somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছেলেটি কিন্তু ভালো ছিলো

০৮ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নদীর ধারে বিশাল কড়ই গাছটার নিচে এসে বসে নিশিকান্ত। সামনেই বিষখালি নদী। নদীর বুকে সমুদ্রের ঢেউ। ভাটা চলছে তাই বলক কম। ছগির এখন ওপাড়ে।যাত্রিদের নামিয়ে নৌকার মুখ ঘুরায়। ওর ডিঙ্গি নৌকার পালের আগায় লাল রঙের নিশান বাঁধা। পতপত করে উড়ছে নিশান । ছগির নিশিকান্তকে দেখতে পায়। ওর বৈঠা চালানোর গতি দ্রুত হয়। নিশিকান্ত বড় একটা দীর্ঘ্যশ্বাস ছেড়ে কপালে হাত বুলায়। বামচোখের ওপরটা ফুলে বেশ টনটন করছে। সারাগায়ে ব্যথা। অল্পের জন্য আজ ধরা পড়তে হলো। কিছুই করার করার ছিলোনা। লঞ্চের মধ্যে কাপড়ের ব্যাগটা কাঁধে তুলে হাটা শুরু করবে তখনই বাচ্চা একটা মেয়ে বলে বসলো, কাকু দেখ দেখ ঐ ছেলেটানা তোমার ব্যাগ নিয়ে চলে যাচ্ছে। আর যায় কোথায়!! চড়, থাপ্পর, কিল ঘুষির ব্যাপক বৃষ্টি। শেষে এক বৃদ্ধের মায়ায় এযাত্রা বেঁচে যাওয়া। ছগিরের ডিঙ্গি কাছাকাছি চলে এসেছে। নিশিকান্তের বসে থাকার ধরনে ছগির বুঝে যায় ঘটনা কি। কড়ই গাছের শিকড়ে ডিঙ্গি বেঁধে পাটাতনের নিচ থেকে সরিষার তেলের শিশিটা বের করে। পীরবাবার দোয়া পড়ে ফু দেয়া সরিষার তেল। শরীরের বিষ বেদনায় মালিশ করলে নিমেষে ব্যথা দুর হয়। বহুকষ্টে একশিশি যোগার করেছে ছগির। এখন প্রায় শেষপর্যায়। শিশিটা হাতে নিয়ে কড়ই গাছের গোড়ায় উঠে আসে। কিছুন ছগিরের চেহারার দিকে চেয়ে থাকে। এরপর কাছে এসে নিশিকান্তের ছেড়া গেঞ্জিটা পিঠের উপর তুলে দেয়। যেসব জায়গা ফূলে লাল হয়ে আছে সেসব জায়গায় তেল মালিস করে দিতে থাকে। চোখ বুজে থাকে নিশিকান্ত। সূর্য্যটা ডুব দেবার সাথে সাথে বাতাস ছাড়ে। ওদের দুজনের বাতাস ভালো লাগে।

নিশিকান্ত আর ছগির দুইবন্ধু। মানিকজোড়। দুজনের অনেক মিল। দুজনেই বাপহারা। হঠাৎ করে নিশিকান্তর মা মরে গিয়ে এই মিল থাকাতে বাঁধ সাধে । চিতায় উঠাবার মত পয়সাও রেখে যেতে পারেনি মা। ছগির আর নিশিকান্ত গ্রামের আদার বাদার ঘুরে কাঠ যোগার করে। গ্রামের কিছু মানুষের সহায়তায় মাকে চিতায় তুলতে তুলতে রাত হয়ে আসে। মায়ের দেহটা যখন চিতার আগুনে ঠুসঠাস শব্দে পুড়ে অঙ্গার হয়, তখন এগারো বছরের নিশিকান্ত অবাক হয়ে ল্য করে সারা পৃথীবিতে বন্ধু ছগির ছাড়া তার আর কেউ নেই। কথাটা ছগিরকে বলামাত্র ছগির বুক চিতিয়ে নিশিকান্তর সামনে দাঁড়ায়।

- অয় ঠিকই কইছোস। আইজক্যা থেইকা... মোরা দুইভাই। মোর মা তোরও মা।

