somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোট্ট ভ্রমন কাহিনী আর গড়ের মাঠের সাতকাহন

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৪:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



যে যাই বলুক, পকেটে টাকা না থাকলে মনে শান্তি থাকেনা। কোথাও যেতেও ভাল লাগেনা। গত ৫ দিন ধরে আমার হাত একেবারেই খালি যাচ্ছে। এই কারণে গত পাঁচ দিনে আম কোথাও বের হইনি। ঘরেই শুয়ে বসে কেটেছে দিন-রাত। পাঁচদিন পর আজকে রবিন ভাইয়ের কাছ থেকে ২০০ টাকা ধঅর নিলাম। টাকা টা পকেটে রাখতেই কেমন যেন একটু সুখানুভূতি অনুভব করলাম মনে। আহ্ শান্তি। :)

টাকা না থাকলে যেমন অশান্তি টাকা থাকলেও অশান্তি। ২০০ টাকা হাতে আসতেই বাউলা মনটা যেন শীতনিদ্রা থেকে জেগে উঠল। বাইরে যাওয়ার জন্য খোঁচাখুচি শুরু করল। মনটা যেমন বাউলা আমিও আউলা হইলাম। মোবাইলে ব্যালেন্স ছিলনা তাই মোড়ের ফ্লেক্সিলোডের দোকান থেকে মোবাইল ব্যালান্স রিচার্জ করলাম। ফোন দিলাম সানভীর ভাইকে। “ভাই অনেকদিন লেকে যাইনা, আজকে শুক্রবার আছে, চলেন একটু লেকে যাই।” আমিও যেমন আমার বন্ধুও তেমন, বলতে দেরী নাই, “দাড়াও আসতেছি, সিগন্যাল এ আসো।”

মেজাজটাও ফুরফুরে। শিস বাজাতে বাজাতে রেডি হতে লাগলাম। একজনের পরামর্শনুযায়ী কালো রঙের একটা শর্ট পাঞ্জাবী পড়লাম। বাইরে শীত লাগতে পারে ভেবে পাঞ্জাবীর ভেতরে একটা টীশার্টও পড়ে নিলাম। “হুম, লুকিং ভেরী হ্যান্ডসাম, ম্যান…।” ;)

সিগন্যাল এ দাঁড়িয়ে আছি। চারপাশের মানুষ দেখছি। রিকশায় কোন সুন্দরী মেয়ে গেলে আঁড়চোখে তাকাচ্ছি আর সানভীরের জন্য অপেক্ষা করছি। সানভীর আসলো, আমরা রাস্তা পার হয়ে লেকের দিকে হাটতে লাগলাম। লেকে আমাদের একটা প্রিয় জায়গা আছে। আমরা বেশির ভাগ সময় ওইখানেই বসি। এবারও ওইদিকেই হাটতে লাগলাম।

আমাদের প্রিয় বসার জায়গাতে বসে চা ওয়ালার কাছ থেকে রং চা খেলাম। কিছুক্ষন বসে থাকার পর রবীন্দ্র সরোবর এ যেতে ইচ্ছা হল। সাধারণত শুক্রবারে রবীন্দ্র সরোবরের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠান থাকে। তাই ভাবলাম গিয়ে দেখে আসি, কিছু হচ্ছে কিনা।

হেটে হেটে রবীন্দ্র সরোবরের মুক্তমঞ্চে আসলাম। কিছু হচ্ছেনা। সেখানে এমনিতেই বিকেলবেলা অনেক শান্তিপ্রিয় মানুষ আসে। আর সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোতে ব্যস্ত মানুষ গুলো একটু হাঁপ ছাড়তে পুরো পরিবার, বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে লেকে এসে ভীড় করে। কি করবে, ঢাকা শহরে এমন খোলামেলা পরিবেশ আর কই পাবে। যেখানেই যাও বড়বড় বিল্ডিং আর গাড়ির ধোঁয়া। /:)

আমরা একটু খালি জায়গা দেখে বসলাম। আমার এখানে বসে থাকতে ভাল লাগে। অনেক রকম মানুষ দেখা যায় এখানে। কত বিচিত্র স্বভাবের। মানুষ দেখে দেখেই বেশ সময় কাটিয়ে দেয়া যায়। আমাদের পাশে কতগুলো ছেলে গীটার বাজিয়ে গান করছে। ভালই গায়। গান শুনতে শুনতে আশেপাশে দেখতে থাকি। :|

আমাদের কিছু দুরেই একটা মেয়ে তার খাতায় কি যেন আঁকছে খুব মনোযোগ দিয়ে। ভাল করে খেয়াল করে দেখলাম বায়োলজী সম্পর্কিত কিছু স্কেচ। ব্যবহারিক সম্ভবত। আঁকার হাত ভালই। হঠাৎই চোখাচোখি হয়ে গেল। মেয়েটা উপজাতি। দেখতে বেশ সুন্দর। সাথে সাথেই চোখ ফিরিয়ে নিল। আমিও অন্যদিকে তাকালাম। ;)

