বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতির সাক্ষাতকার প্রচারিত হয়েছে রেড়িও তেহরানে, নিচে তা হুবহু উদ্বৃত করা হলোঃ
রেডিও তেহরান : দৈনিক নয়া দিগন্তে প্রধান শিরোনাম করা হয়েছে, গার্মেন্ট শিল্পে ভারতের নিয়ন্ত্রণ এবং খবরের ভেতরে বলা হয়েছে "অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এ সব কারখানা এখন আর বাংলাদেশী মালিকানায় নেই। ভারতীয়রা কিনে নিয়েছে বাংলাদেশের সেরা কারখানাগুলো। গত এক বছরে এ ধরনের অর্ধ শতাধিক কারখানার মালিক হয়েছেন তারা। কিনে নেয়া কারখানগুলোতে উন্নতমানের মেশিন বসিয়ে ছাটাই করা হচ্ছে নব্বই শতাংশ শ্রমিক। আর কারখানা বিক্রি করতে বাধ্য করার জন্য অহেতুক অজুহাতে উপর্যুপরি হামলা ও ভাঙচুরের কৌশল বেছে নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে থাকা বিশেষ ব্যক্তিরা। ফলে, কেবল মালিকানা নয়, এ সব কারখানার শ্রমিক হয়ে থাকার সুযোগও হারাচ্ছেন এ দেশের মানুষ।" তো জনাব খান, পত্রিকার এ রিপোর্ট যদি সত্য হয় তবে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য এ বিষয়টি উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার; আপনার মন্তব্য কি?
আব্দুর রহমান খান : দেখুন, দেশের সার্বিক পরিস্থিত যেমন ধরুন- অর্থনীতি, রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প ক্ষেত্র বাংলাদেশ যে পদ্ধতিতে এগোচ্ছে তাতে হয়তো কেউ কেউ বলবেন এটি উদ্বেগের কারণ। কিন্তু দেখেছি অনেকের মধ্যে বিষয়টি অতি উৎসাহেরও কারণ। তাদেরকে এরকমও বলতে শোনা যায় যে, ভাই আমরা যদি পাসপোর্ট ছাড়া দিল্লি পর্যন্ত চলে যেতে পারি, ত্রিপুরা পর্যন্ত যেতে পারি তাহলে অসুবিধা কি ? তো এরকম একটা সম্ভাবনা নিয়ে যারা চিন্তা করেন তাদের জন্য তো বর্তমান পরিস্থিতি খুশির বিষয়। আর যারা মনে করেন যে, না ১৯৭১ সালে রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমাদের রাজনীতি ও অর্থনীতি আমরাই নিয়ন্ত্রণ করব, আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য আমরা নিয়ন্ত্রণ করব তাহলে বিষয়টি তাদের জন্য সত্যি সত্যি উদ্বেগের কারণ।
কয়েক দিন আগে ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সংগঠন এফবিসিসিআই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। তাতে এই প্রথম আমরা দেখলাম, যারা দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, যাদের নাম বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় আলোচিত হয়েছে যেমন ধরুন-সালমান এফ রহমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন ও মাহবুবুর রহমান সাহেব-এ সব ব্যক্তিকে এবারের নির্বাচনে খুব বেশি সামনে দেখা যায়নি। অথচ, খুব কম পরিচিত- বলা যায় সাধারণ মানুষের কাছে খুব একটা পরিচিত নয় এমন একজন ব্যক্তি এবার সভাপতি হয়েছেন। এবারের নির্বাচনে ব্যাপকভাবে সরকার প্রভাব বিস্তার করেছে বলে অভিযোগও উঠেছে। তা ছাড়া, নতুন ওই ব্যক্তি নির্বাচিত হওয়ার পর পরই আমরা দেখলাম ভারতের কংগ্রেস নেতা মণি শঙ্কর আয়ার বাবু ঢাকায় এলেন এবং ফেডারেশনের সাথে বিভিন্ন রকম বাণিজ্যিক চুক্তি করলেন। তা ছাড়া, চট্টগ্রাম বন্দরে গিয়ে মণি শঙ্কর বাবু বললেন এই বন্দরে ভারতেরও হিস্যা রয়েছে। তার এ বক্তব্যের পর কিন্তু স্বাভাবিকভাবে এ প্রশ্ন আসতে পারে বাংলাদেশের ওপরও তো তাদের অধিকার আছে এবং সেই অধিকার প্রতিষ্ঠায় তারা সক্রিয় এবং কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে। তো, এখন বাংলাদেশের মানুষ ঠিক করবে যে, এ অধিকারটা তাদের নিজেদের অধিকারকে বঞ্চিত করে তাদেরকে দেবে না কী ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক হবে অন্য দেশের সাথে যে রকম সে রকম।
আর পোর্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমার মনে হয় যে,পৃথিবীর কোনো দেশের জাহাজ চট্টগ্রামে আসতে বাধা নেই। তারা সবাই এ বন্দর ব্যবহার করতে পারে। তাহলে, বিশেষ কোনো দেশের সাথে বিশেষ কোনো বন্ধন আমাদের কেন প্রয়োজন পড়লো এমন প্রশ্ন আমাদের অর্থনীতিবিদদের। আর আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ কিন্তু এতসব হিসাব নিকাশ বোঝে না। তবে, তারা একটা ব্যাপার বোঝে আর সেটি হচ্ছে যে, দেশটা আমাদের থাকল না - থাকল না।
রেডিও তেহরান : আমরা এবার রাজনীতির একটি খবরের দিকে দৃষ্টি দেব। '৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাবে বলে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে, এ বিষয়ে তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে। এ বিষয় সম্পর্কে বাংলাদেশের প্রায় সব পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। সর্বদলীয় কমিটি করা হবে বলেও এলজিআরডি মন্ত্রী জানিয়েছেন। অন্যদিকে, বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, কু মতলব থেকে সরকার এগুলো করতে চাইছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, '৭২-এর সংবিধানে ফিরে গেলে সরকার টিকে থাকতে পারবে না। তাদেরকে বাকশাল কায়েম করতে হবে। এ বিষয়ে আপনার পর্যালোচনা কি?
আব্দুর রহমান খান : ১৯৭২ এর সংবিধান আমাদের হাতে ছিল। সেটা কেন লঙ্ঘিত হয়েছে সে প্রশ্নে না গিয়ে আমরা বলবো, আজকে পার্লামেন্টে যে শক্তি আছে তাতে আওয়ামী লীগ '৭২-এর সংবিধানে কেন, তার আরো আগেও ফিরে যেতে পারে, নতুন সংবিধান তৈরি করতে পারে এমনকি পুরনো সংবিধান গোটাটাই বাতিল করে দিতে পারে এ রকম ম্যান্ডেট তাদের রয়েছে এবং সেভাবে তারা তা করতে পারে। আর সুনির্দিষ্টভাবে '৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে যে বিতর্ক হচ্ছে আমার মনে হয় না আওয়ামী লীগ নিজেই '৭২ -এ ফিরে যেতে চায়। কারণ, '৭২-এর পর এই সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রধান ও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব নিজেই এ দেশে প্রধানমন্ত্রী চালিত সরকারের পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার প্রথা চালু করেছেন। অত:পর উনিই তার রাজনৈতিক প্রয়োজনে একদলীয় বাকশাল তৈরি করেছেন। তো, '৭২ থেকে শুরু করলে আবার তো এটা সামনের দিকে এগুতে থাকবে। ৭২, ৭৩, ৭৪ ও ৭৫ এভাবে আমরা সামনের দিকে যাবো- না কি আমরা পেছনের দিকে যাবো। যার জন্যে বিএনপি মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেন একটি বিবৃতি দিয়েছেন যা গতকাল রোববারের পত্রিকাগুলোতে ছাপা হয়েছে। তিনি বলেছেন, কোনো জাতি পেছনে ফিরে যায় না। সত্যি, আমরা কখনই আবার ২০০০ সালে ফিরে যেতে পারব না; কখনই ১৯০০ সালে ফিরে যেতে পারব না। কখনই আমাদের প্রিয় নবী (সা এর জন্ম হয়েছিল সেই ৫৭০ খৃষ্টাব্দে ফিরে যেতে পারব না। আজ বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য যেটা করা দরকার- রাজনৈতিকভাবে সেটাই করা উচিত। আমার মনে হয় যে, মানুষ চায় মানুষের সুখ শান্তি, চায় অভাব-অভিযোগ থেকে মুক্তি, চাকরির নিরাপত্তা, জীবনের নিরাপত্তা, জান-মালের নিরাপত্তা এবং দু'বেলা দু'মুঠো খেয়ে পরে বেঁচে থাকার স্বাধীনতা। শিক্ষা-দীক্ষার স্বাধীনতা, জাতি হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার স্বাধীনতা। আর এগুলো বাস্তবায়ন না করে আমরা যদি বলি যে, এটা কোট পরে হবে না পাজামা পরে হবে; এটা টুপি পরে হবে না টুপি ছাড়া হবে-এ সব বিতর্ক অনর্থক বাহুল্য বিতর্ক।
