গত ২০০৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ৬ দিনব্যাপী ভারত সফরকালে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদকে ৬টি উচ্চমানের ঘোড়া উপহার দেন সে দেশের সেনাপ্রধান জেনারেল দীপক কাপুর। বলা হয়েছে, এধরণের ঘোড়া অন্য কোন দেশকে প্রদানের ঘটনা এই প্রথম। আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর অশ্বারোহী বাহিনী ও ক্রীড়ার উন্নয়নে এই ঘোড়া কাজে লাগবে। ভারতীয় পক্ষ থেকে এই সফর সম্পর্কে বলা হয়েছিল, ‘বাংলাদেশের মাটিতে ভারত-বিরোধী বিদ্রোহীদের দমনে এই সফর উভয় দেশের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।' তবে জেনারেল মইনের এই সফরের প্রধান লক্ষ্য ছিল দু'দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার করা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সেই সফর কেবল কোন রুটিন ওয়ার্ক ছিলনা। তা ছিল বিশেষ লক্ষ্য অর্জন ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ। এই সফর যতোটা না জাতীয় স্বার্থের সহায়ক ছিল, তার চেয়ে বেশী ছিল মইন উ আহমেদের ব্যক্তিগত এজেন্ডার বাস্তবায়ন। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর সঙ্গে এই সফরের সম্পর্কও ছিলনা এবং তা ছিল মূলতঃ রাজনৈতিক বলেও সূত্রে প্রকাশ। এই সফরের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে একের পর এক ঘটনাবলী সংঘটিত হতে থাকে। অনেকেই মনে করছেন, জেনারেল মইনের সেই প্রতীকী ছয় ঘোড়ার মধ্য দিয়ে ছয়টি এজেন্ডার বাস্তবায়ন ঘটে চলেছে। কার্যত সেগুলোই এখন বাংলাদেশকে দাবড়ে বেড়াচ্ছে।
পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, জেনারেল মইনের প্রথম ঘোড়া প্রতীকের প্রথম এজেন্ডা ছিল ভারতীয় মিত্র ও তাদের স্বার্থের নির্ভরযোগ্য পক্ষ হিসেবে বহুল পরিচিত রাজনৈতিক জোটকে যে কোন কৌশলে ক্ষমতায় নিয়ে আসা। এই লক্ষ্য অর্জনে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। জাতিসংঘের চিঠি জাল করে দেশে জরুরি অবস্থা জারির পরিস্থিতি তৈরী করা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিকাঠামোয় ইচ্ছেমত রদবদল ঘটানো, একটি পছন্দের নির্বাচন কমিশন গঠন করা, প্রশাসনকে সেই ঘরানার লোকদের দিয়ে সজ্জিত করা প্রভৃতি কর্মকান্ড খুবই সুচারুরূপে সম্পাদন করা হয়। বলা বাহুল্য, সেই পরিকল্পনা সফল হয়েছে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০০৬ সালে দেশে একটা নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করে ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টি করে মহাজোট সেই নির্বাচন হতে দেয়নি। একটি ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্যই সেই নির্বাচন হয়নি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সেই ষড়যন্ত্রই বাস্তবায়িত হয়েছে বলে বিরোধী জোট দাবী করছে। মহাজোটের অন্যতম নেতা জেনারেল এরশাদ বলেছেন, সেনাবাহিনী সহযোগিতা না করলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারতো না। আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল বলেছেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রীসভার মধ্যেই ‘গোয়েন্দা সংস্থার পেইড এজেন্ট' রয়েছে। অপর একজন মন্ত্রী সেনাবাহিনী প্রধানকে ‘মহামানব' বলেছেন। এ থেকে প্রমাণ হয় যে, ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচনের মাধ্যমেই এই জোটকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। আর ক্ষমতায় আরোহণ মানেই বিশেষ দেশের এজেন্ডাসমূহের বাস্তবায়নের অবাধ লাইসেন্স প্রাপ্তি।
দ্বিতীয় টা©র্গট, দেশ থেকে ইসলামী রাজনীতি ধ্বংস ও দেশপ্রেমিক নেতৃবৃন্দকে রাজনীতির মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়া। দেশের ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতিকে উচ্ছেদ করা এবং ভারতীয় আদর্শ ধর্মনিরক্ষতাবাদ চালুর পথ সুগম করা। এই লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ব্যাপক তৎপরতা চলছে। যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে ইসলামী ধারার শীর্ষ নেতৃত্বকে টার্গেট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা বা তদন্তের আগেই মন্ত্রীদের বক্তব্য-বিবৃতিতে ও সরকার সমর্থক বিভিন্ন পার্শ্ব সংগঠন ও মিডিয়ার মাধ্যমে রায় ঘোষণা করা হচ্ছে। এমনকি কোন কোন মন্ত্রী ইসলামী নেতৃত্বকে ফাঁসিতেও ঝুলিয়ে দিচ্ছেন। এরফলে জনসাধারণের একটি অংশ মনে করতে শুরু করেছে যে, একটি রাজনৈতিক দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করতেই এই নীল নক্সা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে, দেশের প্রায় সর্বত্র ইসলামপন্থীদের সভা-সমাবেশ, মিছিল-র্যা লি প্রভৃতিতে বাধা দেয়া শুধু নয়- ১৪৪ ধারা জারি করে সরকারী উদ্যোগেই তা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকার সমর্থক সংগঠনের হাতে প্রায় প্রতিনিয়ত ছাত্র হত্যা কিংবা নির্যাতনের শিকার হবার ঘটনা ঘটলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিতর্কিত হত্যাকান্ডকে পুঁজি করে রাজশাহীসহ সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের উপর চলছে টানা উৎপীড়ন। একটি বৈধ রাজনৈতিক দলের রাজপথে কর্মসূচি পালনের অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে। অপরপক্ষে, দেশে ইসলামী শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এমনকি তাফসীর ও ওয়াজ মাহফিল পর্যন্ত হতে দেয়া হচ্ছেনা। এ বিষয়গুলো খুবই সুপরিকল্পিত বলে পর্যবেক্ষকদের অভিমত। বাংলাদেশে তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ প্রতিষ্ঠা করা এবং এর পথের প্রধান প্রতিবন্ধক চিহ্নিত করে ইসলামী রাজনীতি এবং শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের শেকড় কেটে ফেলার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আর ভারতীয় এই নীল নক্সা বাস্তবায়নের পথে উল্লেখযোগ্য বাধা অপসারণ করতেই ইসলামী নেতৃত্বকে অপসারণের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এই বিষয়টি ভারতীয় মহলের ইঙ্গিতেই প্রথম সামনে আনেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদ। একটি কেয়ারটেকার সরকারের আমলে এবং একজন আর্মি অফিসার হওয়া সত্বেও তিনি ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়া উচিত' বলে মন্তব্য করেন নজিরবিহীনভাবে। অতঃপর তা রাজনৈতিক দলের হাতে তুরুপের তাস হিসেবে চলে আসে। তিনি ভারতের কাছ থেকে যে ছয়টি ঘোড়া উপহার হিসেবে আনেন, এগুলোর একটির প্রতীক হলো এই ইস্যুর বাস্তবায়ন বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
তৃতীয়তঃ সেনাবাহিনীসহ দেশের সীমান্ত ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল করে ফেলা এবং প্রশাসনকে পঙ্গু করে দিয়ে সর্বত্র বিশেষ দেশের এজেন্টদের বসানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর এ কাজ সফল করতেই উচ্চ পর্যায়ের এজেন্টদের ব্যবহার করে বিডিআর বিদ্রোহ সংঘটিত করা হয়েছে। এজন্য মহাজোট সরকারকে সরাসরি দায়ী বলে উল্লেখ করা না গেলেও এই ঘটনা যে বিশেষ দেশের স্বার্থের পক্ষে গেছে এ বিষয়ে অনেকেই নিশ্চিত। পিলখানায় বাংলাদেশ তথা দুনিয়ার নজিরবিহীন সেনা কর্মকর্তা হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর ৫৮ জন অফিসারকে একযোগে হত্যা করে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে ফেলা ছিল সুপরিকল্পিত। একই সঙ্গে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে তছনছ করে দিতে বিডিআর-এর অভ্যন্তরীণ শৃক্মখলা ও কমান্ড ধ্বংস করে দেশের ভেতরে বিপুল অনুপ্রবেশ ঘটানোই ছিল অন্যতম লক্ষ্য। বিদ্রোহের ১৭ মাস পরেও সীমান্ত স্বাভাবিক হয়নি। বিএসএফ-এর নিত্য হত্যাকান্ড ও তান্ডব চলছে। কিন্তু বাংলাদেশ তার প্রতিবাদ করারও যেন সাহস হারিয়ে ফেলেছে। সীমান্তে ভারতের একতরফা দাপট ও আধিপত্য চলছে। কোন কোন সীমান্তে বাংলাদেশের ভূখন্ডকে ‘বিতর্কিত' আখ্যা দিয়ে নিজেদের দখলে নিতে চাচ্ছে। বিডিআর বিদ্রোহের ফলে যে ক'টি প্রশ্ন সামনে এসে দাঁড়িয়েছে তা হলো, এই আর্মি-বিডিআর সংঘাতের পেছনে কোন অদৃশ্য শক্তি কাজ করেছে কি? দেশের সীমান্ত, ভূমি তথা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার কাজে নিয়োজিত গর্বিত ও ঐতিহ্যবাহী এই দু'টি বাহিনীকে ধ্বংস করে কারা ফায়দা উঠাতে চায়? দেশের সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বলে পরিচিত বিডিআর-এর শীর্ষ কমান্ডকে হত্যা করে সীমান্তের কারা লাভবান হতে চায়? পদুয়া ও বড়াইবাড়ির ২০০১ সালের সীমান্ত সংঘর্ষের ঘটনার প্রতিশোধ এতোদিন পরে নেয়া হলো কিনা? এতো বিপুল সংখ্যক আর্মি অফিসারকে হত্যা করে মাঠ পর্যায়ে সেনাবাহিনীকে দুর্বল করে ফেলার দুরভিসন্ধি কাজ করেছে কিনা? এসব প্রশ্নের জবাব পাবার উপরেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসা নির্ভর করছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
চতুর্থতঃ বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারত ট্রানজিট-করিডোর আদায় এবং এদেশের বন্দরসমূহ ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে চাচ্ছে বলেও মনে করা হচ্ছে। এই লক্ষ্যে ভারত দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের সুবিধাদী আদায় করতে উঠে পড়ে লেগেছে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বাংলাদেশের সঙ্গে করা চুক্তিগুলো বাস্তবায়নে তাগিদ দেয়ার ঘটনা থেকে পর্যবেক্ষকমহল সেই বিষয়টি উপলব্ধি করছেন। বাংলাদেশকে বিপুল আর্থিক ক্ষতি ও সার্বভৌমত্বের পীড়ন স্বীকার করে হলেও ভারতের চাহিদা পূরণ অপরিহার্য বলে আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। ভারতকে ট্রানজিটের নামে করিডোর দেয়ার বিষয়টি জিইয়ে রাখার পাশাপাশি এখন এশিয়ান হাইওয়েকেও করিডোর হিসেবে ব্যবহার করতে দেয়ার আরেক চক্রান্ত শুরু হয়েছে। কেউ কেউ এশিয়ান হাইওয়েকে ‘ইন্ডিয়ান রোড' হিসেবে অভিহিত করেছেন। এশিয়ান হাইওয়ে বা এই রুটকে যেভাবে অনুমোদন দেয়া হচ্ছে তাতে বিশিষ্টজনেরা মনে করছেন, ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের পাকাপোক্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এশিয়ান হাইওয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশকে ভারতীয়করণ করার আরেকটি কৌশল হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর ভারতকে ব্যবহার করতে দেয়া। ইতোপূর্বে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেছিলেন, চট্টগ্রাম বন্দর ভারতের ব্যবহারের জন্য চাই-ই। যতদিন চট্টগ্রাম বন্দর ভারতকে ব্যবহার করতে দেয়া না হবে ততদিন বাংলাদেশের পেছনে ভারত লেগে থাকবে। একই মহল থেকে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, চট্টগ্রাম বন্দরকে আঞ্চলিক বন্দর হিসেবে গড়ে তুলে একে ভারত, মিয়ানমার, চীন ও নেপালকে ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়ার