somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈশ্বরের অনুশোচনা -- শেষ পর্ব (বৈজ্ঞানিক কল্প গল্প)

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১০ ভোর ৪:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনুসন্ধান:
দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙে যায় আরিয়ানার। সে থরে থরে সাজানো নিউরন আর স্নিন্যাপ্স দেখে কুৎসত তরলে ডুবানো এক অদ্ভুত একাকীত্ব অনুভব করে যে একাকিত্বের জন্ম এই পৃথিবীতে না...........
গত কয়েকদিন যাবৎ এই স্বপ্ন দেখে দেখে সে ক্লান্ত
আরিয়ানা তার চিন্তা ভাবনা আর এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যগুলো সাজিয়ে কাগজে লিখার চেষ্টা করছে। লিখার ব্যাপারটা খুব ভালো এগুচ্ছে না ; কাগজে কলমে লিখালিখির প্রয়োজন তার কখনো পরেনি কিন্তু সব যণ্ত্রই সিস্টেমের সাথে যুক্ত থাকে বলে সে তার ই-প্যাডটা ব্যাবহারের উৎসাহ পাচ্ছে না।

আরিয়ানা কাজ শুরু করেছে অনিশকে দিয়ে। অনিশের অসমাপ্ত প্রোজেক্ট সে এগিয়ে নিতে চায় এটা বলে সে বিজ্ঞান একাডেমির মহাপরিচালক রন এর কাছ থেকে অনিশের কোড চেয়ে নিয়েছে। অনিশের সম্পর্কে নতুন কোন তথ্য সে জানতে পারেনি, আলাদাভাবে গোপন কোন প্রোজেক্টে সে কাজ করছিলো না।

গত ৪০০ বছরে ৫ জন বিজ্ঞানি শিতল কক্ষে ঘুমোতে গেছে তারা কেউ ফিরে আসে নি। তাদের সবাইকেই তাদের সময়ের সেরা বিজ্ঞানী মনে করা হয়।

সে রিয়ান্ডার ছেলে কে দেখতে প্রতিপালন কেন্দ্রে গেছে এবং সেখানকার ছেলেমেয়েদের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছে গত দু বছরে যারা ক্যাটাগরি সি নির্বাচিত হয়েছে তাদের মধ্য নিত্রি সবারি খুব প্রিয়ছিলো, যেকোন সমস্যায় সে সবাইকে সাহাজ্য করতো এমনকি ক্রাইলি রাশিমালার দুটি নতুন ধারা নিয়েও সে কাজ সুরু করেছিলো।মানুষের বুদ্ধিবৃত্বিক বিভাজনটা তার খুব হাস্যকর মনে হতে থাকে।সৃষ্টিশীলতার কোন বিভাজন হয়না। একজন সৃষ্টিশীল মানুষের অসাধারন প্রতিভা বিজ্ঞানের কাজেই লাগবে এমন কোন কথানেই। তার মনে ঘোরা-ফেরা করে আইনস্টাইন গল্পটা।

গত ৪০০ বছরে পৃথিবীর তেমন কোন উল্লেখ যোগ্য পরিনর্তন ঘটেনি, ৪০০ বছর আগের মানুষ যে পোশাক পরতো খাবার খেত এখনো মোটামৈ তাই করে অথচ এর আগে তা প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়েছ।
মানুষের বিনোদনের জন্যও নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়নি। হলোগ্রাফিক প্রেজেন্টেশন, চাঁদ ও মঙ্গলে অবকাশ যাপন কেন্দ্র তৈরী, কৃত্রিম ব্ল্যাকহোল ইত্যাদি সবি ৫০০ বছর আগের। গত ৪০০ বছরে মানুষের বিনোদনের যে ক্ষেত্রটির উন্মেষ ঘটেছে সেটি হোলো সরাসরি মস্তিষ্কে স্টিমুলেশন নেয়া। প্রেম,ভালোবাসা, স্পর্শ, মাতৃত্ব ...... ইত্যাদি যাবতিয় কিছু কৃত্রিমভাবে অনুভব করা। একজন রক্ত মাংসের মানুষ তো আরেকজন রক্তমাংসের মানুষের হাত টা সরাসরিই ধরতে চাইবে ..........
(৫০ বছর আগে যখন "ফ্রান্কে স্টাইন হও" -- এই প্রোগ্রামটি বাজারজাত হয় তখন অজ্ঞাত ভাইরাসের আক্রমনে ম্রিকা সিটি ধ্বংস হয়ে যায় এবং একি সময়ে মঙ্গলে পৃথিবীর বেস স্টেশনটাও আচমকা বিস্ফোরিত হয় )

