কথিত হেফাজতে ইসলামের নেতা মাও. শফী একাত্তরে ‘মুজাহিদ বাহিনী’ নামে দল গঠন করে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের সহায়তা করে বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ সম্মিলিত ইসলামী জোট। কথিত হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে জামাত-শিবিরকে ‘রক্ষার’ অভিযোগ আসার পর একাত্তরে সংগঠনটির আমিরের ভূমিকা তুলে আনলেন সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হাসান। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, একাত্তরে যখন পাকিস্তানি সেনা আর তাদের দোসররা এ দেশে হত্যা, সম্ভ্রমহরণ ও নির্যাতন চালিয়েছিল, তখন হেফাজতের নেতারা কোথায় ছিলো?
হেফাজতের নেতা মাও. শফী একাত্তরে পাকিস্তানকে রক্ষার জন্য ‘মুজাহিদ বাহিনী’ নামক দল গঠন করে পাকিস্তানি সেনা আর রাজাকারদের সব কাজে সহযোগিতা করে। আহমদ শফী এখন পাকিস্তানের দোসরদের রক্ষার ‘এজেন্ডা’ বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে বলেও উল্লেখ করেন জিয়াউল। চট্টগ্রামে হেফাজতের সমাবেশ থেকে যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জামাত নেতা রাজাকার সাঈদীর মুক্তির দাবিতে স্লোগানও দেয়া হয়।
সম্মিলিত ইসলামী জোটের সভাপতি বলেন, জামাত নেতা গো’আযম, নিজামী, সাঈদী, কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামান এবং বিএনপি নেতা সাকা চৌধুরী ও আব্দুল আলিম গংরা মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পক্ষ নিয়েছিল। ধর্মের দোহাই দিয়ে তারা যে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করেছিল তাদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠরাই মুসলমান ছিল। নামমাত্র কিছু হিন্দু মারা পড়ে। কেননা হিন্দুরা যুদ্ধ না করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যায়। একাত্তরের ওই গণহত্যাকারীরা বাঙালি জাতির ও ইসলামের চিরদুশমন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পবিত্র কুরআন শরীফ গণহত্যার শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদ-ের কথা বলা হয়েছে উল্লেখ করে মাওলানা জিয়াউল হাসান বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের নামায-রোজা যেভাবে ফরজ করে দিয়েছেন ঠিক সেভাবেই যুদ্ধাপরাধী ঘাতকদের বিচার করাও পবিত্র কুরআনের বিধান অনুযায়ী আমাদের জন্য ফরজ করা হয়েছে।
‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগে ব্লগারদের গ্রেপ্তার করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানালেও যারা যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় বিভিন্নভাবে ধর্মীয় উস্কানি ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সম্মিলিত ইসলামী জোটের নেতা।
পবিত্র কাবা শরীফের গিলাপের অপব্যবহার করে রাজাকার সাঈদীর মুক্তির ভুয়া মানববন্ধনের ছবি কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পরেও কাবা শরীফের অবমাননার জন্য কাউকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়নি। ধর্ম রক্ষার নামে কথিত হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ কর্মসূচি ইসলাম ও কোরআনের বিরোধী বলে উল্লেখ করেন এই মাওলানা।
তিনি বলেন, তারা মাওসেতুংয়ের মতাদর্শের লংমার্চের ধারক ও বাহক। পবিত্র কোরআন ও ইসলামকে আল্লাহ পাক তিনি নিজেই হেফাযত করার ঘোষণা দিয়ে ১৫নং সূরা হিজরের ৯নং আয়াতে চিরস্থায়ীভাবে বিধান দিয়ে আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘আমিই কুরআন অবতীর্ণ করিয়াছি এবং অবশ্য আমিই উহার সংরক্ষক’। সেখানে আল্লাহর দায়িত্ব পালনের কথা শয়তান ছাড়া কেউ বলতে পারে না, মন্তব্য করেন তিনি।