হতে চেয়েছিলাম পাখি ঈশ্বর বানালেন মানুষ! অতঃপর আমার নাম রাখা হলো শিশু। ঈশ্বরের আদেশ মোতাবেক আমাকে পাঠশালায় রেখে আসলেন মানুষপিতা। আমাকে শেখানো হলো প্রথমপাঠ “অ-তে অজগরটি আসছে তেড়ে। আ-তে আমটি আমি খাব পেড়ে”। আমি তো পাখি হতে চেয়েছিলাম! পাখি হলে-না অজগর তেড়ে আসতো, না আমটি পেড়ে…! জানলাম মানুষ হতে হলে- অজগর তেড়ে আসে, আমটি পেড়ে খেতে হয়।
এরপর আমার নাম রাখা হলো কিশোর। মানুষপিতা আমাকে ফের রেখে আসলেন ইশকুলে। একদিন প্যারেডে আমার মতোই আরেক কিশোরের মস্তদেহের ধাক্কা সামলাতে না পেরে লাইনচ্যুত হয়ে মানুষশিক্ষকের বেতের আঘাতের যন্ত্রণায় চিৎকার করে উঠতে উঠতে শিখলাম মানুষ হতে হলে কাঁদতে হয়! আমি তো পাখি হতে চেয়েছিলাম! পাখি হলে না ধাক্কা খেতে হোত, না কাঁদতে।
এরপর আমার নাম রাখা হলো তরুণ। মানুষপিতা আমাকে রেখে আসলেন বিদ্যালয়ে। একদিন সাধারণ বিজ্ঞানের ক্লাসে মানুষশিক্ষক বললেন- মানুষ হওয়া এতো সহজ নয়, মানুষ হতে হলে মানুষকে কিছু দিতে হয়। মানুষ হতে যেয়ে সেদিন সত্যি মানুষের কথা আমি বুঝিনি!
একদিন বুঝলাম যেদিন মানুষশিক্ষকটি বিদ্যালয়ের পেছনের দরজায় ডেকে নিয়ে মানুষ হবার প্রাক্টিক্যাল পরীক্ষায় ফি দিতে হবে বলে জানালেন, জানলাম মানুষ হতে হলে ফি দিতে হয়! আমি তো পাখি হতে চেয়েছিলাম! পাখি হলে না পেছনের দরজায় দাঁড়াতে হোত, না ফি দিতে। জানলাম মানুষ হতে হলে আরেক মানুষকে কিছু দিতে হয়।
এসব দেখতে দেখতে অতঃপর একদিন ঠিক মানুষ হয়ে গেলে, আমার কোনোদিন পাখি হওয়ার ইচ্ছে জাগেনি আর!
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:২৮