ছগিরের মায়েরও নিশিকান্তকে ছেলে হিসেবে মেনে নিতে আপত্তি থাকেনা। সংসারেতো আর কেউ নেই। ছগিরের মা এবাড়ি ওবাড়ি করে কিছু জুটাতো। আর ওরা দুজন মানুষের ফাইফরমাস খেটে সবমিলিয়ে তিনজনের পেট চালিয়ে নিতো। এভাবেই টুকটাক চলে যাচ্ছিলো। কিন্তু দেখা গেলো গরিবের উপর বিধাতার সুনজর বেশিদিন যায়না। বছর দুয়েক পর ছগিরের মা অসুখে পড়লো। ছগির আর নিশিকান্ত মাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলো। ডাক্তার দেখলো। কিন্তু কি অসুখ, রুগির কি বিত্তান্ত, ডাক্তার ওদের খোলাসা করে কিছুই বললো না। অবশ্য বললেও খুব যে লাভ হতো তেমনও না। ওরা জানলো মায়ের পেটে সমস্যা। কোন খাবার ঠিকমতো হজম হয় না। ডাক্তার বললো বাড়ি নিয়ে গিয়ে বিশ্রামে রাখতে হবে। নিয়মিত ওষুধ খাওয়াতে হবে। শক্ত খাবার খাওয়ানো যাবেনা ইত্যাদি ইত্যাদি। বিচক্ষণ ডাক্তারের মায়ের প্রতি ছেলেদুটোর মমতা দেখে বড়ই মায়া হলো। মাকে যে সেবা দিয়ে ভালো করে তোলা সম্ভব এই স্বপ্নের বীজ তিনি ওদের মনে বপন করে দিলেন। হাসপাতাল থেকে বিনা পয়সায় প্রতি মাসে কিছু ওষুধ পথ্যেরও ব্যবস্থা করে দিলেন। মাকে ওরা বাড়ি নিয়ে এলো।

এরপর থেকে ছগির আর নিশিকান্তর ব্রত হলো, যেভাবেই হোক মাকে সুস্থ করে তুলতেই হবে। সংসারে একজনের উপার্জন কমে গেছে, তাতে কি । মনের জোরে ওরা দুজন সংসারের হাল ধরলো। কিন্তু হাড়ভাঙ্গা খাটুনি যে যতোই দিক না কেনো, তার বিনিময় প্রথা যদি সুনির্র্দিস্ট না হয় অভাবতো সার্বনিক সঙ্গী হবেই। দুটি কিশোর তখন হিমশিম খেতে লাগলো। বহু দেনদরবার করে ছগির বিষখালি নদীতে খেয়া পাড়াপাড়ের কাজটা যোগার করলো । জীবনের গতি কিছুটা স্বাভাবিক হলো। কারন ছগিরদের ছনের ঘরটা ছিলো নদীঘাট লাগোয়া। প্রতিদিন ভোরবেলা নিশিকান্ত ঘুম থেকে উঠে সকালের কাজগুলো গুছিয়ে রাখতো। মায়ের জন্য জাউভাতের সাথে ঘরের একমাত্র ডিমপাড়া মুরগির ডিম চটকে খাবার তৈরি করা।এরপর নিজেদের জন্য বাসি পান্তা সাথে কচু ঘেচু কিছু একটা দিয়ে সকালটা পার করা। এসব কাজ সেরে ও ছগিরকে ডেকে তুলতো। ছগির হাত মুখ ধুয়ে প্রথমেই মায়ের সকল প্রাত্যহিক কাজগুলো ধরে ধরে শেষ করাতো। এরপর নিজে কিছু নাকেমুখে গুজে বৈঠা নিয়ে ছুটতো নদীঘাটে। নিশিকান্ত তখন মাকে খাওয়াতে বসতো। খাওয়ানো শেষ হলে মাকে ওষুধ খাইয়ে নিজের পেটে কিছু দিয়ে বের হতো পেটের ধান্দায়। এমন অনেকদিন হতো ও জানতো না আজ কি কাজ কপালে জুটবে। ছগির খেয়া পাড়পাড়ের মাঝে মাঝে একছুটে এসে মাকে দেখে যেত। মায়ের খাওয়াদাওয়া, ওষুধপত্র, এভাবেই কোনমতে চলে যেত। কোন কোনদিন মায়ের শরীর বেশি খারাপ থাকলে নিশিকান্ত ঘরেই থাকতো।
