আমাদের আইনে পুলিশকে গ্রেপ্তারের অসীম ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ইচ্ছা করলেই যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে। ৫৪ ধারার যথেচ্ছ ব্যবহার চলছে। তবে আইনে গ্রেপ্তারেরও সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। স্পষ্ট বলা হয়েছে, কখন কাকে গ্রেপ্তার করতে হবে।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় ৯টি কারণে পুলিশকে আদালতের পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে:
#আমলযোগ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তি,
#আইনবহির্ভূতভাবে ঘর ভাঙার কোনো যন্ত্র রাখলে সেই ব্যক্তি,
#সরকারের আদেশ দ্বারা কেউ অপরাধী ঘোষিত হলে,
#চোরাই মাল নিজ হেফাজতে রাখলে,
#পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব পালনে বাঁধা দিলে,
#প্রতিরক্ষা বাহিনী থেকে পলায়নকারীকে,
#শাস্তিযোগ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তির সন্ধান পেলে,
#জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত কেউ জামিনের শর্ত ভঙ্গ করলে,
#যাকে গ্রেপ্তারের জন্য অন্য কোনো পুলিশ কর্মকর্তা অনুরোধ করেন সেই ব্যক্তি;
এদেরকে আদালতের পরোয়ানা ছাড়াই পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারে। কিন্তু উপরোক্ত ওই বিধানগুলো মানা হচ্ছে না। আইন অনুসরণ করা হলে প্রকৃত অপরাধী যেমন গ্রেপ্তার হতো, তেমনি পুলিশকে সমালোচনার মুখোমুখি হতে হতো না। দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার অন্তরায় দূর হতো।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করার জন্য উপমহাদেশের বিভিন্ন আদালতের মতো বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগও সুনির্দিষ্ট কিছু গাইডলাইন দিয়েছেন, যা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও অধস্থন আদালতগুলোর জন্য মেনে চলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ৫৪ ধারায় গ্রেফতার ও মানুষ হত্যার মতো ঘটনা বন্ধ করতে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন করে। ওই বছরের ২৯ নভেম্বর আদালত সরকারের প্রতি রুল জারি করেন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট এ ব্যাপারে কয়েক দফা নির্দেশনা ও সুপারিশ দিয়ে রায় দেন।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০১৪ রাত ১১:১৫