ওভেন নিয়ে যত কথা + টিপস-ট্রিকস + পরামর্শ + ইতিহাস + দামদর + এক পোষ্টে আর কি চান ?
আমাদের আজকের নিত্যনৈমিত্তিক কাজে মাইক্রোওয়েভ ওভেন বেশ প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। দিন দিন বাংলাদেশেও এর ব্যবহার বাড়ছে। শহুরে হেঁসেলে ওভেনের সংযোজনটা এখন খুব আহামরি কোনো আবদার নয়। আগে যেখানে ফ্রিজ ছিল মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য একটি স্বপ্নের অংশ, আজ সেখানে মাইক্রোওয়েভ ওভেন কেনার কথা ভাবছে মধ্যবিত্তরাও।
ওভেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম আবিষ্কারগুলোর একটি। ওভেনে খাবার গরম বা রান্না করতে খুব কম সময় লাগে এবং বিদ্যুৎ খরচও কম হয়। জীবনকে সহজ করে দেয় এই ইলেকট্রনিক সামগ্রীটি। এটি ছাড়া উন্নত বিশ্বে জীবন কল্পনাই করা যায় না। বর্তমানে বাজারে তিন ধরনের ওভেন পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি মাইক্রোওয়েভ ওভেন, একটি ইলেকট্রিক ওভেন আর একটি হল ইলেকট্রিক মাইক্রোওয়েভ ওভেন। এদের মধ্যে যেটা শুধু ইলেকট্রিক ওভেন সেখানে প্রায় সব ধরনের খাবার রান্না করা সম্ভব। আর মাইক্রোওয়েভ ওভেনে খাবার দ্রুত রান্না করা গেলেও এখানে কিন্তু খাবার রান্না করার কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। অর্থাৎ সব রকমের খাবার এই ওভেনে রান্না হবে না। তবে এখন বেশ কিছু মাইক্রোওয়েভ ওভেন বাজারে পাওয়া যায়, যেগুলোতে প্রায় সব ধরনের খাবার রান্না করা যায় এবং খাবার দ্রুত গরম করাও যায়।
বায়োসিরামিক প্রযুক্তিতে তৈরি মাইক্রোওয়েভ ওভেনে রান্না করা খাদ্যের গুণ অর্থাৎ ভিটামিন, নিউট্রেশন সব ঠিক থাকে। এজন্য রান্নার জন্য মাংস তেল-মসলা দিয়ে মাখিয়ে তিন-চার ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে দিন। খাবার ১৫-২০ মিনিট আগে ওভেনে রান্না করুন। রান্না না করলেও মাঝে মধ্যে ওভেনের ভেতর মুছে রাখুন এবং সর্বোপরি সুরক্ষিত থাকার জন্য ওভেনে মজবুত সুইচ বোর্ড ব্যবহার করুন। শুধু তাড়াতাড়ি রান্না বা অল্প তেল-মসলায় রান্নাই নয়, মাইক্রোওয়েভ ওভেনে রান্না করা যায় স্বাস্থ্যকর ও ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার। কেবল খাবার গরমই নয়, নানা স্বাদের খাবারও তৈরি করা যায় মাইক্রোওয়েভ ওভেনে।
দৈনন্দিন সাধারণ খাবারের পাশাপাশি কেক, বিস্কুট, ফিরনি, পোলাও, কাবাব, নান সব কিছুই খুব সহজে তৈরি করা যায় মাইক্রোওয়েভ ওভেনে। রেগুলেটর এবং ইজিটাচ কন্ট্রোল সিস্টেমের মাধ্যমে সহজেই যেমন অপারেট করা যায়, তেমনি মেন্যুয়াল দেখে নিজে নিজেও চেষ্টা করা যায় এবং প্রস্তুত করা যায় মজার মজার খাবার। মাইক্রোওয়েভে রান্নার জন্য কিছু সহজ পদ্ধতিও আছে, যা রান্নার সময় কমানোর পাশাপাশি বৈদ্যুতিক খরচও কমিয়ে দিতে সাহায্য করে।
