সম্ভবত নিয়মিত লুঙ্গি পরে এমন লোকদের মাঝে এমন কেউ নেই যে জীবনে অন্তত একবার হলেও লুঙ্গি সন্ত্রাসের শিকার হয়নি। বিশেষ করে যেসব ছেলেরা হলে থেকেছে তাদের জীবনে এটা অনেকটা ডাল ভাতের মতই জিনিস! ঘটনাটা ভার্সিটি লাইফের প্রথম দিকের! আমি তখনও হলে সিট পাইনি। ভার্সিটির পাশে একটা বেসরকারি হোস্টেলে ভাড়া থাকি। একসময় আমার মত আরও বেশ কিছু ছেলে এখানে এসে উঠল। দেশের নানান জেলা থেকে এসেছে ওরা। এক একজন একেক রকম! প্রথম প্রথম আমরা একজন আর একজনের প্রতি নম্র ভদ্র আচরণ করতাম। কিন্তু যতই দিন যেতে থাকল আমাদের ঘনিষ্ঠতা ততই বাড়তে লাগল। আর সাথে সাথে বিপত্তিও বাড়তে লাগল!
হয়ত দেখা গেল একা একজন বারান্দায় লুঙ্গি পরে হাঁটাহাঁটি করছে। হঠাৎ করে দুই একজন এসে ওর লুঙ্গির গিত্তু ধরে টান মেরেই দে ছুট! কিছু বুঝে ওঠার আগেই বেচারার বিব্রতকর অবস্থা! আমাদের মধ্যে দুই একজন বাঁদর টাইপের ছেলেরাই (লুঙ্গি সন্ত্রাসি!) এই কাজটা করত! সাধারণত লুঙ্গির নিচে কেউ কিছু পরে না। কিন্তু আমাদের ওখানকার পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল যে ছেলেরা রুমের বাইরে বের হলে লুঙ্গির নিচে হাফ প্যান্ট বা অন্য ছোটোখাটো কিছু পরা শুরু করে দিল।
যাই হোক। একদিনের ঘটনা বলি। তখন রাত আটটা বাজে। রুম থেকে বের হয়ে দেখলাম দুটো লুঙ্গি সন্ত্রাসি লোলুপ দৃষ্টি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে! আমার খুব কাছাকাছি রুম থেকে আমাদের সাথের এক ছেলেকে দেখলাম রুম থেকে বের হয়ে পিছন ফিরে দরজা লাগাচ্ছে! এই ছেলেটা একটু অন্য টাইপের মানুষ! গোল গোল ফ্রেমের চশমা পরে। নাকের নিচে মোটা গোঁফ নিয়ে ঘোরে। বিড়বিড় করে একা একা কথা বলে। মাঝে মাঝে সে হঠাৎ করে স্ট্যাচু হয়ে যেত, নড়তে পারত না। আমরা কেউ তাকে ছুয়ে দিলে তবে সে নড়তে পারত। এই কাজের ব্যাখ্যায় সে বলত কেউ একজন আছে যে তাকে এমন করতে বলে! কিন্তু কে সে তা বলত না। এই আজব আচরণের জন্য একজন ওর নাম দিয়েছিল মহাজাগতিক প্রাণি!
এবার আসল গল্পে আসি। তো মহাজাগতিক প্রাণি পিছন ফিরে রুমের দরজা লাগাসছিল। এরি মধ্যে ওই দুই লুঙ্গি সন্ত্রাসির চোখে পরে গেল তার লুঙ্গি! আর যায় কই! চিলের মত ছোঁ মেরে ওর লুঙ্গির গিত্তুতে টান মেরেই দুই সন্ত্রাসির পলায়ন! পায়ের নিচে ঝুলন্ত লুঙ্গি পরা মহাজাগতিক প্রাণির এমন আবির্ভাবে আমরা যেন স্ট্যাচু হয়ে গেলাম! নির্বাক আমাদের সবাক হবার সম্ভাবনা তখন কমে গেল যখন দেখলাম মহাজাগতিক প্রাণি নড়তে পারছে না আর আমাদের বলছে, ‘এই আমি লুঙ্গি পরতে পারছি না। তোমরা কেউ আমাকে এটা পরিয়ে দাও!’ এই সেরেছে! ও নিশ্চয়ই ওর সেই একজনের কাছ থেকে লুঙ্গি পরার অনুমতি পাচ্ছে না। বিপদ! এ যে মহাবিপদ! এভাবে পাঁচ মিনিট চলে গেল। এরমধ্যে একজন লুঙ্গি সন্ত্রাসির মনে মায়া হল। সে এসে লুঙ্গি পরিয়ে মহাজাগতিক প্রাণিকে নেংটু দশা থেকে মুক্ত করল!
বলাবাহুল্য এরপর লুঙ্গি সন্ত্রাসিদের অপতৎপরতা কিছুটা হলেও কমেছিল!
আলোচিত ব্লগ
ভিসা বন্ধ করায় ভারতকে ধন্যবাদ।
ভারত ইদানীং ভিসা দিচ্ছেনা; তারা ভিসা না দিয়ে আমাদেরকে শিক্ষা দিতে চায়! তাদের করদ রাজ্য হাতছাড় হওয়া খুবই নাখোশ, এতোই নাখোশ যে মোদী মিডিয়া দিনরাত বয়ান দিচ্ছে এই দেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতের চিকিৎসা বয়কট এবং
ভারতের এক হাসপাতাল ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের কোন রুগিকে তারা চিকিৎসা দিবে না। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো যে হাসপাতাল থেকে এই ঘোষণা দেয়া হয়েছে সেই হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার জন্য বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। চামচা পুঁজিবাদ থেকে চোরতন্ত্রে পরিণত হয়েছিল দেশ
চামচা পুঁজিবাদ থেকে দেশ চোরতন্ত্রে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, আমলা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা মিলে চোরতন্ত্র করেছে।
সোমবার... ...বাকিটুকু পড়ুন
শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত পাঠাবে তবে............
শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে বিচারের জন্য ভারতের কাছে ফেরত চাইতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশকে প্রতিহিংসামূলক বিচারপদ্ধতি বাদ দিতে হবে। বিচারে শেখ হাসিনা যাতে ন্যায় বিচার পান বাংলাদেশকে আগে তা নিশ্চয়তা... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারত সোনার ডিম পাড়া হাঁস হারিয়েছে
শেখ হাসিনা ভারতে বসে ষড়যন্ত্র-অপপ্রচার করছেন। ভারত চাচ্ছে বাংলাদেশে একটি অশান্তি হোক। কারণ ভারত একটি মসনদ হারিয়েছে। সোনার ডিম পাড়া হাঁস হারিয়েছে।
আওয়ামী লীগ প্রতিদিন একটি সোনার ডিম পেড়ে নরেন্দ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন
১. ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:২১ ০