somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিতৃত্ব ও রুপায়নের জন্মদিন

০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রুপায়নকে ছেড়ে আসার সময় ওর বয়স চারমাস, এ বয়সে বাবা ডাক শেখেনি। চারমাসের শিশুটি তেমন কারো কাছেই যেতে চাইত না, বিশেষ করে কালো বা স্যামলাদের কাছে মোটেও না। তবে কেন যেন কালো হলেও বাবার কোলে লেপ্টে থাকে ছেলেটা, বাবা ঘরে ফেয়ার পরে ওকে কোনভাবেই অন্য কারো কোলে রাখা দায়। রুপায়নের জন্য একমুহুর্তও বাইরে মন টেকে না আবীরের। সকালে অফিসে যাবার পর থেকেই মনটা ছটফট করে কতক্ষনে বাড়ি ফেরা যাবে, ঘন্টায় ঘন্টায় রুনীকে ফোন করে রুপায়নের খোজ করে। কি করছে, কি খাচ্ছে কাঁদলো কিনা। সাতটার সময় বসে নতুন কিছু ফাইল ধরিয়ে দিল, অনেক অনুরোধ করার পরেও বস ছাড়তে রাজি না।

“স্যার এই কাজগুলো বাসায় বসে করে কাল নিয়ে আসি, আমার একমুহুর্তও থাকা সম্ভব না। আমার সন্তান আমাকে ছাড়া একমুহুর্তও থাকে না, সেই বিকেল থেকে কাদছে”

আবীরের ধৃষ্টতা দেখে অবাক হয় অফিসের বস, তার মুখের উপরে কেউ কোন কথা বলে না। গর্জে ওঠে
“চাকুরী যদি করতে চান, এটা শেষ করে যান।”

ফাইলগুলো হাতে নিলো আবীর, বন্ধ করা পিসিটা চালু করে। ডেস্কটপে ছেলেটার ছবির দিকে তাকালো, ছবিটা ডেস্কটপ থেকে চেঞ্জ করে ওয়ার্ড খুলে টাইপ করলো পেপারটা অফিসিয়াল খামে পুরে বসের রুমের টেবিলে পেপার ওয়েট দিয়ে পাশে ফাইলগুলো রেখে অফিস থেকে বেরিয়ে পড়লো। চে চাকুরী সন্তানের প্রতি ভালোবাসাকে অবজ্ঞা করে সেই চাকুরী আবীরের পক্ষে করা সম্ভব না। ঘরে ফিরে দেখে রুপায়ন ঘুমানো, আবীর কাউকে কিছু বলে না, ঘুমন্ত ছেলেটার কপালে চুমু দেয়। সকালে নির্ঘুম রাতে মাঝে মাঝে বারান্দায় পায়চারী করে। কখনওবা রুমে এসে খেয়াল করে ছেলেটা ঘুম থেকে ঊঠেছে কিনা। নাহ, মা ও ছেলে পরম ঘুমে নিমগ্ন। আবীরও খুব ভোরে পাশে এসে শুয়ে পড়ে।

“কই উঠবে না, সাড়ে সাতটা বাজে। অফিস ধরবে কি করে।”

রুনির কথায় কর্নপাত না করে ঘুরে ঘুমিয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পরে রুনী আবার ডাকলে আবীর বলে,
“অফিস থেকে পনেরো দিনের ছুটি নিয়েছি।”

রুনি বিস্ময়সূচক চোখে আবীরের দিকে তাকায়। আবীর মিথ্যে বলতে পারে না, মিথ্যে বললে ওর চোখ কাপে তাই মাথা নিচু করে, রুনি বিড়বিড় করে বলে।
“যারা শুক্রবারও ছুটি দিতে চায় না তারা দেয় পনেরোদিনের ছুটি!”

আবীর আর ঘুমোয় না, রুপায়নকে কোলে নিয়ে খাবার খাওয়ায়। দুপুরের দিকে রুপায়নকে বুকে নিয়ে তন্দ্রাচ্ছন্য হয়, চারমাসের শিশুটিও বাবার বুকে উপুড় হয়ে ঘুমোতে পারে। দুপুরে খাবার সময় রুনি জিজ্ঞেস করে,
“কি ব্যাপার অফিসে গেলে না যে !”

