হামবড়া হিন্দি শব্দ। মূলে হামবড়া মানে ‘আমি বড়’। কিন্তু প্রচলিত অর্থ আত্মগর্বী (হামবড়া ভাব, হামবড়া লোক)। হম বানানভেদ।
অবশ্য বাংলা একাডেমীর অভিধানে হম শব্দের মূল হিসেবে দেখানো হয়েছে সংস্কৃত ‘অহং’ শব্দকে।
মধ্যযুগের বাংলায় হম শব্দটি সর্বনাম হিসেবে ‘আমি’ বোঝাতো (আজু রজনী হম ভাগে গমায়ল - বিদ্যাপতি)।
হিন্দির অনুকরণে 'হম' শব্দটি 'হাম' হয়ে যেতেই পারে। তাই বাংলায় ব্যবহৃত হামবড়া শব্দটি কে সরাসরি হিন্দি শব্দ বলা যায় কিনা, তা নিয়ে আরো গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ হামবড়ার বানানভেদ হচ্ছে হামবড়।
আবার আরবি ‘হুম্মা’ থেকে বাংলায় হাম শব্দটি এসেছে, যা দিয়ে এক প্রকার গুটিকাযুক্ত জ্বর বোঝায়। ইংরেজিতে এ জ্বর measles নামে পরিচিত। বাংলায় এই হামের কাব্যিক নাম হচ্ছে ‘মিলমিলে’।
ফারসি 'হম্' থেকেও বাংলায় হাম শব্দটি এসেছে। এ হাম মানে সমান বা সম। কিন্তু হামছায় বা হামছায়া মানে প্রতিবেশী (হামছায়া কারো অনাহারে যায় রয়ে -তালিম হোসেন; মাটির মানুষ সে তবু তার হামছায়া জিবরিল - গোলাম মোস্তফা)। শুধু তাই নয়, এ হাম থেকেই বাংলায় হামদম (বন্ধু, প্রেমিক, সাথী), হামদর্দী (সমবেদনা), হামদিল (সখা), হামরাহী বা হামরাই (সহযাত্রী) এসেছে।
এসব শব্দে 'হাম ' থাকার কারণে সেগুলিকে হিন্দি ঠাওর করার সুযোগ কোথায়? মধ্যযুগের বাংলায় ও ব্রজবুলিতে ব্যবহৃত হামার ও হামারি শব্দদ্বয় 'আমি' অর্থে সর্বনাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে (হামারি দুখের নাহি ওর -বিদ্যাপতি)। এ দুটি শব্দের মূল সংস্কৃত ‘অস্মদ’।
যাইহোক, বিশেষণে হামবড়া বা হামবড় মানে আমিই সবচেয়ে বড় বা আমিই সর্বেসর্বা, আত্মগর্বী, অহংকারী। আবার 'হামবড়াই' বিশেষ্য। এটার অর্থ আমি বড় - এই ভাব, অহমিকা, অহংকার (হামবড়াইয়ের সংহিতা কোড বেবাক কাটে - সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত)।

আলোচিত ব্লগ
কাল মার্কস, পুঁজিবাদ ও বাংলাদেশের বাস্তবতা: কমিউনিজম কি এখনো প্রাসঙ্গিক?
আজ ১৪ মার্চ, কাল মার্কসের মৃত্যুবার্ষিকী। দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী হিসেবে তিনি মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক অনন্য স্থান অধিকার করে আছেন। তাঁর চিন্তাধারা শ্রমিক শ্রেণির মুক্তির লক্ষ্যে গড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুরহা ধাওয়াইল্লেহ, আন্ডা ভোনছে…….
২৪’এর জুলাই আগষ্টের ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান যে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সুযোগ এনে দিতে পারতো দেশটিতে তা আর হতে দিলো কই কিছু কিছু রাজনীতিবিদ আর... ...বাকিটুকু পড়ুন
ড: আরেফিন সিদ্দিকের সময় যারা ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে বের হয়েছে!
ড: আরেফিন সিদ্দিক (১৯৫৩-২০২৫ ) ২ মেয়াদের ৮ বছর ভিসি ছিলেন; উনার ছাত্রদের থেকে সরকারের উঁচু পদে চাকুরী ( ব্যুরোক্রেট, নন ক্যাডার, পলিসি-ম্যাকার ) করছে কমপক্ষ ২০ হাজার ছাত্র' এদের... ...বাকিটুকু পড়ুন
পিনাকি আসলে কি?
গেছদাদা্ মনে করেন পিনাকি আসলে ‘র’ এর এজেন্ট। কারণ ‘র’ তাকে হত্যা করে নাই।শেখ হাসিনা ভারতে গেছিলেন সেখান থেকে শক্তি সঞ্চয় করে আবার ক্ষমতা দখল করার জন্য। কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতের গণতন্ত্র এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্যসন্ত্রাস
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান যেমন আমাদের দেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সমস্যাগুলো উন্মোচিত করেছে, তেমনি এটি ভারতের বাংলাদেশ সংক্রান্ত কূটকৌশল, সাম্রাজ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি এবং এর ষড়যন্ত্রগুলোকে সম্পূর্ণ প্রকাশ্যে এনেছে। শত্রু যখন তার চেহারা... ...বাকিটুকু পড়ুন