ঢাকা আজ বিশ্বের বসবাসের অযোগ্য শহর গুলোর মধ্যে অন্যতম হলেই ঢাকার পুরানো
ইতিহাস কিন্তু ছিল গৌরবউজ্জ্বল! অষ্টাদশ শতকে পৃথিবীর সের শহর গুলোর একটি ছিল ঢাকা এবং সেরা শহরের ক্রমান্বয়ে ঢাকার অবস্থান ছিল দ্বাদশতম!
শুনলে কেমন রূপ কথার মতো মনে হয়, তাই না?
ঢাকার উৎপত্তি নিয়ে যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে, আমরা তাই আর সেদিকে গেলাম না! ইতিহাস বলে ১৫ শতকের দিকে নগর-কেন্দ্র হিসেবে উথ্থান ঘটে ঢাকার, এর আগে ঢাকা 'কসবা ঢাকা খাস' নামে পরিচিত ছিল। মুঘল শাসনের প্রথম দিকে ঢাকা প্রথমে থানা' পরে পরগনা হিসাবে প্রতিষ্ঠা পায়, সে সময়ে এর নাম হয় 'সরকার বাজুহাতে ঢাকা মাজু!' থানা সদর হিসেবে সদর দপ্তরের এই ছোট নগর-কেন্দ্রটি প্রশাসনিক ও বাণিজ্যিক বিবেচনার সুবিধাজনক অবস্থানে থাকার কারণে মুঘল সুবাদার ইসলাম খান চিশতির
সময়ে সপ্তদশ শতকের শুরুর দিকে রাজমহল থেকে রাজধানী ঢাকয় স্থানান্তর করা হয়েছিল!
এভাবে ঢাকা ১৬০৮ সালে প্রথম রাজধানীর মর্যাদা পেলো!
মুঘল শাসকদের অধীনে তাদের অবকাঠামো উন্নয়ন করা এবং বানিজ্যিক কর্মকান্ডের কারনে মধ্যযুগীর মেট্রোপলিটান সিটি হিসেবে ঢাকা তার উন্নতির শীর্ষে চলে গিয়েছিল, এবং ১৭০৪ সালে মুর্শিদাবাদে রাজধানী স্থানান্তর করার আগ পর্যন্ত সেই গৌরব ঢাকা ধরে রেখেছিল। নাগরিক জীবনের স্বাচ্ছন্দ্য বাড়িয়ে তাদের জীবনযাত্রা সমৃদ্ধ করার জন্য মুঘল শাসকগন ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় গড়ে তুলেছিলেন প্রাসাদ, দূর্গ, কাটরা, ঈদগাহ,মসজিদ ইত্যাদি!
সময়ের আর মানুষয়ের অত্যাচারে এই সব কীর্তির বেশির ভাগই নিশ্চিন্থ হয়ে গেলেও, এখন টিকে আছে এমন বেশ কিছু ঐতিহাসিক স্থাপত্য!
এবার তাদের কথাই বলবো..........
লালবাগ কেল্লা:
মুঘল আমলের দূর্গের অন্যতম একটা বৈশিষ্ট্য হলো প্রাসাদ দূর্গ! বাংলাদেশের একমাত্র মুঘল প্রাসাদ দূর্গ যেখানে মূঘল স্থাপত্যের সকল বৈশিষ্ট্যের সমন্বয় হয়েছিল, সেটা হলো লালবাগ দূর্গ! মুঘল আমলে ঢাকায় বেশ কয়েকটি দূর্গ বানানো হয়েছিল বলে জানা যায় তবে কেন্দ্রীয় শাসন এবং স্থায়ী শাসকের অভাবে ঢাকার দূর্গ গুলো তেমন জাকজমক পূর্ণ ছিল না!
মুঘল আমল শেষে বৃটিশ আমলের প্রায় ধ্বসে পরা লালবাগ কেল্লা চার্লস
ড'য়েলীর স্কেচে
লালবাগ কেল্লার আদি নাম কেল্লা আওরঙ্গবাদ, ১৬৮৭ সালে যুবরাজ মুহাম্মদ আজম এই দূর্গের নির্মান কাজ শুরু করেছিলেন, কিন্তু কাজ শেষ হবার আগেই তার বাবা সম্রাট আওরঙ্গজেব বিশেষ প্রয়োজনে দিল্লী থেকে তাকে ঢেকে পাঠালে তিনি দূর্গের কাজ অসমাপ্ত রেখেই চলে গিয়েছিলেন, যা পরে আর কোনদিন শেষ করা সম্ভব হয়নি! আমরা এখন সেই অসমাপ্ত দূর্গটিই দেখি!
