ভয় মানুষ, জীবজন্তু, পশুপাখির যেমন আছে রাষ্টেরও কি তেমনি আছে? কিছু ভয়ংকর পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য হাইকোর্ট রাষ্ট্রধর্ম বিষয়ক রিটটি খারিজ করল।
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, এখন এই বাংলাদেশে এর ব্যত্যয় হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। হলে কিছু মানুষ রক্তের খেলায় মেতে উঠবে, কিন্তু কেন তাদেরইবা সার্থ কী কিংবা যারা রাষ্ট্র ধর্ম বানাল তাদেরওবা উদ্দেশ্য কী ছিল?
বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা বেশী হয় কারণ তাদের হাতে সময় বেশী। এটি এক ধরণের বিনোদন। যেমন গ্রামের মুরুব্বিরা ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করে, কারণ তারা গান বাজনার আয়োজন করতে পারেনা, লোক লজ্জার ভয়ে। একটা শীতকাল যাবে আর ওয়াজ মাহফিল হবেনা সেটা ক্যামনে সম্ভব, ওপাড়া মাহফিলের আয়োজন করেছে আমাদের পাড়ায় তার দ্বিগুণ ব্যয় করে আরও বড় মাহফিল আরও বড় মাওলানা আনতে না পারলে মান ইজ্জত থাকে! সারারাত্রব্যাপী বিশাল ওয়াজ মাহফিল, একটা উৎসব আরকি, কয়েক গ্রাম ব্যাপী খুশীর আমেজ। ডোনারের অভাব নেই, আল্লার রাস্থায় টাকার অভাব হয়না, সবই তার লীলা খেলা। ওয়াজ থেকে জানা যায় আমরা সবাই আল্লার পথ থেকে দূরে সরে গেছি। আমরা যে শেষ নবীর উম্মত তা ভুলে গেছি, অফসোচ। আল্লার রাস্থায় জান দিয়ে দিতে হবে, ইসলামের উপর আঘাত কোনো ভাবেই বরদাস্ত করা হবেনা, যদি আপনার ভিতরে তিল পরিমাণ ঈমান থাকে তাহলে আপনাকে আল্লার রাস্থায় জান দিয়ে দিতে হবে। কিন্তু রণক্ষেত্রে মাওলানাকে খুজে পাওয়া দুষ্কর। মাওলানার কিন্তু এগুলো করার পেছনে উদ্দেশ্য আছে যেমন ছিল এরশাদ সরকারের। বাংলার তাওহীদী জনতা যে উদ্দেশ্য বোঝার ক্ষমতা রাখেনা।
তাহলে!! এই এত এত সাধারণ মানুষের জীবনের মূল্য কি এতই কম!! কেউ একটু হুংকার দিল আর সবাই ঝাঁকে ঝাঁকে ঈমানী শক্তিতে বলিয়ান হয়ে ঝাপিয়ে পড়ল রণক্ষেত্র তৌরি করতে। বিষয়টা কিন্তু তেমন না, এর পেছনে এক বিশাল ষড়যন্ত্র কাজ করছে। ধর্মীয় মূল্যবোধকে কাজে লাগিয়ে একদল রুটিরুজির ব্যবস্থা করছে, একদল রাজনীতি করছে, একদল পরোকালের অনন্ত সুখ স্বপ্নে বিভোর হয়ে লাফাচ্ছে শহীদি মরণের জন্য। আর এ সবগুলোর জন্য মাদরাসা শিক্ষাকে জোরদার করা খুবই জরুরী যেটা এদেশের রাজনীতিবিদগণ ভালই জানেন এবং প্রতিনিয়ত অনুভব করেন। কারণ হাটে মাঠে ঘাটে শোষিত শ্রণীর ঘণঘটা, যারা নিজের ভালটা বুঝার জন্য অন্যের দারস্থ হয়। যাদেরকে ঠকানো অনেক সহজ।
শিক্ষা মৌলিক অধিকার, আপনার শিশুকে স্কুলে পাঠান- এটাকেতো না বলা যাবেনা তাহলে কী করতে হবে? শিক্ষার কথা বলতে হবে, তবে খুব কৌশলে যদি সেটাকে মাদরাসা বা অন্য কোনো ধর্মীয় শিক্ষায় ডাইভার্ট করা যায় তাহলে উদ্দেশ্য মার খেলনা। আগেকার দিনে রাজা বাদশাহ প্রজাদের অশিক্ষিত করে রাখত এটাও তাই হলো। সাপও মরল লাঠিও ভাংলনা, আমজনতা খুশী বাচ্চারা বই পাচ্ছে খাবার পাচ্ছে সাথে করে বয়ে আনছে বাবা মায়ের জন্য অসংখ্য সওয়াব, পরকালের অনন্ত সুখ শান্তি, আর কী চাই! অভাব মানুষকে লোভী করে আর লোভী মানুষকে দিয়ে অনেক কিছু করিয়ে নেয়া সম্ভব। লোভী মানুষকে বশ করতে পারলে সে নিজে না খেয়ে আপনাকে খাওয়াবে কারণ ঐ একটাই তার সুক্ষ্ম চিন্তা করার ক্ষমতা কম। সে আজকের টা আজকেরই দেখে আর তার মাথায় যারা কাঠাল ভেঙ্গে খায় তারা দেখে ৩০ বা ৫০ বছর পরের অবস্থা।
এভাবেই যুগ যুগ ধরে চলছে। কিন্তু যেদিন আম জনতা শুভঙ্করের ফাকি বুঝতে পারবে সেদিন অবস্থা পাল্টাবে, সেটা একদিনে হবেনা এক যুগেওনা, শতাব্দীর পর শতাব্দী লাগবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:১৮