আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১১টা। শীতের রাতে এটাই তো অনেক রাত, তার উপর পুরো পর্বত শ্রেণী ঢেকে আছে হিম শীতল কুয়াশায়। বান্দরবানের পর্বতের গহীন অরণ্য ধরে হেটে চলছে আমাদের ভ্রমণ টিম। পিঠে ভ্রমণ বোঝা। হাতে সাত দিন আগে চার্য দেওয়া নিভু নিভু টর্চের আলোটা অন্ধকার দূর না করে আরো যেন দূর্ভেদ্য করে তুলেছে। টর্চের লালচে আলো, খুব গাঢ় কুয়াশা, সেই সঙ্গে হুহু বাতাস আর পাহাড়ি পোকা-মাকড়ের শব্দ, কুয়াশা ভেজা চাঁদের ক্ষীণ আলো মিলে কেমন যেনো একটা ভৌতিক আবহ। কখনো জোঁকের কামড়কে মশার কামড় ভেবে হাটতে থাকি, আবার কখনো মশার কামড়কে জোঁকের কামড় মনে করে লাফিয়ে উঠি।
কোথাও ঝিরি পথের পিচ্ছিল পাথরে পা হড়কায়, কোথাও বা কাঁটা ঝোঁপের আঘাতে শরীর বিক্ষত হয়। তাতেও আমরা বিচলিত ছিলাম না, আমাদের লক্ষ্য ছিলো পরবর্তি পাহাড়িদের গ্রাম। ওখানেই রাত কাটিয়ে পরের দিন নাফাখুম, রেমাক্রি হয়ে থানচি পৌছাবো।
কুয়াশা ভেজা ক্ষয়ে যাওয়া চাঁদটা দেখেও পথের দিশা করতে না পেরে এক সময় আমাদের গাইড ঘোষণা দিলো সে পথ হারিয়েছে। ক্লান্তিতে শরীরটা ভেঙ্গে পরতে চাইলো। চরম হতাশা নিয়ে আরো কিছুটা পথ এগোলাম। এমন সময় আমাদের নজরে আসলো কিছুটা উপরের পাহাড়ে আবছা মতো একটা জুম ঘর দেখা যাচ্ছে। বুঝলাম ওটাই হতে যাচ্ছে আমাদের আজকে রাতের ঠিকানা। চার হাত পা দিয়ে খামচে উঠতে থাকলাম জুম ঘরের দিকে...........
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:৪৬