বৃদ্ধা রমনী কুচকানো দেহ
সাদা ছড়িতে ভর করে হাঁটছে
আমার মা
বাংলাদেশ!
মা তোর যৌবনেই
আমার জন্ম দিলি
বুকে ঢাকলি ষড়ব্যঞ্জনে
সযতনে স্তন পান করালি।
তোর দুগ্ধ ছেড়ে হাঁটতে শিখলাম
আনন্দের শেষ নেই তোর
পাড়া ডেকে চোখে দেখালি
আমার মুখের প্রথম বোল
'মা' শুনেই
তোর চোখে জল।
তোর যতনে আমি হাঁটার মত হাঁটতে শিখেছি
এখন দিব্যি দৌঁড়াতেও পারি মা
উঁচু রাস্তায় উঠতে না উঠতেই
তোর সমতল জমিন ভুললাম
তোর জমিনের সবুজ স্নেহ ভুললাম
আমি আর পনের ভাই মিলে
তোরে করলাম পর।
এই যৌবনেও তুই যেন
অশীতিপর বৃদ্ধা এক,
বৃদ্ধাশ্রমে করে আঙ্গুলে মৃত্যু দিন গুনছিস
প্রেতাত্মাদের নির্দয় অত্যাচারে
শরীর জুড়ে কালসিটে দাগ
চোখের পটে মৃতনদী
পড়শীদের নিপীড়নে
মুখের বোল থমকে গেছে।
তোর এই অধম কাঙাল সন্তান
নিজ পরিধিতেই আত্মমগ্ন
এক প্রস্থ কাপড়েও
তোর সম্ভ্রম রক্ষা করতে পারছে না
কৈশোরব্যাপী তোর আচলের
শীতল ছায়াতলে থেকেও
তোর মাটিরমন বুঝতে পারেনি।
মা তুই আমার আতুর ঘরেই
গলা টিপে মারলি না কেন?
ছবিঃ নিজস্ব এ্যালবাম।