নিশিকান্ত লেখাপড়া জানতো। স্কুলেও ভর্তি হয়েছিলো। কিন্তু পড়ার সৌভাগ্য হলো কই। ওর সংগ্রহে কিছু বই ছিলো। মাঝে মাঝে বইগুলো উল্টেপাল্টে দেখতো। ওর জীবনে এইছিলো একমাত্র আন্ন্দ। একদিন দুপুরবেলা নিশিকান্ত ঘরের দুয়ারে বসে লেখক বন্দে আলি মিয়ার একটি বই খুলে পড়ছিলো। হঠাৎ ওদের একমাত্র ডিমপাড়া মুরগিটা উচ্চস্বরে ডাকতে ডাকতে উঠোনের মাঝে এসে তিনচক্কর দিয়ে ঠ্যাং দুটো আকাশের দিকে তুলে মরে গেলো। নিশিকান্ত অবাক হয়ে মুরগিটার দিকে তাকিয়ে থাকে।মুরগিটা ওদের দুজনের বড় আদরের ছিলো । মাকেতো মাছ মাংস দেবার সামর্থ্য ওদের ছিলোনা। মুরগিটাই প্রধান পুষ্টির যোগান দিতো। সন্ধেবেলা ছগির এলে দুজন মিলে মুরগিটাকে কবর দিলো। মাটি চাপা দিয়ে ছগির বড় একটা দীর্ঘ্যশ্বাস ফেলে বাড়ির দিকে পা বাড়ায়। নিশিকান্ত চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। বিধাতার এতো সস্তা পরিহাস ও কোনভাবে মেনে নিতে পারেনা। মাকে চিতায় তোলার পর নিশিকান্তর চোখে সেদিন জল আসেনি। ও পাথর হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু আজ ওর বুকের নদীতে জোয়ার আসে। ওর কাছে মনে হয় চিতার আগুনে পুড়ে যাওয়া মায়ের দেহের ছোট কাঠামোটাকে আজ মাটি চাপা দেয়া হলো। হাপুসনয়নে কাঁদে নিশিকান্ত।
সংসারে কিছু বন্ধন থাকে। সেই বন্ধনের ভারসাম্যের উপর সংসারের পরিবর্তনটা নির্ভর করে। সে যতো ক্ষুদ্র বন্ধনের ভারসাম্যই হোক না কেনো পরিবর্তনের শুরুটা ওখান থেকেই। মুরগিটা মারা যাবার পরপর মায়ের শরীরটাও দিনদিন খারাপ হতে থাকে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াটা খুব জরুরী হয়ে পড়ে। কোন এক সন্ধেবেলা বাজার থেকে কেজি তিনেক চাল আর একটা লাউ হাতে ঘরের উঠোনে এসে দাঁড়ায় নিশিকান্ত। ভরা জোৎন্সা। চারিদিক চাঁদের আলো থই থই করছে। দরজার পাশে বাঁশের জানালার ওপাশে খাটের ওপর কুপি জ্বলছে। মায়ের শিয়রে ছগির বসা। উঠনের মাঝামাঝি এসে নিশিকান্ত একটু দাঁড়ায়। ঘাড় ঘুরিয়ে আশপাশটায় চোখ বুলায়। ঘরের বাম কোনায় ভাঙ্গা বেড়ার ফাঁক দিয়ে অদুরে নদীটা দেখা যায়।মায়ের কথা মনে পড়ে ওর। ওকে সাথে নিয়ে কাজে যেতো মা। সন্ধের পর কাজ সেরে এরকম ভরা জোৎস্নায় নদীর তীর ধরে ওরা ঘরে ফিরতো। ছোট নিশিকান্তর হাত ধরে মা হাটতো আর কতযে গল্প শোনাতো । সবচেয়ে বেশি শোনাতো ওর বাবার গল্প। মা বলতো..
- এ নিশি ঐ চাইয়ে দ্যাখ। ওইযে চাঁদটা দেখতেয়াছো, ওইয়া যেমন গোল মগো পৃথীবিটাও তেমন গোল। এইয়া মোর কথানা, তোর বাপের কথা। ম্যেলা এলেমদার লোক আছিলো বুঝলি। সার্কাসের দলে কাম করতো। ছয়মাস ঘরে থাকতো আর ছয়মাস দল নিয়ে ঘুইরে বেড়াতো। মাটি থেইক্যা ত্রিশ হাত উপরে চিকন একগাছি দড়ির ওপর দিয়ে হাইটে একুল থেইকে ওকুলে যাইতো। মেলা সর্বনাইশা কাম, মুই একবার দ্যেখছি। তোর বাপে হইলো মেলা সাহসি লোক। তোরেও ওইরাম হইতে হবে বুঝলি?
