আমাদের পাশের দেশ ভারতে নতুন করে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছে ‘সোয়াইন ফ্লু’। গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর গত শনিবার (২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫) পর্যন্ত দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে সাত শ’র বেশী মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এ সময়ের মধ্যে ১২ হাজারের বেশী মানুষ ‘সোয়াইন ফ্লু’তে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশে প্রতি বছরই কম-বেশী লোক ‘সোয়াইন ফ্লু’তে আক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত দেশে ‘সোয়াইন ফ্লু’র ব্যাপক বিস্তারের খবর পাওয়া যায়নি।
সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জা বা সোয়াইন ফ্লু শূকরের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে পৃথিবীর কয়েকটি দেশে মানব মৃত্যুর কারণ বলে চিহ্নিত হয়েছে। এটি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস টাইপ A (H1N1)। তবে ঋতুকালীন ইনফ্লুয়েঞ্জার (Seasonal Flu) উপসর্গ ও সোয়াইন ফ্লুর উপসর্গ মানুষের মধ্যে প্রায় একই রকম৷
উপসর্গ
কফ, কাশি, জ্বর, গলাব্যথা, শরীরে ব্যথা, শীতশীত লাগা ও ক্লান্তি- এসবই হলো উপসর্গ (Syndrome)। শিশু ও বয়বৃদ্ধদের জন্য সোয়াইন ফ্লু বেশী বিপদজনক। এছাড়া হাঁপানী এবং হৃদরোগ আক্রান্ত মানুষেরও এ ফ্লু সম্পর্কে বিশেষ সাবধান থাকা উচিত। তাছাড়া যারা এমন রোগে ভুগছেন যাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায় যেমন, এইডস তাদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকা উচিত।
প্রতিরোধ
• অসুস্থতার সময় হাচি বা কাশির সময় মুখে রুমাল ব্যবহার করুন।
• ফোমাইট (Fomite)বা নির্জীব বস্তু যেমন দরজার নব, কম্পিউটারের কী বোর্ড, মাউস প্রভৃতি নিয়মিত জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার রাখুন।
• কফ ও শ্লেষা পরিষ্কার করার জন্য টিস্যু পেপার ব্যবহার করা এবং ব্যবহারের পরে নিরাপদ স্থানে ফেলুন।
• সব সময় সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে পরিষ্কার রাখা বিশেষ কফ ও শ্লেষা পরিষ্কার করার পর অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন। সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার সময় অবশ্যই অন্তত ২০ সেকেন্ড ব্যাপি সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।
• রোগাক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরে থাকুন।
• আক্রান্ত হলে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করুন।
• আক্রান্ত হলে স্কুল, কলেজ অথবা কর্মস্থলে না গিয়ে বাড়ীতে, অন্যদের থেকে নিরাপদ দুরত্বে থাকুন, যাতে অন্যরা আক্রান্ত না হয়।
সনাক্তকরনের উপায়
সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের উপস্থিতি নির্ণয়ের জন্য প্রথমেই সন্দেহভাজন ব্যক্তির লালা, নাসিকা রসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত নমুনা ভাইরার ট্রান্সপোর্ট মিডিয়া (VTM)-এ সংরক্ষণ করে নমুনা পরীক্ষণ গবেষণাগারে নিয়ে আসা হয়। পরবর্তিতে নমুনা হতে নিউক্লিক অ্যাসিড এক্সট্রাক্সন (Nucleic Acid Extraction ) করা হয়। তারপর রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পিসিআরের মাধ্যমে নমুনাতে সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের উপস্থিতি নির্ণয় করা যায়। বর্তমানে অত্যাধুনিক রিয়েল টাইম রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পিসিআর (Real Time RT PCR) এর মাধ্যমে খুব দ্রুত ভাইরাসের উপস্থিতি ও সংখ্যা নির্ণয় করা সম্ভব হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৮