somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুদ্ধাপরাধীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার দাবির সঙ্গে একমত ইসি

১২ ই মে, ২০০৮ ভোর ৪:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যুগাš-র রিপোট
(রাজাকার, আলবদর, আলশামসরা পড়লে কান্দন আইতে পারে!)
স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা এবং এসব দলকে নিবন্ধিত না করার সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদা বলেন, আপনাদের দাবি যথার্থ। স্বাধীনতাবিরোধীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার জন্য প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে ১০-১২ দিনের মধ্যে সরকারের কাছে সুপারিশ পাঠাবে ইসি। যেসব বিষয়ে কমিশনের কিছু করার আছে সেটুকু বা¯-বায়ন করবে কমিশন। স্বাধীনতার পর যেসব স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তি দালাল আইনে দণ্ডিত হয়েছিল এবং যাদের মামলা বিচারাধীন ছিল দাতের তথ্য সংগ্রহ করবে ইসি। সিইসি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার জন্য সরকার, কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে একসঙ্গে ভূমিকা রাখতে হবে।
সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের চেয়ারম্যান প্রতিনিধি দলের প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল একে খন্দকার বীরউত্তম (অব.) বৈঠক শেষে বলেন, যুদ্ধাপরাধী স্বাধীনতাবিরোধীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার জন্য নৈতিক ভিত্তি নিয়ে এগুতে হবে। নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থীর জন্য মুক্তিযুদ্ধকালীন ব্যক্তিগত অবস্থান ঘোষণা বাধ্যতামূলক করতে হবে। এসব স্বাধীনতাবিরোধী ক্ষমতায় এলে ‘এদেশ বাংলাদেশ না হয়ে অন্য দেশ’ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণায় আইনি প্রক্রিয়া বড় নয়, ১৫ কোটি মানুষের দাবির মূল্যই বশি।
ইসির সঙ্গে বৈঠকে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা মেজর জেনারেল কেএম শফিউল্লাহ বীরউত্তম (অব.), মেজর জেনারেল সিআর দত্ত বীরউত্তম (অব.), লে. জেনারেল মীর শওকত আলী বীরউত্তম (অব.), মেজর রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম (অব.) এবং লে. জে. এম হারুন-অর-রশীদ বীরপ্রতীক (অব.) উপস্থিত ছিলেন। লে. কর্নেল কাজী নুরুজ্জামান বীরউত্তম (অব.) অসুস্থ থাকায় বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেননি। বৈঠকে সিইসি ছাড়াও দুই নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত এবং ছহুল হোসাইন উপস্থিত ছিলেন। রোববার বিকাল ৩টায় ইসির সম্মেলন কক্ষে কমিশনের সঙ্গে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক চলে প্রায় দেড় ঘণ্টা। বৈঠকের শুরুতে প্রতিনিধি দলের প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল একে খন্দকার বলেন, মুক্তিযুদ্ধে যেসব দল এবং ব্যক্তি হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠনসহ যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল তাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। জামায়াতে ইসলামীকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, দেশবাসী জানে কোন দল বা কারা এসব পৈশাচিক কর্মকাণ্ড করেছিল। একে খন্দকার কমান্ডার্স ফোরামের ৫ দফা দাবি উত্থাপন করেন। এ সময় সিইসি ৫ দফা দাবির একটি উল্লেখ করে বলেন, স্বাধীনতা-উত্তরকালে কারা দালাল আইনে দণ্ডিত হয়েছিল, কারা বিচারাধীন ছিল এসব তথ্য ইসির কাছে নেই। একে খন্দকার সিইসিকে বলেন, স্বাধীনতার পর ৭৫২ জন দণ্ডিত হয়েছিল। ৩৭ হাজার লোক কারাগারে ছিল। এর মধ্যে ২৬ হাজার মুক্তি পেয়েছিল। বাকি ১১ হাজার লোকের বিরুদ্ধে গণহত্যা, ধর্ষণসহ গুরুতর অভিযোগ ছিল। চিকন আলী নামের এক রাজাকারের ফাঁসি হয়েছিল। পরে দালাল আইন বাতিল হওয়ায় এরা মুক্তি পেয়ে যায়।
