আইপিএস বা ইউপিএস এর মুল কাজ:
১. মেইন বিদ্যুত থেকে ব্যাটারি চার্জ করা (২২০ থেকে ১২ ভোল্ট এর ট্রান্সফরমার এর সাহায্যে)
২. ১২ ভোল্ট এর ব্যাটারি থেকে ইনভার্টার এর মাধ্যমে ২২০ ভোল্ট তৈরী করা।
৩. সুইচিং করা (লাইন মুল বিদ্যুত থেকে ইনভার্টারের বিদ্যুতে পরিবর্তন)
ইউপিএস এ সুইচিং টা করতে হয় অনেক দ্রুত (জটিল প্রণালী, খরচ বেশী) যেন কম্পিউটার, বা অন্যান্য যন্ত্রপাতি রি-স্ট্রাট না হয়ে যায়। আইপিএস এ এই সুইচিং টা হয় ধিরে (সহজ প্রণালী ও কম খরচ)।
ব্যাটারি:
একটা আইপিএস কতক্ষন চলবে তা নির্ভর করে এর ব্যাটারি কত বড় তার উপর (মনে করি লোড সমান সবক্ষেত্রে)। এই ব্যাটারির দাম ৮০% পুরা খরচ এর। সাধারনত লিড এসিড ব্যটারি (স্টোরেজ ব্যাটারি) ব্যাবহার করা হয়। গাড়িতে বা মাইকের দোকানে আমরা যে ব্যাটারি দেখি তাই এই ব্যাটারি। স্হানীয় নির্মাতা লুকাস, রহিম আফরোজ এবং আরো কিছু প্রতিস্ঠান।
প্রথমেই আমাদের একটা ব্যাটারি যোগাড় করতে হবে। নতুন ব্যাটারির অনেক দাম, ৭, ৮ হাজার থেকে শুরু। আমাদের লাগবে কমপক্ষে একটি ৪০ এম্পিয়ার/আওয়ার এর ব্যাটারি (গাড়িতে সাধারনত থাকে ৭৫ এম্পিয়ার/আওয়ার)। গাড়ির পুরাতন ব্যাটারি কিন্তু একেবারে নষ্ট নয় এমন ব্যাটারি অনেক সময় কম দামে পাওয়া যায় (অনেক গাড়ির ড্রাইভার ব্যাটারি/টায়ার চেন্জ করতে অনেক উৎসাহি থাকে !!)
পুরাতন ব্যাটারি হলে ব্যাটারির দোকানে এসিড পানি বদলিয়ে ভালভাবে সার্ভিসিং করিয়ে নিন।
[সতর্কতা: ব্যাটারির ভেতরের তরল এসিড শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, কোথাও লাগলে সাথে সাথে থান্ডা পানি দিয়ে ভালো ভাবে ধুয়ে ফেলুন ও প্রয়োজনে ডাক্তারের পরমর্শ নিন, আমাকে ভুলেও দায়ি করার জন্য কোন পোষ্ট দিবেন না ]
যারা কম ঝামেলা করতে চান তারা এবার একটি ৩০০ভিএ র চাইনিজ আইপিএস এর সার্কিট কিনে লাগায়ে নিন ব্যাটারির সাথে, দাম পড়বে (ট্রান্সফরমার সহ) ৪০০০ টাকা মত, পাওয়া যায় পাটুয়াটুলির ইলেক্ট্রনিক্স এর দোকানে।
আর যারা আমার মত ঝামেলা করতে মজা পান তারা নিচের প্রণালি অনুশরন করুন:
উপকরন লাগবে:
১. ইনভার্টার, ১৫০ ভিএ (ইনপুট: ১২ ভোল্ট ডিসি আউটপুট: ২২০ভোল্ট এসি)
২. পাওয়ার সাপ্লাই ২০০+ ওয়াট( ইনপুট:২২০ভোল্ট এসি, আউটপুট: ১২ভোল্ট ডিসি।)
৩. মাল্টিপ্লাগ ৩ পিন।
১ম কাজ:
আমাদের লাগবে একটা ইনভার্টার, চাইনিজ ১৫০ ভিএ র একটা ইনভার্টার কিনুন, দাম ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা, পাওয়া যাবে আইডিবি ভবন, স্টেডিয়াম এর সুইমিংপুল এর পাশের মার্কেটে অথবা পাটুয়াটুলি তে।