পৃথিবীতে বিভিন্ন নতুন রকম রোগ দেখা দিলেও সেগুলোর প্রতিরোধ ও প্রতিকার এর চেয়ে বেশি গুরুত্বপায় উন্নত প্রাণীর সন্ধানে মহাকাশ যাত্রা ও সময় পরিভ্রমনের গবেষনা সংক্রান্ত কাজ।

মানুষের মধ্যে এই ক্যাটাগরি এ,বি,সি এর বিভাজন সুরু হয় ৪৫০ বছর আগে। ৪৫০ বছর আগে আরো একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে, রোবট বিদ্রোহ, দুইদিন স্থায়ী এই যুদ্ধে পৃথিবীর শাসন ব্যাবস্থা পুরো ভেঙে পরে, মূল সার্ভারের সাথে কানেক্টেড প্রতিটি যন্ত্র বিদ্রোহ করে। মহান বিজ্ঞানী ক্রাইলী এই বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রন করেন এবং বিজ্ঞান পরিষদ পৃথিবীর সমস্ত দায়িত্ব গ্রহন করে। (রোবটদের বাহ্যিক গঠন মানুষের কাছাকাছি নিয়ে আসলেও তাদের মানবীয় আবেগ অনুভুতির ব্যাপারগুলো খুব উন্নত ছিলো না যেটা হলে বিদ্রোহ করা যায়, ধারনা করা হয় কোন রোবট নিজেই নিজের সিস্টেম আপগ্রেড করে এবং সেই প্রোগ্রামটি মুল সার্ভারে আপলোড করে কানেক্টেড সব যন্ত্র নিয়ণ্ত্রন করে, কিন্তু সৃষ্টিশীলতার কোন প্রোগ্রাম বিজ্ঞানীরা তৈরী করতে পারেন নি। )


.............................................................................................................................................................................................................................................................................. ক্রাইলি

অরিত্রর কথা:
আমি অরিত্র অথবা হয়তো আমি অরিত্র না। আমি শিতল ঘরে ঘুমন্ত একজন মানুষ যার মস্তিষ্কটা মূল সিস্টেমের সাথে যুক্ত।শতাব্দি শ্রেস্ঠ বিজ্ঞানী ক্রাইলীর একটা প্রোজেক্টের জন্য তৎকালীন শাসকরা টাকা বরাদ্দ না দেয়ায় (ব্ল্যাক হোল ভ্রমন (যেটি ব্যার্থ হয়েছে) এর চেয়ে তখন ক্যামিউনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধটাই বেশি গুরুত্বপূর্ন মনে হয়েছিলো তাদের কাছে) ক্রাইলী নিজেই ক্ষমতা দখল করে নেয়। অনন্ত কাল বেচে থাকতে ক্রাইলি তার মস্তিষ্ক সিস্টেমের সাথে কানেক্ট করে এখনো পৃথিবী শাসন করে যাচ্ছে।বিজ্ঞান একাডেমির মহাপরিচালক কখনো মানুষ হয় না। তার মস্তিষ্কে অস্ত্রপাচার করে সেটা কপোট্রন দিয়ে বদলে ফেলা হয়। গত ৪০০ বছরে কারনে অকারনে অনেক মস্তিষ্ক সিস্টেমে কানেক্ট করা হয়েছে ক্রাইলীর একাকিত্ব ঘোচাতে যার সর্বশেস সংযোজন অনিশ।