নদীপাড়ে মায়ের হাত ধরে হাটতে হাটতে মায়ের কথা শুনে ওর ঘোর লাগতো। ঘোরলাগা চোখে ও চাঁদের দিকে তাকাতো, দেখতো গোল চাঁদটার মাঝ বরাবার একগাছি চিকন দড়ি ঝুলে আছে। তার উপর দিয়ে বুক ফুলিয়ে হেটে যাচ্ছে একটি ছায়মূর্তি। ছায়মূর্তিটা আর কেউ নয় ওরই বাপজান। বড়ই এলেমদার লোক । আজকেও আকাশের চাঁদটার দিকে তাকিয়ে বড় করে দম নেয় নিশিকান্ত। দরজার দিকে পা বাড়ায়। ঘরে ঢোকার মুখে জানালা দিয়ে দেখতে পায় ঘুমন্ত মায়ের দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে আছে ছগির। চোখদুটো জলে টলটল করছে। দুচোখজুড়ে ওর হাহাকার। নিশিকান্তর মনে হয় বিষখালি নদীর সকল জল ছগির দুচোখের মধ্যে নিয়ে বসে আছে। নিশিকান্তর বুকচিরে বড় একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে আসে ।
এর দুদিন পর সকালবেলা ঘরের সব কাজ শেষ করে ছগির নদীঘাটে এসে বৈঠা ধরে। ওপাড়ে লোক নামিয়ে দিয়ে এপাড়ে এসে দেখে নিশিকান্ত ওর একমাত্র ভালো কাপড়টা গায়ে ঘাটে দাঁড়িয়ে আছে। কাঁধে ওর নিজ হাতে বানানো চটের বস্তার ব্যাগ। ছগির অবাক হয়ে জি¹েস করে
- কম্মে যাস?
- কামে যাই। নিশিকান্ত চোখমুখ শক্ত করে উত্তর দেয়।
- ছগির আর কিছু বলে না। ওপাড়ে নৌকা থেকে নেমে নিশিকান্ত বলে
- কাইল বিকালে আসুম, মায়ের দিকে নজর রাখিস।
ছগির অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। পরদিন বিকালে ঠিক সূর্যাস্তের আগে আগে নিশিকান্ত ফেরত আসে। হাতের ব্যাগে বেশ কিছু বাজার সদাই। মুখটা হাসি হাসি। নৌকায় উঠে লোকজনের মাঝে দুজনের কোন কথা হয়না। খেয়াপাড়ের শেষ খেপটা মেরে ছগির ঘরে ফিরে। নিশিকান্ত তখন মাকে বেদানা, আপেল কেটে খাওয়াচ্ছে। ছগিরকে দেখেই মা খুশি হয়ে বলে..
- হুনছোস ছগির, মগো নিশি বরিশাল বাজারে এক চাইলের আরতে কাম জুটাইছে। মগো আর খাওনের কষ্ট থাকবো নারে।
- ছগির সন্দেহের চোখে চেয়ে থাকে। মাকে খাওয়ানো শেষ করে থালবাটি হাতে উঠোনে নামে নিশিকান্ত। ঘরের কোনায় দাঁড়িয়ে থাকে ছগির । নিশিকান্ত ছগিরকে নিয়ে নদীপাড়ে আসে। ছগির জিজ্ঞেস করে
- কম্মে গেছিলি?
- বরিশাল গিয়া এক লঞ্চে উঠছিলাম।
- এত গুলান টাহা পাইলি কই? কি কামে গেছিলি।
- চুরির কামে। চুরি করছি।
ছগির অবাক হয়না। ও আগেই এমন কিছু ধারনা করেছিলো। শুধু বলে..
- মরলে কইলাম দোযখে যাবি! নিশিকান্ত ঘাড় গোঁজ করে বলে।
- মোর লগে যদি ভগবানের দেহা হইতো, মুই হ্যারে জিগাইতাম, ভগবান তুমি মরে এইজনমেই সুখ দেও। পরজনমে তোমার যেমন মনে লয় কইরো! মোর কি দোষ!
