কলকাতার এক ডিসেম্বরের শীতের রাতে আমি জম্নেছিলাম। এখনকার কলকাতার শীত আর ২৪ বছর আগের কলকাতার শীতের মধ্যে এটা বিস্তর ফারাক ছিল। মা বলেন, আমি যেইদিন জন্মেছিলাম সেইদিন প্রচন্ড ঠান্ডা পরেছিল, তাই সেইদিন আমাকে একটা তুলোর প্যাকেটে পুরে মার পাশে রাখাহয়েছিল। আমার জন্মের সময় আমার বাবা, মা এর পাসেই ছিল। জখন জম্নাছিলাম তখন বাবা এতোবেশি ইমোসনাল হয়ে পরেছিলো যে বাবা কে সামলাতে ঠাকুমাকে আসতে হয়েছিল লেবাররুমে। তারপর অবস্য বাবাকে লেবাররুমে ঠাকুমা আসতে দেননি। এইকথা ভেবে মা এখনো রিতিমতো হাসেন।
জন্মের থেকেই আমার জীবণটা খুবই ট্রাজিক। সাধারনত শিশু জন্মাবার সময় মাথাটা আগে আসে, কিন্তু আমার ক্ষেত্রে পা আগে এসেছিলো। তাছারা আমি জন্মের সময় খুব বড়োসড়ো ছিলাম। মা ঠাট্টা করে বলেন, "তুই জন্মের থেকে আমাকে জালিয়েজাছিস!"।
যেইদিন আমাকে বাড়িতে আনাহলো, সেইদিন দাদু আমাকে একটা ছোট্টো সোনার ঝিনুক কিনে দিয়েছিলো। এখনো সেটা আছে। আমি খুব ফরশা ছিলাম, তাই ঠাকুমা পায়ের নিচে একটা কাজলের ফোটা সবসময় লাগিয়ে রাখতো। কারন তিনি মনে করতেন এতে খারাপ দৃষ্টি আমাকে ছুতে পারবে না! এখন এইসন কথা ভাবলে হাসিপায়। আমার মামাবাড়ি থেকে আমাকে একজোড়া সষের বীজ ভরা বালিস দিয়েছিল। তাদের ধারনা সষের বীজের বালিসে সুলে মাথা গোল হয়! জানিনা আমার মাথাটা কতোটা গোল হয়েছে! সে জাইহক! আমি ছোটবেলা থেকেই খুব ধিরস্থির সান্তো প্রকৃ্তির। তাই আমার মা বাবার খুব দুঃখ, যে আমি কোনদিন দুষ্টিমি করিনি। তবে একদিন আমাকে আদোর করার সময় বাবার নাকে খুব জোরে কামরে দিয়েছিলাম, এখনো সেই দাগ বাবা এর নাকে আছে। আদর করে আমার মামা আমাকে এখনো "হুলো" বলডাকেন। তবে আমার ডাকটা মোটেই ভালোলাগে না। তাই মামাবাড়ি গেলে মামা এর থেকে ১০হাত দূরে থাকি, পাছে যদি "হুলো" বলে ডেকেফেলে! আমার পিসতুতো দাদা আমাকে এখনো "ওমলেট" বলে ডাকে। আমিও তাকে "আন্ডা" বলে ডাকি। তবে সে এখন আমেরিকা তে থাকে। মাঝেমাঝে আমি জখন কথা বলি তখন "ওমলেট, আন্ডা" এই সম্বোধনেই কথা চলে। ও আমাকে বার বার ওখানে যেতে বলে। কিন্তু মা যেতে দেয় না। মা বলে আমি ওখানে গেলে হারিয়ে জাবো।
আমি তখন বলি "একদিনতো হারাতে হবেই, মা!"।
মা এইকথা সুনে বেজায় রেগেজ়ায় আর বলে "জখন হারাবি তখন দেখায়াবে, তাই বলে এখন থেকে চেচাছিস কেন?"।
আমি ঠাট্টা করে বলি "তুমি কি করে এতো সিওর হলে যে আমিই তোমার আগে হারিয়ে জাবো? কালেকালে তোমার বয়সটা তো কম হোলনা!!"।
মা আরো খেপেগিয়ে চেচাতে থাকে আর বলে "আমি মোরলে তো তুই বাচিস তাই না?"।
আমি বোলি "তাঠিক বলেছ!"।
এইবার মা রাগে লাল হয়ে বাবা এর কাছে দউড়ে গিয়ে বলে "দেখতেপাচ্চ ছেলে কি বলছে?"।
বাবা বলে "থাক! থাক! তোমাদের কারোর মোড়ে কাজ নেই, এইবার আমাকেই দেহরাখতে হবে দেখছি!!"।