ঈদ উৎসব আমার কাছে এখনো খুব আনন্দের একটা ব্যাপার। ঈদ শপিং, রোজার মাস এলেই দিনটির জন্য অপেক্ষা করা আর ঈদের আগের রাতে চাঁদ দেখার সাথে সাথে টিভিতে যে গানটা এখনো বাজানো হয় "রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ" এটা শুনলে এখনও ছোট বেলার মত লাফালাফি না করলেও আমার ভিতরে একটা অন্য রকম আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। এই দিনটাতে কাছের দুরের মানুষ গুলিকে নিয়ে মিলন মেলার কিছুটা সুযোগও হয়।
দেশের বাইরে ঈদ উদযাপন কতটা মলিন আর ফ্যাকাসে, আমার মনে হয় প্রবাসী সবাই বুঝতে পারেন। আমি মানুষটা বরাবরই "হোমসিক"। আমাকে যদি সারা জীবন প্রবাসে কাটাতে হত আমি যে কি করতাম জানিনা। প্রয়োজনে হয়তো থাকতে হতো। তবে খুব দু:খী হয়ে থাকতাম এটা সত্যি।
আমাকে এটা নিয়ে তিনটা ঈদ পরিবারের অনেক প্রিয় মানুষদের দুরে রেখে স্বামী সন্তান নিয়ে দেশের বাইরে করতে হচ্ছে। গত দুই ঈদে কিছুই করিনি। ভালো না লাগার কারণে। তার মধ্যে এক ঈদে অবশ্য বাসা পাল্টাতে হয়েছিলো।
আমি টোকিও ইউনিভার্সিটির যে লজে থাকি সেখানে বাঙ্গালী পরিবার নাই। স্বামী থাকে ল্যাবে। আমি আর আমার ছেলে মলিন বদনে বাসায় বসে থাকি।
"অনন্য" এখন একটু বড়, দেশে থাকলে ঈদের আয়োজন দেখে হয়তো বুঝতে পারতো যে বিশেষ একটা বা অন্য রকম একটা দিন সে অতিবাহিত করছে। সেই অন্য রকম দিনটা সে উপভোগও করতো হয়তো।
আমি এবার আমার "প্রবাস মলিন ঈদ"কে রং রূপ দেয়ার ব্যর্থ প্রয়াস চালাচ্ছি। রান্না করার প্রস্তুতিও নিয়েছি। ঈদ ঈদ ভাব আনার জন্য প্রতিদিন আমার বাচ্চাটাকে বলি, বাবা ঈদ আসছে।
আমি আমার ছেলেকে বলি, আমরা ঈদের দিন কি করবো বাবা ?
আমার ছেলে বলে,মা ঘুমাবো। আমি হতাশ হই!! ছেলের বাবা আড়ালে দাড়িয়ে হাসে মা ছেলের কথোপকথনে।
আমি আমার ছেলেকে প্রতিদিন বলছি, বাবা ঈদ আসছে, আমরা মজা করবো, নতুন জামা পরবো, আর মজার সব জিনিস খাবো।
হচ্ছেনা.........পারছিনা............
সেই আমেজ আর আনন্দের বন্যা বইয়ে দিতে।
সবাইকে অগ্রিম ঈদ শুভেচ্ছা..।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:২৪