূস কে ঘিরে একটি চক্র সক্রিয়-শিরোনামে মানবজমিন পত্রিকা একটা এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট করেছে। ড.ইউনূস কে ব্যবহার করে ইন্টেরিম সরকারের ভিতরে চারজন ও বাইরে তিনজন এক... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি - জুলাই বিপ্লবের বিশ্বাসঘাতক

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৩ শে মে, ২০২৫ বিকাল ৩:০১



ডক্টর ইউনুস এই দেশের ক্ষমতায় আর থাকতে চাচ্ছেন না। তবে এর দায় ভারতের নয়, পলাতক স্বৈরাচারী আওয়ামিলীগেরও নয়। এই দায় সম্পুর্নভাবে এই দেশের বৃহত্তম রাজনৈ্তিক দল বিএনপির। অথচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশের দরীদ্র সমাজ এখনো ফুটপাতে ঘুমাচ্ছেন

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২৪ শে মে, ২০২৫ রাত ১:৪৪

বেরিয়েছিলাম উত্তরা যাওয়ার উদ্দেশ্যে। মানিক মানিক মিয়া এভিনিউ পার হওয়ার সময়ে, খামারবাড়ির সামনে গোল চত্বরে হঠাৎ চোখ গেলো। চত্বর ঘিরে সারি সারি মানুষ শুয়ে আছেন। গত সরকারের আমলে আমার এলাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×