ইনভর্টারের আউটপুট একটা ৩পিন সকেট থাকবে, এটার সাথে মাল্টিপ্লাগ লাগায়ে একটা ফ্যান আর একটা লাইট (এনার্জি সেভার / সি-এফ-এল ১৫-৩০ ওয়াট ) লাগিয়ে নিন।
এনভার্টারের ইনপুটের তার টি ব্যাটারি তে লাগিয়ে দিন। (পোলারিটি খুব ভালো মত লক্ষ করে লাগান, লাল টা ব্যাটারির + এ, কালো টি - এ, ভুল হলে একটা পেপার ওয়েট ও সাথে কিছু ধোঁয়া ফ্রি)।
ইনভার্টার অন/অফ করার জন্য বাক্সের গায়ে একটা সুইচ আছে।
সব কিছু ঠিক থাকলে ইনভার্টার অন করলে লাইট বা ফ্যান চলতে শুরু করবে
২য় কাজ:
ব্যাটারি চার্জ দেয়ার জন্য একটি সবচেয়ে কমদামি (২০০-৩০০ টাকা) কম্পিউটারের পাওয়ার সাপ্লাই কিনুন, এটি হলে ভালো, এটিএক্স হলে অন/অফ এর জন্য মডিফাই করতে হবে, (১৪ নাম্বার পিন, সাধারনত সবুজ রং এর সাথে কালো বা কমন/গ্রাউন্ড পিন এক করুন)
পাওয়ার সাপ্লাই এর হার্ড ডিস্ক বা সিডিরোমের জন্য যে তার থাকে (লাল-কালো-কালো-হলুদ) তার একটা কেটে কমন (কালো) ও ১২ ভোল্ট (হলুদ) বের করুন। এই তার দুইটা ব্যাটারি তে লাগান, হলুদ তারের মাঝে একটা ফিউজ (৫এম্পিয়ার) দিবেন নিরাপত্তার জন্য। (বাকি সব তার কেটে ফেলুন বা সুন্দর করে গুছিয়ে টেপ মেরে রাখুন।)
আপাতত সর্বক্ষন পাওয়ার সাপ্লাই অন রাখুন ব্যাটারি চার্জের জন্য, বিদ্যুত চলে গেলে ইনভার্টার অন করুন ও বাসার সবাইকে আপনার ঘরে ডাকুন বাতাস খাওয়ার জন্য।
অটোমেটিক সুইচিং করতে প্রয়োজন হবে ২টি ১২ভোল্ট এস-পি-ডি-টি রিলে সুইচ। রিলের কয়েল এর প্রান্ত তে পাওয়ার সাপ্লাই থেকে ১২ ভোল্ট সরবরাহ করুন। ১ম রিলের ২ টি কমন, ২ টি এন-সি ও ২ টি এন-ও এক করুন। কমন টি যাবে আপনার লোড এর ফেইজ লাইন হিসাবে। এন-সি তে ইনভার্টারের ফেইজ লাইন, এন-ও তে বাসার মেইন বিদ্যুত এর ফেইজ লাইন। লোড, ইনভার্টার ও মেইন বিদ্যুত এর কমন/গ্রাউন্ড একসাথে থাকবে।
২য় রিলেটির ১২ভোল্ট কয়েলে একই ভাবে ১২ভোল্ট সরবরাহ করুন। ২টি কমন, ২ টি এন-সি ও ২ টি এন-ও এক করুন। কমন কে কানেক্ট করুন ব্যাটিরির পজেটিভ টার্মিনালের সাথে, এন-সি থেকে ইনভার্টারের পজেটিভ লাগান।
এন-সি: নরমালি কানেক্ট
এন-ও: নরমালি ওপেন
!!!! সতর্কতা:: ২২০ ভোল্ট বর্তনি নিয়ে কাজ করার সময় খুবই সাবধানে কাজ করবেন। অসাবধানতার কারনে শক খেয়ে মৃত্যুও হতে পারে। !!!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ১১:০০