ঘুম থেকে উঠলাম। শেষবারের মত আমাদের “ক্রাশ খাওয়া” পানিতে ফ্রেশ হলাম। এদিকে নাদিয়া আপুর অনেক আগে থেকেই (?) রেডী হয়ে থাকার কথা। আমরা জিনিসপত্র গুছানোর পরে চিঠি লিখলাম। লিখে খাতার ভাঁজে গুঁজে দিলাম। তিনজনই বের হলাম। “আমাদের” ১৪৫ নাম্বার রুম ছেড়ে আমরা বের হয়ে আসলাম। বটতলার উদ্দেশ্যে হাঁটা দিলাম। তিনজনই নাটকীয় ভঙ্গিতে “বিদায় জাহাংগীরনগর” বলে হাঁটা দিলাম।
আমাদের মনে পড়তে লাগলো এই তো এখানে আমি আর সৌম্য গভীর রাতে হেঁটেছি, মাহিনের সাথে এই পথে গিয়েই আমরা রাতে পাগলামি করেছি, এই তো সেদিন কবি ভাইয়ের সাথে হাফ প্যান্ট পরে হাঁটতে গিয়ে গাঁট্টা খেয়েছি, কয়েকদিন আগেই না কবি ভাই “কি কুম??” শুনে বাঁশ খেয়েছিলো। হাঁটতে হাঁটতে টিএসসি আসলাম। সৌম্যের আইডিয়া ছিলো যাওয়ার আগে ইভেন্টের পোস্টার কিছু নিয়ে যাবে। অসাধারণ আইডিয়ায় আমরা গেলাম কেউ আছে কিনা দেখতে। প্রথমবারের মত টিএসসির দোতলায় উঠলাম। ওখানে দীপু ভাই আর প্রসেনজিত ভাই। আমাদের ইচ্ছার কথা বললাম। ভাইয়ারা খুশি মনেই রাজি হলেন। অনেকগুলো পোস্টার দিয়ে দিলেন। একে একে সবার কাছ থেকে বিদায় নিলাম। পরে মেহেদী ভাই, দেবাংশু ভাইকে ফোন দিয়ে জানালাম- আমরা চলে যাচ্ছি। এরই মধ্যে নাদিয়া আপু চলে আসলেন। আমরা আমাদের স্বপ্ন ভেঙ্গে বের হলাম।
গাবতলীতে এসে বাসের টিকেট কাটলাম। আরেকটা বাস এসে ফকিরাপুল নিয়ে আসলো; তারপর বাসে উঠলাম। বাসে উঠে শুনলাম চিটাগাং পানিতে ডুবে যাওয়ার দশা। যাই হোক। আমরা পৌঁছলাম। সৌম্য আর মাহিন পৌঁছলো “ইয়ের” মত। পথের সব খরচই গেলো নাদিয়া আপুর। নেমে আবার খেলাম। বাস পৌঁছলো প্রায় রাত ৯.৩০’র দিকে।
আমাদের ভ্রমণ শেষ হলো। তবে শুধু ভ্রমণ না। পুরো সময়টা জুড়ে আমরা জুডোর সব ভাইয়াদের উপর চেপে বসে ছিলাম। কিন্তু এত আন্তরিকতাপূর্ণ ব্যবহার, এরকম ক্যাম্পাসে এরকম সময় কাটানো- আমি জানি না আর হবে কিনা। পুরো জুডোর ভাইয়াদের বিশেষ করে স্বপ্নীল ভাই তাদের উদ্দেশ্যে আমার কিছু বলার নাই। কারণ যা-ই বলি সবই ধৃষ্টতা হবে।
হঠাৎ মাঝরাতে এক কিশোরের ঘুম ভেঙ্গে যাবে। বাইরের অসহ্য পূর্ণিমায় চোখ ধাঁধানো আলোয় সে বলে উঠবে, “ওই তো ডেইরি গেইট”!!!
তুমি যে তাকে ছুটির নিমন্ত্রণে ডেকেছিলে!!
ষষ্ঠ পর্ব