নিশিকান্তর কথাগুলি ছগিরের পরোপুরি বোধগম্যে আসে না। কিন্তু বয়সের উচ্ছাস ওর রক্তে কাঁপন জাগায়। ও বলে..
- তয় কাইলথন মুইও তোর লগে যামু।
- না, অহনো তোর যাওনের সময় অয় নাই। সময় আইলে মুই তোরে কমু।
এভাবেই কটা দিন কেটে যায়। তবে চুরির কামটা যে খুব সহজ কিছু তা না। বিষখালি নদী পার হয়ে পায়রা নদী থেকে লোকাল লঞ্চ ধরে বরিশাল চলে যায় নিশিকান্ত। নিজেদের গ্রাম থেকে যতোটা দুরে যাওয়া যায়। বরিশাল ঘাটে লঞ্চে উঠে ডেকের উপর ছড়ানো ছিটানো মানুষজনের মাঝে কারো ব্যাগ, কারো কম্বল, কারোবা ঘরের জিনিসপত্র যেটা সুবিধামত পাওয়া যায় হাতে তুলে নির্লিপ্তভাবে লঞ্চ থেকে নেমে আসে নিশিকান্ত। এরমধ্যে দুএকবার ধরা খেয়ে গনপিটুনিও খেয়েছে। দুএকদিন বিছানায় পড়ে সামলেও নিয়েছে। এভাবেই দিন কাটছিলো। কিন্তু মায়ের শরীরটা দিন দিন খারাপ থেকে আরো খারাপের দিকে গেলো। হাসপাতালের ডাক্তার বললো ছোট একটা অপারেশন না করালেই নয়। এ অবস্থার মাঝে নিশিকান্ত এসে যেদিন কড়ই গাছটার তলে বসলো, সেদিনটাও ভালো ছিলোনা।

ছগির বড় যত্ন করে নিশিকান্তের পিঠে তেলমালিস করে দেয়। সূর্য্য ডুবে গেছে কিন্তু সন্ধের আকাশ আলো হয়ে আছে। গ্রামের লোকজন যে যার বাড়ি ফিরে এসেছে। আজ আর খেয়া পাড়ানোর লোক নেই। বাতাসের বেগ বাড়ার সাথে সাথে নদীর গর্জনও জোরদার হয়। নিশিকান্ত ছগিরকে বলে..
- ডাক্তারের লগে আইজ কথা কইছোস?
- হয়, তিন চাইর দিনের মইধ্যে অপারেশন কইরতে অইবে। দুজনেই চুপচাপ। কিছুন পর ছগির বলে..
- ত্যাল তো শ্যাষ, এট্টুহানি আছে থুইয়্যে দেই, পরে কামে লাগবে।
- নিশিকান্ত বলে, নাহ সব ঢাইল্যে মালিশ কইরে দে। মুই কাইল ঢাহা যামু।
- ছগির অবাক হয় ক্যা, ঢাহায় ক্যা?
