প্রথমেই ধন্যবাদ সবাইকে যারা আমার ট্রাভেল ব্লগের আগের পর্ব পড়েছেন। যারা নতুন এই পর্ব পড়ছেন তারা নিচের লিংক থেকে টু মেরে আসতে পারেন আগের লেখায়। আশাকরি ভালো লাগবে। আগেরপর্বে আমি কোচিন শহরের ভেতরের স্পটগুলো নিয়ে লিখেছি, ছবিতেও দেখাতে চেষ্টা করেছি। স্পেশালি ফোর্ট কোচির সাইডটাকে হাইলাইট করেছিলাম।
প্রথম পর্বের লিংক
কিন্তু এবার ফোর্ট কোচির বাইরের অংশ নিয়ে লিখবো।
আগেই বলেছিলাম, কেরালাকে বলা হয় God’s own country. হয়তো আসলেই তাই, অনিন্দ্য সুন্দর প্রকৃতি বা দেখার মত জায়গা কাশ্মীরে হয়ত আছে, কিন্তু সব কিছু মিলে কেরালা প্রদেশকে যেন সৃষ্টিকর্তা নিজ হাতে ঢেলে সাজিয়েছে। কেরালায় আরেকটা মজার জিনিশ হল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধরে রাখতে বা বৃদ্ধিতে মানুষের ভুমিকাও অকল্পনীয়, যেখানে কাশ্মীরের মত জায়গায় সৌন্দর্য বিনাশেই বেশি আগ্রহ মানুষের।
ট্রাভেল টিপসঃ এই স্পটগুলো দেখতে ভুলেও সাইকেলের চিন্তা করবেন না, ব্যাকপ্যাকও যেন ভারী না হয়। গরম কালে হালকা পোশাকই পরবেন, হোটেল থেকে বের হয়ে পানি কিনে নিয়ে আসবেন। গাড়ি ভাড়া নেবার সময় ইংরেজী জানা ড্রাইভার খুজে নেবেন, কারন বেশিরভাগ কিন্তু হিন্দি জানে না। ট্রাভেল কার হায়ার করুন, অলইন্ডিয়া কভার করে টয়োটা ইনোভা নিতে পারেন, কারন আপনি ভুলেও ঢুকে যেতে পারেন তামিল বা কর্নাটকা প্রদেশে। সতারং অযথা হ্যাসালের কি দরকার আছে। যেসব হোটেলে উঠবেন চাইলে সেখান থেকেই গাড়ি পেতে পারেন, আর সেটাই নিরাপদ।
রাতে যেহেতু এর্নাকুলামের দিকেই স্টে করেছিলেন সুতারং আগে দেখেনিন এর্নাকুলামের অদুরেই “থ্রিপুনিথুরা হিল প্যালেস মিউজিয়াম” সকাল আটটার মধ্যেই হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়ুন। এর্নাকুলাম থেকে দশ কিলোমিটার দুরের থ্রিপুনিথুরা পৌছাতে আধাঘন্টার মত লাগতে পারে, যারা লম্বা সময়ের জন্য ভারত ঘরতে এসেছেন তাদের জন্য হল হোটেল থেকে বের হয়ে যে কোন বাসেই ভাইটিলা হাবে চলে যান। সাধারণত শহরের সব বাসই ভাইটিলা থেকে ছাড়ে, ভাইটিলা থেকেও সহজেই থ্রিপুনিথুরা যেতে পারবেন। এতে টু মারা হবে বাসস্টান্ডটিও, পুরো ভারতে এত আধুনিক পাবলিক বাসস্টপ কমই পাবেন।
থ্রিপুনিথুরা হিল প্যালেস মিউজিয়ামঃ কেরালা প্রদেশের সব চেয়ে বড় প্রত্নতাত্ত্বিক এই জাদুঘরটির এরিয়াতে না ঢুকলে আপনার মনেই হবে না যে প্রায় ৫২ একর জায়গা জুড়ে এমন স্থাপনা থাকতে পারে। ১৮৬৫ সালে ব্রিটিশদের সহায়তায় কোচিনের রাজা তার নিজস্ব বাসস্থান হিসাবে প্যালেসটি গড়ে তুলেছেন, কোচিনের ভৌগলিক অবস্থান আর পর্তুগিজ ও ইংরেজ প্রভাবের কারনেই প্যালেসের স্থাপত্যে লক্ষ করা যায়। ১৯৮০ সালে কেরালা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর প্যালেসটি নিজেদের করে নেবার ছয় বছর পরে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। ৫২ একর জায়গাজুড়ে ৪৯ টি ইউনিটের গঠিত প্যালেসটিতে ব্রিটিশ, পর্তুগিজদের পাশাপাশি স্থানীয় ইট্টুকিটু স্থাপত্যগুলো চোখে পড়ার মত। মুল ভবনগুলোর বাইরে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন পার্ক, পুকুর ও বোটানিক্যাল গার্ডেন। মিউজিয়ামের ভিতরে রয়েছে ভারতীয়, ডাচ, ইংরেজ, পর্তুগিজ ও পারস্যের বিভিন্ন শৈল্পিক নিদর্শন, দেখতে পাবেন অসংখ্য মুর্যাল। দুঃখিত মুল মিউজিয়ামের ভেতরে ছবি তোলা নিষেধ। সুতারং ব্যাটারি খুলে ক্যামেরাটা ব্যাগেই ঢুইয়ে রাখুন।
আমার এবারের গন্তব্য কোডানাড এলিফ্যান্ট ট্রেনিং সেন্টার। যারা নিজস্ব গাড়ি নেননি কিন্তু হিল প্যালেস মিউজিয়াম থেকে কোডানাড যেতে চান তাদের জন্য আবার গন্তব্য ভাইটিলা হাব। কোডানাড যাওয়ার জন্য হাব থেকেই কেরালা ষ্টেট ট্রান্সপোর্টের ডাইরেক্ট বাস পাবেন। আর ট্র্যাভেল গাড়ি নিয়ে থাকলেতো কথাই নাই, সোজা চলতে থাকুন কোচিন মাথুরা হাইওয়ের উলটাদিকে।
কোডানাড এলিফ্যান্ট ট্রেনিং সেন্টারঃ প্রাচীন কাল থেকেই মালায়ালীদের দৈনন্দিন কাজ মেটাতে হাতীর গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা ছিল, কোডানাডের বনাঞ্চলে প্রচুর হাতি পাওয়া যেতো আর যা ছিলো সাহয়ার (নিজ উদ্যোগে উচ্চারন করে নিন) পাশেই। এই কারনেই হাতীগুলো স্থানিয়ভাবে সাহইয়ার সন্তানরূপে প্রতিয়মান হয়ে আসছে। প্রাচীনকাল থেকে কেরালাদের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানগুলো হাতি ছাড়া অপূর্ন থেকে গেছে বিভিন্ন রঙে আর আর অংকনে সাজিয়ে প্রদর্শন করা হয়। হিন্দু বা ট্র্যাডিশনাল মালায়ালীরা রাস্তায় হাতি দেখলে এখনো প্রনাম করে। যারা ল্যান্ডস্কেপ পছন্দ করেন তারা টু মেরে আসুন পেরিয়ার নদীর তীর থেকে। এখানেই গোসল করানো হয় ট্রেনিং সেন্টারের হাতীগুলো। ফিরতি সময়ে মন্দিরে মাথা নুইয়ে প্রনাম করিয়ে আনে মাহুত। আপনি চাইলে ট্রেনিং সেন্টারের ভেতরে হাতিতে চড়তে পারবেন, এর জন্য অবশ্য ফি রয়েছে। ট্রেনিং সেন্টারের ভেতরে ভারতীয়দের প্রবেশ ফি ২৫ টাকা আর অভারতীয়দের ৪৫ টাকা। ক্যামেরা সাথে নিতে হলে অবশ্য ১২০ টাকা বেশি দেওয়া লাগবে। সমস্যা নাই দূর এর্নাকুলাম থেকে এতদুর যখন এসেই পড়েছেন তখন সময়টা পুষিয়ে যাবে।
বোনাসঃ কোডাল্যান্ড যখন বেড়াতে আসছেনই তাহলে পেরিয়ার নদী পার হয়ে এপার চলে আসুন, বুঝতে পারবেন এই প্রত্যন্ত এলাকায় কত সুন্দর এক স্থাপনা। মালায়াত্তুর সেন্ট থমাস চার্চ, ট্রেনিং সেন্টারের পশ্চিমদিকেই মালাত্তুর ব্রিজ পেরিয়ে আবার পুর্বে হাটুন, না চিনলে কাউকে কৌশলে জিজ্ঞেস করুন সমস্যা কি ? অনিন্দ্য সুন্দর এই ধর্মীয় স্থাপনার বর্ননা নাইবা দিলাম দেখেনিন ছবিতে।
ওয়াইল্ডলাইফ নিয়ে এ্যাডভেন্সর করা পাবলিক আরেকটু পূর্বে চলে জান। হাতে দিন বেশি থাকলে পারাম্বিকুল টাইগার সেন্টারে যেতে পারেন। এই সাফারিতে বাঘ যে আপনি দেখতে পাবেনই এমন গ্যারান্টি না দিলেও হাতি দেখতে পারবেন। আমার অবশ্য সময় ছিলনা