পরীবিবির মাজার
যুবরাজ আজম চলে যাবার পরে পরবর্তী শাসক শায়েস্তা খান এই দূর্গে ১৬৬৮ সাল পর্যন্ত বাস করেছিলেন, এর মধ্যে কণ্যা পরীবানুর মৃত্যু ঘটলে তিনি এই দূর্গ ছেড়ে চলে যান! এ প্রসঙ্গে একটা কথা বলতেই হলো, মুঘল শাসকগন দূর্গে তাদের সন্তান মৃত্যুর ঘটনাকে অলক্ষণ বলে মনে করতেন এবং এমন হলে সাধারণত সেই দূর্গ ছেড়ে চলে যেতেন! সম্রাট আকবর তার দুই ছেলে হাসান ও হোসেনের মৃত্যুর পরে দিল্লী আগ্রা ফোর্ট ছেড়ে ফতেহপুর সিক্রীতে চলে গিয়েছিলেন! যাই হোক, ১৮ শতক জমির উপরে নির্মিত এই দূর্গটা এক সময়ে উত্তরে বুড়িগঙ্গা নদী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এই দূর্গের ভেতরে আছে সভাকক্ষ দেওয়ান-ই-আম, পরি বিবির মাজার, মসজিদ, দু'টো প্রবেশদ্বার, পয়োনি:স্কাশন ব্যাবস্থা, হাম্মাম, ছাদ বাগান ইত্যাদি!
দক্ষিন দিকের দেয়ালে দেখতে পাবেন কেন্দ্রীয় বুরুজ, এখান থেকে পাহারা দেয়া হতো! এই বরুজের নিচে ছিল একটা ভূগর্ভস্থ টানেল, যেটা টঙ্গি পর্যন্ত ছিল বলে বলা হয়, এখন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে! এই টানেলকে ঘিরে নানা ভুতের গালগপ্প প্রচলিত আছে!
লালবাগ কেল্লায় মাঝে কিছু দিন দিল্লী রেড ফোর্টের মতো লাইট এন্ড সাউন্ড শো এর আয়োজন করা হয়েছিল, হঠাৎ করেই আবার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে! তবে দর্শক আকর্ষনের এটা একটা চমৎকার মাধ্যম হতে পারতো!
বড় কাটরা ও ছোট কাটরা:
কাটারা বা কুটেরা শব্দের অর্থ হলো খিলান যুক্ত দালান! মুঘল আমলে বসবাসের জণ্য খিলান যুক্ত যে সব প্রাসাদ নির্মিত হতো, তাদেরকেই বলা হতো কাটরা! বাংলাদেশে এমন প্রাসাদ এখন পর্যন্ত টিকে আছে মাত্র দু'টি, চকবাজারের বড় কাটরা এবং ছোট কাটরা! এই যে বড় কাটরাটি আমরা দেখি এটি এক সময়ে তৈরি হয়েছিল, যুবরাজ মুহম্মদ সুজার প্রাসাদ হিসাবে।
বৃটিশ
মিউজিয়াম ছবির কালেকশনে থাকা ১৮৭০ সালের এই ছবিটি থেকে বড় কাটরার আদি
আকৃতির কিছুটা ধারনা পাওয়া যায়!
কিন্তু শাহজাদার এই প্রাসাদ পছন্দ না হবার কারণে তিনি এটা নির্মাণ কাজের তত্ত্বাবধায়ক মীর আবুল কাশিমকে উপহার দিয়েছিলেন, পরে এটা মুসাফির আর বনিকদের সারাইখানা হিসাবে ব্যবহৃত হতো!
বড় কাটরার উত্তরের তোরন, স্যার ড'য়েলি, ১৮২৩ সাল
বড় কাটরা বর্তমানে
বড় কাটার থেকে সিকি মাইল পূর্বে হাকিম হাবিবুর রহমান লেনে অবস্থিত ছোট কাটরা। এটা নির্মান করেছিলেন সুবাদার শায়েস্তার খান (১৬৬৩ খ্রী। এখানে শুরুতে তার দাপ্তরিক লোকজন থাকতো!
