(এসএসসি পরীক্ষার পরের ছুটিতে বিতর্ক করতে গিয়েছিলাম জাহাংগীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঝাড়া এক সপ্তাহ ছিলাম ক্যাম্পাসে। তার আগে কোনদিন এভাবে অপরিচিত-অচেনা-অজানা জায়গায় এতদিন থাকা হয় নি। তবে এতদিন পর যখন পিছনে তাকাই সেসব স্মৃতি ড্যাবড্যাব চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। সে দৃষ্টি সহ্য করার ক্ষমতা আমাকে দেয়া হয় নি। অতএব, তাদের যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তি পেতেই এই অক্ষরবন্দী করার ব্যবস্থা)।
“আমার হাতে টাকা থাকলে আমি মাইকেল মধুসূদন দত্ত হয়ে যাই!”। মধুসূদন দত্ত এই উক্তি করেছিলেন পাবলিক লাইব্রেরির খোলা চত্বরে বসা অবস্থায়। অতএব, রাজনারায়ণ দত্তের ছেলের পকেট দিয়ে উদরপূর্তির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। থিয়েটারের সামনে দোকান; যেখানে “কোল্ড ডিংকস” পাওয়া যায়। তবে বানান-ভুল কবি মাইকেলকে আশাহত করলো না বরং দ্বিগুণ উৎসাহে আমি আর তিনি দোকানে পায়ের ধূলি দিলাম।
এই মাইকেল আর কেউই নয়; তিনি আমাদের মেন্টর, ফতোয়াবাজ, ইস্পাহানী স্কুলের বড় ভাইয়ে আমীর আশরাফুল করিম চৌধুরী কবি।(বিভ্রান্ত হবেন না! উনার ডাক-নাম আসলেই কবি!!)।
সে যাই হোক খাবারের টেবিলে আমরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত আগামীকালের জাহাংগীরনগর যাত্রা নিয়ে। কবি মাইকেলের পকেট গরম কাজেই তিনি বিল নিয়ে চিন্তিত নন কারণ গতকালই তিনি তার সাইকেল নিলামে তুলেছেন। কাজেই সমস্ত মনোযোগ জাহাংগীরনগরে কেন্দ্রীভূত।
“হলে না থাকলে জাবি যাওয়া বৃথা!!”- উদাস মনে উক্তি করলেন কবি।
আমি মাথা নাড়লাম। কিন্তু হলে যাওয়া তো দূর অস্ত; আগে তো টিকেট পেতে হবে। কাজেই সিএসডিএসের লাভবার্ড বলে পরিচিত মাহিনকে ফোন দিলাম। আদেশদাতা অবশ্যই কবি ভাই। বিকেলে যাওয়া স্থির হলো; টিকেট ছয়টা, কিনতে হবে দামপাড়া থেকে। কবি ভাইয়ের একনিষ্ঠ শিষ্য, বউ-পাগলা সৌম্য আর লাভবার্ড মাহিন টিকেট ম্যানেজমেন্টে। এদিকে মানসিব নামের জনৈক বালকের নন-এসি বাসে কিঞ্চিত প্রটোকল জনিত অসুবিধা থাকায় তিনি আলাদা যাবেন। অতঃপর আমি এবং কবি মাইকেল নিউ মার্কেটের উদ্দেশ্যে হাঁটা দিলাম। বিদায় পর্বে রাজনারায়ণ দত্তের ছেলে আমাকে তার বংশগৌরব শুনিয়ে তাক লাগিয়ে দিলো।
টিনের চালে কাক আমি তো অবাক!!
খুব সন্ধ্যায় আমাদের ম্যাথমেটিশিয়ান, “মুটি” আপুর ইয়ে, আমীরে গণিত, নায়েবে ফিজিক্স শহিদুল সাহেব জানালেন তিনি ট্রেনের টিকেট ম্যানেজ করেছেন। বাসে যাওয়া নিয়ে সবার বাসাতেই ঝামেলা ছিলো কারণ নারায়ণগঞ্জের ওয়ান এন্ড অনলি শামীম ওসমান এখন-তখন অবস্থা করে রেখেছেন। যেকোন সময় যা-তা ঘটে যেতে পারে। কাজেই ট্রেনের সংবাদে আমরা............
রুম নাম্বার ১৪৫ এভাবেই শুরু হলো!!!!