টিপসঃ পর্যটক বন্ধুরা, স্পেশালি যারা লেখাপড়ার পাট চুকিয়ে একটু ঘুরাঘুরির জন্য ভারতে আসছেন, দেশ থেকের বের হবার আগে একটু স্টাডি করে আসেন। কারন খরচ একটা ফ্যাক্ট সুতারং প্লান মত না এগুতে পারলে অযথা খরচ বেশি হবে, বিশেষ বিশেষ স্পট বাদ যাবে। ভাইসব যারা উত্তর ভারত ট্র্যাভেল করেছেন তারা যেন সেই আন্দাজে দক্ষিনে না আসেন কারন সব দিকদিয়েই এটা বিপরীত, ধ্রাঘিমাংশের খুব কাছাকাছি হওয়ায় শিত গরম দুইটাই কম সুতারং ভারী পোশাক না আনাই উত্তম। যাদের লবন আবহাওয়ায় সমস্যা রয়েছে তারা বেরুনোর আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে বের হন।
এর্নাকুলামে রাত কাটিয়ে দিনের বাকি অংশ যারা হিল প্যালেস আর কোডানাডে যাবেন তারা আগেরদিন এরাতের জন্য হাউজবোট বুক করতে পারেন। সন্ধায় উঠলে পরেরদিন দুপুরে নামবেন এই চুক্তিতে বুক করুন। সাধারণত ছয় থেকে নয় ঘন্টার ক্রুজ প্যাকেজ থাকে। চাইলে আপনার ইচ্ছে মতও বুক করতে পারেন। কেরালা এসেছেন আর হাউজবোট মিস করবেন এটা হয়না, কাশ্মীরি হাউজ বোটের চেয়ে কেরালারগুলো ভিন্ন ধাঁচের সাথে বেশি আধুনিকও। এর্নাকুলামের বেশ কয়েকটা জায়গায় হাউজবোট পাওয়া যায়, আমি অবশ্য আলেপ্পির দিকে এসে হাউজবোটে ওঠার পরামর্শ দেই। আপনাকে আগে প্লান করতে হবে যে আপনি আবার এর্নাকুলামে ফিরে আসবেন নাকি অন্য কোথাও যাবেন।
কেরালা হাউজবোটঃ সাধারণত দুই ধরনের হাউজ বোট থাকে দোতলা ক্রুজ বোট আবার প্রিমিয়াম হাউজ বোট। যারা নতুন বিয়ে করেছেন তারা নিজেরা প্রিমিয়াম বোট ভাড়া করুন দুই বেড রুমের সাথে সব ধরনের ফাইভস্টার সুযোগ সুবিধা পাবেন। যারা বাজেট ট্র্যাভেল করবেন তারা গ্রুপ প্যাকেজ বুক করে নিতে পারেন। মাঝারী খালের মাঝ দিয়ে তীর ঘেঁষা টুইটুম্বুর পানিতে ধীরলয়ে এগিয়ে যাওয়া হাউজ বোট আপনাকে অন্য রকম এক এক্সপেরিয়েন্স দেবে। কোল ঘেঁষা সারি সারি নারকেল গাছ দেখে আপনার মনেই হবে না আপনি বাইরের কোন দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। হাউজ বোটে মজার জিনিশ হল খাবার। ট্র্যাডিশনাল কেরালার সব ধরনের স্পাইস খাবার সার্ভ করবে ওরা। স্পেশালি বাহারী আইটেমের পাকোড়া সাথে ফিস ফ্রাই। পাবেক কফিও, কেরালাতে কফি অঙ্গাওঙ্গি ব্যাপার। যাদের এলকোহল পানাহারের অভ্যাস আছে তারা প্রি বুক করে নিতে পারেন। তবে ট্রাভেলিং টাইমে পানাহার না করাই উত্তম।
খরচঃ
এর্নাকুলামে প্রতিরাতের জন্য মোটামুটি মানের হোটেল ভাড়া ২০০-৬০০ রুপি।
যদি সারাদিনের জন্য ট্র্যাভেল গাড়ি বুক করেন তবে ৩০০ কিলোমিটার অব্দি ৩০০০ রুপি।
যদি পাবলিক বাসে উল্লেখিত জায়গা ট্র্যাভেল করেন তবে সব মিলিয়ে খরচ হবে ২০০ রুপি।
হাউজবোট প্রিমিয়াম, অর্থাৎ ফুল বোট ভাড়া নিলে ৬০০০ থেকে ২০০০০ টাকার মধ্যে।
যদি প্যাকেজ টুরে অংশ নেন তবে ৫০০ থেকে ১৫০০ (মিল ভেদে দামের পার্থক্য)