ছোট কাটরা আর কাটারর মসজিদ, স্যার ড'য়েলি
পরবর্তীকালে মুঘল রাজধানী ঢাকা থেকে স্থানান্তরিত হয়ে যাবার পরে বেশ কিছু দিন কাটরা গুলো পরিত্যক্ত ছিল! তবে ঢাকার নায়েব-ই-নিজাম জারসাত খান, নিমতলীতে নিজের প্যালেস নির্মান হবার আগে এখানে কিছু কাল বাস করেছিলেন! এরপর ১৮১৬ সালে এই পাদ্রি লিওলার্দোর উদ্যোগে এই ছোট কাটরাতে স্থাপিত হয়েছিল ঢাকার প্রথম ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল! সেটা অবশ্য বেশিদিন থাকেনি এখানে,
ঢাকার নবাবরা একে কয়লা ও চুনের গুদাম বানিয়েছিলেন!
ছোট কাটরা বর্তমানে!
অব্যবস্থাপনা, সংস্কার ও সংরক্ষনের অভাবে বড় এবং ছোট কাটার অর্ধেকেরও বেশি অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। বাকি যেটুকু আছে সেটুকুও বর্তমানে পুরোপুরি দখল হয়ে আছে স্হানীয়দের হাতে। যদিও একে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তের সংরক্ষিত স্থাপনা হিসেবে ঘোষন করে এসছে সেই সালে, তবে আজ অবাধি এটার দখলদারদের উচ্ছেদ করে সংরক্ষন করা সম্ভব হয়নি!
ঢাকা ঈদগাহ:
ঈদগাহ মানে তো সবাই জানেন ঈদের নামাজ পড়ার স্থান! এই ঈদগাহ মুসলিম স্থাপত্যের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য, যদিও বাংলা অঞ্চলে ঈদগাহের আলাদা বৈশিষ্ট্যপূর্ন কোন কাঠামো গড় উঠেনি বা শুধু ঈদের নামাজ পড়ার জণ্যই তৈরি ঈদগাহ নেই বললেই চলে!
তবে এমন একটা প্রাচীন ঈদগাহ কিন্তু রয়েছে একদম আমাদের চোখের নাগালেই! এখন ঢাকা ঈদগাহ নামে পরিচিত প্রায় চারশ বছর আগের এই ঈদগাহটি ধানমন্ডি সাত মসজিদ রোডে অবস্থিত!
ঈদগাহের দেয়ালে প্রাপ্ত শিলালিপিটা থেকে জানা যায়, ১৬৪০ সালে সুবাদার শাহ সুজার
দেওয়ান মীর কাশিম এটা নির্মান করেছিলেন!
ঈদগাহের পশ্চিম দিকের দেওয়ালটি ছিল পথচারীদের থেকে নামাজীদের আলাদা করার জন্য, আর
এই দেওয়ালেই আছে কেন্দ্রীয় মিহারাবটি! এর পাশেই অবশ্য ছোট তিনটি মিহরাব আছে! বর্তমান অবস্থা ভালই!
হোসেনী দালান:
পুরানো ঢাকার হোসেনী দালান খুব পরিচিত একটা নাম! এই হোসেনী দালানটার পোষাকী নাম হলো ইমামবারা। মুসলিম শিয়া সম্প্রদায়ের মুহররম উদযাপনের জন্য নির্মান সম্মেলন কেন্দ্র বলা যায় একে! এটা মূলত: উপমহাদেশীয় স্থাপত্য, মানে ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে ইমামবারা স্থাপত্যের প্রচলন নেই।
ড'য়েলীর পেইন্টিং চক ও হোসেনি দালান!
বলা হয়ে থাকে, সতের শতকের শেষ দিকে সৌয়দ মীর মুরাদ এই ইমামবারাটি নির্মান করেছিলেন। পরবর্তীকালে ১৮৯৭ সালের সেই বিখ্যাত ভুমিকম্পে এই ইমামবারাটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিল, তখন নবাব আহসান উল্লাহ এটার পূন:নির্মান করেছিলেন!
হোসেনী দালান, চল্লিশের দশকে!
এখন আমরা সেই হোসেনীদালানটা দেখি এটা সেই পূন:নির্মিত স্থাপত্য! হোসেনী দালানে রয়েছে দু'টো হলঘর, এদের নাম শিরনী হল এবং খবত হল!শিরনী হলটা হাসান ও হোসেন স্মরনে পুরোটাই কালো রং করা! এছাড়াও মূল দালানের সাথেই দ্বোতালা আরেকটি হল আছে, ধারণা করা হয় এটা তৈরি
করা হয়েছিল মেয়েদের জন্য!
