somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিপাহ ভাইরাস- এটি একটি সচেতনতামুলক পোস্ট

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ এ আবার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছহে নিপাহ ভাইরাসের। এই ভাইরাসের প্রকোপে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮ জন রোগীর। উইকিপিডিয়ার মতে ১৯৯৮ সাল থেকে এপর্যন্ত বাংলাদেশ এ ৮ বার নিপাহ ভাইরাসের প্রদুর্ভাব দেখা যায়। যেখানে
২০০১ এ- এপ্রিল থেকে মে মাস পর্যন্ত- মেহেরপুরে প্রাদুর্ভাব ঘটে- মৃত্যুর হার ছিল-৬৯%
২০০৩ এ জানুয়ারীতে- নওগাতে প্রাদুর্ভাব ঘটে যেখানে মৃত্যুর হার ছিল-৬৭%
২০০৪ এ জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারীতে- মানিকগন্জ , রাজবাড়িতে প্রাদুর্ভাব ঘটে, যেখানে মৃত্যুর হার ছিল ৩৩%
২০০৪ এ ফেব্রুয়ারী থেকে এপ্রিল এ - ফরিদপুর এ প্রাদুর্ভাব ঘটে- যেখানে মৃত্যুর হার ছিল ৭৫%
২০০৫ এ জানুয়ারীতে - টাংগাইলে প্রাদুর্ভাব ঘটে- যেখানে মৃতুর হার ছিল ৯২%
২০০৭ এ ফেব্রুয়ারী থেকে মে - কুষ্টিয়া ও ঠাকুরগাওয়ে প্রাদুর্ভাব ঘটে- যেখানে কুষ্টিয়াতে মৃত্যুহার ছিল ৬২% এবং ঠাকুরগাওয়ে মৃত্যুহার ছিল ৪২%
২০০৮ এর ফেব্রুয়ারী থেকে মার্চ -মানিকগন্জ এবং রাজবাড়ীতে প্রাদুর্ভাব ঘটে- যেখানে মৃত্যুহার ছিল ৮৯%
২০১০ এর জানুয়ারী - ফরিদপুরে প্রাদুর্ভাব ঘটে- মৃত্যুহার ছিল ৮৭%- এ বছরে নিপাহ আক্রান্ত রোগীদের চিকিতসাদানকারী একজন চিকিতসকের ও মৃত্যু ঘটে
২০১১ এর ফেব্রুয়ারী- হাতিবান্ধা , লালমনিরহাটে প্রাদুর্ভাব ঘটে- ২১ জন স্কুলগামী শিশুর মৃত্যু হয়।
আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল নিপাহ ভাইরাসকে ক্যাটাগরি সি ক্রিটিকাল বায়োলজিক্যাল এজেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ক্যাটেগরি সি এর অর্থ হচ্ছে এটাকে সহজেই প্রাণঘাতী রূপ দেয়া যায় এবং বিপুল পরিমাণে উৎপাদন করা যায়।
নিপাহ ভাইরাস প্রথম পাওয়া যায় মালয়শিয়াতে ক্যামপ্যাং সাংহাই নিপাহ নামক এলাকার একটি শুকরের খামার থেকে। সেখান থেকেই এই ভাইরাসের নাম করা হয় নিপাহ ভাইরাস।এর পরে ধীরে ধীরে এটি দক্ষিন এশিয়ার দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
সাধারনত নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত পশুর লালা, টিস্যু থেকে এই ভাইরাস মানুষের মধ্যে চলে আসে। ধারনা করা হয় বাংলাদেশএ নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত বাদুর এর লালা, ইউরিন থেকে ফল বা ফল জাতীয় দ্রব্যের মধ্যে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। যেমন বাদুরের লালা মিশ্রিত খেজুর ও খেজুরের রস থেকে আক্রান্ত হবার প্রমান পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে এই ফল বা ফলের রস খেলে মানুষের মধ্যে এই ভাইরাসের বিস্তার শুরু হয়। আবার আক্রান্ত মানুষের লালা বা ইউরিন থেকে অন্য মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।
কোনো মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মারাত্মক উপসর্গ পাওয়া যেতে পারে আবার কোনো উপসর্গ নাও দেখা যেতে পারে ।
সাধারন উপর্গের মধ্যে জ্বর, মাথা ব্যথা, হাতে পায়ে ব্যাথা, বমি এবং গলা খুস খুস করা ভাব দেখা যায়।
গুরুতর উপসর্গের মধ্যে ঘুম ঘুম ভাব, তন্দ্রাচ্ছন্নতা , সাধারন চেতনা লোপ পাওয়া এবং অন্যান্য নিউরলজিক্যাল সমস্যা দেখা দেবে যেটা এনকেফালাইটিসের পর্যায়ে চলে যায়।
কিছু রোগীদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট জাতীয় উপসর্গ দেখা দেয়।
এনকেফালাইটিস থেকে সিজার এবং সেখান থেকে রোগী কোমায় চলে যেতে পারে। এবং এই ঘটনা উপসর্গের ২৪-৪৮ ঘন্তার মধ্যে ঘটে।
বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এনকেফালাইটিসের চিকিতসা প্রথম থেকে শুরু করলে পুরোপুরি আরোগ্য সম্ভব। শুধু মাত্র ২০% নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত এনকেফালাইটিসের রোগীদের মধ্যে স্নায়বিক পরিবর্তন যেমন খিচুনি ও ব্যক্তিত্ব পরিবর্তন দেখা যায়।
বর্তমানে নিপাহ ভাইরাসের জন্য কোনো ভ্যাক্সিন বা সরাসরি নিরাময়ের কোনো ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। তাই আক্রান্ত ব্যক্তির উপসর্গের নিবিড় চিকিতসা দেয়া প্রয়োজন।
বাংলাদেশ এ নিপাহ ভাইরাস সাধারনত আক্রান্ট বাদুরের লালা থেকে ছড়ায়। এখান থেকে মানুষ ছাড়াও অন্যান্য গৃহপালিত পশু কুকুর , বিড়াল, ঘোড়া , ছাগল, ভেড়ার আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে।
এই রোগটি নিয়ে বাংলাদেশে কাজ করে জাতীয় রোগতত্ত্ব এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান সংক্ষেপে আই ই ডি সি আর।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৭১ না দেখেও কেবল ইতিহাস পড়ে যদি আপনি ৫৩ বছর পরে এসেও পাকিস্তানকে ঘৃণা করতে পারেন। তাহলে নিজ চোখে ভারতের আগ্রাসন দেখেও চুপ কেন?

