পূজার দিনে নির্বাচন প্রতিহত করবার এই আন্দোলনে হিন্দু থেকে শুরু করে মুসলিম সবার একপ্রকার সমর্থনও রয়েছে এমন কি ছাত্রদল-ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে কথিত শিবির এজেন্ট(!) ঢাবির নির্বাচিত ভিপি নূর'রাও পূজার দিনে নির্বাচন আয়োজনের বিরুদ্ধে সবাই এক হয়েছে। তবে আওয়ামীলীগ সেক্রেটারি ওবায়দুল কাদের আদালতের রায় মেনে নিতে শিক্ষার্থীদের আহব্বান জানিয়েছে আর নির্বাচন কমিশন এখন আদালতের রায়ের কথা বলে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের সম্ভাবনা সরাসরি বাতিল করে দিয়েছে।
এমন একটি অবস্থায় ঢাবির কিছু শিক্ষার্থী অনশন থেকে শুরু করে শাহবাগের রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে। মনে রাখা প্রয়োজন শাহবাগের আশেপাশে ঢাকা মেডিকেল, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল ও বার্ডেমের মত দেশের সব থেকে প্রসিদ্ধ ৩ টি হসপিটাল রয়েছে যেখানে অসংখ্য রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন।
যাই হোক এবার মূল প্রসঙ্গে আসি গত দুই দিন আগে ঢাবি ছাত্রদের কর্মসূচি ছিল নির্বাচন কমিশন ঘেরাও তবে পুলিশি বাঁধায় তারা ব্যর্থ হলে শাহবাগ অবরোধ করে আর সেই অবরোধে কয়েক ঘণ্টা একজন প্রবাসী ব্যবসায়ী তার গর্ভবতী স্ত্রী'কে নিয়ে আটকে থাকেন যিনি শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করেন তাদের গাড়িটি ছেড়ে দিতে যেন তার স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেন কিন্তু শিক্ষার্থীরা তার অনুরোধ না রেখে বরং তার সাথে তর্কে লিপ্ত হয় আর ওই মুহূর্তে সেই প্রবাসী ব্যবসায়ী তার ধর্য হারিয়ে এক শিক্ষার্থীকে তার লাইসেন্স করা অস্ত্রের ভয় দেখান সাথে সাথেই সব ছাত্ররা মিলে ওই ব্যবসায়ীকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে আর সেই মুহূর্তে ওই ব্যবসায়ীর গর্ভবতী স্ত্রী অসহায় স্বামীর জীবন রক্ষার চেষ্টা চালান। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ওই প্রবাসীর জীবন রক্ষা পায়।
যাই হোক আমি নিজেও শিক্ষার্থী হিসেবে বেশ কিছু আন্দোলন করেছি। নিরাপদ সড়কের দাবীতে আন্দোলন, ভ্যাট ও কোটা বিরোধী আন্দোলন তার মধ্যে অন্যতম। সেসব আন্দোলনের সময়ে সবাই চেষ্টা করেছি যেন অসুস্থ কোন মানুষের সমস্যা না হয়, হজ্ব যাত্রীদের, বাস ছেড়ে দেওয়া, প্রবাসী যাত্রীদের গাড়ি ছেড়ে দেওয়া এসব বিষয়ে আমাদের সবার মধ্যে একপ্রকার ঐক্যমত ছিল ফলে দেশের সব মানুষ আমাদের আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। তবে এবারের আন্দোলনে একজন গর্ভবতী মহিলাকে হাসপাতালে যেতে বাধা দেওয়ার মত ঘটনা কিন্তু ঢাবির শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ আন্দোলনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে ধরলাম ওই ব্যক্তি অস্ত্র বের করে ভয় দেখানর জন্যই মার খেয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ভাগ্যগুনে ফিরে এসেছেন। তার অস্ত্র বের করা যেমন ঠিক হয়নাই তেমনি গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টাকে কোন ভাবেই সমর্থন করা যায় না মনে রাখবেন তিনি কিন্তু কোন গুলি চালান নাই। মানবের থেকে বড় ধর্ম আর কিছুই হতে পারে না। সুতরাং মানুষকে কষ্ট দিয়ে ধর্মের দোহাই দেওয়া কোন মতেই সমর্থনযোগ্য নয়। আইএস, আল-কায়েদা থেকে আরএসএস এরা ধর্মের নামে মানবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় কিন্তু আমরা এদের সন্ত্রাসী বলছি। পরিশেষে প্রার্থনা সৃষ্টিকর্তা সবাইকে সঠিক জ্ঞান দান করুন। ধর্মের নামে বিভেদ বা ধর্মীয় আচারন পালনে বাধা প্রদান কোনটাই কাম্য নয়।