টনি আর মনি ভাই বোন। তাদের বাবার নাম মারুফ আর মায়ের নাম ময়না। ময়নার ভাই বাবুও থাকে তাদের সাথে। বাবু এবার সেভেনে। সকালে উঠেই বাবু মারুফের কাছে আসে, “অ দুলাভাই বাম চোখ লাফাচ্ছে”। মারুফ আতকে উঠে, “সব্বোনাশ কি বিপদ আসছেরে বাবুই। অলুক্ষণে ব্যাপার! তোর বোনকে বলিস না।” বলতে বলতে ময়না ঘরে ঢুকে। মারুফ টিপ্পনী কাটে, “বাপরে বাপ কি হায়াত নিয়ে জন্মেছো, বলার সাথে সাথে ঘরে ঢুকলে।” “শোন মারুফ, আজকে টনিকে স্কুলে ভর্তি করাতে হবে, মনির পরীক্ষা। খুব টেনশন হচ্ছে।” মারুফ বলে, “ইয়ে মানে প্রেম করে বিয়ে করেছি ঠিক আছে, কিন্তু বিয়ের পর স্বামীর নাম ধরে ডাকলে সংসারে অমঙ্গল হয়।” এমন সময় মনি ভাতের থালা হাতে ঘরে ঢুকে। “মা মা ভাতের মধ্যে পিপড়া”। ময়না বলে, “পিঁপড়া খেলে কিছু হয় না। পিঁপড়া খেলে মানুষ তাড়াতাড়ি সাঁতার শিখে।” বলতে বলতে প্লেট সমেত হোঁচট খেয়ে মেঝেতে পড়ে যায় মনি। ময়না মেয়েকে উঠাতে উঠাতে বলে, “কি যে আছে কপালে, ঘরে আজ থালা বাসন একটু পরপর পড়ছে। নির্ঘাত মেহমান আসবে।” কথা কেড়ে নেয় মারুফ, “রাখো তোমার মেহমান, মেয়েটাকে ফেল করাবে নাকি? সকালে ডিম দিয়ে ভাত দিয়েছো। পরীক্ষায় তো পাবে আস্ত একটা ডিম।” দেয়ালে বসা টিকটিকিটা টিক টিক করে ডেকে উঠলো। মারুফ বলে, “শুনলে তো টিকটিকিটাও বলছে ঠিক ঠিক। যাও যাও ডিম বদলে সবজি নিয়ে আসো।” প্লেট পড়ার আওয়াজ শুনে ঘরে ঢুকে টনি। পিঠাপিঠি ভাই বোন তারা। ঢুকেই টনি মনির কপালে ঠুশ মেরে দেয়। টনির মামা বাবু এসে দুজনের কপালে আবার ঠুশ লাগায়। নইলে শিং উঠে যাবে যে। ময়না প্লেটে নতুন করে ভাত আনলো, নিজের ভাই ও পুত্র কণ্যাকে এবার নিজ হাতে খাইয়ে দিচ্ছে। দু লোকমা খেয়েই টনি পেটে মোচর দিলো। ময়না ধমকে উঠে, “আরে আরে, পেটে মোচড় দিলি কেন টনি? যা খেয়েছিস সব তো কুত্তার পেটে চলে গেলো।” টনি বলে, “ও মা কুত্তা আর শুকর কি ভাই ভাই?” ঠাস করে টনির গালে চড় লাগায় ময়না, “বেয়াদ্দপ, জানিস না শুকরের নাম মুখে নিলে ৪০দিন মুখ নাপাক থাকে?”
স্কুলের সময় হয়ে এলো। সকালের মিষ্টি রোদের সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। স্কুল ড্রেস পড়ে দরজায় দাঁড়িয়ে টনি মনি ছড়া কাটছে, রোদ হচ্ছে বৃষ্টি হচ্ছে, খেক শিয়ালের বিয়ে হচ্ছে। মারুফ ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ছাতা হাতে রাস্তায় বের হলো। দুমিনিট পর পেছন থেকে ডাকছে বাবু, “দুলাভাই ও দুলাভাই।” শ্যালকের ডাক শুনে প্রচন্ড বিরক্ত হলো মারুফ। পেছন থেকে ডাকলে অমঙ্গল হয়। যদিও সকাল থেকে তার ডান হাতটা চুলকাচ্ছিলো, ভেবেছিলো আজকে হাতে কিছু টাকা আসবে। কিন্তু বাবুর ডাকে টাকা সব জলে গেলো। তবে মারুফ বাচ্চাদের নিয়ে সাথে সাথে দাঁড়ালো না। কারণ সামনে তিন রাস্তার মোড়। এ মোড়ে দাঁড়ালে আরো অমঙ্গল। তিন রাস্তা পেড়িয়ে টনি মনিকে পাশে দাঁড় করিয়ে লাল চোখে বাবুই এর দিকে তাকালো, “কি হয়েছেরে শালার শালা, ডাকছিস কেন?” শালার শালা গালিটা বাবুর খারাপ লাগে না। একগাল হাসি দিয়ে হাপাতে হাপাতে বললো, “জলদি টনির প্যান্ট খুলেন। আমার চোখে গোটা হয়েছে। ভাগ্নের নুনু দিয়ে ঘসা দিলে এ গোটা চলে যাবে।” বৃষ্টি থেমে গেছে। টনির বাবা মারুফ জোড় করে টনিকে ধরে রেখেছে। বাবু টনির নুনু দিয়ে নিজের চোখ ঘষছে। মনি হাসতে হাসতে কুটি কুটি। এ হাসিতে সকালের স্নিগ্ধ রোদ আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠলো।