আমরা যেভাবে জন প্রতিনিধী নির্বাচন করে সংসদে পাঠাই তাতে একটা গলদ আছে বলে আমার মনে হয়। যেমন ধরুন একটা সংসদীয় এলাকায় সবচেয়ে বেশী যে ভোট পায় সে নির্বাচিত হয়। তাত্ত্বিক ভাবে সে ঐ এলাকার সকলের প্রতিনিধী হওয়ার কথা কিন্তু বাস্তবে তা হয় না। শুধু যে বাংলাদেশেই এই সমস্যা তা না পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই একই সমস্যা। সে আসলে প্রতিনিধীত্ব করে তার দলের। ধরুন একটা এলাকার নির্বাচিত সদস্য পেয়েছে এক লক্ষ তেত্রিশ হাজার (১৩৩,০০০) ভোট আর তার নিকটতম প্রতিদন্দ্বী পেয়েছে এক লক্ষ পনের হাজার (১১৫,০০০) ভোট। অন্যান্য প্রার্থী সব মিলে পেয়েছে আরও তিপ্পান্ন হাজার (৫৩,০০০) ভোট। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে এক লক্ষ আটষট্টী হাজার (১৬৮,০০০) লোকের কোন প্রতিনিধী সংসদে নেই যেখানে ঐ এলাকার মাত্র এক লক্ষ তেত্রিশ হাজার লোকের প্রতিনিধী হিসাবে একজন হচ্ছে সংসদ সদস্য। আর এ কারণেই সংসদ আসলে একমাত্র প্রধানমণ্ত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ি চলে। জনগনের মতামতের কোন প্রতিফলন ঘটে নাই কোনদিন।
তাই আমি মনে করি প্রতি একলক্ষ মানুষের জন্য একজন করে প্রতিনিধী নির্বাচন করা উচিত, যাতে অন্তত বেশীর ভাগ মানুষের প্রতিনিধী নিশ্চিত করা যায়। যে একলক্ষ ভোট বা তার বেশী পাবে সেই নির্বাচিত হবে। এতে করে ১৬ কোটি লোকের কম বেশী ১৫০০ জন প্রতিনিধী নির্বাচিত হবে। দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ হবে যার নিম্ন কক্ষে কমবেশী এক হাজার সদস্য থাকবে। বাকিরা যারা দুই লক্ষ বা কাছাকাছি ভোট পাবে তারা উচ্চ কক্ষের সদস্য হবেন। এটা নিয়ে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে ঠিক করা যেতে পারে কারা কারা বা কত ভোট পেলে কোন কক্ষের সদস্য হবেন। এছাড়া উনারাই পর্যায়ক্রমে জেলা পরিষদেরও সদস্য হবেন। বিভাগীয় পরিষদের সদস্য হবেন উচ্চ কক্ষের সদস্যরা। জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের সরকারী কর্মচারীরা জেলা ও বিভাগীয় পরিষদের অধীনে কাজ করবে। এতে করে সকল পর্যায়ে প্রতিনিধীত্ব নিশ্চিত করা যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:০২