কেউ ভাবছেন, জীবনতো একটাই, তাকে সুন্দর করে গুছিয়ে নিতে হবে। প্ল্যান মাফিক এগোতে হবে। কোন ভুল করা চলবে না। মেপে মেপে পা ফেলতে হবে।
আবার যিনি জীবনযুদ্ধে পরাজিত তিনি ভাবছেন, এই জনমটাই বৃথা। জগৎ সংসারে কিছুই করে উঠতে পারলাম না। সকলেই তির্যক চোখে তাকে দেখছে আর বলছে একে দিয়ে কিছুই হবে না। শুধু না আর নাই। এই দুটি শব্দের মাঝে জীবন আটকে গেছে।
আবার কেউ ভাবছেন, জীবন নিয়ে অত ভাবাভাবির কি আছে? চলুকনা যেভাবে চলছে। ইচ্ছের ডানা মেলে উড়াল দেব আকাশে। পৃথিবীর রং, রূপ, ঐশ্বর্য উপভোগ করব প্রাণ খুলে মন ভরে।
একজন লেখক ভাবছেন, কলমের কালি ফুরিয়ে যাবার আগেই লেখাটি শেষ করতে হবে। কিন্তু কিভাবে? ভাবনা গুলো সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।
আচ্ছা মানুষের ভাবনাগুলো এত বিচিত্র কেন? ভাবনার রং কি সবুজ, লাল, হলুদ , কালো নাকি ধবধবে সাদা?
ভাবনা কি বড় কিংবা ছোট হতে পারে? ভাবনারা কি দিনে দিনে বড় হয় নাকি ক্রমশই ছোট হতে হতে মিলিয়ে যায়?
ছোট একটি শিশু যখন মাঠে বল নিয়ে খেলা করে সে নিজেকে ম্যারাডোনা বা মেসি ভাবে, ক্রিকেট হাতে ভাবে সে একজন সাকিব। একসময় সে বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পারে আর বুঝতে পারে খেলোয়াড় হয়ে জীবন গড়ে তোলা আমাদের সমাজে এত সহজ ব্যাপার নয়।
কম্পিউটারের কিবোর্ডে হাত রেখে ছোট ছেলেটি ভাবে সেও একদিন বিল গেটস হবে। কিন্তু সেই ছেলেটি একসময় নিরাশ হয় তার ভবিষৎ ভেবে। তার পরিবার কি তার শিক্ষার ব্যয় ভার বহন করতে পারবে? কৃষকের সন্তান ভাবে তাদের অনেক জমি হবে থাকবে গোয়াল ভরা গরু। বাবাকে আর কষ্ট করতে হবে না। মায়ের মুখে হাসি ফোটাবে। কিন্তু দিনে দিনে এই ভাবনা গুলো ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হতে থাকে। একসময় সে নিজেই হয়ে উঠে একজন ভূমিহীন কৃষক।
আশা মরে যায় কিন্তু ভাবনা গুলো মগজে কিলবিল করতেই থাকে। জীবনের আশাকে বাঁচিয়ে তুলতে এই ভাবনা গুলোকে বড় হতে দিতে হবে। সুতাকাটা ঘুড়ির মত আকাশে উড়ার ক্ষমতা দিতে হবে। তাহলেই ভাবনা গুলো মৃতপ্রায় আশাকে জাগিয়ে তুলবে। সেই আশায় বুকবেধে জীবন তার নিজস্ব গতিতে এগিয়ে চলবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:২৪