- কাম আছে
- গেলোও দুইদিন পরে যা, শইল্যের বেদনাডা কমুক।
নিশিকান্ত উত্তর দেয়না। বরিশাল ঘাট এখন ওর জন্য নিরাপদ না। তাছাড়া এবার বড় দু একটা দাঁও না মারলেই নয়। ও শুনেছে ঢাকার সদরঘাটে অনেক মানুষ। ঘাটে নাকি পা রাখা যায়না এতো মানুষ। সবাই নিজেরে নিয়া ব্যাস্ত। কারো দিকে তাকানোর সময় নাই। এমন একটা জায়গাইতো চুরির জন্য নিরাপদ। আর ধান্দারও অনেক সুযোগ আছে। ভাওবতর বুইঝে পরে কুলিগিরিও করা যাবে। একথাগুলো ভাবতে ভালো লাগে নিশিকান্তর। এবার বড় দাঁও মারতে পারলে মায়ের অপারেশন হবে। এরপর হাঁস মুরগির বড় একটা খোঁয়ার করার ইচ্ছা আছে ওর। হাসমুরগি দেখাশোনা করবে আর বই কিনে পড়বে। চুরি চামারি ছেড়ে দিবে। পীরবাবার দোয়াপড়া সরিষার তেলের মালিসে আরামে চোখ বুঝে স্বপ্ন সাজায় নিশিকান্ত।

ভোরবেলা ঘরের সব কাজ করে নদীঘাটে আসে নিশিকান্ত। ছগিরের কাছে বিদায় নেবার সময় বলে
- তুই মায়েরে আজই হাসপাতালে ভর্তি করায় দিস, মুই আইতে আছি।
বরিশাল পৌঁছে সবচেয়ে বড় লঞ্চটায় ওঠে । তিনতলা লঞ্চ। অনেক মানুষজন। সন্ধের পর লঞ্চ ছাড়বে। নিশিকান্ত লঞ্চের এমাথা থেকে ওমাথা ঘুরে বেড়ায়। কত পদের মানুষ। মানুষ দেখতে ওর খুব ভালো লাগে। রাত আটটার দিকে লঞ্চ ছাড়ে। নিশিকান্ত লঞ্চের ছাদে উঠে আসে। আকাশে বড় চাঁদ। আজ পূর্নিমা। চারিদিক জোৎস্নার আলো ঝকঝক করছে। নিশিকান্তর কেমন ঘোর লেগে যায়। দুপাশে গ্রামের পর গ্রাম ছাড়িয়ে লঞ্চ এগিয়ে যায়। তবে নিশিকান্ত যতোই ঘুরে বেড়াক আশেপাশে সবদিকে সন্তপর্নে চোখ রাখে। লঞ্চের ছাদ থেকে নেমে তিনতলা আর দোতালার কেবিনগুলোর সামনে দিয়ে একটা চক্কর দেয়। বুঝে ফেলে খুব বেশি সুবিধা এখানে করা যাবেনা। নিচে নেমে আসে। লঞ্চের একতলায় বিশাল ডেকে অগনিত মানুষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কেউবা চাদর বিছিয়ে তার উপর ঘুমুচ্ছে, কেউ পাটি বিছিয়ে তাশ খেলছে। অনেক পরিবার ভাত খেতে বসেছে। এদের মাঝ দিয়ে হাটে নিশিকান্ত। চারিদিকে নজর রাখে। হঠাৎ এক জায়গায় দৃষ্টি আটকায়। ছোট একটা পরিবার মা, বাবা আর এক বছর বয়সি একটি বচ্চা। মা বাচ্চাটিকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে আছে। চোখের কোন দিয়ে খেয়াল করে বাবাটা মা আর বাচ্চাটাকে রেখে দোতালার সিড়ি বেয়ে উঠে যায়। সম্ভবত দোতলার হোটেল থেকে খাবার আনতে যায়। নিশিকান্ত অবস্থাবুঝে মা আর বাচ্চাটার পায়ের কাছে বসে পড়ে। ভাবখানা যেন মা আর বাচ্চাটা ওর আতœীয়। কারো কিছু বোঝার অবকাশ নেই। ঘুমন্ত মায়ের বুকের কাছে বাচ্চাটা বসে খেলছে। পাশেই রাখা বাজারের ব্যাগের মত একটা ব্যাগ। মুখটা খোলা। ব্যাগের মধ্যে বাচ্চার দুধের কৌটা। কিছু ফলমূল। ভেতরে হয়তো আরো কিছু প্রয়োজনিয় ঘরের জিনিস আছে। ব্যাগটা হাতে নিয়ে উঠে গেলে কারো কিছু বোঝবার জো নেই। বাচ্চাটা নিজমনে খেলছে আর মা অঘরে ঘুমুচ্ছে। এদিক ওদিক তাকিয়ে খুব সহজভাবে ব্যাগে হাত দেয় নিশিকান্ত। ব্যাগটা নিয়ে উঠে যাবার আগমূহর্তে বাচ্চাটাকে দেখে। ওর দিকে চোখ পড়তেই মিষ্টি করে হেসে ওঠে বাচ্চাটা। ওই হাসিমাখা মুখ দেখে বুকের ভিতর কামড় দেয় নিশিকান্তর। ও আবার বসে পড়ে। ওর মনে হয় এতটুকু বাচ্চার খাবার কি মানুষ চুরি করতে পারে? বিড়বিড় করে নিজেকে বলে,
