ক্ষমা পরম গুন৷ স্বয়ং স্রষ্টাও নিজেকে ক্ষমাশীল বলে নিজের মহত্ব প্রচার করে থাকেন৷ আমাদের কি সৌভাগ্য, আমরা পরম ক্ষমাশীল একজন রাস্ট্রপতি আমাদের মাঝে পেয়েছি৷ এমন ক্ষমাশীল রাস্ট্রপতি পাওয়া দুর্লভ৷ এই মাত্র সেদিন, ২০১০ সালে নাটোরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২০ জনকে ক্ষমা করে দেয়ার পর এবার রাস্ট্রপতি আরেক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী লক্ষ্মীপুরের বিপ্লবকে ক্ষমা করে দিলেন৷ আহা কি আনন্দ৷ জাতির জন্য এ মাহেন্দ্রক্ষণ, পরম আনন্দের মুহূর্ত৷ বাংলাদেশে আতশবাজি নিষিদ্ধ৷ এখন, এই মুহুর্তে সরকারের উচিৎ আতশবাতি থেকে নিষেধাক্কা তুলে নেয়া৷ আমরা তাহলে পরম আহলাদে রাস্তায় আতশ বাজি পুড়িয়ে উৎসব করতে পারি৷ উৎসবের এমন মাহেন্দ্রক্ষণ বৃথা বয়ে যেতে পারে না৷
আজ পত্রিকার খবরে প্রকাশ, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগের বিতর্কিত নেতা আবু তাহেরের ছেলে এ এইচ এম বিপ্লবের ফাঁসির দণ্ডাদেশ মওকুফ করেছেন রাষ্ট্রপতি। কি করেছিলো এই বিপ্লব? না, সে এবং তার দুই ভাই লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলামকে বাসা থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়৷ এই তিন ভাই- বিপ্লব, লাবু ও টিপু ঐ রাতেই নুরুল ইসলামকে জবাই করে হত্যা করে৷ এরপর তার লাশ টুকরা টুকরা করে মেঘনা নদীতে ফেলে দেয়া হয়৷ জবাই করে হত্যা- কি শৈল্পিক হত্যাকাণ্ড!
এরপর এ ঘটনার মামলায় আবু তাহেরের তিন ছেলেসহ পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও নয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। আহা, এ কোনো কথা হলো? খুন করলেই মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে? তাহলে ক্ষমা কোথায়? বিচারক কি ক্ষমাশীল হতে পারে না?
বিচারক না হলো, সৌভাগ্যক্রমে আমাদের রাস্ট্রপতি পরম ক্ষমাশীল৷ তিনি তার নিজের দলের যে কাউকে যে কোনো অপরাধে ক্ষমা করে দিতে পারঙ্গম৷ এ বিষয়ে তার দক্ষতা অবিশ্বাস্য৷ তিনি একসাথে ২০ জনের প্রাণদণ্ড মওকুফ করে দিতে পেরেছেন শুধুমাত্র তার নিজের দল করার জন্য, আর এখানে মাত্র একজনকে করতে পারেন না? পারেন, তাই পলাতক বিপ্লব যখন আত্মসমর্পন করে প্রাণভিক্ষা চাইলো, ক্ষমাশীল রাস্ট্রপতি ফাঁসির দণ্ডাদেশ মওকুফ করে দিলেন৷ কেনো করবেন না, তারা যে একই গোয়ালের গরু; থুক্কু, তারা সবাই যে আওয়ামী লীগের৷ আমি জানি না রাস্ট্রপতি কি বলেছিলেন৷ হয়তো বলেছিলেন- আরো আগে আসতে পারলি না ব্যাটা? খামোখা এতোদিন পালিয়ে বেড়ালি!
আমাদের এমন ক্ষমাশীল রাস্ট্রপতি আছেন, এ আনন্দ আমরা রাখবো কোথায়? আমাদের আনন্দ রাখার জায়গা নেই৷ হে খোদা, মাটি ফাঁক করে দাও, আমরা সেখানে আমাদের আনন্দগুলা জমা করি৷ শোনা যাচ্ছে বড় ধরণের ভূমিকম্পের জন্য বাংলাদেশ হচ্ছে পরবর্তী টার্গেট৷ সেটাই না হয় দাও৷ রাস্ট্রপতির আরো আরো ক্ষমাশীলতা দেখার আগে আমরা ভূমিকম্পের কম্পনের তালে তালে লাফিয়ে আনন্দ করে নিই৷ আমরা যে বড় আনন্দিত৷
দুঃখ শুধু একটাই, আমরা এমন ৬ জনকে পিটিয়ে মেরে ফেলি মদ আর গাঁজা পর্যন্তই যাদের দৌড়৷ এইসব রাস্ট্রপতি আর বিপ্লবেরা আমাদের পিটনের বাইরে থেকে যায়৷
Click This Link
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০১১ বিকাল ৩:১৩