কেমন করে যেন এই ঘরকুনো আমার বুড়া বয়সে, এমবিএ পড়তে পড়তে একটা সার্কেল হয়ে গেল। এমবিএ’র ক্লাস গুলো এমন যে হয়তো একটা দুইটা ক্লাস মিলত একজনের সাথে আবার কারো সাথে কোনো ক্লাস’ই মিলে না। তারপর’ও ক্লাস ফাঁকি দিয়ে, ক্লাসের ফাঁকে আমাদের আড্ডা চলতো। আমরা বেস কিছু ট্যুরেও গিয়েছি।
এরই ধারাবাহিকতায় ঈদ’র পর ঘোরার প্ল্যান করতে বসলাম। কিন্তু প্রথমেই বিপত্তি , ট্রেন বা বাসের টিকেট পেলাম না বলে সিলেট এবং পড়ে যমুনা রির্সোট যাওয়া ক্যান্সেল হলো। তাই প্ল্যান করা হল সোনারগাঁ আর নারায়ণগঙ এর আশে পাশে।
সকাল ৮টায় এয়ারপোর্ট থেকে শুরু করলাম আমাদের মাইক্রো যোগে যাত্রা , পথে শাহবাগ, পল্টন থেকে বন্ধুদের নিয়ে যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভার হয়ে, সোনারগাঁ এলাকায় ঢুকেই নাস্তা বিরত, ঘড়িতে তখন ১০টার উপর। ডিম-সবজি-পরটা-চা খেয়ে প্রথমেই পানাম সিটিতে গমন।১৩০৫ সালের প্রায় ৫০টি পরিত্যাক্ত বাড়ি নিয়ে পানাম সিটি খুব সহজেই যে কারো মনযোগ কাড়বে। বেসির ভাগ বাড়িই দুই তালা- সামনে বারান্দাওয়ালা।
পানাম সিটি থেকে বের হয়ে সোনারগাঁয়ে গমন, ১৫টাকা করে টিকিট কেটে ভিতরে ঢুকলাম, সোনারগাঁয়ে আমআদের সবার আগেই ঘুরে জাবার কারনে প্রথমেই আমরা গেলাম জাদুঘরে, সুরুতেই ছখে পড়ল জয়নুলের আঁকা ছবি। ভিতরে তৎকালীন এবং সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন কারু ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র দেখলাম। বের হয়ে পিছনের মাঠ পিকনিক স্পরটা ঘুরে দেখলাম।
বের হয়ে নারায়নগঞ্জের দিকে যাত্রা, বন্দর ঘাট, টানবাজার এলাকায় নেমে প্রথমেই খাবারের দোকান খুজে বের করলাম। দাম খুব বেশি না, আবার খাবারের মান’অ ভালো। খাওয়া শেষে শীতলক্ষ্যার ওই পাড়ে জাবার জন্য বন্দর ঘাটে গেলাম, লঞ্চ টার্মিনালে না ঢুকে সোজা এগিয়ে গিয়ে সারি সারি নৌকা থেকে ৩০ টাকা দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদী পার হলাম, তারপর অটো ভাড়া করলাম ১০০ টারা দিয়ে হাজিগঞ্জের জলকেল্লা দেখবো বলে। রাস্তা এত খারাপ তার উপর জলকেল্লা দেখে সবাই হতাশ হলাম! কোন ভদ্র হেঁটে যাওয়া টাইপ রাস্তা নাই, এটা সম্ভবত কোন নবাবের পুকুর ছিল, তাই নাম জলকেল্লা!!
আবার নৌকা ভাড়া করে আমাদের গাড়ির কাছে ফেরত এলাম।
এইখানেই আমাদের ট্যুরটা শেষ হতে পারত!
আসার পথে বন্ধুদের কে নামিয়ে দিলাম পল্টন আর মিরপুরে, তারপর মিরপুর হয়ে কালসি হয়ে গাড়ি চলল মিরপুর ফ্লাইওভার দেখব বলে। কালসির বেড়িবাঁধের অইখানে (ঠিক কন জায়গায়, নামটা বলতে পারছি না) ব্লুমুন রেস্টুরেন্ট টায় থামলাম, চমৎকার লোকেশন আর ওদের পরিবেশনটাও মন্দ নয়! (রেস্টুরেন্ট টার কফি খেয়ে ভালো লেগেছিল বলে পরের দিন’ই আবার গিয়েছিলাম, ওদের রান্নাও চমৎকার) পানির উপরে বসার প্লেসটা আসলেই ভালো লেগেছে!
তারপর আবার গাড়ি ছুটল, হটাত করেই এক ভাই বললেন চল এয়ারপোর্টের রানওয়ে দেখাই। আমরা আর যারা ছিলাম তাড়া আজ পর্যন্ত প্লেনে উঠি নাই, তাই প্রথম প্লেন ছোঁয়ার অনুভুতিটা ভালোই লাগলো!