অনিশ কে শিতল ঘরে নিয়ে আসায় আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। আমি অনন্ত কাল এভাবে বেঁচে থাকতে চাইনা। আমি চাই পৃথিবীকে এই ক্রাইলী নামক ঈশ্বরের হাত থেকে মুক্ত করতে। আমি আমার সীমিত ক্ষমতা কাজে লাগিয়েছি। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রাচীন কল্পকাহিনীতে এরকম কিছু গল্প আছে, আমি এদের মধ্যে থেকে জাফর ইকবাল কে বেছে নিয়েছি কারন অসম্ভব প্রতিভার অধিকারি ৫ তারকা প্রাপ্ত বিজ্ঞানী অনিশের প্যারেন্ট ট্রিতে সে আছে আর অনিশ মাঝে মাঝেই তার প্যারেন্টস ট্রি লোড করে। ক্রাইলির সাথে লড়তে একজন বুদ্ধিমান মানুষ দরকার হবে তাই অনিশ ই ছিলো আমার পছন্দ। আমি ব্যাবস্থা করেছি যেন অতীত ফেরা অনুষ্ঠানে যেন ফেরিওয়ালে রোবটগুলো অনিশ কে কিছুনা কিছু বিক্রি করে সেই কাগজে আইনস্টাইন গল্পের আপলোড কোড দিয়েছি। সে অবশ্যই জাফর ইকবাল এর লিখায় আগ্রহী হয়ে সেটা আপলোড করবে। আমি তার চ্যানেলে প্রয়োজনীয় সব তথ্য জমা করেছি সে আপলোডার কোড চাপলেই আমি তার কাছে তথ্য পাঠিয়ে দেব । আমি অপেক্ষা করেছি কিন্তু অনীশ এর চ্যানেল থেকে সেই কাঙ্খিত কোড টি আসে নি বরং অনীশ চলে এসেছে শীতল ঘরে আমার সাথে।

অনীশের চলে আসার পর যখন আমি নতুন কাউকে খুজছি নতুন কিছু ভাবছি তখনি অনাকাঙ্খিত ভাবে অন্য একটি চ্যানেল থেকে কোড টি প্রেস করা হয় সে কি পারবে এ বলয় ভাঙতে নাকি নিছক ....

অপেক্ষা
আরিয়ানা বুঝতে পারে তাকে কি করতে হবে। ক্রাইলি ক্রাইলি শাসন করছে পৃথিবী। ক্রাইলীর মস্তিষ্ক মূল সিস্টেমের সাথে কানেক্টেড অনীশেরো তাইতো সে অমন স্বপ্ন দেখেছে। তাকে ধ্বংস করতে হবে ক্রাইলীকে।
কিন্তু ঈশ্বরের সঙ্গে সে কেমন করে যুদ্ধ করবে?
ঈশ্বর হ্যা ঈশ্বর।
অনিশের শীতল ঘরে যাবার দুবছর পর আরিয়নার তৈরী একটি নতুন স্টিমুলেশন সিস্টেম বাজারে তোলপার তোলে। "বি গড" -- এটি মস্তিষ্কে নিজেকে ঈশ্বর ভাবার অনুভুতি দেবে। সে স্টার্ট করতে পারবে বিগব্যাং থেকে সৃষ্টি করতে পারবে মানুষ গ্রহ ............স্বর্গ নরক...
ক্রাইলী যখন এই প্রোগ্রামটা টেস্ট করবে সে যখন ঐশ্বরিক অনুভুতি নিতে চাইবে আরেকটি গোপন প্রোগ্রাম স্বক্রীয় হয়ে যাবে যেটাকে থামানো যাবেনা চিপ খুলে ফেলেও অনুশোচনার, অপরাধ বোধের, যে প্রোগ্রাম জাগিয়ে দেবে ক্রাইলীর ঘুমিয়ে থাকা বিবেক কে যার যন্ত্রনায় ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাবে ক্রাইলি, অপরাধের অনুশোচনায় আত্মহনন করবে ঈশ্বর ক্রাইলি।

খুব ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করতে থাকে আরিয়ানা ঈশ্বরের অনুশোচনার......
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ১১:৪৫
৪৩টি মন্তব্য ৩৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×