পাখির পালকে রোদ্দুর সুতো পুরে নিয়ে
আমার মা কাঁথা সেলাই করতেন
ডালিমফুল আর পাতার ছায়ারা নেমে আসতো মিহিন নকশায়,
সুতোয় সুতোয় সাঁতার খেলতো মেঘমাছ
একদিন আমি কাঁথার উপরে এক্কাদোক্কা এঁকে দিয়ে
চারপাশ দৌড়ে এসে বললাম-
দেখো মা, আমি কত বড় হয়েছি!
মা হাসলেন। মা'র হাসিতে ভরে উঠল আমাদের মাছের পুকুর
ধানের উঠোনে পায়রার নুপূর বেজে বেজে
উড়ে গেল হেমন্তখেয়ালে-
আর বারান্দার দড়িতে ঝুলে রইল ছয়রঙা শাড়িটা
ততোদিনে আমি শৈশব ভেঙে জেগে উঠেছি
একমাঠ রাখালের মত
কেবল খুঁজেছি হাসির চামচ, জলপাই ঘ্রাণ
বোয়েম পুরা মৌয়ের আচার...
আর খুঁজেছি মায়ের সেই রোদ্দুর কাঁথা;
যার চারপাশে একপাক দৌড়ে এসে আবার বলব-
দেখো মা আমি তোমার নাকফুলটার চেয়েও কত
ছোট হয়ে আছি!
আমার মা এখন সাদা বেডের উপর শুয়ে অসুখ সেলাই করেন;
সুতোয় সুতোয় সাঁতার খেলে ওষুধের ঘ্রাণ
(প্রথম কাব্যগ্রন্থ "তৃতীয় চোখের কোরাস" থেকে)
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৩