somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিএনপি’র অন্যতম সহসভাপতি শাহ্‌ মোয়াজ্জেম হোসেনের দৃষ্টিতে জিয়াউর রহমান ছিলেন সুযোগ সন্ধানী, অতি উচ্চবিলাসী ও ক্ষমতালিপ্সু ব্যক্তি

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শাহ্‌ মোয়াজ্জেম হোসেন তাঁর ‘জেল হত্যা মামলা’ নামক গ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু সরকার, ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ড, জেলহত্যা, মোশতাকের শাসন, জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় আরোহন ইত্যাদি বিষয়ে খোলামেলাভাবে লিখেছেন। তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সকল বিষয়েই মুল্যায়ন করেছেন। তিনি ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ পদে আসীন নেতা ছিলেন। ছাত্রলীগের পথ বেয়ে রাজনীতি শুরু করে পঁচাত্তরের পরে মোশতাকের সঙ্গে ডেমোক্রেটিক লীগ নামে রাজনৈতিক দল গঠন করেন। এরশাদের আমলে দলের বিলুপ্তি ঘটিয়ে জাতীয় পার্টিতে মিশে যান। তিনি সংসদ সদস্য, সংসদের চিফ হুইপ, প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রী, তাঁর দলের সেক্রেটারী, মন্ত্রী, উপপ্রধানমন্ত্রী, জাতীয় পার্টির মহাসচিব ইত্যাদি পদের অধিকারী হয়ে বর্তমানে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ও দলটির অন্যতম সহসভাপতি। জেলহত্যা মামলায় অভিযুক্ত এই বিএনপি নেতা আরও কিছু গ্রন্থ লিখেছেন।
যাইহোক, এই গ্রন্থে তিনি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে একেবারে খোলাসা করে বলেছেন। ১৫ আগস্ট পরবর্তী ঘটনা বিশ্লেষণে বলেন, সামরিক ছাউনিতে প্রতিদিন প্রতিকুলতার পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছিল। প্রথম থেকেই একটা বিদ্বেষ ও হিংসার মনোভাব কাজ করছিল। ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের জন্য ওঁৎ পেতে বসে থাকা উচ্চাবিলাষী সেনাপতিরা চুপ করে বসেছিল না।
বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকা না থাকার বিষয়ে বলেন, পূর্বাপর অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হয়, ঘোলা পানিতে যারা কার্যোদ্ধারের প্রয়াস পেয়েছে তাঁদের মধ্যে জিয়াউর রহমান ছিলেন অগ্রনী। ফারুক, রশীদ ও মোশতাকের যেসব অভিমত পরবর্তীতে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তাতে এটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, জিয়াউর রহমান চোরকে চুরি করতে বললেও গৃহস্থকে সজাগ থাকার পরামর্শ দেননি। তিনি ১৫ আগস্টের ঘটনাটি ঘটে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন। ওদের(খুনীদের)কে আশ্বাস দিয়েছিলেন, তিনি(জিয়া) তাঁদের(খুনীদের) সঙ্গে আছেন এবং থাকবেন। তাঁরা(খুনীরা) যদি কার্যসিদ্ধি করে আসতে পারে তিনি তাঁদের সমর্থন দিবেন। বস্তুত ১৫ই আগস্টের ফলশ্রুতিতে তিনি(জিয়া) সবচাইতে বড় সুবিধাভোগী। একজন সাধারন যোগ্যতাসম্পন্ন মেজর এদেশের রাষ্ট্রপতি বনে যান। এটা ১৫ আগস্ট না হলে কল্পনাই করা যেতো না। আজও তার জের চলছে।
জিয়াউর রহমানের পূর্বাপর সকল আচরনই নির্দ্বিধায় এই উপসংহারে উপনীত করে যে, তিনি ছিলেন একজন সুযোগ সন্ধানী এবং অতি উচ্চভিলাষী ক্ষমতালিপ্সু ব্যক্তি।
১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড, খালেদ মোশাররফের অভ্যুত্থান, তাহেরের পুনঃঅভ্যুত্থান ইত্যাদির মধ্যদিয়ে জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় আরোহনের বিষয়ে শাহ্‌ মোয়াজ্জেম লিখেছেন, জিয়াউর রহমানের কাজকর্ম ছিল বানরের পিঠা ভাগের মতো। তিনি এমনি একটি পরিস্থিতিরই অপেক্ষায় ছিলেন। দু’দলে লড়াই করে একদল দেশছাড়া আর আরেকদলের নেতা নিহত। মাঝখান থেকে ক্ষমতা তাঁর কুক্ষিগত।

জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে যোগদান ও কালুরঘাটের বেতার বার্তা পাঠের বিষয়ে শাহ্‌ মোয়াজ্জেম হোসেন লিখেছেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার মুহূর্তেও তিনি(জিয়া) প্যাঁচ কষেছিলেন। বিষয়টা চাপা পড়ে গেছে বলে সবিস্তারে উল্লেখ করতে চাইনা। সংশ্লিষ্ট মহলের সব জানা আছে। পরবর্তীতে তাঁর(জিয়ার) সব পরিকল্পনা ঠিক ঠিক মিলে গেলেও যবনিকায় বুমেরাং হয়ে যায়। কথায় বলে, ওস্তাদ লাঠিয়াল নিজের লাঠির আঘাতে প্রাণ হারায়। বড় সাপুড়ে পালিত স্বর্পের দংশনেই জীবনপাত করে।
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×