মাইক্রোওয়েভ ওভেন আজ আর শুধু শৌখিনতা নয়, আমাদের জীবনের এক অপরিহার্য ইলেকট্রনিক পণ্যে পরিণত হয়েছে। পিৎজা ও মচমচে জলখাবার রান্নার জন্য কিংবা কম আঁচে রান্নার জন্য এবং সহজে ডিফ্রস্ট করার জন্যও মাইক্রোওয়েভ অতুলনীয়।
বাজার থেকে ওভেন কিনতে এখন বেশ কিছু ব্র্যান্ড পাবেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই চীনের তৈরি। চীনা ব্র্যান্ডের অধিকাংশ ওভেনই একটু নিুমানের কাঁচামাল দিয়ে তৈরি বলে এসব ওভেন বেশি দিন টেকসই হয় না। তাই চেষ্টা করুন বাজেটটা একটু বাড়িয়ে কোনো ব্র্যান্ড শোরুম থেকে ওভেন কিনতে।
বাজারে এখন স্যামসাং, সিঙ্গার, ফিলিপস, ন্যাশনালের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওভেন কিনতে পাওয়া যায়। এসব শোরুমে পাবেন মাইক্রোওয়েভ ওভেন এবং ইলেকট্রিক মাইক্রোওয়েভ ওভেন। আর ইলেকট্রিক ওভেন কিনতে গেলে স্টেডিয়াম মার্কেট, বায়তুল মোকাররাম, বসুন্ধরা সিটি, নিউমার্কেট-এসব জায়গা থেকে কিনতে পারেন। এ ধরনের ইলেকট্রিক ওভেনের দাম পড়বে চার হাজার থেকে শুরু করে ব্র্যান্ড আর সাইজ অনুপাতে আট হাজার টাকা। আর ইলেকট্রিক মাইক্রোওয়েভ ওভেন কিনতে পারবেন আট হাজার থেকে শুরু করে ১৮ হাজার টাকায়।
বাজারে নানা রংয়ের ওভেন পাওয়া যায়। আপনার ডাইনিং কিংবা কিচেনের ফার্নিচারের সঙ্গে ম্যাচ করে ওভেন কেনার চেষ্টা করুন। কেনার সময় সাদা ও হালকা রংয়ের ওভেনে একটু দ্রুত ময়লা ধরে, সে কথাটাও মাথায় রাখুন। মাইক্রোওয়েভ ওভেন কেনার জন্য যেতে পারেন স্টেডিয়াম মার্কেটে, নিউমার্কেটে, ঠাঁটারিবাজারসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্সের দোকানে। স্টেডিয়াম মার্কেটে স্যামস্যাং শোরুমের বিক্রেতা জাহাঙ্গীর জানান, শীত এলেই ওভেন কেনার জন্য উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা যায় ইলেকট্রনিক্সের দোকানগুলোতে।
মাইক্রোওয়েভ ওভেন যেভাবে কাজ করে
ওভেন দিয়ে যে খাবার গরম করা হয়, তার মধ্যে পানির অংশ থাকতে হবে। মাইক্রোওয়েভ ওভেন দিয়ে খুব দ্রুত পরিবর্তনশীল ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড দেওয়া হয়। পানির অণুতে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক অংশ থাকে। মাইক্রোওয়েভ ওভেনের এই ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড এই পানির কণাগুলোকে খুব দ্রুত দিক পরিবর্তন করতে থাকে। সাধারণত প্রতি সেকেন্ডে ২৪৫০ মিলিয়ন বার কাঁপাতে সক্ষম হয়। এত দ্রুত পানির কণাগুলো কাঁপতে থাকলে সেই শক্তি দিয়ে তা গরম হয়। খাবারের ভেতর যে পানি থাকে, তাই গরম হয় এবং এভাবেই পুরো খাবারটি গরম হয়। প্রকৃতপক্ষে খাবারের ভেতর যে পানি থাকে, তাই গরম হয়। তাই যেসব খাবারে খুব কম পানি থাকে তা তুলনামূলকভাবে কম গরম হয়। কাচের গ্লাস কিংবা চীনামাটির প্লেট মাইক্রোওয়েভ ওভেনে গরম হয় না, কেননা এগুলোর মধ্যে পানির কণা থাকে না। প্লাস্টিক ও কাগজ জাতীয় বস্তুর ভেতর দিয়ে মাইক্রোওয়েভ চলে যায় বলে গরম হয় না। আর লোহা কিংবা ধাতু জাতীয় বস্তু মাইক্রোওয়েভ প্রতিফলন করে বলে খাবার গরম করার সময় চামচ বা এ ধরনের কোনো ধাতব বস্তু ব্যবহার করা যায় না।
