আমাদের মহামান্য প্রধানমন্ত্রীর মাননীয় প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা বলেছেন যে লিমন শুধু নয়, লিমনের বাপও সন্ত্রাসী। আমি তাঁর কথা খুব খুব খুব মান্য করি। শুধু মান্যই করি না , আরও বলি শুধু লিমনের বাপ নয়, তার চাচা, দাদা, মামা, খালু, নানা, জ্যাঠা, পিসা সবাই সন্ত্রাসী। শুধু তারাই নয়, তারা গুষ্টি শুদ্ধ সন্ত্রাসী। শুধু লিমনের গুষ্টিই কেন, আমরা সবাই সন্ত্রাসী। বাংলাদেশে র্যাব ছাড়া আর সবাই আমরা সন্ত্রাসী।
লিমনের ভাগ্য অনেক ভাল। র্যাবের গুলিতে শুধু একট্ ঠ্যাং সে হারিয়েছে। জানে বাঁচে নাই। এতে লিমনের শুকরিয়া করা উচিত। তবে দুর্ভাগ্যটা আমাদের। লিমন ক্রসফায়ারে মারা গেলে শুধু ক্ষণিকের একটা খবর হত। অমুককে ধরার সময় ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি করে, আর গুলাগুলির এক পর্যায়ে লিমন নামের এক সন্ত্রাসীর মৃত্যু হয়। এইটুকু খবর হলে খবর পড়া বা শোনার খানিক পরেই ভুলে যেতে পারতাম। কিন্তু এখন প্রতিদিন প্রতিক্ষণ তাড়া করে বেড়ায় যে, একজন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী পরীক্ষার দিন, পরীক্ষার হলের বদলে হাসপাতালে শুয়ে আছে, তাও শুয়ে থাকতে পারছে না, সে ‘মোটামুটি’ সুস্থ হওয়া মাত্র তাকে গ্রেফতার করে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিবেককে কুঁকড়ে ফেলে। কী এক ভয়ংকর ব্যবস্থার মাঝে আছি।
বি.এন.পি. আর আওয়ামী লীগের ঐক্যের আরও একটি প্রতীক এই বাহিনী। যে কারণে লিমনের ওপর নির্যাতন নিয়ে বি.এন.পি.ও খুব সরব নয়। এই র্যাব বাহিনীর সপ্তম বর্ষ পার হল। খুব দোয়া করি র্যাব সত্তর বছর পার হোক। এর বেশি দোয়া করতে চাইলেও পারছিনা। শংকা হচ্ছে আমরা সব সন্ত্রাসী যখন ক্রসফায়ারে শেষ হয়ে যাব তার পর কী হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে একটি গল্প মনে পড়ছে। একটা ক্ষুধার্ত বাঘ, কোনো শিকার না পেয়ে, তার পায়ের উপর একটি মরা হাড্ডি নিয়ে সে কামড়ানো আরম্ভ করে। ধীরে ধীরে সে রক্তের স্বাদ পায়। তারপর মাংসের। কামড়ে কামড়ে তার নিজের পা রক্তাক্ত হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সে থামতে পারছেনা।
যখন আমরা সব সন্ত্রাসী ক্রসফায়ারে নিহত হব, তখন র্যাবও কি এমন বাঘ হয়ে যাবে?