ভদ্র ও সভ্য মানুষের মতো কথা বলা কিন্তু সামান্য কোন ব্যাপার নয়, এটি একটা শিল্প। আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ থাকে যাদের কথাবার্তায় ভদ্রতা, শিক্ষা ও রুচির কোন ছোঁয়া থাকেনা। তারা কথা বলেন অন্যকে অসম্মান ও বিব্রত করতে। আজকে আমি যেসব টাইপের মানুষের কথা বলব, যাদের সাথে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত।
পূর্বের পর্ব: এলোমেলো ডায়েরি: ঈদ ইন বিদেশ ভার্সেস বাংলাদেশ। দেশীয় ঈদের যে ৬ টি জিনিস প্রবাসে সবচেয়ে মিস করি!
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
১) কারো বাড়িতে দাওয়াতে গেলে -
"ওমা ভাই ভাবী! আপনি তো আমাদের ভুলেই গেলেন। কতদিন পরে এলেন! কোন খোঁজ খবরই নেন না। শুধু সংসার অফিস নিয়ে থাকলে হবে? পরিচিতদের প্রতি দায়িত্ব আছে না? আমরা সবাই তো সামাজিক জীব!"
আমার সরল মা এমন কথার উত্তরে বলে দেয়, "ভাবী আসলে নানা ব্যস্ততায় হয়ে ওঠেনা ফোন করা, এই তো এলাম আজ আপনাদের সাথে সময় কাটাতে!"
মা যে কেন সবকিছু এভাবে ভদ্রভাবে ম্যানেজ করে, দু কথা শুনিয়ে দেওয়া উচিৎ।
এইসব আন্টির ওপরে চরম রাগ হয়। যিনি এই কথাটি বলেছেন তিনি বিশেষ দিনেও শুভেচ্ছা জানাতে ফোন করেন না। আর তাদের বাড়িতে ভদ্রতার খাতিরে যোগাযোগ রাখতে ফোন করলেও সহজে পাওয়া যায়না। কারোরই সময় নেই খোঁজ নেবার, কিন্তু দেখা হওয়ামাত্র অভিযোগ ছুড়ে দেবে। কেন? "আপনাদেরকে অনেকদিন পরে দেখে ভালো লাগল" এটুকু বলতে টাকা লাগে? আন্তরিকতার নামে অমূলক অভিযোগ বিরক্তিকর।
২) পথে, দাওয়াতে, অনুষ্ঠানে বহুদিন পরে কোন পরিচিতর সাথে হুট করে দেখা হলে......
আরেহ! আপনি এত মোটা/শুকনা/কালো হয়ে গেলেন কি করে? এই ধরণের কথাগুলো সামনের মানুষটিকে কতটা বিব্রত আর হতাশাগ্রস্ত করে তা বলার আগে বোঝা উচিৎ। আপনি যদি অনেকদিন পরে একটি মানুষকে দেখেন তার মধ্যে পরিবর্তন আসবে। সময়ের সাথে সাথে মানুষের শারিরীক ও মানসিক পরিবর্তন আসা স্বাভাবিক। তাই বলে যেকোনো পরিচিতর সাথে প্রথম দেখা হওয়ামাত্রই এমন কথার মানে আছে?
হ্যাঁ ভীষন আপনজনদের কাছে অনেকদিন বাড়ি ফেরার পরে এমন কথা মন্দ লাগেনা। এটা তাদের ভালোবাসা। মায়েরা সবসময় সন্তানকে দেখেই বলেন, শুকিয়ে গেলি কেন? সেটা এক ব্যাপার, কিন্তু স্বল্পপরিচিত, ফরমাল সম্পর্কে এমন কথা অস্বস্তি তৈরি করে। যাকে বলছেন সে বাড়িতে গিয়ে আয়নায় নিজেকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখবে এবং আপনার সমালোচনায় দুঃখ পাবে নিশ্চিত! ফ্রি ফ্রি কাউকে হতাশা উপহার দিয়ে কি পান বলুনতো?
৩) কারো সন্তান পরীক্ষায় খারাপ করলে, বিশেষত সোনা মিস করলে,
সে সোনা মিস করেছে তাকে তো শুনতেই হবে, যে সে পদার্থবিহীন বস্তু মানে অপদার্থ। বাইরের লোক তো বাদই দিলাম বাবা শোনাবে যে, "তোমার জন্যে হাজার হাজার টাকার টিউটর রেখে এই লাভ হলো?" টাকার খোঁটা যে কতটা গায়ে লাগে তা যদি বোঝানো যেত। অনেক ছেলেমেয়ে প্রচুর পড়েও ভালো রেজাল্ট করতে পারেনা। সবাই তো আর মেধাবী হয়ে জন্মায় না।
মাছ সাঁতারে পারদর্শী, তাকে যদি পাখির মতো উড়তে বলা হয় সে তো ফেল করবে। তার মানে এই না যে মাছ কোন কাজের না। অনেকে আছে পড়াশোনার মেধায় কম, তারা হয়ত অন্যকিছুতে ভালো হয়, সবাইকে জজ ব্যারিস্টার হতেই হবে? আর যদি তাই হতো সমাজ কিভাবে চলত বলুনতো?
সন্তানের পেছনে কত টাকা খরচ হলো সে কথা শুনিয়ে তাকে অপরাধবোধে ফেলার কোন অধিকার বাবা মায়ের নেই। বরং তার ওপরে চাপ না দিয়ে, সে কিসে ভালো সেটা দেখা উচিৎ। আর হ্যাঁ মিনিমাম পড়াশোনা সবারই করা উচিৎ, কিন্তু সবাই তো ফার্স্ট হতে হবে না। একটা ক্লাসে ১০০ ছেলের মধ্যে মাত্র ১০ টি ছেলে টপ টেনে থাকবে। বাকি ৯০ ছেলে বা ৯০ ভাগ ছাত্র ছাত্রী বাবা মা, পাড়া প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজনের কাছে অপমানিত হবে?
আর বাবা মা বলল ঠিক আছে, মানলাম। তারা ভালোবেসে বকে, নিজের সন্তানকে বলছে। কিন্তু পাড়া প্রতিবেশী এসে উপদেশ দেয় কোন দুঃখে? শুধু সেই শিক্ষার্থীকেই নয়, বাড়ি বয়ে এসে তার বাবা মাকেও কটু কথা শুনিয়ে যাবে নিজের সন্তানের সাফল্যের মিষ্টি খাওয়াতে এসে। আপনারা কি মানুষ? খারাপ রেজাল্টের কারণে একটা পরিবারের এমনিতেই মন খারাপ, আর আপনারা কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেন? কি লাভ এতে? এতে কি আপনার নিজের সন্তানের কল্যাণ হবে? তাকেও তো একদিন পরাজয়, হতাশার মুখ দেখতে হতে পারে। সেদিন পাঁচ জনের কথা সহ্য করতে পারবেন? নিচু মন মানসিকতার মানুষ!
৪) কারো ঘরে বিবাহযোগ্য অসুন্দরী মেয়ে থাকলে.......
প্রথমত সুন্দর অসুন্দর একটি মনস্তাত্তিক ব্যাপার হওয়া উচিৎ ছিল। দর্শনীয় নয়। যেমন পৃথিবীর প্রতিটি মা ই সন্তানকে সুন্দর মনে করে, কেননা ভালোবাসে। সন্তানের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। প্রতিটি সম্পর্কের ক্ষেত্রে এমনই হওয়া উচিৎ ছিল। আমরা যাকে এবং যাদেরকে ভালোবাসি তাদেরকে আমাদের চোখে লাগবে বিশেষ ও সুন্দর। কিন্তু উল্টো সিস্টেম চালু হয়ে গিয়েছে কিভাবে যেন। আমরা যাদেরকে সমাজের তৈরি ঠুংকো বিচারে বাহ্যিক ভাবে আকর্ষনীয় মনে করি তাদেরকে ভালোবাসি! এই আপাত প্রচলিত স্বাভাবিক ব্যাপারটি আসলে কুরুচিপূর্ণ!
যাই হোক, একজন অসুন্দরী নারী পুরুষ (এক্ষেত্রে পুরুষ কম সাফার করে, তাদের হাইট ঠিক থাকলে সব ঠিক। আর মেয়েদের মাথা থেকে পায়ের পাতা জাজ করা হয়, সব ঠিক থাকলেও নাক বোঁচা এই নিয়মে বিয়ে ভেঙ্গে যায়!) যখন কোন দাওয়াতে যায়, বা ঘুরতে যায়
কেউ না কেউ অবশ্যই সেই মেয়ে নয় তার মা কে বলবে, "এই মেয়ের বিয়ে দিতে আপনার কষ্ট হবে! জানেন ভাবী! আমার ননদের দেবরের খালার ভাইয়ের বোনের মেয়ের রং তো আপনার মেয়ের চেয়েও কালো, আফ্রিকান কুচকুচে কাইল্লা ছিল একেবারে, ইন্ডিয়ান একটা হারবাল মেখে সে এখন সাদা গরুর মতো ফর্সা!"
ব্যাস মেয়েটি মেখে যাবে একটার পর এক ক্রিম, সব কাজ বাদ দিয়ে আয়নায় হা করে তাকিয়ে থাকবে পরিবর্তনের আশায়। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই আল্লাহ প্রদত্ত রং কয়েক দিনে ক্রিম মেখে পরিবর্তিত হয়না। দিনে দিনে হতাশা বাড়তে বাড়তে চোখের নিচে কালি ও মুখে দাগ হতে থাকে মেয়েটির। এত রূপচর্চা না করে আল্লাহর দেওয়া রূপকে সম্মান করলে, এত ক্ষতি হতো না। কিন্তু মেয়েটির ই বা কি দোষ? উঠতে বসতে যদি একটি মানুষকে শুনতে হয় সে দেখতে খারাপ এবং এই কারণে তার জীবনে সুখ আসবে না সে কি করবে?
আচ্ছা পড়াশোনায় ভালো হতে হলে কি রূপ লাগে? চাকরিতে প্রমোশন পেতে কি রূপ লাগে? হ্যাঁ কিছু কিছু সাবজেক্ট ও জবে লুক ম্যাটার করে। কিন্তু এমন অনেক মানুষ আছে যারা তথাকথিত সুন্দরী নয় কিন্তু নানা পেশায় সাকসেসফুল। আর আমি সবসময় দেখেছি যাদেরকে সমাজ অসুন্দর মনে করে তাদের জীবনসংগী সাধারণত খুব সুদর্শন হয়! তখনো তাদের শুনতে হয় এই মেয়ের এমন বর?
আর ছেলেদের নিয়েও একটু বলি। ছেলেদের হাইট কম হলে বন্ধুমহল ও সমাজে প্রচুর হেয় হতে হয়। কিন্তু তবুও তাদেরকে সোনার আংটি মনে করা হয় যারা বাঁকা হলেও ভালো। শেষ পর্যন্ত একজন ছেলেকে শিক্ষা ও ক্যারিয়ার দিয়েই বিচার করা হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রেও কি তেমনই করা উচিৎ না? না তা তো হচ্ছেই না, উল্টো বৈষম্যহীন??? যুগে মেন ফেয়ারনেস ক্রিম সহ আরো কি কি যেন বাজারে ছেঁয়ে যাচ্ছে! উফফ বিরক্তিকর!
৫) শিশুর মুখ প্রথম দেখা মাত্র -
শিশুরা হচ্ছে সবচেয়ে নিষ্পাপ, পবিত্র। তাদের দেখামাত্র যেকারো মন আনন্দে এবং মুখ হাসিতে ভরে ওঠা উচিৎ। জাগতিক সব হিসেব ভুলিয়ে দিতে পারে শিশুর মুখ। কিন্তু নাহ! তা হয়না! একটা বাচ্চা পৃথিবীতে আসামাত্র হসপিটালে দাড়িয়ে আত্মীয় স্বজন কথা বলতে শুরু করে দেয়, মেয়ের রং বোধহয় কালো হবে, ছেলে মনে হয় শুকনা হবে! মায়ের মতো ফর্সা হয়নি, বাবার মতো সুন্দর চোখ পায়নি। আরেহ! বাবা মা কারো মতোই তো দেখতে হয়নি, বাচ্চা পরিবর্তিত হয়ে যায় নি তো? কেউ আবার তখনই বলে বসে, কালো হলে সমস্যা কি? ছেলে তো, সোনার আংটি, বাঁকাও মূল্য আছে। অথবা এই মেয়ে বড় হয়ে বাবা মার ঘাড়ে বোঝা হবে।
আই মিন হোয়াট? রিয়েলি? আপনারা সেই হাসপাতালেরই ডাক্তার দেখান প্লিজ, আপনাদের মন মগজে সমস্যা আছে। লজ্জা করে না বাচ্চাদের বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে এভাবে বলতে? সেই থেকে শুরু, এরপরে জ্ঞান হয়েও মানুষকে নিত্যদিন গায়ের রং সহ নানা বডি ফিচারস নিয়ে সব জায়গায় কথা শুনতে হয়। আচ্ছা, যার ওপরে আমাদের হাতই নেই, আর যেখানে কোন মানুষই পারফেক্ট না, সেখানে এমন কথার মানে আছে? বিকৃত মন মানসিকতার মানুষ জন!
৬) বেকার জীবনে.......
বেকার শব্দটি সাধারণত ছেলেদের ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয় আমাদের দেশে। সেই হিসেবেই বলছি।
পড়াশোনা শেষ করার পরে সবাই লম্বা একটা সুখের নি:শ্বাস নেয়। ভাবে দিন রাত এক করে পড়ার পরে একটা সার্টিফিকেট হলো। এখন আর পরীক্ষা, টিচার/প্রফেসরের বকা, হোস্টেলে অনেকজনের সাথে এক রুম শেয়ার করার কষ্টের ও স্ট্র্যাগলের জীবন শেষ! এটা ভাবতে ভাবতেই ভালো মার্কের জন্যে চাপ দিতে থাকা পরিবার ও সমাজ ভালো চাকরির জন্যে প্রেশার দিতে শুরু করে।
কি করো? এই প্রশ্নের সহজ উত্তর পড়াশোনা এখন বলতে গিয়ে গলায় আটকে যায়, কিছু করিনা বলতে হয় ভীষন লজ্জায়। বেকার মামা চাচা ছিল একসময়ে, জানি যে বেকারদের সবচেয়ে বেশি আকার থাকে। বাড়ির যেকোন ছোট বড় কাজে "তারা তো কোন কাজ করে না" তকমায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আমার মনে হত তারাই যেন সবচেয়ে বেশি কাজ করে! চাকরি খোঁজার পাশাপাশি এর ওর কত কাজই না করে দিতে হয়! তারা যে বেকার!
যেখানেই যাবে তাদেরকে এডভাইস দেবার লোকের অভাব নেই। চাকরির বাজার ভালো না, ব্যাবসা করা উচিৎ। অথবা ঘুষ না দিতে পারলে চাকরি হবেনা। তার অমুক তমুক বন্ধুর চাকরি, বিয়ে, বাচ্চা হয়ে গেছে, সে কত বড় অপদার্থ ইত্যাদি শুনে যেতেই হবে। আচ্ছা এই পৃথিবীর এমন কোন ছেলে আছে যে ইচ্ছে করে চাকরি না করে বসে থাকবে? ছোট একটা দেশে এত মানুষ আমাদের, চাকরি জোগাড় করা কি মুখের কথা? এসময়ে সবার সাপোর্ট দরকার, খোঁটা না! বুঝলেন?
৭) ডিভোর্সি মেয়েদের ---
যেকোন জায়গায় তাদেরকে মানুষজন ছাড়াছাড়ি কেন হয়েছিল এমন প্রশ্ন করে ওঠে। নানা পুরুষ বাজে নজরে তাকায় যেন স্বামী নেই মানে সেই মেয়েটি এখন পাবলিক প্রোপার্টি! ছি! অনেক সমাজ বিশারদ আন্টি তো আবার এসব নারীদের শুনিয়ে শুনিয়ে বলবে, যে আজকালকার মেয়েরা কত খারাপ! এসব মেয়েদের চরিত্র বলতে কিছু নেই। স্বামীকে সামলে রাখতে পারেনা, তাদের জামানা তো অন্যরকম ছিল।
হ্যাঁ ছিল আপনাদের জামানা অন্যরকম। এখনকার নারীরা শিক্ষা ও আত্মসম্মানবোধে অনেক এগিয়ে। সমস্যা?
ডিভোর্সি নারীদের তো আর বাঁচার অধিকারই নেই। স্বামীর ঘর ছাড়ল! কত বড় সাহস! স্বামী যত মারুক ধরুক, পরকীয়া করুক সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে হলেও দাঁতে দাঁত চেপে পড়ে থাকা উচিৎ! স্বামী হচ্ছে অহংকার, সে না থাকলে অন্য পুরুষরা তো খাবলে খাবে!
আপনারা যারা এসব বলেন বা ইভেন মনে মনে ভাবেন আপনারা যে মানসিক রোগী সেটা কি বোঝেন? আপনাদের ঘরের মেয়েও যে কালকে সুটকেস হাতে করে ঘরে ফিরে আসবেনা সেটা কি করে ভাবেন? আজ আপনি শোনাচ্ছেন, কালকে আপনাকে শুনতে হবে। জীবনের সরল অংক এমনই আংকেল আন্টিরা।
আচ্ছা, একজন মেয়ের পুরো জীবন কি এতই সস্তা? একটা মানুষ কি বারবার জন্মায়? একটাই তো জীবন! সেটাও নষ্ট করতে হবে, কারো অন্যায় সহ্য করে বেঁচে থাকতে হবে? কেন? আর এসব কথা নারীরাই বেশি বলে। যেসব নারীরা বলে তাদের হয় স্বামী ভাগ্য ভালো, এজন্যে স্বামীর অপমান, অত্যাচার কেমন হয় বোঝেন না। অথবা তাহারা বিশিষ্ট আত্মসম্মানবোধহীন প্রাণী। রাতে মার খেয়ে সকালে গায়ে নতুন শাড়ি জড়িয়ে স্বামীর মিছে প্রশংসা করতে পারে। সবাই আপনাদের মতো হয়নারে ভাই। কিছু কিছু মেয়ের সাহস থাকে একা বাঁচার। আর সবচেয়ে বড় কথা দুটো মানুষ বিয়ে রাখবে কি রাখবে না তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার, আপনার এত চুলকায় কেন? নিজের শান্তিতে থাকুন, অন্যকেও শান্তিতে থাকতে দিন। সিম্পল!
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
ওপরের যেসব ঘটনা বললাম তার সবটাই ডাইরেক্টলি আমার সাথে ঘটেনি। তবে আমার চোখের সামনেই এসব হতে দেখেছি। আর শিক্ষিত ও উচ্চশিক্ষিত মানুষদের কথা এগুলো। ভাবতে পারেন? আমি লেখায় টাইটেলে বলেছি বাংলাদেশী সমাজ! আমাদের সমাজ পুরোটাই এমন নয় তবে গুটিকয়েক যারা আছেন তাদের গলার তেজ এত বেশি যে পুরো সমাজকে কলুষিত করতে যথেষ্ট। এসব মানুষদের জন্যেই কিন্তু এসএসসি ফেইলের পরে শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে, বুঝতে পারে না যে প্রতি বছরই তো পরীক্ষা দেওয়া যায়। একটা বছরে কি পরিমাণ অপমান সহ্য করতে হবে সেটা ভেবে জীবনই দিয়ে দেয়! স্বামীর অত্যচার সহ্য না করতে পেয়ে গৃহবধু নিজে মরে সন্তানকে মেরে ফেলে। একবারও এটা ভাবতে পারে না যে নতুন করে বাঁচতে পারে সে। তার মনে হয় সমাজ তো আমাকে বাঁচতে দেবে না। অনেক মেয়ে গ্যালন গ্যালন আন-ফেয়ার এন্ড লাই মাখে, অনেক ছেলে ঘন্টার পর ঘন্টা ঝুলতে থাকে কিছু ধরে লম্বা হবার আশায়। রাতে বন্ধু, পরিবার, সমাজের কড়া কথাগুলো ভেবে চোখের পানি বের করে।
আচ্ছা সমাজে একদম পারফেক্ট জীবন কজনের আছে? হাতে গোণা। তাছাড়া সবারই তো একদিক থাকলে অন্যদিক থাকেনা টাইপ অবস্থা। তো কিসের অহংকারে আমরা কাউকে ছোট করে কথা বলি? কেন না বুঝে সবাইকে জ্ঞান দিয়ে বেড়াই? কার জীবনের কষ্ট, কার জার্নি কেমন, কার জীবনযুদ্ধ কতটা কঠিন সেটা তো আপনি জানেন না? তো বড় মুখ করে সাময়িক বিকৃত বিনোদন ও অন্যের অসহায় মুখখানা দেখার জন্যে এত কথা কেন বলেন? যত্তসব মেন্টাল কেস!
আর ভদ্র, নরম মানুষেরা শোনেন, এসব মেন্টাল কেসরা মুখ খুলে আজেবাজে বকা শুরু করা মাত্র মুখে টেপ এঁটে দেবেন। এরা মুখ খুলতে পারবেনা, সেটাই ওদের শাস্তি!
আমি যেসব উদাহরণ বা অভিজ্ঞতার কথা লিখেছি, তার বাইরেও অনেক গা জ্বালানি কথাবার্তা আছে। সেগুলোর অভিজ্ঞতা কমেন্ট বক্সে শেয়ার করুন পারলে। যাতে তেমন কোন মানুষ পড়লে চোখ খোলে। ধন্যবাদ।