দিন বেশি থাকলে ঘুরে আসবেন, পালাক্কাড। তবে মুন্নার যাবেন স্পেশাল সময় নিয়ে মানে দুইদিন। পুরো কেরালা প্রদেশের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে মুন্নার যাওয়ার বিকল্প নেই।
মুন্নারঃ এর্নাকুলাম থেকে বাসে বা ট্র্যাভেল কারে চড়ে আসতে পারেন মুন্নার। মনে হয় মুন্নারের জন্যই কেরালাকে God’s own country বলা হয়। সৃষ্টিকর্তা প্রকৃতির সব অপরুপ সৌন্দর্য যেন মুন্নারে ঢেলে দিয়েছেন। যে ভাষায়ই মুন্নারের সৌন্দর্য বর্ননা করিনা কেন তা কোন ভাবেই তুলনিয় হবে না। ভালো করে ঘুরে দেখতে হোটেল থেকেই টুর গাইড সাথে নিতে পারেন। এ্যাডভেন্সর প্রিয়রা হাইকিং করতে পারেন, বেরুবার আগে হার্টের বিট চেক করে নিবেন। হাইকিং এ ভালো জুতো পরে নেবেন, চারিদিকে রক্তচোষা জোকের ছড়াছড়ি।
মুন্নারে যে জিনিশটি আগে দেখবেন তা হল কান্নান দেভান টি মিউজিয়াম। মুন্নার শহরের অদুরেরি আড়াই কিমি দুরত্তে মুন্নারের সবচেয়ে বড় এই টি মিউজিয়াম ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত। আশাপাশের সব ধরনের চা পাতা এখানে প্রক্রিয়াজাত করা হয়, পুরো মিউজিয়াম ও ফ্যাক্টরি ঘুরে দেখতে পারেন, হ্যা ছবিও তুলতে পারেন এখানে এর জন্য এক্সট্রা বিশ রুপি পে করতে হবে। ভিডিও করা নিষেধ, যদিও ডিএসএলআরের কল্যানে অনেকেই তাকরছে। তবে ধরা পড়লে ডিলেট করতে হবে।
এরপরে ঘুরবেন মাট্টুপেডি ডাম, ভাবছেন ড্যামের কি দেখবেন ? দেখবেনতো ড্যাম লেক তাও আবার স্পিড বোটে। অনিন্দ্য সুন্দর এই লেক সারাবছরের কোলাহলযুক্ত কানদুটিকে একটু স্বস্তি এনে দেবে। পাঁচ ছয়জন মিড়ে বোট ভাড়া করে ঘুরে আসুন লেকের এমাথা থেকে ও মাথা অব্দি। পাঁচশো টাকায় আধাঘণ্টা চড়তে পারবেন। যারা ঘোড়ায় চড়তে পারেন তাদের জন্য লেকসাইডে ঘোড়ায় চড়ার ব্যাবস্থাও রয়েছে।
সিয়েনা ওয়াটার ফল। মুন্নার থেকে নয় কিলোমিটার দুরেই এর অবস্থান। জংগল আর পাহাড়ের অংশ ভেদ করে মাট্টুপেডি ড্যামের দিকে আসা ঝরনাধারা আপনার মনকে ফ্রেশ করবে। ট্রাকিং আর হাইকিং এর জন্য অসাধারণ জায়গা এটি।
এরভিকুলাম ন্যাশনাল পার্ক, নিলগিরি জাতীয় প্রানির অভয়ারণ্য এই সাফারি পার্কে বাঘ হাতি ছাড়াও রয়েছে অনেক প্রজাতির প্রানী।
টপ ষ্টেশন, মুন্নারের সব চেয়ে আকর্শনীয় এই সাইটটি শহর থেকে প্রায় ৪০ কিমি দূরে তামিল নাডু বর্ডারের দিকে। এলিফ্যান্ট ট্রেনিং সেন্টার থেকে এদিকে আসার রাস্তা রয়েছে। টপষ্টেশন হিল বা পাহাড়ের এমন এক জায়গা আপনি চাইলেই মেঘ ধরতে পারবেন। এখানে দেখা মিলবে নিলা পুরুঞ্জি ফুলগাছের যা প্রতি বারো বছরে মাত্র একবার ফোটে। দুঃখিত আমি এই ফুল দেখিনি।
মুন্নারে দুদিন বেড়াতে আর ঘুরতে বাজেট ট্র্যাভেলররা আলাদা করে পাঁচ হাজার রুপি জমা করে রাখবেন। আর যারা স্পেশাল ফ্যামিলিটুর তাদের জন্য দশহাজার !
যারা হানিমুন করবেন তারা ইচ্ছে মত খরচ করতে ক্রেডিট কার্ড রাখুন
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ ভোর ৫:১২