সাদকার মর্মকথা হল, আল্লাহর বান্দাদের প্রতি এই নিয়তে ও এই আশায় এহসান করা যে, এর মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি, রহমত ও মেহেরবানী পাওয়া যাবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের এ এক অনন্য মাধ্যম। রাসূলুল্লাহ(সাঃ) এ কথাও বলেছেন যে, মানুষ নিজের পক্ষ থেকে সাদকা করে যেরূপ আল্লাহর নিকট সওয়াব ও পুরস্কার আশা করতে পারে, তদ্রূপ মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকেও সাদকা করলে আল্লাহ উহার সওয়াব ও পুরস্কার ঐ মৃত ব্যক্তিকে দান করবেন। প্রার্থনা করা ছাড়া আরো একটি উপায় হল তাদের পক্ষ থেকে দান-সাদকা করা। একই ভাবে তাদের পক্ষ থেকে কোন ভাল কাজ করে তার সওয়াবও পৌঁছান যেতে পারে। এই বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিম্নলিখিত হাদিসগুলি দ্রষ্টব্য:
১। হযরত আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন এক ব্যক্তি এসে রাসূল(সাঃ)-কে জানাল, আমার মাতা হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেছেন। আমার বিশ্বাস মৃত্যুর পূর্বে তিনি যদি কথা বলার সুযোগ পেতেন, তবে তিনি অবশ্যই সাদকা করতেন। এখন আমি যদি তার পক্ষ থেকে সাদকা করি, তবে কি তিনি তার সওয়াব পাবেন? রাসূল(সাঃ) বললেন, হাঁ, পাবে। (বুখারী ও মুসলিম)
২। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে 'আমর ইবনুল 'আস থেকে বর্ণিত, তার দাদা 'আস ইবনে ওয়াইল জাহিলী যুগে একশত উট কুরবানী করার মানত করেছিল। (কিন্তু জীবদ্দশায় এ মানত পুরা করে যেতে পারেনি)। তার এক পুত্র হিশাম ইবনে 'আস (পিতার মানত থেকে ) তার অংশের পঞ্চাশটি উট কুরবানী করে দেয়। অপর পুত্র 'আমর ইবনুল 'আস (যিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন) এ সম্পর্কে রাসূল(সাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি ফয়সালা দিলেন যে, তোমার পিতা যদি তাওহীদ স্বীকার করে মু'মীন হত, আর তুমি তার পক্ষ থেকে রোজা রাখতে, কিংবা সাদকা প্রদান করতে, তবে তা তার কাজে আসত, সে এর উপকার পেত (কিন্তু কুফর ও শিরক অবস্থায় মারা যাওয়ার কারণে তোমার কোন আমল তার কাজে আসবে না)। (মুসনাদে আহমদ)
সূত্র: মা'আরিফুল হাদীস, ৪র্থ খন্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন।