ভ্রমনকে নিরাপদ ও আরামদায়ক করতে ভ্রমনের পূর্বে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য বিষয়ে সর্তকতা গ্রহন করতে হয়।
ঈদে অনেকেই বাড়ি ফেরে। ভ্রমণ এবং খাবার থেকে অসুস্থ হওয়া যেমন কাম্য নয়, তেমনি ঈদের ভূরিভোজ যেন পুরো ঈদটাকেই মাটি করে না দেয় সে বিষয়েও একটু সচেতন হতে হবে। তারপরও ঈদের সময়- একদিন একটু খেলে কিছু হবে না- এমন অনুরোধের ফাঁদে পড়ে কেউ কেউ যে সমস্যায় পড়ছেন না- তা কিন্তু নয়।
অনেকেই ভ্রমণের কারণে ঈদের আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েন কিংবা ঈদের দিনটিতে অসুখে আক্রান্ত থাকেন। এই সময়ে শিশুরাও খুব সহজে জ্বর, বমি, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। ট্রেনে, বাসে কিংবা লঞ্চে ভ্রমণের সময়ে শিশুরা সব সময়েই জানালার ধারের সিটটিতে বসতে পছন্দ করে থাকে। ফলে হঠাৎ করেই শিশু অতিরিক্ত বাতাসের ঝাপটার মুখোমুখি হয়। ভ্রমণের পর অনেক শিশুই সর্দি, কাশি কিংবা জ্বরের বিরক্তিকর সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে।
ভ্রমণে যে সমস্যায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়, তা হচ্ছে ডায়রিয়া। এ সমস্যাটি খাবার এবং পানিবাহিত। অনেক সময় ভ্রমণকালীনই বমি কিংবা ডায়রিয়া শুরু হয়ে যেতে পারে। ভ্রমণে কখনই বাইরের খাবার খাওয়া উচিত নয়। বাড়ির তৈরি খাবার সঙ্গে নিয়ে বের হওয়াটাই উত্তম। শিশুরা যাতে যাত্রাপথে এটাসেটা খেতে না চায় সে বিষয়ে আগে থেকেই তাদের বুঝিয়ে রাখতে হবে।
দুর্ঘটনা এড়ানোর ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে। বাসে ও ট্রেনে জানালার বাইরে যাতে কেউ অসর্তকভাবে মাথা বের না করে, লঞ্চের বারান্দায় কিংবা ফেরিতে কোনো শিশু যেন কারও তত্ত্বাবধান ছাড়া না দাঁড়ায়- এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করা জরুরি।
ভ্রমণে বিশেষ লক্ষণীয়ঃ
# ভ্রমন শুরু করার আগে ভরপেট না খাওয়া ভালো ।
# ভ্রমনে শিশু সঙ্গে থাকলে তাকে ঘুমাতে উৎসাহিত করুন ।
# বিশেষ কোন অসুখ থাকলে প্রয়োজনীয় ওষুধ সাথে নেবেন ।
# গর্ভবতী মহিলারা ডাক্তারের পরামর্শ মেনে ভ্রমন করুন ।
# যানবাহন চলাকালে কোন বই বা খবরের কাগজ পড়বেন না । এতে চোখের উপর চাপ পড়ে ।
# দীর্ঘ ভ্রমনে পা দুটো যতটা সম্ভব ছড়িয়ে বসবেন ।মাঝে মাঝে পা নাড়াচাড়া করুন যাতে রক্ত চলাচল ঠিক থাকে ।
# অপরিচিত লোকের কাছ থেকে কোন উপহার এবং খাবার গ্রহন করবেন না ।
# নির্ধারিত স্টেশন ছাড়া অন্য স্থান থেকে বাস , ফেরি , নৌকা ইত্যাদিতে উঠা নামা বর্জন করুন ।
ভ্রমণে ওষুধ
যারা রোগী তারা ঈদ ভ্রমণে ওষুধ সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন। রোগী না হলেও ভ্রমণে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র আপনার সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন। যেমন- পেটের গণ্ডগোল, পেটে গ্যাস, বদহজম, সাধারণ সর্দি-কাশি, বমি, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, মাসিকের ব্যথা ইত্যাদির জন্য প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধ সঙ্গে রাখতে পারেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলে এসব ওষুধ অনেক সময়েই পাওয়া যায় না।
ভ্রমণে যেসব ওষুধ সঙ্গে নেয়া যেতে পারেন সেগুলো হচ্ছে-
জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথার জন্য প্যারাসিটাল (ডোজ : ১টা করে দৈনিক ৩ বার)
পেটের পীড়ার জন্য মেট্রোনিডাজল ৪০০ মি.গ্রা. (ডোজ : ১টা করে দৈনিক ৩ বার)
পেটে গ্যাস, পেট ফাঁপা, বুক জ্বালার জন্য এন্টাসিড (ডোজ : ১টা করে দৈনিক ৩/৪ বার)
পেপটিক আলসারজনিত সমস্যার জন্য রেনিটিডিন (ডোজ : ১টা করে দৈনিক ২ বার) বা এসমেপ্রাযল(১টা করে ২বার)
ডায়রিয়ার জন্য খাবার স্যালাইন এবং আযিথ্রম্যছিন (ডোজ : ২টা একত্রে ১ বার)
বমির জন্য এভোমিন বা ইনারজিন ট্যাবলেট ও খাবার স্যালাইন
কাশির জন্য যে কোনো একটি কফ সিরাপ। সর্দি , কাশি , বা এলার্জির জন্য এন্টি হিস্টাসিন জাতীয় ওষুধ।
গর্ভাবস্থায় দূরের কোনো ভ্রমণে না যাওয়াই ভালো।এতে গর্ভপাতসহ নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে।
ভোগ করুন দুশ্চিন্তামুক্ত ভ্রমন.।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:১৬