রেডিও তেহরান : রাজনীতি সম্পর্কিত আরো একটি বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করতে চাই। আর তা হলো- আইন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, জামায়াতের রাজনীতি চিরতরে অবসান ঘটানো হবে। তিনি একজন ক্যাবিনেট সদস্য। ফলে আমরা তার কথাকে যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে দেখছি। অন্যদিকে, বাংলাদেশে জামায়াত ওই রকম জনসমর্থিত দল না হলেও ক্যাডারভিত্তিক রাজনীতি করে এবং সাংগঠনিক ভিত্তিও বেশ মজবুত বলে মনে করা হয়। তো, যদি আইন প্রতিমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন হয় তাহলে বাংলাদেশে কি ধরনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে?
আব্দুর রহমান খান : দেখুন, দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশকে নিয়ে নানান ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। আপনি জানেন যে, কয়েক দিন আগে আইন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, আপনারা খুব শিগগিরই দেখতে পাবেন- জামায়াত নেতাদেরকে যুদ্ধাপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে। এবং বস্তুত তারা আজ গ্রেফতার হয়েছে। অতত্রব, ওনাদের কথা ও কাজে দারুন মিল আছে। প্রয়োজনে তারা আইন সংশোধন করে নিতেও পারেন। আর আইন প্রতিমন্ত্রী যখন বলেছেন,তখন নিশ্চয়ই উনি সেটা করবেন। আমার ধারণা যে, এ বিষয়গুলো একবার ফয়সালা হয়ে গেলে আমাদের জাতির জন্য সামনে এগুতে সুবিধা হয়। ১৯৭১ সালে কি হয়েছিল-বিস্তারিতভাবে তা তদন্ত করে সঠিকভাবে বিচার করা হলে ঝামেলা চুকে যাবে। আর সেটাই ভালো। এ ছাড়া, ওনাদের আরেকটা অভিযোগ হচ্ছে- ধর্মভিত্তিক রাজনীতি। আপনিও হয়তো জানেন যে, জামায়াতে ইসলামী এই নাম না ধারণ করেও কেউ কিন্তু ধর্মীয় রাজনীতি করতে পারে। ভারতে বিজেপি নামক যে সংগঠনটি আছে তাদের কিন্তু বাবরি মসজিদ ভাঙতে কোনো অসুবিধা হয়নি। তো ধর্মীয় রাজনীতির বিষয়টি ধর্মীয় নামকরণ বা ধর্মীয় লেবাস ধারণ করলেই ধর্মীয় হবে না ; বিষয়টা তেমন নয়। বাংলাদেশের রাজনীতি মাঝে মধ্যে এমন অদ্ভূত মোড় নেয়, যে পরিস্থিতি আমাদের রাজনীতিবিদরা সৃষ্টি করেন। তবে, সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে যে বিষয়টা ভালো হচ্ছে না। আজকের আওয়ামী লীগের অনেক ভাই বা তাদের আত্মীয়-স্বজন আছেন যারা জামায়াতে ইসলামী করেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেক আত্মীয়-স্বজন আছেন যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ছিলেন। সবার বিচার করা কিন্তু সম্ভব হয়নি এবং হবেও না। আমি বলবো- একটা দেশের উন্নতির জন্য ঐক্য দরকার; বিভেদ নয়। আমরা ক্রমশ বিভেদের সীমারেখা বাড়িয়ে দিচ্ছি। আর এ বিভেদের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বাইরের শত্রুরা আমাদের মধ্যে ঢুকে পড়ছে। আর বাংলাদেশে মুসলিম মেজোরিটি হওয়ার কারণে পৃথিবীর সমস্ত মুসলিম দেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র চলছে সেই একই ষড়যন্ত্র বাংলাদেশকেও ফেইস করতে হচ্ছে।
