somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উইকিপিডিয়ার কর্মকান্ড বিষয়ে জানুন

০২ রা জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সামহয়ারইনব্লগে আপনার ব্লগ পাতার ডানপাশে উপরের কোনে বাংলাদেশের একটা পতাকা দেখেছেন নিশ্চয়। বেশ সুন্দর লাগছে ছবিটা। ছবিটা কোথা থেকে নেওয়া, সেটা কি জানেন? ছবির পুরো অংশটা দেখুন।

ছবিটি উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে নেওয়া।

ছবিটা নেওয়া হয়েছে উইকিমিডিয়া কমন্স থেকে। ছবিটি তুলেছেন Fredrik Rubensson নামে একজন সুইডেনের নাগরিক। তিনি ছবিটি প্রকাশ করেছেন Creative Commons Attribution-Share Alike 2.0 Generic লাইসেন্সের আওতায়। যার অর্থ হল তিনি ছবিটি দান করেছেন যাতে যে কেউ এই ছবিটি ব্যবহার করতে পারে (বাণিজ্যিক বা অবাণিজ্যিক উভয় কাজে), ছবিটিতে যে কোন ধরনের সম্পাদনা এবং উন্নয়ন করতে পারে। তবে শর্ত মাত্র ২টা, ১ম টা হল যেখানেই ব্যবহার করা হোক, সেখানে ছবির মালিকের নাম জানিয়ে দেবার ব্যবস্থা করতে হবে। এবং ছবিটিতে যদি আপনি সম্পাদনা এবং পরিমার্জনা করে থাকেন, তবে সেই পরিবর্তিত ছবিটিও এই একই লাইসেন্সের আওতায় প্রকাশ করতে হবে।
বলা বাহুল্য ছবিটি Fredrik Rubensson নামের মানুষটি বিনামূল্যেই দান করেছেন।

কি? জানতে ইচ্ছে করছেনা এই দাতা হাতেমতাঈ টাইপ মানুষগুলো কোথায় থেকে আসল আর কেনই বা এমন করে নিজেদের তোলা ছবি জনস্বার্থে ব্যবহার করতে দিচ্ছে?
ইচ্ছে হচ্ছে?
ঠিক আছে, তবে বলছি।

এই পাগল টাইপের মানুষরা তাদের কাজ কর্ম চালায় উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। এই প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য হল একটি মুক্ত এবং বিনামূল্যে পাওয়া যায় এমন একটি জ্ঞান ভান্ডার গড়ে তোলা। অর্থাৎ এমন একটি জ্ঞানের আধার গড়ে তোলা যা থেকে বিশ্বের যে কেউ জ্ঞান আহরন করতে পারবে। কাউকে বাধা দেওয়া হবে না বা পয়সা চাওয়া হবেনা। জ্ঞানার্জন যে সবার অধিকার, তার প্রতি সন্মান দেখিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছে। এটি সম্পূর্ণ অলাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান।

এই প্রতিষ্ঠানটির অধীনে অনেক কয়টি প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে। আসুন সেগুলোর মধ্যে কয়েকটির নাম জেনে নিই।

উইকিপিডিয়া, উইকিশনারী, উইকি সোর্স, উইকিস্পিসিস, উইকিমিডিয়া কমন্স, উইকি ভার্সিটি ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সফল প্রকল্প হল উইকিপিডিয়া। এটি হল একটি উন্মুক্ত বিশ্বকোষ। এটি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিশ্বকোষ। অবাক করার মত বিষয় হল এই বিশ্বকোষটি তৈরি হয়েছে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছা সেবার ভিত্তিতে। উইকিমিডিয়ার অন্যান্য প্রকল্পগুলোও পরিচালিত হয় স্বেচ্ছা সেবার ভিত্তিতে। সেবার মানষিকতা থাকলে খুব ছোট ছোট কাজের মাধ্যমেই যে বড় কিছু করা সম্ভব, তার উদাহরন হল উইকিপিডিয়া। ইংরেজির পাশাপাশি আরও প্রায় ২৭৪ টি ভাষায় এই মুক্ত বিশ্বকোষের কাজ চলছে। বাংলাও এই ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই।