- মুই চোর অইবার পারি কিন্তু অমানুষ না।
ব্যাগটা আগের জায়গায় রেখে দেয়। অসুস্থ মায়ের জন্য দুধের কৌটা চুড়ি করতে চেয়েছিলো তা আর হয়না। এরপর লঞ্চের এদিক ওদিক ঘুরে তেমন কোন সুযোগ করতে পারেনা। রাত গভির হয় প্রচন্ড ক্ষুধাপেটে এককাপ চা আর দুটা বিস্কুট খেয়ে ডেকের এককোনায় ঘুমিয়ে পড়ে নিশিকান্ত।

ভোরবেলা অনেক মানুষের কোলাহলে ঘুম ভেঙ্গে উঠে বসে। লঞ্চ ঢাকার সদরঘাটে ভিরেছে। চারিদিকে মানুষ আর মানুষ। একবড় লঞ্চ ঘাট ওর জীবনে আগে দেখেনি। যা শুনেছিলো তাই। কারো দিকে কারো ল্য করার সময় নাই। সবাই যেন দৌড়াচ্ছে। লঞ্চ থেকে ঘাটে নামে নিশিকান্ত। মানুষের ভিরে হাটতে হাটতে হটাৎ দেখে সামনের ভদ্রলোকের কাঁধে ঝোলানো ব্যাগের চেনের ফাঁক দিয়ে ভাঁজকরা নতুন লুঙ্গী অর্দ্ধেক বের হয়ে আছে। কোন কিছু বোঝার আগেই ও টান দিয়ে লুঙ্গীটা হাতে নেয়। ঠিক তখনই পেছন থেকে আরেকজন লোক খপ করে ওর কাঁধে হাত দেয়। হাতেনাতে ধরা পড়ে নিশিকান্ত।

চোর চোর শব্দে আশপাশের সবাই সচকিত হয়ে ওঠে। শুরু হয় লাথি, কিল, ঘুষি। বেশ কিছুক্ষন চলার পর একটা বলিষ্ঠ হাত নিশিকান্তকে ভিড় থেকে টেনে বের করে আনে। ততনে নিশিকান্তর নাকমুখ ফেটে রক্ত ঝরছে। দুটি চোখ ফুলে বন্ধ হবার যোগার। আবছাভাবে নিশিকান্ত বুঝতে পারে যে লোকটির লুঙ্গী সেই তাকে শক্ত হাতে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। সদরঘাট টার্মিনাল থেকে বের হবার মুখেই একটা পুলিশের ভ্যান দাঁড়ানো ছিলো। ভদ্রলোক ভ্যানের কাছে গিয়ে সাব ইন্সপেক্টরের কাছে নিশিকান্তকে হ্যান্ডওভার করে দেয়। পিকআপ ভ্যানের পেছন থেকে চারপাঁচজন কনষ্টেবল নেমে আসে। এর আগে কোনদিন নিশিকান্ত পুলিশের হাতে ধরা পড়েনি। ঠিক কি হবে ও বুঝতে পারেনা। কনষ্টেবলের একজন ওকে ভ্যানে উঠতে বলে। নিশিকান্ত ভ্যানে উঠে সিটে বসতে যায়। পেছন থেকে ধরাম করে বুটের লাথি ওর পাছায় এসে পড়ে। ও উপুর হয়ে দুই সিটের মাঝে পড়ে থাকে। ওর পিঠের ওপর পা রেখে পুলিশের লোকেরা দুপাশের সিটে বসে। গাড়ি ছেড়ে দেয়।

কিছুন গাড়িটা চলার পর একজন কোমড়ের উপর বুটের চাপ দিয়ে বলে,
- ওই, ক তুই কোন দলের, তোর ওস্তাদ কেডা?
নিশিকান্ত কিছু বুঝতে না পেরে চুপ করে থাকে। কোমরে বুটের চাপ আরো জোড়দার হয়। নিশিকান্তর চোখ ফেটে পানি আসে।
- কথা কস না ক্যান, ক কোন সিন্ডিকেট তোর? কসাই লালুর নাকি চিপা আজমের?
পাস থেকে একজন বলে ওই এরিয়াতো চিপা আজমের। এই পুলিশ আবার ওকে বলে, কিরে চিপা আজমের দলের লোক তুই?