মাইক্রোওয়েভ ওভেনের ক্ষমতার উৎস এর মাইক্রোওয়েভ। যার ফ্রিকোয়েন্সি প্রায় ২৫০০ মেগাহার্জ। এই তরঙ্গগুলোর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল-এটি পানি, চর্বি, চিনি ও প্রায় সব ধরনের খাদ্যবস্তু এই তরঙ্গগুলো শুষে নেয়। তখন এসব বস্তুর পরমাণুর মধ্যে সৃষ্টি হয় কম্পন, কম্পন থেকে তাপ এবং সেই তাপেই গরম হয় খাদ্যবস্তু। প্লাস্টিক, কাচ ও সিরামিক জাতীয় পদার্থ এই তরঙ্গগুলো শুষে নেয় না, অর্থাৎ এদের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া হয় না। যে কোনো ধাতু এ ধরনের তরঙ্গ প্রতিফলিত করে। তাই এই ওভেনে ধাতব কোনো বস্তু ব্যবহার করা যায় না। সিরামিক বা প্লাস্টিকের বাটিতে যে কোনো খাবার রেখে যাওয়ার সময় সেট করে স্টার্ট বাটনে চাপ দিলেই হল। আমাদের দেশের রান্নার পদ্ধতি অনেকটা জটিল, সেই সঙ্গে হরেক রকমের মসলা ব্যবহৃত হয় খাবারে। তাই রান্নার চেয়ে বরং ঠাণ্ডা খাবার গরম করতে এই ওভেনের ব্যবহার হয় বেশি। এ ছাড়া সাধারণ ওভেনের চেয়ে মাইক্রোওয়েভ সুবিধাটি হল-সাধারণ ওভেনে বাইরের দিকে খাবার গরম করে আর মাইক্রোওয়েভ ওভেন খাবারের ভেতরও গরম করে বলে পুরো খাবারটির স্বাদ এবং বৈশিষ্ট্য অটুট থাকে।
প্রথম মাইক্রোওয়েভ ওভেন
১৯৪৫ সালে আমেরিকান বিজ্ঞানী পারসি স্পেন্সার সর্বপ্রথম এই মাইক্রোওয়েভ ওভেন আবিষ্কার করেন। এর বহু আগে ষোড়শ শতাব্দীতে ওভেন ব্যবহারের নিদর্শন পাওয়া যায়। বাণিজ্যিকভাবে ওভেন উৎপাদন শুরু হয় ১৯৫৪ সালে। প্রথম যে ওভেনটা বিক্রির জন্য তৈরি হয় তার দাম ছিল পাঁচ হাজার ডলার এবং ওজন ছিল প্রায় সাড়ে তিনশ’ কেজি। আরও অনেক ইলেকট্রনিক সামগ্রীর মতো ওভেনের প্রথম প্রস্তুতকারক ছিল জেনারেল ইলেকট্রনিক্স! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্যিকভাবে ওভেন প্রচলিত হয় ১৯৬৭ সালে। সেসময়ে রাডারেঞ্জ এবং জেনারেল ইলেক্ট্রনিক্সের ওভেন বদলে দিয়েছিল মার্কিন নারীদের জীবনধারা।
১৯৬৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত রাডারেঞ্জ ওভেনের বিজ্ঞাপন
ওভেনের যত্ন-আত্তি
