আমাদের আত্মীয় স্বজন বন্ধু দের মধ্যে অনেক জীবিত বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আছেন। আমার জানতে ইচ্ছে করে কোথায় কি অবস্থায় আছেন তারা। হয়তো তেমন কিছুই করতে পারব না। কিন্তু তারপরও জানতে ইচ্ছে করে।
এখানে ব্লগে বন্ধুদের যার যেখানে পরিচিত কোনো জীবিত বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আছেন তার নাম এবং বর্তমান ঠিকানা/ অবস্থা/শহীদ পরিবারের সদস্যদের বর্তমান অবস্থা পারলে লিখে দিন।
দেখি কত মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা ব্যক্তিগত ভাবে চিনি এবং তাঁদের বর্তমান অবস্থা জানি।
দেখা যাক না কত মুক্তিযোদ্ধার বর্তমান অবস্থা এখানে জমা হয়।
আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে কোথায় আছে কি অবস্থায় আছে আমাদের পরিচয়ের জন্মদাতা জন্মদাত্রী , ত্যাগ স্বীকার করেছেন যে বীর তারা, কে কোথায় কোন অবস্থায় আছেন।
আমি আমার ফেবু তেও একই স্ট্যাটাস দিয়েছি। দেখি ওখান থেকে কতজনের তথ্য পাওয়া যায়। ওখান থেকেও যা তথ্য পাব এখানে আপডেট করে দিব।
পোস্ট দেয়ার সাথে সাথে কিছু ব্লগারের স হযোগীতা পেয়েছি। আশা করি এভাবে অনেকেই আমার দিকে স হ যোগীতার হাত বাড়িয়ে দেবেন
ব্লগার কাজী শীপু বলেছেন:
আমার বাবা ৭৫+ বয়স ; গ্রামে থাকেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমার আপন বড় ভাই ১৯৭১ এর যদ্ধের মধ্যে একেবারে শিশু অবস্থায় মারা গেছেন অযত্নে (কেননা, আমার মা তখন তার ৩টা শিশু বাচ্ছাকে নিয়ে বন্যার পানির মধ্যে মধ্যে পালিয়ে বেড়াতেন রাজাকারের ভয়ে
ব্লগার s r jony বলেছেন:
অনেক আছে, আমার পরিবারেই তিন জন আছেন
আমি উনার কাছে উনার পরিবারের তিনজনের ডিটেইল জানতে চেয়েছি। আশা করি উনি কখুব তারাতারিই আমাদের ডিটেইল জানাবেন। আমরা আমাদের নিজেদের ব্লগার পরিবারের আরো তিনজন মুক্তিযোদ্ধার বর্তমান তথ্য জানতে পারব।
ব্লগার যুবাইর আজাদের কাছে থেকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনলাম। উনার পরিবারের গল্প। শুনে কষ্ট হল। আসলে আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি ন্যায় বিচার করতে পারিনি। ব্লগার যুবাইর আজাদ আপনাকে বলছি....আপনার পরিবারের মুক্তিযোদ্ধা সদস্যদের জন্য অশেষ শ্রদ্ধা আর ভালবাসা। আপনি ধন্য হয়েছেন এমন পরিবারে আপনার জন্ম হয়েছে বলে।
আর আপনার পরিবারের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি.....
"হয়তো বা ইতিহাসে তোমাদের নাম লেখা রবে না
বড় বড় লোকেদের ভীড়ে , জ্ঞানী এবং গুনিদের আসরে তোমাদের কথা কেউ কবে না
তবু তোমাদের এ ঋণ কোনদিন শোধ হবে না
......"