“বললাম না, ছুটি নিয়েছি।”

রুনি আবীরের চোখের দিকে তাকায় ও মাথা নিচু করে। রুনিও চুপ হয়ে যায়, সন্দেহর দানা বাঁধে। আবীরের অফিসে কিছু না কিছু হয়েছেই নাহলে ও এভাবে অফিস ছুটি নেওয়ার মানুষ না। আর ওর মত কর্মিকে অফিসও এতদিনের ছুটি দেবার কথা না।

বিকেলে ছাঁদে রুপায়নকে কোলে নিয়ে হাটাহাটি করছে, সামনের ছাদের ছেলেগুলো ঘুড়ি ওড়াচ্ছে। পুরান ঢাকায় ছাদগুলোতে এসময়ে ঘুড়ি ওড়ানোর খেলা হয়, ছোট বেলায় বরিশাল থেকে লঞ্চে ঢাকায় আসার পরে থেকেই পুরান ঢাকায় বাস। চাকুরিটা মতিঝিলের দিকে হলেও বরাবরই ওদিকে থাকার প্রতি অনিহা ছিলো। সেই ঘুড়ি ওড়ানো ও ডাঙ্গুলি খেলা এগুলো নতুন ঢাকায় হয় না বলে প্রানের খোজ পাওয়া যায় না। রুনির অনেক চাপ থাকার পরেও এই মোটা দেওয়ালের পুরাতন বাড়িতেই আবীর বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে আসে। বাড়ির আঙিনায় লাগানো সেই নারকেল গাছের সাথে সাথে আবীরও এক বছর দু বছর করে বড় হয়েছে। ছাঁদে এলে এখনো মনে হয় গাছগুলো যেন ওকে কিছু বলতে চায়। ইদানিন ছাঁদে লাগানো গাছগুলোও যেন এক এক প্রানে আলাদা আলাদা কথা বলে, আবীর চাইবে রুপায়নের বেড়ে ওঠাও যেন এই বাড়িতেই হয় ও যেন বেড়ে ওটে এই পরিবেশে।

দশদিন পনেরদিন এভাবে কেটে গেলেও আবীরের অফিসে ফেরা হয় না, রুনী শুরু থেকে সন্দেহ করেছিলো বলে আবীরের অফিসে খোজ নিয়ে সব জেনেছে। কিন্তু আবীরকে কিছুই বলে না, কিন্তু রাতে বাবুকে ঘুমিয়ে দিয়ে আবীরের হাত ধরে টেনে বারান্দায় যায়,
“চাকুরী ছেড়েছো কেন?”

আবীর বুঝতে পারে রুনি সব কিছুই জেনে গেছে, তাই নির্বাক অপরাধীর মত চুপ করে মাথা নিচু করে থাকে।
“কাল থেকে চাকুরী খুজবে, প্রতিদিন।” আবীর রুনির চোখের দিকে না তাকিয়েই মাথা নাড়ায়।
মধ্যরাতেই রুপায়ন ঘুম থেকে উঠে কান্না করে, আবীর রুনিকে ডাকে।

“ওঠো, বাবুকে দুধ খাওয়াও।”

রুনি ওঠে না, “তুমি দুধ বানিয়ে খাইয়ে দাও” বলে ঘুরে শুয়ে পড়ে।

আধো আলোতে রুপায়নকে কোলে নিয়ে রুনির দিকে তাকায়, এ যেন অন্য অন্য রুনি। ও কি ভুলে গেলো বাবু বুকের দুধ ছাড়া খায় না !