আর একটা বিষয় হচ্ছে- জামায়াত যথেষ্ট ক্যাডারভিত্তিক সংগঠন কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত দেখছি যে তারা এমন কোনো তৎপরতা দেখাতে পারেনি যাতে মনে হতে পারে যে সারা দেশ ওলট-পালট হয়ে যাবে, একটা কিছু হয়ে যাবে! বরং বিষয়টা এমন হতে পারে- জামায়াতের এই ক্যাডারভিত্তিক রাজনীতি এবং তাদের লোকজনদেরকে আমরা উদ্ধুদ্ধ করছি অথবা তাদেরকে প্ররোচিত করছি বা বাধ্য করছি- তারা যেন এর বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক ব্যবস্থা নেয়। তাহলে আমাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল হবে যে, মুসলিম মেজোরিটির বাংলাদেশে ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ কায়েম হয়েছে আর সেটাকে দমন করার জন্য ভারত, ইসরাইল এবং আমেরিকান সৈন্যরা বাংলাদেশে আসতে পারবে। আমার মনে হয়, সেদিকে পরিস্থিতিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। আপনি জানেন, ২০০৬ সালে ভারতের একজন সাংবাদিক কিরণময় কারলেকার একটি বই লিখেছেন-বাংলাদেশ হচ্ছে পরবর্তী আফগানিস্তান। এবং তারা সম্ভবত বাংলাদেশকে সেদিকে ঠেলে দিতে চায়।
রেডিও তেহরান : জনাব খান, এবার আমরা অন্য একটি খবরের দিকে দৃষ্টি দেব। আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন, আজকের পত্রিকাগুলোতে উলফা নেতা মেজর রঞ্জনের গ্রেফতার সম্পর্কিত খবর ছাপা হয়েছে। এর আগে, ভারতের পক্ষ থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বা স্বাধীনতাকামী নেতাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়ার কথা বলা হলেও বাংলাদেশ কিন্তু সব সময় তা অস্বীকার করেছে। তবে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর উলফার কয়েকজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা বাংলাদেশ থেকে গ্রেফতার হয়েছেন। তাহলে কি বলা যায়, ভারতের দাবি সঠিক ছিল?
আব্দুর রহমান খান : ভারত যে দাবি করেছিল তা যে সঠিক এ কথা বোঝা যায় উলফা নেতাদের গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে। এটা হচ্ছে একটা দিক, আরেকটা দিক হচ্ছে- বাংলাদেশে তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়ার জন্য যে লোকজন রয়েছে সেটাও ঠিক। তা ছাড়া, তারা এখানে বিয়ে-থা করেছেন, আত্মীয় স্বজন তৈরি হয়েছে। তারা যাদের সাথে মেশেন সে নামগুলো থেকে বোঝা যায় যে, ধর্মীয়ভাবে সম্পৃক্ত এ ধরনের লোকজনদের কাছে যাতায়াত ও যোগাযোগের বিষয়টি বেশ পুরনো। তো, সে ক্ষেত্রে দোষটা পড়ছে বাংলাদেশের ওপর, বিপদগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। আর উলফাদের অপতৎপরতা বলুন, তৎপরতা বলুন, স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যাই বলুন-এ সমস্ত ইনসার্জেন্সির পেছনে যারা আছে তারা কিন্তু শুধুমাত্র ভারতে নয়; তারা নেপালে, অসমে এবং পশ্চিম বাংলাতেও আছে। তা ছাড়া, বলা হয় -তারা কমিউনিস্ট অথবা ধর্মীয় গোষ্ঠী নামে আছে। সম্প্রতি আপনি হয়তো একটি খবর শুনেছেন যে, ভারতের মাওবাদীরা বলছে-আজ আর তালেবান বা আল কায়েদা আমাদের শত্রু নয়; তারা আমাদের বন্ধু। কারণ, ওরা আমেরিকার বিরুদ্ধে। পৃথিবীর নির্যাতিত লোকদের পক্ষে আমরা। আর যদি বাংলাদেশের কথা বলেন, তাহলে দেশটি তার সংবিধানে লিখিতভাবে ঘোষণা করেছে- পৃথিবীর যে কোনো দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে তারা সমর্থন করে এবং করবে। তবে, এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে দূরে থাকা উচিত বলে আমি মনে করি।