জীবনযাপনের কাজে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক যন্ত্রের মধ্যে যেসব যন্ত্রের নাম আসে এর মধ্যে মাইক্রোওয়েভ ওভেন অন্যতম। ঠাণ্ডা খাবার গরম করবেন? মাইক্রোওয়েভ ওভেন তো রয়েছে হাতের কাছেই। আবার মজার যে কোনো রেসিপিও চট করে রান্না করা যায় এর সাহায্যে। খাবার গরম করার কাজে এর তুলনা হয় না। সঙ্গে মজার খাবার তৈরির কাজও রয়েছে। এ বৈদ্যুতিক যন্ত্রটি ব্যবহার করতে হয় অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে। এছাড়া যত্ন নিতে হয় সব সময়। কিন্তু অনেকেই মাইক্রোওয়েভ ওভেনের সঠিক যত্ন কীভাবে নিতে হয়, তা জানেন না। ফলে যন্ত্রে ত্রুটি দেখা যায়। অনেক সময় স্থায়ীভাবে বিকলও হয়ে যেতে পারে দরকারি এ যন্ত্রটি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সময় বাঁচিয়ে অনেকটা স্বাচ্ছন্দ্য এনে দেয় এ যন্ত্রটি। দীর্ঘদিন ভালো রাখতে জেনে নিন ওভেনের যত্ন-আত্তি সম্পর্কে।
ব্যবহারের সময়
✓ ওভেনের ক্ষেত্রে ভোল্টেজের ব্যাপারটি গুরুত্বপূর্ণ। খুব কম বা বেশি ভোল্টেজে ওভেন চালাবেন না। বিদ্যুতের হঠাৎ আসা-যাওয়াতেও অনেক সময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে ওভেন। অনেক সময় এতে ওভেনের ট্রান্সফরমারও নষ্ট হয়ে যায়।
✓ সম্ভব হলে প্রটেক্টর লাগিয়ে নিন। এতে বিপদমুক্ত থাকবে আপনার ওভেনটি।
✓ খাদ্যের ধরন অনুযায়ী গরম করার জন্য সময় নির্ধারণ করুন। স্ট্যান্ডিং টাইমের পরও রান্না না হলে আবার অল্প সময়ের জন্য দিন ওভেনে। তবে প্রথমে কম সময় নির্ধারণ করে দেওয়াই ভালো।
✓ ওভেন সব সময় কাঠের টেবিলের ওপর রাখবেন। তবে টেবিল যেন বেশি উঁচু না হয় সেদিকে লক্ষ রাখা জরুরি।
✓ ওভেনে রান্না করার সময় অবশ্যই ওভেনপ্রুফ পাত্র ব্যবহার করতে হবে। ধাতব বাসন কখনই ওভেনের ভেতর দেবেন না।
✓ ব্যবহারের কিছুক্ষণ আগে ওভেনটি চালু করে নিন।
ওভেনের ভেতরে পাত্র ও খাবার খুব সাবধানে রাখবেন যেন ওভেনের ধাতব গায়ে লেগে না যায়।
✓ পাত্রে অতিরিক্ত খাবার দেবেন না। রান্নার ক্ষেত্রে খাবারের টুকরোগুলো একই আকৃতির হওয়া উচিত। এতে খাবারগুলো একই সময়ে সুষমভাবে সেদ্ধ হয়।
✓ ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে সরাসরি ওভেনে গরম করা হলে এটি খাবারের মান নষ্ট করে। তাই ফ্রিজের খাবারের শীতল ভাব কমিয়ে ওভেনে গরম করুন।
✓ খাওয়া শেষে খাবার ওভেনে গরম করার পর বাতাসে ঠাণ্ডা করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন।
✓ ওভেনে রান্নার সময় এর ভেতরে খাদ্যদ্রব্য সব সময় ঢেকে দেবেন।
✓ গরম অবস্থায় কখনও ভেতরে খালি হাত ঢোকাবেন না। গরম পাত্র ধরতে মোটা ও ভারি গ্লাভস ব্যবহার করুন।
✓ ওভেনে রান্না করতে বেশি তেল লাগে না। তাই ডুবোতেলে কিছু রান্না করতে যাবেন না। তেল গরম হয়ে এদিক-ওদিক ছিটে ওভেনটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
✓ ব্যাবহার শেষে ওভেনের বৈদ্যুতিক সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে ফেলুন।
ব্যবহারের পর
✓ ব্যবহারের পর গরম থাকা অবস্থায় ওভেনের দরজা বন্ধ না করাই ভালো।