উইকিমিডিয়ার আর একটি প্রকল্প হল উইকিমিডিয়া কমন্স। এই প্রকল্পের কাজ হল উইকিমিডিয়ার অন্যান্য প্রকল্পকে সাহায্য করবার জন্য একটি মুক্ত মিডিয়া (ছবি, ভিডিও, মানচিত্র, অডিও ইত্যাদি) ভান্ডার গড়ে তোলা। এই প্রকল্পের আওতাতেই বাংলাদেশের পতাকাটি Fredrik Rubensson নামের মানুষটি বিনামূল্যে দান করেছেন।

বাংলাদেশে উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন কাজ চালায় “উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ” নামে। এখানেও বাংলাদেশী স্বাচ্ছাসেবীরা দিনরাত কাজ করে চলেছেন একটি মুক্ত জ্ঞান ভান্ডার তৈরির জন্য।

একটা উদাহরন দিই। মনে করুন আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। এখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে বেশ কিছু সাধারন তথ্য আমার জানা থাকবে। এবং যদি আমার কাছে ক্যামেরা থাকে, তবে আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু সুন্দর ছবিও তুলতে পারি। এখন আমি যদি আমার জানা তথ্যটুকু উপযুক্ত তথ্যসূত্র সহ উইকিপিডিয়াতে দিই এবং আমার তোলা ছবিগুলো উইকিমিডিয়াকমন্সে প্রকাশ করি, তাহলে আমার বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ে অন্যান্যরা জানতে পারবে। এই কাজের জন্য আমার তেমন খরচও হবেনা। ঠিক এই একই কাজ যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের সব বিশ্বদ্যালয়ের ছাত্ররা করেন, তাহলে আমরা পুরো দেশের সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য এবং ছবিগুলো এক জায়গায় করতে পারব একেবারেই বিনামূল্যে। ঠিক এই নীতিতেই উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন পরিচালিত হয়।

সুতরাং বুঝতেই পারছেন আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য আমাদেরকেই সংগ্রহ করে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে হবে। যেমনটি তারা তুলে ধরছে তাদের নিজের দেশের তথ্যগুলি। বাংলাদেশে ছোট পরিসরে হলেও উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকায় সম্প্রতি তারা উইকিমিডিয়া কমন্সে দেবার জন্য ছবি তোলার আয়োজন করেছিলেন। এছাড়া দেশের আরও কয়েকটি স্থানে উইকিপিডিয়ানরা নিজেদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।



ছবি: ঢাকার উইকিপিডিয়ানদের ছবি তোলার আয়োজন।

আমি তেমন সাজিয়ে লিখতে পারিনা। তারপরেও পুরো লেখা পড়ে যদি মনে হয় উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন তথা উইকিপিডিয়া বিষয়ে আপনি জানতে আগ্রহী এবং নিজের সুবিধা অনুযায়ী এখানে অবদান রাখতে আগ্রহী (বিশ্বাস করুন, কোন টাকা পয়সার কারবার নেই এখানে)। তবে চলে আসুন না এই মাসের ৭ তারিখে। এই দিন উইকিপিডিয়া নিয়ে একটি ওয়ার্কশপ আয়োজন করা হয়েছে। আপনি হাতে কলমে শিখে নিতে পারবেন এখানকার কাজগুলো। ওয়ার্কশপটির বিস্তারিত তথ্য নিচে দেওয়া হল।

==============================================
পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা ও সূচি:

উইকিপিডিয়া ওয়ার্কশপ
স্থান: বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক
জামিল সারওয়ার ট্রাস্ট
২৭৮/৩, এলিফ্যান্ট রোড (৩য় তলা)
কাটাবন, ঢাকা।
তারিখ ও সময়: শুক্রবার, ৭ জানুয়ারি, ২০১১, বিকাল ৩টা।

ফ্রি রেজিস্ট্রেশন করুনরেজিস্ট্রেশন ফর্ম (আবশ্যিক)
==================================================

নিশ্চয়তা দিতে পারি আমার এই দূর্বোধ্য পোস্টের চেয়ে সেখানে সময় ভালই কাটবে। আর কোন প্রশ্ন থাকলে জানাতে পারেন।
ভাল থাকবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:০৪
১৮টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×