সারাদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেয়ারে বসে কম্পিউটারের দিকে টানা তাকিয়ে থেকে কাজ করে যাওয়াই আজকের বহু মানুষের পেশাদার জীবনের অঙ্গ। তাই চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় দশ ঘণ্টাই কাজের প্রয়োজনে চেয়ারের সঙ্গে আঠার মতো লেগে থেকে থেকে নুন্যতম শারীরিক পরিশ্রম করার উত্সাহটুকুও পাইনা আমরা। উল্টে দিন দিন বেড়ে চলে ফাস্ট ফুড খাওয়ার অভ্যাস। এর অবধারিত ফল ওবেসিটি ও আরও কত ছোট বড় রোগ। তবে জীবনযাপনে একটু বদল আনলেই আপনি এসবের হাত থেকে রেহাই পাবেন।
কিন্তু কীভাবে?
সেডেন্টারি লাইফস্টাইলে যারা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন তাদের জীবনযাপনের বদলের মূল অস্ত্রই হল প্রতিদিনের ডায়েট। কী খাবেন আর কোন খাবার এড়িয়ে চললেই ভালো এর একটা পরিষ্কার ধারণা থাকা দরকার সবার আগে।
- ব্রেকফাস্ট কোনোমতেই স্কিপ করা চলবে না। তবে অনেকেই আছেন যাদেরকে সকাল আটটার মধ্যেই অফিস রওনা হতে হয়। বাড়ি ফিরবেন হয়তো সন্ধ্যে পার করে। তারা সকালে পেট ভরে ভাত খেতে পারেন। লাঞ্চে বরং হালকা কোনও স্ন্যাকস খান, যেমন: মুড়ি, চিঁড়ে ভাজা, দোসা, এমনকী টক দই, শসাও চলতে পারে৷ তবে চাউমিন, পরোটা, রোল এসব একেবারেই এড়িয়ে যাওয়া ভালো।
- ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, সন্ধ্যার নাস্তা আর ডিনার- দিনের এই চারটে মিলের মাঝে মাঝেই কিছু না কিছু খান৷ কাজের ফাঁকে ফাঁকে চা খেতে পারেন।
- দুধ চিনি দিয়ে চা খাওয়ার অভ্যাস বদলে 'গ্রিন টি' খান। এতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান থাকার জন্য রোগ বালাই দুরে থাকবে। বয়সের ছাপও চট করে পড়বেনা। আর ব্যাগে রোস্টেড ছোলা বাদাম বা কোনও ফল রাখুন। কাজে মুখ চালাতে ইচ্ছে করলে এগুলো খান।
- মাঝরাত পর্যন্ত কাজ করতে করতে অনেকেরই খিদে পায়। তখন স্যালাড খেতে পারেন৷ খুব খিদে পেলে এক সঙ্গে এক স্লাইস পাউরুটিও চলতে পারে।
- দুপুরে অথবা রাতের খাবারের মেন্যুতে ভাত বা রুটির সঙ্গে ডাল, সবজি, ডিম অথবা চিকেন অথবা মাছের মতো প্রোটিন জাতীয় খাবার থাকা জরুরি। তবে মাটনের জন্য মাসে একবার বরাদ্দ থাকা ভাল। নিরামিষাশী যারা তারা পনির ও দুধ খেতে পারেন।
- অনেকেরই দু বেলাই ভাত খান বা স্বাস্থ্যরক্ষা করতে গিয়ে ভাতের বদলে দুবেলাই রুটি খান। কিন্তু জানেন কি-আটায় গ্লুটেন জাতীয় প্রোটিন আছে যা খাবারকে তাড়াতাড়ি হজম করতে দেয়না। তাই সম্ভব হলে একবেলা ভাত ও একবেলা রুটি খান।
- প্রতিদিন একটা করে ফল খান। কাজের ফাঁকে যে কোনও একটা সময় আপেল, পেয়ারা বা মরশুমি কোনও ফল খাওয়া দরকার।
এড়িয়ে চলুন
ডিপ ফ্রায়েড ফুড, পিজা, বার্গার, চকোলেট, মিষ্টি, ঘি, মাখন, অতিরিক্ত নুন ও চিনি ইত্যাদি।
হালকা ব্যায়াম করুন
অনেকেই একথা শুনে প্রথমেই বলবেন সময় কোথায়। কিন্তু একটু ভেবে দেখবেন সময়ের অভাবটা তো অজুহাত মাত্র। ইচ্ছে থাকলেই হালকা শারীরিক ব্যায়ামের জন্য এক আধ ঘণ্টা সময় বার করা কোনও ব্যাপারই না। চাইলে আপনি সাঁতার, সাইক্লিং ইত্যাদির মতো স্পোর্টও বেছে নিতে পারেন। অফিসেও টানা বসে না থেকে মাঝে মাঝে হাত পা স্ট্রেচ করে নিতে পারেন। অফিস করিডরে একটু হেঁটেও আসতে পারেন। সকালে অফিসের তাড়া? তাহলে সন্ধ্যেয় হালকা নাস্তার একঘণ্টা পর একটু এক্সারসাইজ করে নিন। তা হতে পারে আপনার প্রিয় টিভি সিরিয়াল দেখতে দেখতেও।
নিয়মিত অভ্যাস করুন
- লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন। বাড়িতেও এই অভ্যাস করুন। জানেন কি ৮০০ থেকে ১০০০ সিঁড়ি ভাঙলে তা আপনার প্রতিদিনের এক্সারসাইজের অনেকটাই হয়ে যাবে?
- বাড়ি থেকে কাছাকাছি কোথাও গেলে হেঁটেই যান।
- অফিসে বা বাড়িতে ছোট খাটো প্রয়োজনে কাজের লোকদের ফরমায়েশ না করে নিজেই করার চেষ্টা করুন।
এই কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে দেখবেন সিটিং ডিসঅর্ডারের অভিশাপ থেকে আপনি মুক্ত হয়ে গেছেন। নিজেকে একটু মোটিভেট করতে হবে এই যা।
পুষ্টি, ডায়েট ওসুস্থতা নিয়ে যে কোন পরামর্শের জন্য
ডায়েট প্লানেট
ঢাকা নবজাতক ও জেনারেল হাসপাতাল
(লালমাটিয়া মহিলা কলেজের বিপরীতে)
সি ব্লক, লালমাটিয়া, ঢাকা।
হটলাইন: 01782 182361