কি?
টাশকি খাইলেন?
ভাবতেছেন জেএমবির মত কোন ছাগু সংগঠন আবার নতুন করে ফালাফালি শুরু করল কিনা? অথবা পাকি শুকোরগুলো আবার কোন নতুন চাল চালছে কিনা?
আবার আমারে পাগল ছাগলও মনে হৈতারে। দোষের কিছু নাই। যে শিরোনাম খানা লাগাইছি, তাতে প্রত্যেকেই নিজেদের কল্পনা শক্তি অনুযায়ি ভাবতেই পারেন। কিন্তু বিশ্বাস করেন, কাহিনী কিন্তু সত্য। একটুও মিছা কথা কইতাছি না। বিশ্বাস হৈতাছে না? তয় খাড়ান, আমার সব কথা শুইনা যদি মনে হয় গালি দেওয়া দরকার, দিয়েন। কোন সমস্যা নাই।
কন দেখি দ্যাশের জনসংখ্যা এখন কত? এক্কেবারে কাঁটায় কাঁটায় সঠিক হিসাব লাগবো না। ধরেন ১৫ কোটি।
আমাগো রাজধানী ঢাকায় থাকে কত মানুষ? ধরেন ১ কোটি।
হু হু বাবা, রাজধানী বলে কথা!!! রাজধানীর রাস্তায় চিকা মইরা গন্ধ ছুটলে সেইটা লৈয়াও পেপারে লেখালেখি হয় (সমস্যার সমাধান হয় কি হয়না, সেইটা ব্যাপার না কিন্তু)। আমাগো পকেটে দুপয়সা জমলেই এই রাজধানীর সীসা ভরা বাতাস খাওনের লাইগা ফুসফুস আকুলি বিকুলি করে। সরকারী বেসরকারী যেই চাকরীই হোক না কেন রাজধানীতে পোস্টিং এর জন্য আমরা জীবনের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত দিতে রাজী আছি।
স্কুল পাশ কইরা আমাগো ছাত্রছাত্রীরা দু’আঙ্গুলে ভি দেখায়, আর টিভি চ্যানেলগুলারে কয়, তারা ভর্তি হইতে চায় ঢাকা কলেজ, নটরডেম কলেজ, ভিকারুন্নিসা অথবা হলিক্রসে। আবার এই পোলাপানগুলা কলেজ পাস দেয়। আবার ভি দেখায় আর কয় যে তারা এবারে পড়তে চায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,, বুয়েট বা ঢাকার কোন মেডিক্যাল কলেজে।
বৈদেশী হইলে অন্য কথা ভাবতে পারে। কিন্তু আপনি আমি ভাল করেই জানি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাইকা পাশ কইরা এই পোলাপানগুলা আর জলকাদায় ভরা নোংরা মফস্বল বা গ্রামে ফিরে না। তাগো দৃষ্টি মণ অখন বড় হৈছে। তেনারা তো আর ছোটো জায়গায় পইড়া থাইকা নিজেগো প্রতিভা নষ্ট করবার পারেন না। তাই তারা স্থায়ী হৈতে চান ঢাকা নামক এক জান্নাতুল ফেরদাউসে।
এই উচ্চশিক্ষিত মানুষগুলাই তো দেশের বুদ্ধিজিবী (গালি দিই নাই কিন্তু) সমাজ, নাকি? এছাড়াও আছেন বিদগ্ধ (মানে জানি না) রাজনীতিবিদেরা। তেনাদের সবার নিজ নিজ এলাকায় ঠিক ঠাক মত বাড়িঘর আছে কিনা নিশ্চয়তা দিবার পারুম না, তয় ঢাকাতে যে নিজের-ই হোক সরকারী হোক, একটা না একটা বাড়ি আছেই।
তো কি দেখতাছেন? প্রকৃতির অপূর্ব লীলায় দ্যাশের বুদ্ধিজিবী সমাজ তিলোত্তমা নগরী ঢাকায় জমা হইতাছে।