“কিন্তু বাবুতো বুকের দুধ খায়”

“এখন থেকে বাইরের খাবারও খাওয়ানো সেখাও।”

রুনির কথায় অবাক লাগে, আবীর রুপায়নের জন্য দুধ বানিয়ে ফিডারে দেয়। বাচ্চাটা ফিডারের নিপলে মুখ দিতে চায় না। শুধু কাঁদে, রুনিকে ডাকলেও অ খেয়াল করে না। আবীরের কোলে বাবু তেমন কাঁদে না কিন্তু মাঝরাতে কেঁদে কেঁদে অস্থির। অনেক কষ্টে কিছু দুধ খাইয়ে, নিজের কোলে নিয়ে ঘুমোয়।

রুপায়ন আগে বিছানার ওয়াল সাইডে রুনির দিকে ঘুমত, ইদানিন রুনি ওকে মাঝে রাখে। বেশ কিছুদিন হলো রুনির সাথে বিছানার সম্পর্ক নেই, মাঝরাতের সেই খুনঠুসি ভালোবাসাও হারিয়ে গেছে। অথচ আবিরকে ভালোবেসে ওর সাথে থাকবে বলেই পারিবারকে অবজ্ঞা করে আবীরের ঘরে চলে আসে। আবীর প্রতিদিন নিয়ম করে চাকুরী খোজে, সিভির প্রিন্ট কপি খামে ভরে রেখে আসে বিভিন্ন অফিসে বন্ধুদেরকেও মেইল করে দেয়, যতক্ষন বাইরে থাকে ততক্ষন বাচ্চাটার জন্য মন কাঁদে। রুনি দুধ খাওয়াক আর না খাওয়াক সকালে নিজে দুধ গরম করে ফিডরে খাইয়ে বের হয় আবার দুপুরের মধ্যেই ফিরে গিয়ে আবার খাওয়ায়, রুনির কটমট চেহারা দেখে ওকে জিজ্ঞেস করতেও ভয় করে।

রুপায়ন ইদানিন ওর মায়ের কাছে মোটেও থাকতে চায় না, আবীরও তাই বেশিরভাগ সময় বাইরে না কাটিয়ে দ্রুত বাসায় ফিরে আসে। দুপুরে বাসায় ফিরলে রুনি বলে,
“আবীর, আমাকে জরুরী বাড়ি যেতে হবে, আম্মা অসুস্থ। বাবা কোনদিন ফোন করে না কিন্তু আজকে ফোন করে অনেক বেশি করে বলেছে আমি যেন বাড়ি যাই।”

আবীর চুপ করে থাকে, রুনি কি ঠিক কি বলবে বুঝে পায় না। মেয়েটা বাবা মাকে ছেড়ে আসার পরে কোন দিন ফিরে যায়নি, আজকে সেই বাবা মা ডাকছে তাহলে ও কি করে নিষেধ করে? নাহ, আবীর এতটা নির্দয় নয়।
“রুপায়নকে নিয়ে যাবে?”

“নাহ, ওকে নেব না। ওতো তোমার কাছে থাকতে পারে তাছাড়া এখনতো ফিডার খায়।”

রুনির কথা শুনে আবীরের কপালে ঘাম ছোটে। তবুও চুপ করে থাকে, রুপায়নকে কোলে নিয়ে ছাঁদে চলে আসে। চারিদিকে কাকা শব্দে করে একপাল কাক উড়ে যায়। রুপায়নকে দুই হাতে নিয়ে আকাশের দিকে তুলে ধরে।

প্রায় সাতমাস হলো রুনি চলে গেছে, আর ফেরেনি। নোটারির সিলযুক্ত পঞ্চাশ টাকার ষ্ট্যাম্পে লিখে আবীরকে মুক্ত করে দিয়েছে। মাঝে কয়েক জায়গা থেকে চাকুরীর নিয়োগপত্র আসলেও এবার ইচ্ছে তাহলেও চাকুরীতে যেতে পারেনি। কারন রুপায়নকে দেখবে কে! মা কতবার ফোন করে কিন্তু তাকেও রুনির চলে যাওয়ার কথা বলা হয়নি। কিন্তু হটাত একদিন বাসায় এসে যখন সব দেখলো, তখন বুক চাপড়ে নিজে নিজে কাদলো। অথচ আবীরের মা রুনিকে কতইনা ভালোবাসতো।
এরপর থেকে রুপায়ন দাদীর কাছেই থাকতো, যতটা সময় আবীরের কাছে থাকে তার থেকেও বেশি সময় দাদীর কাছে থাকে। রুনী কোনদিন খোজ নেয়নি। দেড় বছর বয়সে একটা বিদেশী কোম্পানি থেকে চাকুরীর অফার পেয়ে আবীর মায়ের সাথে কথা বলে, তিন বছরের জন্য আফ্রিকার একটি দেশে টেলিকম কোম্পানিতে কাজ নেয়। রুনিবিহীন এগারো মাসে জীবনের আবীর সব অর্থ বুঝে গেছে, রুপায়নও বেশ দাদীর সঙ্গ উপভোগ করে।