জন্য। কিন্তু এটা সবার জানা যে, চট্টগ্রাম বন্দর ভারতই ব্যবহারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। চীন, মিয়ানমার ও নেপাল এভাবে লাগেনি। তাছাড়া ভারত নেপালকে করিডোর না দিলে নেপাল কখনোই চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের সুযোগ পাবে না। বাংলাদেশের কাছ থেকে ট্রানজিট-করিডোর পাওয়ার কৌশল হিসেবে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আই কে গুজরালের আমলে নেপালকে কাকরভিটা-বাংলাবান্ধা পর্যন্ত ট্রানজিট দিয়েছিল বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য করতে। কিন্তু সেই ট্রানজিটের স্থায়িত্ব বেশীক্ষণ হয়নি। ভারতীয় সৈন্যের পাহারায় নেপাল মাত্র একটি পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাবান্ধায় আনতে পেরেছিল। এই যেখানে ভারতের চরিত্র, সে ক্ষেত্রে বলা যায় যে, বিশ্বব্যাংক চট্টগ্রাম বন্দর নেপালকেও ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়ার কথা বলেছে একটি কৌশল হিসেবে। এই কৌশল কি তা যে কেউ বুঝতে পারে। ভারত যদি নেপালকে করিডোর না দেয় তাহলে নেপাল চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করবে কিভাবে? বলা যায় ভারতকে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে দেয়ার সরাসরি সুপারিশ না তুলে কৌশল হিসেবে চীন, মিয়ানমার ও নেপালকে টেনে আনা হয়েছে।
পঞ্চমতঃ দেশের গণমাধ্যমকে যথাসম্ভব ভারতবিরোধিতার কবলমুক্ত রাখা। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত সংবাদ পর্যালোচনা ও টক-শোগুলো সাধারণ মানুষকে বেশ প্রভাবিত করে। দেশের মানুষ অন্ধ ভারত বিরোধী যেমন নয়, তেমনি বাংলাদেশের একান্ত নিজস্ব স্বার্থবিরোধী কোন বিষয়ই চোখ বন্ধ করে মেনে নিতে রাজি নয়। অপরপক্ষে, ভারতীয় মিডিয়া একতরফা বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা অব্যাহত রাখলেও তার কোন প্রতিবাদ না করা এই এজেন্ডার অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ের অংশ হিসেবেই এই কাজ করা হচ্ছে। বাংলাদেশে ভারতীয় বিদ্রোহীদের কোন ঘাঁটি কোনকালে না থাকলেও ভারতীয় মিডিয়া তার কথা অব্যাহতভাবে প্রচার করে আসছে। এটি সেই লড়াইয়েরই অংশ বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।
ষষ্ঠ ঘোড়ার এজেন্ডা অনুযায়ী, দেশের অর্থ ও বাণিজ্য ব্যবস্থাকে ভারত-নির্ভর করে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে বিভিন্নভাবে ভারতীয় পণ্যের ডাম্পিং করা হচ্ছে। বাংলাদেশের পণ্য ভারতে ঢোকার সুযোগ-সুবিধা না পেলেও ভারতীয় পণ্য বৈধ-অবৈধ উপায়ে বাংলাদেশের বাজার দখল করে চলেছে। বাংলাদেশে এমন অবস্থা সৃষ্টি করা হচ্ছে যাতে এখানে প্রকৃত ব্যবসায়ী তৈরী হবার পরিবর্তে ভারতের কমিশন এজেন্টই কেবল পয়দা হয়। এখানকার সম্ভাবনাময় শিল্পসমূহকে নানা কৌশলে ধ্বংসের প্রক্রিয়া চলছে। আর সে শূণ্য স্থান পূরণ করছে ভারতীয় পণ্য। নিম্নমানের ভারতীয় বীজ, রাসায়নিক সার, কীটনাশক প্রভৃতি অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে এখানকার কৃষিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে- যাতে এই কৃষি ব্যবস্থা একান্তই ভারত-নির্ভর হয়ে উঠতে পারে।
ই ছয় ঘোড়ার ছয় এজেন্ডার বাস্তবায়ন সম্পূর্ণ হলে বাংলাদেশ একটি তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পথে কোন বাধা থাকবেনা। এ বিষয়ে দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলসমূহ এবং জনসাধারণকে সচেতন ভূমিকা গ্রহণের কোন বিকল্প নেই ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১০ রাত ৮:২০