আমি নিচে উনার কথাগুলো কপি করে দিলাম।
ব্লগার যুবাইরআজাদ বলেছেন:
আমার মা ও চাচা মুক্তিযোদ্ধা, নাম যথাক্রমে- আবেজাননেছা ও হায়দার মোল্যা, জেলা - নড়াইল।আমাদের বাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধারা দিনে আস্ত্র রেখে ঘুম দিত, মা তাদের জন্য রান্না বান্না করতো। আমাদের বাড়ী রাস্তার পার্শে, একদিন একরাজাকার এক গাড়ী আর্মি নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল, আমার বড় ভাইকে (১৯৭১ এ ১০/১১ বছর বয়স ছিল) একটি গরু জবাই করার ছুরি নিয়ে খেলতে দেখে আর্মিরা গাড়ী থামায়, জানতে চায় ছুরি দিয়ে কি করে? ভাই বলে মুরগী জবাই করে, আর্মিরা বাড়ী কোনটা জানতে চায়, ভাই বলে ও...ই..টা। গাড়ীর শব্দে মুক্তিযোদ্ধারা বাড়ীর পেছনের বাগান দিয়ে পালিয়ে যায়। সাবাই অস্ত্র নেয়ার ও সুযোগ পায়নি। আর্মি বাড়ীতে ঢুকে সাথে রাজাকার ও ঢুকে, (আমার বড় বোনকে যে গ্রামে বিয়ে দিয়ে ছিল রাজাকার ও ওই গ্রামেরই লোক তাই আমার আব্বাকে চিনতো) কিন্তু রাজাকার কি মনে করে বলে এখানে মুক্তি নেই, সাথে সাথে আর্মিরা বাড়ী থেকে বের হয়ে যায়, আমার মা আমার ছয় ভাই বোন সহ তখন বাড়ীতেই ছিল। ওই দিন ঘরে ঢুকলে বাড়ী জ্বালিয়ে দিত, আল্লাহ রক্ষা করেছিল তাই আমার জন্ম ওই পরিবারে হয়েছে।তার পর থেকে আমাদের বাড়ীতে আর মুক্তিযোদ্ধারা থাকতোনা।যুদ্ধের শেষ সময়ে উনাদের কমান্ডার একদিন বাড়ীতে এলে রাজাকাররা আর্মি দিয়ে ধরে নিয়ে যায়, কমান্ডারের (হামিদ মোল্যা) হাত পা কেটে পুকুরে ফেলে দেয়। যুদ্ধ শেষে চাচা অস্ত্র যমা দিয়ে দেয় কিন্তু যারা মুক্তি যোদ্ধা সেজে হিন্দুদের ঘর বাড়ী ভাংতো তারা শয়তানী করে চাচার কাছে অস্ত্র আছে বলে রক্ষি বাহিনীর কাছে রিপোর্ট করে, চাচাকে লাল বাহিনী ধরে নিয়ে বেদম প্রহার করে, নাকে শুকনা মরিচের দেয়া গরম পানি ঢালে, ৪/৫ (সঠিক মনে নেই) দিন পর এক এক্স আর্মির (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অশ্বারোহী) কাছ থেকে আমার আব্বা একটা পত্র লিখে নিয়ে দিলে চাচাকে ছেড়ে দেয়। আমরা কোন রাজনিতির সাথে জড়িত না তবে এই কারণে আব্বা আওয়ামীলীগ দেখতে পারেনা। আর চাচা ও রাগে কোন দিন কার্ড করাতে যায়নি। আর্মিরা আমার বাবাকেও ২ বার লাইনে দাড় করিয়ে ও কি এক অজানা কারণে (আল্লাহর হুকুম হয়নি তাই) লাইন থেকে সরিয়ে দেয়। আমার চাচা বর্তমানে প্যারালাইসিস রোগী, একমাত্র ছেলে ও তেমন উপার্যন করতে পারেনা। খুবই কষ্টে দিন কাটে, আমি মাঝে মাঝে চাচাকে খরচা বাবদ কিছু দেয়ার চেষ্টা করি, আমার মা ও বিভিন্ন সময় সাহায্য সহযোগীতা করে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:০৪