রুপায়ন কথা বলা শিখেছে, প্রতিদিন বাবার সাথে ভিডিও কলে কথা বলে। প্রথম দিকে শিখিয়ে দিতে হলেও তিন বছর বয়স থেকে নিজেই ট্যাব দিয়ে স্কাইপ ওপেন করে বাবা কে কল করতে পারে। ইদানিন একটা মেয়ে এসে ওকে বই পড়ায়, প্রতিদিন পড়া শেষ করেই বাবাকে কল করে রুপায়ন। কি কি পড়েছে সে সব নিয়ে খোশ গল্প করে বাবা ছেলে, ফোন রাখার সময় রুপায়ন বলে,

“বাবা তুমি কবে আসবে? আই মিস ইউ।”

আবীরের চোখ দিয়ে পানি গড়ায়,
“এইতো বাবা আমি সামনের মাসেই চলে আসবো, এক মাস পরে।”

রুপায়ন সান্ত্বনা পায়, সান্ত্বনা নিয়ে রাতে ঘুমিয়ে পড়ে। মাস যায় কিন্তু আবীরের এক মাস শেষ হয় না। রুপায়ন বাবা ডাকতে শুরু করেছে, দাদীর হাত ধরে স্কুলে যায়। বিকেলে ছাঁদে ক্রিকেট খেলে, কাজের ছেলেটার সাথে। এজন্য ছাদের গাছ গুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। রুপায়ন গুনতে শিখে গেছে, সপ্তাহে সাতদিন, মাসে ত্রিশদিন বারো মাসে একবছর সব বোঝে ও। ইংরেজি সব অক্ষর শিখেছে, বাংলাও শিখেছে বানানও শেষ। প্রতিদিনের পড়া নিয়ে বাবার সাথে কথা হয়, কিন্তু আবীরের একমাস শেষ হয় না। রুপায়ন ক্যালেন্ডার চেনে।

“বাবা, আমার জন্মদিন দুই তারিখ। তুমি কবে আসবে?”

“এইতো বাবা এক মাস পরে।”

“বাবা একটু দাঁড়াবে, আমি আসছি।”

ছেলেটা কোথায় যেন যায়, পরে আবার ফিরে আসে। ট্যাবের ক্যামেরায় দেখা যায় বিছানায় ক্যালেন্ডার পেতেছে। অর্থাৎ ও গিয়ে ক্যালেন্ডার নিয়ে এসেছে, রুপায়ন প্রতিদিন ক্যালেন্ডারের এক এক তারিখ দাগিয়ে রাখে মাসের পর মাস দাগ দেয়। ত্রিশ দিন কয়েকবার হয়ে গেছে কিন্তু বাবার এক মাস আর হয় না। আবীর নিজের অশ্রুসংবরণ করে, ওর চোখ কেপে ওটে হাতও কাপে। ছেলেটা এখন সব কিছু বোঝে ওকে পড়াতে আসা মেয়েটা বলেছে ভাইয়া ওকে আর নার্সারীতে পড়াবো না একেবারে কেজিতে তুলে দেবো।
দুই তারিখ এসে যায়, খুব ভরে কল দিলে কেউ ফোন ধরে না, আবীর বেরিয়ে যায় সারাদিন আউট অফ নেটওয়ার্ক থাকায় ফোন করা হয় না। বিকেলে বাসায় ফিরেই ফোন করে, এক রিং হতেই রুপায়ন ফোন ধরে চুপ করে থাকে, আবীর আস্তে করে বলে,

“হ্যাপি বার্থ ডে বাবা।”

