আমার আপা'র মুখটা ছিল 'আলো'র মত
অন্ধকারে সেই চেহারা ঝকমকাতো
কিন্তু ভীষণ রহস্যময় এই শহরে
কিছু গল্প থাকেই - খানিক ইতস্তত !
আপা'র ছিল হালকা শরীর শান্ত মেজাজ
চুলের বেণী দীর্ঘ এবং দেখার মত;
আমি তখন ছোট্ট ছেলে - ঘুমিয়ে পড়ি
আপা'র কোমল গল্প শোনার পর নিয়ত।
কলেজপথে চায়ের দোকান - আড্ডাবাজি;
আমি তখন ছোট্ট - আমার লাটিম-জীবন
'দুশ্চিন্তা' আমার মায়ের চোখের পাতা
চোখ বুজলেও টের পাওয়া যায় অস্তিত্ত্ব।
আব্বা কোথায় যুদ্ধে গিয়ে আর ফেরেনি;
আমার তখন নাটাই-জীবন ~ অল্প বুঝি,
ঘুড়ি'র সূতো কাটলে কেউ খুব খেপে যাই -
কে বোঝাবে জীবন-সূতো রুক্ষ কত !
অন্য আলোয় ভাসছে তখন শহরতলী
কেউ হাসে, কেউ ডুকরে কাঁদে, কেউ বা পালায়;
আমি, আমার নীল মার্বেল - চমকে সেদিন
হঠাৎ দেখি মায়ের দু'চোখ বজ্রাহত !
শেষ দেখেছি - আপা সেদিন খোলা চুলে
একটা শহর তাকিয়ে সকল গল্প ভুলে :
হালকা শরীর দুলছে হাওয়ায় প্রাচীন বনে
ঝুলছে একটা আলো'র রেখা - অবিরত...
কালচে-নীলাভ, লাল-কমলা, ফের আকাশী
আকাশপটে আলো'র বানে চাঁদটা হারায়
শহরতলীর গল্পে জমা ধুলোর ভীড়ে
এক বালকের প্রশ্নবোধক খেই হারাত !
নীল-মার্বেল কখন আমার হারিয়ে গেছে,
হারিয়ে গেছে অলস গল্পকারের খাতায়
বছর-বছর অন্ধকারের জন্মদাগে
হারিয়ে গেছে গল্পগুলো'র বিস্তারিত...
কিন্তু তুমি জানতে ঠিকই নীল-বিধাতা:
আমার আপা সত্যি ছিল 'আলো'র মত !