সিইসি বলেন, এসব তথ্য ইসির কাছে নেই। প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল বাছাইয়ে সময় থাকে ৩ দিন। এসব তথ্য আমাদের চাইতে হবে। তথ্য নিতে হবে। কারণ নির্বাচনের সময় সব রিটার্নিং অফিসারের কাছে এসব তথ্য দিতে হবে। এমনিতে আদালতের ৮ দফা হলফনামায় প্রার্র্থীর আগে কোন মামলা ছিল কিনা এ তথ্য দেয়া বাধ্যতামূলক বলে জানান সিইসি। লে. জে. এম হারুন-অর-রশীদ সিইসির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, প্রার্থীর হলফনামায় ’৭১ সালে কি অবস্থান ছিল তা বাধ্যতামূলক করা উচিত। কেউ ভুল তথ্য দিলে তার প্রার্থিতা বাতিল করার বিধান রাখা দরকার। সিইসি বলেন, প্রার্থীকে এফিডেভিট দিয়ে তার মামলার বিবরণ দিতে হবে। এতে পুরনো মামলার বিবরণ স্বাভাবিকভাবেই এসে যাবে। কোন প্রার্থী ভুল তথ্য দিলে নির্বাচিত হওয়ার পরও তার আসন বাতিলের বিধান করা হয়েছে। লে. জে. (অব.) মীর শওকত আলী (বীরউত্তম) বলেন, যারা এদেশের বিরোধিতা করেছে তখনকার পত্র-পত্রিকায় এর শত শত প্রমাণ আছে। তাদের নতুনভাবে পরিচিত করে দেয়ার কিছু নেই। এর প্রত্যুত্তরে সিইসি বলেন, আদালত কর্তৃক দণ্ডিত না হলে কিছু করা মুশকিল হবে। এ সময় একে খন্দকার এত বছর পরও নাৎসিদের বিচার প্রসঙ্গ টেনে আনলে সিইসি ‘এখানকার নৈতিক ভিত্তি এত উঁচু নয় বলে মš-ব্য করেন। তাছাড়া নাজিদের অত্যাচারের নানা প্রমাণাদি ছিল। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের এত প্রমাণাদি আমাদের নেই।
প্রত্যুত্তরে মেজর জেনারেল কেএম শফিউল্লাহ বীরউত্তম (অব.) সিইসিকে লক্ষ্য করে বলেন, ’৭১ এর যুদ্ধাপরাধের সাক্ষী-সাবুদের অভব নেই। এ নিয়ে ডকুমেন্টারি আছে। ভুক্তভোগীরা সাক্ষী দিতে এখনও প্র¯'ত। দালাল আইন বাতিলে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীরা কিছুতেই অপরাধ থেকে মুক্তি পেতে পারে না।
মেজর রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম (অব.) বলেন, স্বাধীনতার চরম আÍত্যাগের মুহূর্তে কারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে এসব প্রমাণ সরকারের কাছে আছে। তাদের নির্বাচন করতে দিলে আমাদের বহু আকাক্সিক্ষত স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
লে. জে. এম হারুন-অর-রশীদ (অব.) বলেন, জামায়াতে ইসলামী এখনও দম্ভ করে বলে, তারা একাত্তরে ভুল করেনি। যারা ঘোষণা দিয়ে দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে তাদের এদেশে নির্বাচন করার নৈতিক ভিত্তি নেই। মেজর জেনারেল সিআর দত্ত বীরউত্তম (অব.) বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা না করলে এদেশ অশাš- বাংলাদেশ হবে। বর্তমান কমিশন তাদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করায় এ পদক্ষেপ নেয়া সহজ হবে বলে জানান তিনি।
সবার বক্তব্য শুনে সিইসি আক্ষেপ করে বলেন, যেসব দল স্বাধীনতার পর নিষিদ্ধ হয়েছিল সেসব দল আবার রাজনীতিতে আসার সুযোগ পেয়েছে। এদেশের রাজনীতি স্বাধীনতাবিরোধীদের বিষয়টি জটিল করে তুলেছে। আমরা সরকারকে অনুরোধ করব, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার। সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে ইসি তা অবশ্যই বা¯-বায়ন করবে।
একে খন্দকার তাদের দাবির সঙ্গে ইসি একমত পোষণ করায় ধন্যবাদ জানান। সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের ৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ১. মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ব্যক্তি, সংগঠন, দলকে নর্বাচনে অযোগ্য ঘোষণ করা ২. নির্বাচনে প্রার্থিতার জন্য মুক্তিযুদ্ধকালীন অবস্থানের কথা লেখা বাধ্যতামূলক করা ৩. স্বাধীনতা-উত্তর যারা দালাল আইনে দণ্ডিত হয়েছিল, যারা বিচারাধীন ছিল তাদের সবাইকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা ৪. স্বাধীনতাবিরোধী দলকে নিবন্ধিত না করা এবং ৫. যেসব দলের গঠনতন্ত্র সংবিধান পরিপন্থী তাদের নিবন্ধন না করা।
১২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এনসিপি জামায়াতের শাখা, এই ভুল ধারণা ত্যাগ করতে হবে

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ০৩ রা মে, ২০২৫ সকাল ১০:৪৪

প্রিয় রাজীব ভাই,
আপনি আমার আগের পোস্টে কমেন্ট করেছেন যে, এনসিপি জামায়াতের শাখা। আপনার এনালাইসিস ভুল! ওরা জামায়াতের শাখা নয়। এনসিপি-কে বুঝতে হলে, আপনাকে জামায়াতকে জানতে হবে। আমি একটু বিস্তারিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাশ্চাত্যের তথাকথিত নারীবাদ বনাম ইসলাম: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৩ রা মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২৪

পাশ্চাত্যের তথাকথিত নারীবাদ বনাম ইসলাম: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ

ছবি কৃতজ্ঞতা এআই।

ভূমিকা

নারীর অধিকার নিয়ে আলোচনা ইতিহাসের এক দীর্ঘ অধ্যায়। পাশ্চাত্যে নারী আন্দোলন শুরু হয় ১৮শ শতকের শেষভাগে, যার ফলশ্রুতিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কি হবে আগামীর পাকিস্তানের

লিখেছেন ঊণকৌটী, ০৩ রা মে, ২০২৫ বিকাল ৪:৫৩

কি হচ্ছে পাকিস্তানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি স্মার্ট জাতির অন্তঃসারশূন্য আত্মজৈবনিক !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৪


একটা সময় ছিল, যখন জাতির ভবিষ্যৎ বলতে বোঝানো হতো এমন এক শ্রেণিকে, যারা বই পড়ে, প্রশ্ন তোলে, বিতর্কে অংশ নেয়, আর চিন্তা করে। এখন জাতির ভবিষ্যৎ মানে—ইনফ্লুয়েন্সার। তারা সকাল ১০টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামী দলগুলো নারী বিদ্বেষী - এটা একটি মিথ্যা প্রোপাগান্ডা

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ০৩ রা মে, ২০২৫ রাত ১১:২৯

আরবের দেশগুলোকে আমাদের দেশের নারী আন্দোলনের নেত্রীরা দেখতে পারেন না হিজাব ইস্যুর কারণে। অথচ, আরব দেশ কাতার বি,এন,পি'র চেয়ারপারসনকে চার্টারড প্ল্যানে করে দেশে পাঠাচ্ছে। আরো কিছু উদাহরণ দেই। আওয়ামী লীগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×