হোসেনী দালান বর্তমানে
হোসেনী দালানের একটা রুপার তৈরি রেপ্লিকা ঢাকা জাতীয় যাদুঘরের ডিসপ্লে তে আছে।
গুরুদুয়ারা নানক শাহী:
গুরুদুয়ারা হলো শিখ ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়! বাংলাদেশে বর্তমানে শিখ ধর্মের লোক জনের সংখ্যা অনেক কম! তবে ঢাকায় কিন্তু মুঘল আমলে ইন্দোইসলামিক রীতিতে বানানো একটা গুরুদুয়ারা আছে, যার নাম গুরুদুয়ারা নানক শাহী! এটা এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবেনর ভেতরে পরে
গেছে!
বলা হয়ে থাকে সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে (১৬০৬-২৮) শিখ ধর্মগুরু হরগোবিন্দ শিং বাংলায় আলসমত নামের একজন পুরোহিত পাঠিয়েছিলেন, এই গুরুদুয়ারাটি তিনিই তখন নির্মান করেছিলেন! পরে ১৮৩৩ সালে এটা একবার সংস্কার করা হয়েছিল, আমরা এখন এই সংস্কারকৃত
গুরুদুয়রাটিই দেখি!
ধর্মীয় স্থাপত্য হিসেবে গুরুদুয়ারার বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, যেমন এদের প্রবেশদ্বারের সংখ্যা সাধারণত অন্যান্য ধর্মীয় স্থাপত্যের চাইতে বেশি থাকে! প্রতি গুরুদুয়ারা সামনে থাকে তলোয়ারের ছবি সম্বলিত একটা করে হলুদ পতাকা, যাকে বলে নিশান সাহেব! ধর্মীয় আচারের পাশাপাশি এখানে সৌহার্দ্য
ভ্রাতৃত্ব বৃদ্ধির জন্য প্রাতভোজের আয়োজনও করা হয়, সেজন্য আলাদা গুরুকা লঙ্গর নামের লঙ্গর খানাও থাকে!
গুরুদুয়ারা নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্যই উন্মুক্ত!
আমরা জানি বাহান্না বাজার তিপান্না গলির শহর ঢাকা, আবার এই ঢাকাই কিন্তু মসজিদের শহর হিসেবেও কমবেশি পরিচিত! এর বিভিন্ন অলিতে গলিতে ছড়িয়ে আছে প্রাচীন নতুন অসংখ্য মসজিদ!
এই মসজিদ নির্মানের শুরু হয়েছিল মুসলিম শাসকদের হাত ধরে! সুলতানী- মুঘল আমলে প্রচুর মসজিদ, সেই সাথে মাদ্রাসাও নির্মিত হয়েছে এই অঞ্চলে যার খুব কমই এখন তাদের সেই আদি আকৃতিতে টিকে আছে।
মোটামুটি আদি আকৃতিতে যে সব মুঘল মসদিজ এখনও দেখতে পাওয়া যাবে ঢাকায়, তাদের দেখে নেই চলুন............
সাত গম্বুজ মসজিদ:
মুঘল আমলের যে কয়টি মসজিদ টিকে আছে এখনও তার অন্যতম হলো মোহাম্মদপুরের সাত গম্বুজ মসজিদ! ঢাকার তৎকালীন জাফরাবাদ (বর্তমান কাটাসুরে) অবস্থিত মুঘল প্রাদেশিক রীতিতে নির্মিত এই চমৎকার মসজিদটির গম্বুজের সংখ্যা কিন্তু আসলে ৭ টা নয়, ৩টা!
চারকোনার চারটা দ্বোতলা কর্ণার টাওয়ারের উপর গম্বুজ থাকায় একে দুর থেকে সাতটি গম্বুজের মত লাগে বলেই এর নাম হয়ে গেছে সাত গম্বুজ মসজিদ!
সাত গম্বুজ মসজিদ যখন নদীর তীরে ছিল, স্কেচ ড'য়েলি
একসময় এই মসজিদের পাশ ঘেসেই ছিল নদী, ডয়েলীর পেইন্টিং থেকেই বোঝাযায় এক সময়ে নদী কত কাছে ছিল! এখন মসজিদের পেছেন বিশাল আকারের মাদ্রাসা আর সামনে বড় বড় গাছের বাগানটা মসজিদটির এসথেটিক ভিউটা অনেকটাই নষ্ট করে দিয়েছে!যদিও বর্তমানে গাছ কিছু কাঠানো হয়েছে।
প্রত্বতত্ব অধিদপ্তর অবশ্য এই সাত মসজিদের রং করা নিয়ে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন! একবার পুরো মসজিদটাকে রেডিশ রং করে ফেলা হলো! এখন আবার দেখছি সাদা!
