আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে অন্যতম অভিযোগ ছিল যে তারা ভারতকে বাংলাদেশের উপর আধিপত্য করতে দিয়েছিল এবং তার বিনিময়ে তারা ক্ষমতায় ছিল। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা 'র' এর কথায় এই দেশের গোয়েন্দা, প্রশাসন এবং হাসিনা চলতো। শেখ হাসিনা বলেছে 'ভারতকে যা দিয়েছি তা আজীবন মনে রাখবে'। সত্যিই ভারত হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ। যে কারণে তারা হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে সম্মানের সাথে রেখেছে। পৃথিবীর কোন দেশ হাসিনাকে আশ্রয় দিতে রাজী হয়নি। দেয়ার সম্ভবনাও নেই। শেখ হাসিনা বুঝতে পাড়ছে না যে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মুল পরিকল্পনাকারী ছিল ভারতীয় গোয়েন্দারা। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এবং বিডিআরকে শায়েস্তা করার জন্য ভারত এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। শেখ হাসিনা ভারতকে অনেক অন্যায্য সুবিধা দিয়েছে বাংলাদেশে।
উপরে উল্লেখ করা বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের অন্তত ৯০% মানুষ ভারতের আধিপত্যকে ঘৃণা করে। শেখ হাসিনা ভারতপন্থী রাজনীতি করেও টিকে ছিলেন কারণ সে একজন ফ্যাসিস্ট ছিল। গত সাড়ে ১৫ বছর সে ভোট ডাকাতি করে টিকে ছিল। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্তও আওয়ামী ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু সেই টার্মে আওয়ামীলীগের ফ্যাসিস্ট চেহারা প্রকাশ পায়নি। তখনও শেখ হাসিনা ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করা শুরু করেনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ব্যবসাও তখন জোরালো ছিল না। সেই বার ক্ষমতায় এসে আওয়ামীলীগ বলেছিল ঐকমত্যের সরকার হবে। দানবীয় রূপ তারা তখনও পুরোপুরি নিতে পারেনি।
বিএনপি গত কয়েক মাস ছাড়া কোন কালেই ভারতমুখী ছিল না। এই কয়েক মাসে বিএনপির ভীমরতি ধরেছে অথবা ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তাদের কোন সমঝোতা হয়েছে যে বিএনপিকে ভারতের ব্যাপারে নমনীয় হতে হবে। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপি এখন মাঝে মাঝে ভারত প্রেম দেখাচ্ছে। আবার আধা পাগল রিজভি তার বউয়ের ভারতীয় শাড়ি জনসমক্ষে পুড়িয়ে দিয়েছে। বিএনপি কখন কী করে বোঝা মুশকিল। এই দলে কোন মেধাবী নেতাও নাই। যদি বিএনপি ক্ষমতায় যায় এবং ভারত প্রেম অব্যাহত রাখে সেই ক্ষেত্রে তাদের দশা আওয়ামীলীগের মত হওয়ার সম্ভবনা আছে। কারণ ভারতের দিকে ঝুঁকলে ভারতের ‘র’ এর নিয়ন্ত্রণের চলে যাবে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা, প্রশাসন, পুলিশ এবং বিএনপির বড় নেতারা। এরা ভারতের দেয়া বিভিন্ন আর্থিক এবং অন্যান্য লোভ সৃষ্টিকারী টোপ গিলবে এবং দানব এবং জল্লাদে পরিণত হবে। বর্তমানে তাদের আচরন দেখে অনুমান করা যাচ্ছে যে ক্ষমতায় গেলে তারা আওয়ামীলীগকে আশ্রয়, প্রশ্রয় দিয়ে বানিজ্য করা শুরু কবে। তখন সাধারণ ছাত্র জনতার পুনরায় রাস্তায় নামা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। নতুন প্রজন্ম রাস্তায় নামা শিখে গেছে এবং তারা এটাও জানে কিভাবে গণঅভ্যুত্থানকে সফল করতে হয়।
জামায়াত সহ অন্যান্য ইসলামী দলগুলি বেশী আসন হয়তো পাবে না সামনের নির্বাচনে। কিন্তু এরা সব সময়ই ভারত বিরোধী এবং ভারতও এই সব ইসলামী দলগুলিকে পছন্দ করে না। তাই এদের রাজনীতি সহজ হবে। কারণ জনগণ ক্রমেই ভারত বিরোধী হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া সাধারন জনগণের মধ্যে ইসলামী চেতনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্লগে অনেক নাস্তিক আর মুনাফেক পাওয়া গেলেও ব্লগের বাইরে এদের হারিকেন দিয়ে খুঁজতে হয়। সামু ব্লগ হল নাস্তিক, মুনাফেক আর ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের জন্য অভয়ারণ্য। ব্লগে ইসলাম সম্পর্কে ভালো করে না জেনেও নাস্তিক এবং মুনাফেকরা ইসলামী বিধানের বিরোধিতা করে যায়। দেশের মানুষ ইসলামের দিকে ঝুকছে, তাই ইসলামী দলগুলি ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে মনে হচ্ছে।
ভারতমুখী রাজনীতি মুলত আওয়ামীলীগ করে। ৯০% মানুষ ভারতমুখীতাকে ঘৃণা করে। তাই আগামী দিনগুলিতে যারা ইসলামী এবং ভারতের আগ্রাসন বিরোধী রাজনীতি করবে তারা ভালো করবে। যদিও ইসলামী দলগুলি বহু মতে বিভক্ত এবং তারা এখনও কাঙ্ক্ষিত জনপ্রিয়তা অর্জন করে নাই। তাদের অনেক দলের মধ্যে কিছু ভণ্ড লোকও আছে। কিন্তু ভারতের আগ্রসন ঠেকাতে হলে বিএনপি এবং ইসলামী দলগুলির মধ্যে সমঝোতা তৈরি করতে হবে। বিএনপিকে বুঝতে হবে যে তাদেরকে বিজয়ী করতে পারে জনগণ, ভারত নয়। ভারতমুখী আচরন তাদের ভোট কমাবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ২:০৭