দূরে দেখছি একটা খুব কিউট ছোট্ট মেয়ে ভীষন দৌড়াদৌড়ি করছে, ওর মা কলার ধরে পিছে পিছে হাটছে। ভীষন বেগ পেতে হচ্ছে মেয়েটার সাথে তাল মিলিয়ে রাখতে। বেশ মজা পেলাম এটা দেখে। আহা, ঢাকার বাচ্চারা ছোটাছুটি করার জন্য কোন জায়গা পায়না। এই দেখে আমার নিজের দুরন্ত শৈশবের কথা মনে পড়ে গেল। কি দুর্দার দিনগুলিই না ছিল সেইসব। ঠোটের কোণে অজান্তেই হাসি চলে আসে।

দিনের আলো নিভে গেল বসে থঅকতে থাকতে। আমার ছাত্র আসবে, তাই আমাকে ঘরে ফিরতে হবে। উঠলাম আমরা। ফিরে এলাম আবার সেখানে, আমার রুমে। এই মাঝের সময়টাতে খরচ হয়ে গেছে অনেকগুলো টাকা। দুদিন পর আবার শুন্য হয়ে পড়ব। যতদিন না বাড়ি থেকে টাকা আসে। এখনো বাপের হোটেলে খাচ্ছি। :|

................................
মূল প্রকাশঃ ব্লগ
ছবিসূত্র
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

১. ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৪:৪১

শোভন এক্স বলেছেন: গতকাল আমিও সারা বিকাল লেকে কাটিয়েছি রবীন্দ্রসরোবরে বসে। একা। এই একা সময় কাটানো খুবই উপভোগ্য মনে হয় আমার কাছে। ঠিকই বলেছেন, শুধু মানুষ দেখেই সময় কাটিয়ে দেয়া যায়। মুক্তমঞ্চে কোন অনুস্ঠান থাকলে খুবই বিরক্তিকর লাগে আমার কাছে, গতকাল নিরিবিলি সময়টা কাটাতে পেরেছি, আবহাওয়াও ছিলো অদ্ভুত মিস্টি।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১১ দুপুর ১:৪১

লেখক বলেছেন: হুমমমম...!!!

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারীনীতি ইস্যুতে তথাকথিত চুশীলদের নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৪ ঠা মে, ২০২৫ সকাল ৮:৫৩

নারীনীতি ইস্যুতে তথাকথিত চুশীলদের নিয়ে কিছু কথা



ইদানিং নারীনীতি নিয়ে দেশে নানা তর্ক-বিতর্ক চলছে। আলেম-ওলামা এবং ইসলামপন্থীরা যখন পাশ্চাত্যঘেঁষা নারীনীতির সুপারিশকে দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রত্যাখ্যান করলেন, তখনই মূলত এই আলোচনার বিস্তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারদের হতে হবে দেশের চিন্তাশীল সমাজের অগ্রনায়ক

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ০৪ ঠা মে, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৬

আমার ৭ বছর ১১ মাসের ব্লগিং ক্যারিয়ারে ১০,০৭৩টি কমেন্ট করেছি। প্রতি পোস্টে গড়ে যদি ২টা করে কমেন্ট করে থাকি, তাহলে, আমি কম করেও ৫০০০টি পোস্ট পড়েছি। এর অর্থ, বছরে প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের শাহেদ জামাল- ৭৮

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা মে, ২০২৫ দুপুর ২:৩৭



আমার বন্ধু শাহেদ। শাহেদ জামাল।
খুবই ভালো একটা ছেলে। সামাজিক এবং মানবিক। হৃদয়বান তো অবশ্যই। দুঃখের বিষয় শাহেদের সাথে আমার দেখা হয় মাসে একবার। অথচ আমরা একই শহরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকার অটোরিকশা

লিখেছেন শামীম মোহাম্মাদ মাসুদ, ০৪ ঠা মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৪

সেদিন একটা রিপোর্টে দেখলাম ঢাকা শহরে প্রায় ২০ লাখ রিক্সা রয়েছে। এর মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিক্সার সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ! ২০১৯ সালের একটা জরিপে রিক্সার সংখ্যা ছিলো ১৩ লাখ। তার মানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৃষ্টির ঋণ....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৪ ঠা মে, ২০২৫ রাত ৮:২৭

সৃষ্টির ঋণ....

মধ্য দুপুরে ডেল্টা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সিএনজি, বাইক, উবার কিছুই পাচ্ছিনা। অনেকটা পথ হেটে বাংলা কলেজের সামনে বেশকিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে একটা রিকশা পেয়েছি....ঘর্মাক্ত ষাটোর্ধ কংকালসার রিকশাওয়ালাকে দেখে এড়িয়ে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×