ছবি, নেট থেকে।
গত বছর থেকে সেন্টমার্টিন নিয়ে সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা শুনছি, মূলত অতিরিক্ত পর্যটক যাওয়া আসার কারণে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের অবস্থা নাকি ভয়াবহ, খুব দ্রুত সময়ে নাকি প্রবাল শূন্য হতে যাচ্ছে মায়াবী দ্বীপটি।
আমি মানসিকভাবে একজন Traveller. পকেটের শক্তি নিতান্তই দূর্বল তাই দেশের বাহিরে কখনো উঁকি দেওয়া হয়নি, দেশের ভিতরে টুকটাক একটু ঘুরেছি তবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাবৎ দুনিয়ার সব পর্যটন কেন্দ্র ঘুরেছি। যা বলতেছিলাম, সরকারি হিসাবে প্রতি বছর পর্যটন মৌসুমে প্রতিদিন সেন্টমার্টিন প্রায় পাঁচ হাজার পর্যটক যায়, এখন সরকার চাচ্ছে এই সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে নিবন্ধের মাধ্যমে প্রতিদিন পনেরশ পর্যটক যাওয়ার অনুমতি দিবে! আসলে এই পর্যটক নিয়ন্ত্রণ করে কি সেন্টমার্টিন রক্ষা বা তার সৌন্দর্য ফিরে আনা সম্ভব?
আমি মনে করি হিতে বিপরীত হবে এতে, এমনিতেই বাংলাদেশে পর্যটন এলাকা কম তার উপর স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সুযোগ বুঝে জুলুমের জন্য মানুষ বাহিরের হাওয়া লাগানোর সিধান্ত নিচ্ছে তার উপর যদি সরকারের অতি উন্নত সফটওয়্যারের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হয় তাহলে কাম সারছে, দেখা যাবে সকালে ফরম পূরন করবো বিকালে এসে রিপ্লাই দিবে দুঃখিত আপনাকে অনুমতি না দিতে পারার জন্য, অপেক্ষায় থাকুন। মামা খালুর আর দূর্নীতির এই দেশে সবকিছু হয়ে যাবে নগদ নোটে, যেমন এখন হচ্ছে সৌদি প্রবাসীদের সাথে, টিকিট নেই অথচ বড় অঙ্কের টাকা দিলেই নগদ বিমান! সেন্টমার্টিন যেতে খরচ তার সাথে হালকা যোগ করলে মনে হয় কলকাতা, দার্জিলিং, মেঘালয়, ভারতে সংযোগ ভিসা সড়ক পথে নিয়ে ভুটান দর্শন করে আসা যায়, বাড়তি পাওনা ফেসবুকে স্ট্যাটাস "এ বছর ট্যুরে বিদেশ যাচ্ছি"।
সরকারের উচিত হবে এরকম বুমেরাং সিধান্ত থেকে ফিরে ভিন্ন চিন্তা করা, আমি কিছু উপদেশ ফ্রীতে দিচ্ছি।
এক, সেন্টমার্টিনে বর্তমানে প্রায় দশ হাজার লোকের বসবাস, জায়গা হিসাবে অতি বেশি, এদেরকে মূল ভূখন্ডে শিফট করতে হবে, ওখানে বড় জোর হাজার দুই লোকের বসবাসযোগ্য।
দুই, লোনা পানি প্রসেসিং করে পানযোগ্য করে সাপ্লাই দিতে হবে। কোনভাবে টিউবওয়েল বা মোটর দিয়ে নিচ থেকে পানি উঠানো যাবে না।
তিন, পর্যটকদের পলিথিন জাতীয় সবকিছু বহন নিষিদ্ধ করতে হবে, খাবারের প্যাকেট বা অন্য প্রয়োজনীয় পলিথিন ব্যবহার শেষে নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলতে হবে এবং তা মূল ভূখন্ডে এনে রিসাইকেল করতে হবে।
চার, সমুদ্র লাগুয়া সব অবৈধ ও প্রবালের জন্য হুমকি স্হাপনা ডিলেট করতে হবে। আমাদের দেশে পর্যটন নষ্টের মূল কারণ যত্রতত্র স্হাপনা তৈরি করা, পরিকল্পনাহীন সবকিছুতেই।
পাঁচ, প্রবাল কোনভাবেই পকেটে করে আনা যাবে না, ভাবুন প্রতিদিন যদি পাঁচ হাজার মানুষ একটি করে ছোট্ট টুকরা নিয়ে আসে তাহলে কি অবস্থায় হয়।
আরো খুচরা কিছু উপদেশ বাকি থাকলো, এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই পরিকল্পনার জন্য বিশাল অঙ্কের টাকার দরকার, কোথার থেকে আসবে এই টাকা?
আমি বলবো না, ছাত্রলীগ দিবে, আমি বলবো প্রতিটি সেন্টমার্টিনগার্মী জাহাজের টিকিটের সাথে একশ টাকা সেন্টমার্টিন উন্নয়ন প্রকল্প হিসাবে যোগ করা হোক, প্রতিদিন বুঝে নিন প্রায় পাঁচ লাখ টাকা টানা তিন থেকে চার মাস তবে অনুগ্রহপূর্বক ছাত্রলীগকে এই টাকার হিসাবের দায়িত্ব দিবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০২০ রাত ১১:৫২