“থ্যাংক ইউ বাবা। বাবা তুমি এখন ফোন করেছো? আমি আজকে সারাদিন ফোন ধরে ছিলাম কখন তুমি ফোন করবে, তোমাকেও পাইনি।”

আবীরের গলা ধরে যায়, ও আজ কোন এক্সকিউজ দিতে চায় না। রুপায়ন সকাল থেকে ফোন হাতে নিয়ে থাকে, স্কুলে গেলেও ফোন হাতে। ম্যাম ফোন হাতে কেন জিজ্ঞেস করলে ও বলে বাবা ফোন করবে আমার কথা বলতে হবে। দাদী সন্ধার দিকেই কেক আনিয়েছে কিন্তু রুপায়ন তা ছুয়েও দেখেনি। ও বাবার সাথে কথা না বলে কেক খাবে না। বাবাকে কতবার বলেছে যেন জন্মদিনের আগেই বাড়ি ফেরে কিন্তু সেতো ফেরে না। আজ সারাদিন দাদীর কাছে সেই অভিযোগ করেছে। আবীরের মা রুপায়নকে তার মত বোঝায়, মা ছাড়া ছেলেটা সব কিছু খুব দ্রুত বোঝে। লেখাপড়ায়ও সেই ছাপ স্পষ্ট। রুপায়নের ব্যাপারে স্কুলের টিচাররা অবগত, তাই সবাই ওকে আদরে আদরে রাখে। আজ স্কুল শেষে প্রিন্সিপ্যালের রুমে গিয়েছিলো রুপায়ন, অনেকদিন পরে ওকে দেখে কোলে তুলে নেয় প্রিন্সিপ্যাল ম্যাম, কিন্তু রুপায়ন তাতে খুশি না হয়ে বলে,
“ম্যাম আজ আমাকে কেউ হ্যাপি বার্থডে বলেনি, আমি এই স্কুলে আর পড়বো না।”
স্কুলের ম্যাম মৃদু হাসে, বলেন
“হ্যাপি বার্থডে বললে উত্তরে তুমি কি বলতে?”
“বলতাম থ্যাঙ্ক ইউ, তবে এখন আর বলবো না।”
স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল ম্যাম অনেকগুলো চকলেট দিয়ে মান ভাঙ্গাতে চেষ্টা করে, কিন্তু তাতে কাজ হবেনা সে টিচারকে বলে দিয়েছে নতুন বছরে সে নতুন স্কুলে যাবে। বাবাকে সে এবার দেশে ফিরিয়ে আনবেই।
রুপায়নের গল্প শুনে আবীরের কষ্ট লাগে, চাপা কষ্টে বুক ফাটে ওর। ছেলেটা অনেক কিছু বুঝতে শিখেছে, ওকে ফাকি দেওয়ার উপায় নেই।
“বাবা তুমি এবার বলো কবে আসবে?” রুপায়ন বলে।

“এইতো বাবা আমি আসবো, তা তুমি কেক খাওনি কেন?”

“কেকটা ফ্রিজে রেখে দিয়েছি তুমি আসলেই খাবো।”

আবীর চোখের পানি আটকে রাখতে পারে না, কি বলবে ছেলেটাকে আর কত ফাকি দেবে ও?

“না বাবা আর একমাস পরে আসব বলবো না, তোমাকে নতুন বছরে নতুন স্কুলে দিতেই আমি আসবো, তুমি কেকটা খেয়ে নাও।”

“আমি জানি আমার বাবা মিথ্যে বলে না, এবার তুমি ঠিকই আসবে আর আমি তখনই কাটবো।”

“আমি তোমার জন্য কি আনবো?” আবীর বুঝতে পারে ছেলেটা তার মতই জিদ্দি তাই বেশি কথা বাড়ায় না।

“তুমি এসো এবার, তাহলেই হবে।”

রুপায়ন অনেক বড় হয়ে গেছে, ওকে ফাকি দেওয়া আর যাবেনা। ওকে ফাকি দেওয়া মানে নিজের সাথে বেঈমানি করা, আবীর সেই বেঈমানি করবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৩১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×