লিখেছেন তারেক সালমান জাবেদ, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৪:৩৭

প্রথমেই শুরু করতে চাই সীমান্ত হত্যা নিয়েঃ -
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী দ্বারা ২০০০ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১,৫০০ সাধারণ ও বেসামরিক বাংলাদেশি হত্যা করা হয়েছে। ভারত সরকারের বাংলাদেশের সীমান্তে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চতুর্দিকে ওত পেতে আছে ফ্যাসিস্টের দোসর

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৮:৩৮

চতুর্দিকে ওত পেতে আছে ফ্যাসিস্টের দোসর

ছবি, অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

২০২৫ সালে বাংলাদেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। স্বৈরাচারী শাসনের পতন সত্ত্বেও ফ্যাসিবাদের ছায়া সমাজের প্রতিটি স্তরে লুকিয়ে রয়েছে। ফ্যাসিস্ট শক্তির সহযোগীরা—যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সরু চিকেন নেক করিডর সমস্যা এবং সমাধান

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৭



সরু চিকেন নেক করিডরের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে নেপাল ও ভুটানের মাধ্যমে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সেভেন সিস্টার্সকে যুক্তের ব্যাপারে ভাবছে ভারত

ভারতের অর্থায়নে পরিচালিত বাংলাদেশের রেল সংযোগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠকানোটাই ভাল শিখেছি আমরা

লিখেছেন ফেনা, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৭



এই বিশাল মহাকর্ষীয় বস্তু সবকিছু নিজের দিকে টেনে নেয়—এমনকি আলোও পালাতে পারে না। কিন্তু কৃষ্ণ গহ্বরের ভিতরে কী ঘটে? সেখানে সময় ও স্থান কেমন আচরণ করে? এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরব বিশ্বে নারীরা অপমানিত? আমার অভিজ্ঞতা বলছে ভিন্ন কথা

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৬



বহুদিন ধরে একটি কথা শুনে আসছি—“নারীরা আরব দেশে অসম্মানিত অবস্থায় থাকে।”
কিন্তু আমি আরব দেশে গিয়েছি, থেকেছি, এবং প্রায় দুই মাস ধরে একাধিক জেলায় ঘুরেছি।
সত্যি বলছি—আমি সেখানে কোথাও নারীদের অসম্মানিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×