এরপরে কি রং করবে সেটা দেখার অপেক্ষায় আছি আমরা.......
করতলব খানের মসজিদ:
মুঘল যুগের শেষ দিকে নির্মিত করতলব খানের মসজিদটা আছে পুরানো ঢাকার বেগমবাজারে, স্থানীয় ভাবে এটা বেগম বাজার মসজিদ নামেও পরিচিত!
দ্বোতলা এই মসজিদটির প্রার্থনার ঘরটা উপরে, আর নীচ তলায় ছোট ছোট অনেক গুলো কক্ষ আছে, ধারনা করা হলো এগুলো হয়তবা মাদ্রাসার ছাত্রদের থাকবার ঘর কিংবা দোকান হিসেবে ব্যবহৃত হতো! পাঁচ গম্বুজ এই মসজিদের প্রবেশদ্বারের সংখ্যাও পাঁচটি!
১৭৭১ সালের দিকে এই মার্কেটটির মালিকানা চলে যায় নায়েব-ই-নিজাম সরফরাজের কণ্যা লাভলি বেগম কিনে নিয়েছিলেন, মূলত: তাঁর নাম ধরেই পরে এলাকাটি বেগমবাজার নামে পরিচিতি পায়, আর করতলব খানের মসজিদ নাম পেয়ে যায় বেগমবাজার মসজিদ!
খান মোহাম্মদ মৃধা মসজিদ:
১৭০৪-৫ সালে ঢাকার প্রধান কাজী, কাজী খান মোহাম্মদ এবাদউল্লাহ নির্দেশে খান মোহাম্মাদ মৃধা দ্বোতালা এই মসজিদটি নির্মান করেছিলেন!
খান মোহাম্মদ মৃধা মসজিদ ইংরেজ অর্টিস্টের তুলিতে
প্রায়১৭ ফি: উচুঁ এইটা প্লাটফর্মের উপর বানানো হয়েছিল তিন গম্বুজ এই মসজিদটি! নামাজ ঘরের উত্তর-পূর্ব দিকে মাদ্রাসা!
খান মোহাম্মদ মৃধা মসজিদ বর্তমানে
মসজিদ আর মাদ্রাসা ছাড়া বাকি অংশ একদমই উন্মুক্ত, ধারণা করা হয় এখানেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হতো, আর নীচের ঘর গুলো ছিল থাকবার জায়গা!
খান মোহাম্মদ মৃধা মসজিদটি দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে ঢাকার লালবাগে!
হাজি শাহবাজ মসজিদ:
তিন নেতার মাজারের পেছনের তিন গম্বুজ মসজিদটি সবাই দেখেছেন নিশ্চয়ই! এটাই হাজি শাহবাজ মসজিদ! হাজি শাহবাজ নামের এক মুঘল ব্যবসায়ী ১৬৭৯ সালে এই মসজিদ এবং সংলগ্ন একটা একটা দরগাহ নির্মান করেছিলেন নিজের জণ্য!
খান শাহবাজ মসজিদ ঢাকার যত মুঘল মসজিদ আছে তাদের মধ্যে সব চাইতে ভাল অবস্থায় আছে সংরক্ষনের দিক থেকে!
যদিও সামনের তিন নেতার মাজারটা মসজিদের এসথেটিক ভিউটা অনেকটাই নষ্ট করে ফেলেছে! সামনের দিক থেকে বোঝাই যায় না, পিছনে কোন স্থাপত্য আছে কিনা! যে কোন সংরক্ষিত স্থাপনার আশে পাশে নতুন স্থপনা গড়তে হলে নিয়ম অনুযায়ী এই সব বিষয় গুলো খেয়াল করার কথা, তবে সেই নিয়মটা সম্ভবত আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য নয়!
চলবে.......
সিরিজের প্রথম পর্ব---- এই আমাদের ঢাকা
আরেকটি -----বায়ান্ন বাজার, তিপান্ন গলি'.....ধ্বংসপ্রাপ্ত এক পুরাত্বাত্তিক নগরীর কথা
যেখান থেকে টুকলিফাই করা হয়েছে:
প্রত্নতাত্তকিক ঐতিহ্য,/ এশিয়াটিক সোসাইটি
বাংলাদেশ সাস্কৃতিক সমিক্ষামালা, স্থাপত্য/এশিয়াটিক সোসাইটি
ঢাকা পুরা/ মিজানুর রহমান
ঢাকা স্মৃতি বিস্মৃতির নগরি/ মুনতাসির মামুন
এবং
নেট!