এখন আসি কামের কথায়, গত রোজার ঈদে বিকালে আর রাইতে যে ঝাঁকি খাইছিলেন, তা কি মনে আছে? মনে না থাকলেও সমস্যা নাই, আমি মনে করায়া দিতাছি। ঐদিন অর্থাৎ ২১ সেপ্টেম্বর ২০০৯ বিকাল চারটার দিকে হালকা একখান ভূমিকম্প হৈসিল।[সূত্র] ঐ ভূমিকম্পে তেমন কোন ক্ষতি হয় নাই। সেই দেইখা অনেকেই দেঁতো হাসি দিয়া কইছি, বাংলাদ্যাশে বড় মাত্রার ভূমিকম্প আইতে সাহস করতাছে না। কিন্তু দ্যাশী বিদ্যাশী বিশেষজ্ঞরা কইছে, “হাইসনা কেরামত আলী, তুমাগো খবর আছে। তোমাগো বাংলাদ্যাশেও যেকোন সময় বড় সড় ভূমিকম্প গুতা দিবার পারে।“ এই ভূমিকম্পের মাত্রা যদি রিখটার স্কেলে বা তার বেশি হয়, তাইলে ঢাকার তিন ভাগের একভাগ বাড়ি ঘর পাউডার হইয়া যাইবো।[সূত্র] ক্ষতি এতই মারাত্নক হৈব যে দূর্গোত মানুষগো উদ্ধার করার মত লোক থাকবো না।
আর তিলোত্তমা ঢাকা যেহেতু সর্বদিকে শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজিবীগো আখড়া, তাই তেনারাও ইন্তেকাল ফরমাইবেন। তখন কি হৈব বিষয়টা একবার কি চিন্তা করছেন। একাত্তরে আমগো পঙ্গু করার লাইগা পাকি আর তাগো এদেশী বেজন্মাগুলা দেশের জ্ঞানীগুণী মানুষগুলারে মাইরা শেষ কইরা ফালাইছে। এই দুঃখের কথা শুইনা আমরা সবাই চুকচুক করছি। আর মনে মনে ভাবছি “ইস, ঐ লোকগুলা থাকলে দেশটা একেবারে সোনার বাংলা হৈয়া উঠত”। গতবার নাহয় পাকি আর রাজাকারগো দোষ দেওয়া গ্যাছে। কিন্তু এবার কি হৈব? এবার সবাই কিন্তু মরবো নিজেগো দোষে। আর গতবারের ক্ষতি আমরা কাটাইয়া মাথা তুইলা দাড়াইতে বহু সময় লাগছে, এবারে কিন্তু পুরা দ্যাশের মেরুদন্ড একেবারেই ভাইঙ্গা যাইবো। তখন “ইন্ডিয়া খাইয়া ফালাইলো”, “আম্রিকা দখল কৈরা লৈয়াগেল” এগুলা কোন কামে দিবো না। দ্যাশে তখন ঐ বিদেশী প্রভূগুলারেই দাওয়াত দিয়া আনতে হৈব। বাংলাদেশী আর্মি আগে যেমন বিভিন্ন দ্যাশে নীল টুপি পইরা ত্রান বিলাইছে, এবারে সেই ত্রাণ নিতে হৈব আমাগো।
এই ছবিগুলা থাইকা আমরা কি কিছুই শিখুম না?
সুতরাং সময় থাকতেই ঢাকা থেকে অফিস, আদালত, কল-কারখানা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিকেন্দ্রীকরনের প্রয়োজন। দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় রাজধানীর ক্যান্সারের মত বৃদ্ধি কোন ভাবেই দ্যাশের উন্নয়ন করবো না। আমরা কি একবারও ভাইবা দেখছি গুজরাট, হাইতি এইগুলার মত ঢাকার অবস্থা হৈলে কি হৈব? কয়েক লাখ মানুষ মরার আগে পর্যন্ত আমরা কি কোন উদ্যোগই নিতে পারুম না? উদ্যোগ শুরু হোক ব্যক্তিগত পর্যায় থাইকা। আন্ধার মত ঢাকার দিকে না দৈড়াইয়া দেখিনা ঢাকার বাইরে কিছু করা যায় কিনা। “ঢাকাতেই থাকতে হৈব” এমন ধারনা পরিহার করাই শ্রেয়।
এতক্ষণ ধইরা আমার বাকোয়াজি শোনার জন্য আপনারে ধন্যবাদ।
ভাল থাকেন, আর ভূমিকম্পের হাত থাইকা নিজেরে রক্ষা করেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৪৯