✓ প্রতিবার ব্যবহারের পর ওভেনের ভেতরটা পরিষ্কার করতে হবে। না হলে দুর্গন্ধ হয়ে যেতে পারে। তবে অবশ্যই ঠাণ্ডা হওয়ার পর পরিষ্কার করবেন।
✓ মাঝেমধ্যে ওভেনের গ্রিলগুলো বের করে পাতলা কাপড় দিয়ে মুছে রাখুন।
✓ মাইক্রোওভেনের সুইচ চালু রাখা যাবে না। কাজ শেষ করে এটি বন্ধ রাখতে হবে। সুইচ চালু থাকলে এ থেকে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
✓ মাইক্রোওয়েভ ওভেন অনেক সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে যেতে পারে। এ থেকে রক্ষা পেতে আর্থিং ব্যবহার করতে হবে।
✓ খাবারের পরিমাণ অনুযায়ী ওভেন চালু রাখা উচিত। বেশি খাবারের ক্ষেত্রে সময় বেশি ও পরিমাণে অল্প খাবারের ক্ষেত্রে কম সময় এটি চালু রাখা। খাবার যাতে পুড়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখা।
✓ মাইক্রোওয়েভ ওভেনটি যাতে শিশুদের নাগলের বাইরে থাকে, এমন স্থানে এটি রাখতে হবে।
ওভেনের যত্নে
✓ সপ্তাহে এক দিন ভালো করে পরিষ্কার করুন আপনার মাইক্রোওয়েভ ওভেন। আগে ওভেনের প্লাগ খুলে ভেতরের ট্রে বের করে নিন। তারপর সাবান গোলানো পানিতে স্পঞ্জ বা সুতি কাপড় দিয়ে মুছে পরিষ্কার করুন।
✓ লিকুইড সোপ ছাড়াও বাজারে ওভেন ক্লিনার পাওয়া যায়। প্রয়োজনে সেটিও ব্যবহার করতে পারেন।
✓ শুধু ওভেন নয়, ওভেনে ব্যবহৃত বাটিটিও পরিষ্কার রাখুন সমান মনোযোগে। ওভেনে খাবারের ছিটেফোঁটাও যেন পড়ে না থাকে, সে বিষয়ে খেয়াল রাখুন।
✓ ওভেনের ভেতরে দুর্গন্ধ হয়ে গেলে এক কাপ পানিতে এক চা চামচ লেবুর রস বা সিরকা মিশিয়ে এক মিনিট উচ্চ তাপে গরম করে নিন।
✓ ওভেনের সবচেয়ে বড় শত্রু তেলাপোকা। তাই ওভেনটি রাখুন খোলামেলা ও পরিষ্কার স্থানে। ব্যবহার শেষে ওভেনটি ঠাণ্ডা হলে সেটি পরিষ্কার করে অবশ্যই মোটা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখবেন।
✓ ধুলাবালি যাতে ওভেনের সুরক্ষার যান্ত্রিক অংশগুলোতে প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করুন।
✓ মাইক্রোওয়েভ ওভেনের পেছনের যে ফাঁকা জায়গা আছে সেখানে তেলাপোকা, মাকড়সা বা টিকটিকি ঢুকে যেতে পারে।
এসব ক্ষেত্রে যে কোনো সময় খাবার নষ্টের কারণ হতে পারে। তাই সব সময় মাইক্রোওভেনের পেছনের দিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
বাজার ঘুরে ওভেনের দরদাম
মাইক্রোওয়েভ ওভেন এখন আর কেবল বিলাস সামগ্রীই নয় বরং দৈনন্দিন জীবনের একটি অত্যাকশ্যকীয় সামগ্রি। বাজার ঘুরে মাইক্রোওয়েভ ওভেন সম্পর্কে বিস্তারিত-
ওয়ার্লপুল
ওয়ার্লপুল মাইক্রোওয়েভ পাবেন যথাক্রমে ২০, ২৫, ৩০ লিটার সাইজের। প্রত্যেকটি সাইজের একাধিক মডেল রয়েছে। ৩০ লিটার কনভেকশন মাইক্রোওয়েভ ওভেন দাম পড়বে ১৬,৯০০ টাকা, ২৫ লিটার কনভেকশন ১৩,৯০০, ২০ লিটার গ্রিল, সলো, সলো অটো যথাক্রমে ৮,২০০, ৬,৯০০, ৭,৯০০ টাকা।
মিয়াকো
