ইকোনমিক রিপোর্টাস ফোরামের সঙ্গে ৪এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্র জানান, আগামী ২০১০-১১ অর্থবছরে বাংলাদেশের বাজেটের আকার হবে ১ লাখ ৩০/৩২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপির আয়তন হবে ৩৮ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি আর মোট দেশজ উৎপাদনের বা জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হবে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হবে। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার ১ লাখ ১৩ হাজার ৮শ’ ১৯ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার ৩০ হাজার ৫শ’ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ৭.৮ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করা হয় মৎস্য, পশুপালন ও পানিসম্পদসহ সার্বিকভাবে কৃষি খাতের জন্য। বাজেটে সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণসহ কৃষিখাতে অবকাঠামো জোরদারকরণ, আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ বাড়ানো ও নদীভাঙন রোধের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। এ লক্ষ্যে কৃষি ও গ্রামীণ অবকাঠামো জোরদার করতে এডিপির আওতায় বরাদ্দ করা হয় ১ হাজার ৩শ ৯ কোটি টাকা। কৃষিখাতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতিতে ২০০৯-১০ অর্থবছরের বাজেটে এ জন্য বরাদ্দ করা হয় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। পরে আবারো ভর্তুকি বাড়ানো হয় ৭০০ কোটি টাকা। যা মূলত দেয়া হয় ডিজেল ভর্তুকি বাবদ। এছাড়া ভর্তুকির আওতায় ২০০৯ সালের নভেম্বরে এসে দ্বিতীয়বারের মত আবার সারের দাম কমানো হয়। শস্য উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার কৃষি গবেষণা ও কৃষিখাতে পুনর্বাসন সহায়তা বাবদ ১৮৫ কোটি ২১ লাখ টাকা বরাদ্দ করে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন বাজেট মিলিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়কে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৫ হাজার ৯’শ ৬৫ কোটি টাকা।
আসন্ন বাজেটে সবচেয়ে গুরুত্ব পাবে জ্বালানি ও কৃষি খাত। দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলতে এবং বিদ্যুৎ সমস্যা দূর করতে বাজেটে বরাদ্দ থাকবে বেশি। এ দুই খাতকে শক্তিশালী করতে পারলে বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরি হবে। কয়ালাভিত্তিক বিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ, বায়ুবিদ্যুৎ, বায়ুশক্তি, সৌরশক্তিসহ উৎসে অর্থনৈতিক ব্যবহার নিশ্চিত করার পরামর্শ এতে রয়েছে। আগামী অর্থবছরে বাস্তবায়নের জন্য বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সুপারিশ ইতিমধ্যেই এডিপিতে সন্নিবেশিত হয়েছে। সেসব প্রকল্প বিশেষ গুরুত্ব পাবে। এদিকে বিদ্যুৎ ও ডিজেল খাতে চলতি বছরের চেয়ে অতিরিক্ত ৬শ কোটি টাকা দিয়ে মোট ভর্তুকি দাঁড়াবে চার হাজার ১শ কোটি টাকা।
কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে অর্থমন্ত্রণালয়ে কৃষি খাতের জন্য ৭ হাজার ৬শ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কৃষিখাতে ৫৯টি প্রকল্প অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সার, ডিজেল, বিদ্যুৎ ও ইক্ষু খাতে পাঁচ হাজার টাকা ভর্তুকি চাওয়া হয়েছে যা চলতি অর্থবছরে ছিল ৩ হাজার ৬শ কোটি টাকা। বিদ্যুতের রেয়াত কৃষকরা ২০ শতাংশ হিসেবে পাচ্ছেন। এর বাইরে আরো ৯শ কোটি টাকা ভর্তুকি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ৬শ কোটি টাকা দেওয়ার সন্মতি প্রকাশ করেছে। সাত হাজার ৬শ কোটি টাকার মধ্যে কৃষিখাতের উন্নয়ন বাজেটে ১২শ কোটি টাকা এবং অনুন্নয়ন খাতে অর্থাৎ ভর্তুকি খাতে পাঁচ হাজার কোটি, বিভিন্ন প্রকল্পের কর্মসূচিখাতে ৩শ কোটি এবং বেতনভাতা খাতে ১১শ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সবকিছু নির্ভর করছে অর্থমন্ত্রণালয়ের উপরে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১০ বিকাল ৪:৪৩