- নিশিকান্ত ভাঙ্গা গলায় বলে, ভাইজান মুই একলাই, মোর কোন ওস্তাদ নাই।
হেসে ওঠে দুই তিনজন। একজন বলে বরিশাইল্যা মনে হয় নতুন আমদানি। তাই ওস্তাদের নাম কইতে চায়না। সামনে থেকে সাব ইন্সপেক্টর বলে,
- হাবিব কি সমস্যা?
- স্যার কয় ওস্তাদ নাই, ও একাই সিন্ডিকেট।
- তাহলে বসে আছো কেনো, লাঠি চালাও শুয়োরের বাচ্চার সিন্ডিকেট পিছন দিয়ে বার করে দাও।
একথা শোনার সাথে সাথে পিঠের উপর আট দশটা বুটের চাপ আরো বেড়ে যায়। নিশিকান্তর দম বন্ধ হয়ে আসে। ওদের মধ্যে একজন মাথার কাছে মুখ এনে বলে, দ্যাখ বাইনচোদ ভালোয় ভালোয় ওস্তাদের নাম বলে দে। আইসে পয়সা দিয়ে তোরে ছাড়ায় নিয়ে যাক খামোখা মাইর খাবি ক্যান? নিশিকান্ত কোন উত্তর দিতে পারেনা। পিকআপটা চলতে থাকে নিশিকান্তর মুখ দিয়ে লালা ঝরে। সাব ইন্সপেক্টর বেশ বিরক্ত।
- কি হলো
- কথা কয়না স্যার।
- পিটাচ্ছো না কেনো?
- স্যার গাড়ির মধ্যে কি পিটানো যায়?
- তাহলে কি রাস্তায় লোক দেখিয়ে পিটাবা? দুর্নাম আরো বাড়ুক।
- কি করবো স্যার?
ইন্সপেক্টর কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে। এক কাজ করো সামনের বাজারে পাবলিকের হাতে তুলে দাও। বলবা ডাকাইত। কিছুন মাইর খাওয়ানোর পর আবার তুলে নিও।
স্যারের একথা শোনার পর একজন কনষ্টেবল নিচু হয়ে বলে
- স্যার কি কইলো হুনছোস। তোরে শেষবার কইতাছি তোর ওস্তাদেও নাম ক, খবর দে, আইসা তোরে নিয়া যাক। নাইলে কিন্তু পাবলিকের মাইর খাইয়া মইরা যাবি।
- নিশিকান্ত কাঁদতে কাঁদতে বলে ভাইগো মোর কোন ওস্তাদ নাই। মোর শুধু এক মা আর এক ভাই আছে। মোর মায়ের অসুখ।
- ওর কথা শুনে আরেকজন পুলিশ বলে নাহ কাজ হবে না, শিখানো বুলি কয়। স্যার যা কয় তাই করো।

বাজারের মাঝখানে একটা পুলিশের পিকআপ এসে থামে। দুজন কনষ্টেবল পিকআপ থেকে হাফপ্যান্ট পরা খালি গায়ের একজন কিশোরকে টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় নামায়। ছেলেটিকে দাঁড় করিয়ে পুলিশ দুজন পেছনে দাঁড়ায়। নাক চোখ ফুলে থাকা হতভম্ব কিশোরটি পিটপিট করে এদিক ওদিক চায়। লোকজন ঘিরে আসে। একজন পুলিশ আঙ্গুল তুলে ছেলেটিকে দেখিয়ে বলে, এটা একটা ডাকাইত। জনগন ভয়ংকর হয়ে ওঠে। ছেলেটিকে মারতে মারতে মাটির সাথে পিষে ফেলে। একজন একটা থান ইট দুহাতে তুলে পড়ে থাকা ছেলেটির মাথার কাছে দাঁড়ায় । ছেলেটি নিথরদেহে দুটি চোখ মেলে কেবল একচিলতে আকাশ দেখতে পায়। সে আকাশ একসময় নদী হয়ে যায়। নদীর বুকে ডিঙ্গি ভাসে। ডিঙ্গির পালের আগায় পতপত করে ওড়ে লাল নিশান । পাড়ে দাঁিড়য়ে অনেক দুরে দেখা যায়, প্রাণপনে বৈঠা চালাচ্ছে ছগির। তার সামনে পাটাতনের ওপর রাখা একটা সরিষার তেলের শিশি।

১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×