মাইক্রোওয়েভ ওভেনের বাজারে মিয়াকো বেশি বিস্তার লাভ করেছে। মিয়াকো ২০ লিটার গ্রিল মাইক্রোওয়েভ ওভেন দাম পড়বে ৮,৯৯০, ২০ লিটার কনভেকশন ১৫,০০০ এবং ২৫ লিটার কনভেকশন ১৬,০০০ টাকা। প্রত্যেকটি সাইজের একাধিক মডেল পাওয়া যাবে।
কনকা
কনকা মাইক্রোওয়েভ ওভেন পাওয়া যাবে ১৭ লিটার ৭,৫০০, ২৩ লিটার গ্রিল ৮,৮০০ এবং ৩০ লিটার গ্রিল ও কনভেকশন মাইক্রোওয়েভ ওভেন ১৩,৫০০ টাকায়।
শার্প
ইলেক্ট্রনিক পণ্য নিয়ে শার্পও বাজারে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। মাইক্রোওয়েভ ওভেনের বিভিন্ন সাইজের বিভিন্ন মডেল পাওয়া যাবে। ২০ লিটার দাম পড়বে ১১,০০০, ২২ লিটার ৯,৫০০, ২৬ লিটার ১৯,০০০ ও ৩৩ লিটার ১২,০০০ টাকা। মডেল ভেদে দামের পার্থক্য হতে পারে।
গ্লাঞ্জ
গ্লাঞ্জ ইলেক্ট্রনিক্স মাইক্রোওয়েভ ওভেন এনেছে বিভিন্ন সাইজের। এর মধ্যে ২০ লিটার ৮,০০০, ২৩ লিটার ১২,০০০, ২৫ লিটার ১৪,০০০, ২৮ লিটার ১৬,০০০ এবং ৩০ লিটারের দাম পড়বে ১৯,৫০০ টাকা। এখানেও মডেল ভেদে দামের পার্থক্য হতে পারে।
সিঙ্গার
মাইক্রোওয়েভ ওভেনের বাজারে সিঙ্গারও পিছিয়ে নেই। সিঙ্গার দুটি সাইজের বিভিন্ন মডেল এনেছে। ২৫ লিটার গ্রিলের দাম পড়বে ১০,৯০০ টাকা অন্যদিকে ৩০ লিটার গ্রিলের মডেল ভেদে দাম পড়বে যথাক্রমে ৯,৮৫০, ১১,৫০০ এবং ১৬,৫০০ টাকা।
প্যানাসনিক
প্যানাসনিক মাইক্রোওয়েভ ওভেন বিভিন্ন সাইজের বিভিন্ন মডেল রয়েছে। ২৩ লিটারের দাম পড়বে ১১,৫০০, ২৫ লিটার ১৩,৫০০, ২৭ লিটার ১৪,৫০০ থেকে ২২,৫০০ টাকা পর্যন্ত।
এলজি
বিভিন্ন সাইজের মাইক্রোওয়েভ ওভেনের বিভিন্ন মডেল রয়েছে। এর সর্বনিন্ম সাইজ ১৯ লিটার, যার দাম পড়বে ৭,৭০০ টাকা, ২৩ লিটার ১০,৭০০, ৩০ লিটার ১৭,৯০০ এবং ৩১ লিটার ২৪,০০০ টাকায়।
দাইয়ু
দাইয়ু ইলেক্ট্রনিক্স বিভিন্ন মডেলের বিভিন্ন সাইজের মাইক্রোওয়েভ ওভেন বাজারে এনেছে, যার মধ্যে ৪২ লিটার কনভেকশন ও গ্রিলের দাম পড়বে ২২,৯০০, ৩৪ লিটার ২০,৯০০, ২০ লিটার ৬,৭০০, ২৬ লিটার ৯,৯০০ টাকা। প্রত্যেকটি ওভেনের দামের ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা ডিসকাউন্ট পাওয়া যাচ্ছে।
নোভা
নোভা মাইক্রোওয়েভ ওভেনের মধ্যে তিনটি সাইজের বিভিন্ন মডেল বাজারে এখন বেশ চলছে। ২০ লিটারের দাম পড়বে ৮,৫০০, ২৩ লিটার ১০,৫০০ এবং ২৫ লিটার ১৩,৫০০ টাকা।
র্যাংগস
র্যাংগস মাইক্রোওয়েভ ওভেনের বিভিন্ন ডিজাইনের ১৫টি মডেল রয়েছে। বিভিন্ন সাইজ ও ডিজাইনের মডেল ভেদে দাম কম বেশি রয়েছে। ২০ লিটারের দাম পড়বে ৮,৫০০, ২৩ লিটার ১৭,৯০০, ৩০ লিটার ১৩,৫০০, ৩১ লিটার ১০,৫০০, ৩৪ লিটার ১৯,৫০০ টাকা।
ওয়ালটন
মাইক্রোওয়েভ ওভেনের বাজারে ওয়ালটনও পিছিয়ে নেই। তারাও তিনটি সাইজের বিভিন্ন মডেল বা ডিজাইনের ওভেন এনেছে। ১৭ লিটারের দাম পড়বে ৮,৫০০, ২৩ লিটার ১০,০০০ এবং ৩০ লিটার ১৩,৭০০ টাকা।